সিলেট যেন মিছিলের নগরী
- এম জে এইচ জামিল, সিলেট
- ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:০৫
মিছিল আর স্লোগানে মুখরিত সিলেট যেন হয়ে উঠল মিছিলের নগরী। দীর্ঘ দেড় যুগ পর ঐতিহাসিক আলিয়া মাদরাসা ময়দানে কর্মী সম্মেলন করেছে সিলেট জেলা জামায়াত। সকাল ১০টার দিকে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হলেও সকাল ৮টা থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে আলিয়া মাদরাসা ময়দানে আসতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। বেলা বাড়ার সাথে বাড়তে থেকে উপস্থিতি। সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় আলিয়ার মাঠ।
এ সময় সিলেট জেলার সকল উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে আলাদা আলাদা ব্যানারে মিছিল সহকারে সম্মেলনে যোগ দেন নেতা-কর্মীরা। মুহূর্তেই মিছিলের জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে আলিয়া মাঠ থেকে রাস্তায়।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৫ সালে চার দলীয় জোট সরকারের আমলে আলিয়া মাঠে বিভাগীয় প্রতিনিধি সমাবেশ আয়োজন করেছিল সিলেট জামায়াত। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। এরপর ২০০৯ সালে এই আলিয়া মাঠেই টিপাঁইমুখে বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে জনসভা করেছিল সিলেট জামায়াত। ওই জনসভায় তৎকালীন আমিরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী প্রধান অতিথি ছিলেন।
এছাড়া ওই জনসভায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। এরপর থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশ করলেও আলিয়া মাঠে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি জামায়াত। দীর্ঘ ১৮ বছরেরও বেশি সময় পর সেই আলিয়া মাদরাসার মাঠে কর্মী সম্মেলন করেছে জামায়াত। সিলেট বিভাগের একটি জেলার সম্মেলন হলেও এই কর্মসূচিকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পায় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।
সম্মেলন ঘিরে জেলা জামায়াতের সকল উপজেলা ও পৌর শাখায় ব্যাপক দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিটি শাখা থেকে শত শত নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। এ সময় নগরীতে যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে সম্মেলনে আসা সকল গাড়ি রাখা হয় শহরের বাইরে। এরপর পায়ে হেঁটে মিছিলে মিছিলে স্লোগান মুখর করে আলিয়া মাঠে যোগ দেন নেতা-কর্মীরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, আলিয়া মাদরাসার মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে জনস্রোত রাস্তায় ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকরা আলিয়ার সামনের একটি রাস্তা বন্ধ করে দেন। আরেকটি রাস্তায় মানব দেয়াল তৈরি করে যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দেন। ফলে অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিতি থাকলেও আলিয়ার আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়নি। এ বিষয়টি জনসাধারণের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়।
এ সময় প্রাইভেটকার নিয়ে পারিবারিক কাজে যাচ্ছিলেন জনৈক বেসরকারি চাকুরীজীবি। অসংখ্য নেতা-কর্মীর উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও তার গাড়িটি নিরাপদে যেতে সহযোগিতা করছিলেন উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকরা। এ সময় তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওই চাকুরীজীবি বলেন, এত মানুষ এরপরও যানজট নেই। বিষয়টি ভাবতেই অবাক লাগে। অথচ আমরা বিগত সময়ে দেখেছি এই মাঠে অনেক দলের কর্মসূচি হয়েছে। মাঠ খালি এরপরও ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এমন নেতা-কর্মী দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব পেলে দেশেও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।