আদালতে মুখ খোলেননি মুনতাহা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মার্জিয়া
- আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট
- ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৯, আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৫১
সিলেটের আদালতে বিচারকের সামনে মুখ খোলেননি শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৬) হত্যা মামলার প্রধান আসামি শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫)। এ মামলায় চার আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে আসামিদের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের তোলা হয়।
চার আসামির মধ্যে প্রধান আসামি শামীমা বেগম মার্জিয়াকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও আদালতে এসে মুখে কুলুপ এঁটে দেন তিনি। দেননি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি। পরে চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
আদালত সূত্র জানায়, মুনতাহা হত্যা মামলার চার আসামি কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের মরহুম ময়না মিয়ার স্ত্রী আলিফজান (৫৫), তাদের মেয়ে শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫) এবং একই এলাকার ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগমকে (৩৫) পুলিশ ১১ নভেম্বর আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে পুলিশ আসামিদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদকালে প্রধান অভিযুক্ত মার্জিয়া নিজের দোষ স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবেন বলে পুলিশকে জানান। তাই রিমান্ডের পাঁচ দিন শেষে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চার আসামিকে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতে এসে আর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি তিনি। পরে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা জজ আদালতের ইন্সপেক্টর মো: জমসেদ আহমদ বলেন, ‘প্রয়োজন মনে করলে পুলিশ আবার তাদের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করবে।’
গত ৩ নভেম্বর বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে মুনতাহা আক্তার জেরিন। সেদিন সকালে বাড়ির অদূরে একটি মাদরাসার ওয়াজ মাহফিল থেকে ছেলে আব্দুর রহিম ও মেয়ে মুনতাহাকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন শামীম আহমদ। সেখান থেকে তাদের ফল কিনে দেন। এরপর মুনতাহা শিশুদের সাথে বাড়ির সামনের সড়কে খেলতে যায়। দুপুর আড়াইটার দিকে খাবার খেতে মুনতাহাকে ডাকা হয়। খুঁজতে গিয়ে শিশুটিকে আর পাওয়া যায়নি। এরপর ওইদিন রাত ১২টায় মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
মুনতাহাকে হত্যার পর লাশ বাড়ির পাশের একটি খালে কাদামাটিতে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
হত্যাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাপা দেয়া অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন মর্জিয়ার মা আলিফজান। ১০ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে মুনতাহার লাশ কোলে তুলে পুকুরে ফেলার চেষ্টাকালে স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মার্জিয়া আক্তার, তার মা আলীফজান ও আলীফজানের মা কুতুবজানকে আটক করা হয়। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা মার্জিয়ার বসতঘর ভেঙে দেন।
স্থানীয়রা জানান, ‘মুনতাহাকে ২৫০ টাকায় প্রাইভেট পড়াতেন মার্জিয়া। তার মা আলিফজান ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। মার্জিয়া চুরির ঘটনায় এবং তার চলাফেরা খারাপ প্রতীয়মান হওয়াতে টিউশনি থেকে তাকে বাদ দেয় মুনতাহার পরিবার। সেই ক্ষোভে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেন মার্জিয়া। মুনতাহার পরিবারের ওপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে শিশু মার্জিয়াকে অপহরণের পর হত্যা করেন তিনি।’
এদিকে, মার্জিয়ার নানি কুতুবজান বিবিকে (৮৫) বয়সের বিবেচনায় আটক করে রাখেনি পুলিশ। তাকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার সকালে কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের ছাউরা গ্রামে ছোট ভাইয়ের বাড়িতে মারা যান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা