২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠিত

মাগুরছড়া পুঞ্জির মাঠে দিনব্যাপী এ উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় - ছবি : নয়া দিগন্ত

খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণ উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বের) মাগুরছড়া পুঞ্জির মাঠে দিনব্যাপী এ উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় পালন করা হয় উৎসবটি। খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি খাসিয়া পুঞ্জির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

আয়োজকরা জানান, ‘বর্ষবিদায় বা ‘সেং কুটস্নেম’ খাসিয়াদের একটি সার্বজনীন প্রাচীনতম উৎসব। উৎসবকে কেন্দ্র করে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এরমধ্যে দিনব্যাপী তাদের প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে পাহাড়ি নৃত্য ও গান পরিবেশনের পাশাপাশি জীবন-জীবিকার বিভিন্ন পদ্ধতি নৃত্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। মাছ শিকার, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে তারা আনন্দ ফুর্তি করেন। উৎসবকে উপলক্ষ করে মাগুরছড়া পুঞ্জি মাঠে বসে মেলা। সেখানে খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী বাহারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন তারা। খাসিয়া সম্প্রদায়ের পাশাপাশি এ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বাঙালি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষসহ দেশী-বিদেশী পর্যটকরা অংশগ্রহণ করেন। মূলত খাসিয়া তরুণ প্রজন্মের কাছে প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পরিচয় করিয়ে দিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা।’

লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী (খাসিয়া নেতা) ফিলা প্রতমী নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘প্রতি বছর ২৩ নভেম্বর নাচে-গানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিগত কয়েক মাস খাসিয়া পানের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় অর্থনৈতিক চাপে এবারের উৎসব বাতিল করা হয়েছিল। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় সরকারের সুদৃষ্টি আসে আমাদের প্রতি। বিশেষ করে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় আমরা সুন্দরভাবে এবারের উৎসবটি সম্পন্ন করতে পেরেছি।’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি ও মাগুরছড়া পুঞ্জির মন্ত্রী জিডিশন প্রধান সুছিয়াং (করডর) বলেন, ‘পানের ব্যবসায় মন্দায় আর্থিক সঙ্কটের কারণে এবার ১২৫তম বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ঐতিহ্যবাহী এ বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসবটি আমরা করতে পেরেছি।’

উল্লেখ্য, দেশের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাসিয়া সম্প্রদায় অন্যতম। শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন পাহাড়ে তাদের বসবাস। বর্তমানে ২৫ হাজারের মতো জনসংখ্যা রয়েছে এ সম্প্রদায়ের। কঠোর পরিশ্রমী খাসিয়ারা পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত। তাদের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে পান চাষ।


আরো সংবাদ



premium cement