২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ১৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস

সিলেটের জৈন্তাপুরের ৭ নম্বর কূপ - ছবি : নয়া দিগন্ত

সিলেট থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে ১৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর ৭ নম্বর কূপে নতুন করে আরো বিপুল পরিমাণ গ্যাস মজুদ আছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) কূপ থেকে গ্যাস মজুদের পরিমাণ ৯০ থেকে ৯৫ বিলিয়ন ঘনফুট বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে সোমবার বিকেলে ৭ নম্বর কূপ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো আরো আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এ নিয়ে সিলেট থেকে এখন জাতীয় গ্রিডে মোট ১৩৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

এত দিন সিলেট থেকে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছিল। ৭ নম্বর কূপ তেলকূপ হিসেবে আবিষ্কৃত হয় ১৯৮৬ সালে। এই কূপের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো তেলযুগে প্রবেশ করে।

জানা গেছে, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল এরশাদ তেলপ্রাপ্তির খবরে হেলিকপ্টারে সিলেট আসেন। পরে ১৯৮৭ সালে কূপ থেকে তেল উত্তোলনের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি এরশাদ। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এই কূপ থেকে অব্যাহতভাবে তেল উত্তোলন করা হয়। পরে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় কূপটি।

সিলেট গ্যাসফিল্ড সূত্র জানিয়েছে, সিলেট ৭ নম্বর গ্যাস কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণার তিন দশক পর সংস্কারের সময় নতুনভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো: মিজানুর রহমান বলেন, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। সিলেট থেকে এর আগে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছিল বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে এই কূপ খনন করা হয়। ১৯৮৭ সাল থেকে ২০০০ মিটার গভীরে তেল পাওয়া যায়। পরে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা হয়। এরপর ২০০৪ সালে ওয়ার্ক ওভার করে ১৯০০ মিটার গভীরে গ্যাস পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের জুনে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এ বছরের জুলাইয়ে ফের ওয়ার্ক ওভারে গেলে ১২০০ মিটার গভীরে ৯০ থেকে ৯৫ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ পাওয়া যায়। এ গ্যাস আগামী ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত উত্তোলন করা যাবে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের এমডি আরো বলেন, সিলেট ৭ নম্বর কূপ পেট্রোবাংলার ১৫তম গ্যাস ক্ষেত্র। কূপ থেকে দৈনিক ৫০ কোটি টাকার গ্যাস ও ৪০ লাখ টাকার কনডেনসেট উত্তোলন করা হবে।

গত ২২ অক্টোবর সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর তেলের পুরনো কূপ (সিলেট ৭ নম্বর কূপ) সংস্কার করতে গিয়ে দু’স্তরে নতুন গ্যাসের সন্ধান মেলে। দু’দফায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২০০০ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরনো গ্যাস কূপে জুলাই মাস থেকে অনুসন্ধান চলে। গত ১৪ অক্টোবর কূপের ২০১০ মিটার গভীরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সাত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে।

এরপর ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরো সাড়ে আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে। এই কূপে টেস্ট হিসেবে এক সপ্তাহ গ্যাস উত্তোলন করা হয়। পরে ওই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়। এখন থেকে প্রতিদিন সাড়ে আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

ইতোমধ্যে সিলেটে ১৪টি কূপে খনন ও গ্যাস উত্তোলন করে দেশীয় তেল গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। এর মধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে দু’টি কূপে, গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলায় তিনটি কূপে, রশিদপুরে সাতটি কূপে, বিয়ানীবাজারে দু’টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement