বকেয়া মজুরির দাবিতে চাশ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি
- আব্দুল হামিদ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
- ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০১
বকেয়া ও সাপ্তাহিক মজুরির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) চা শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার ও গতকাল সোমবার সকাল থেকে দেশের এনটিসির বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর এলাকার কুমারশাইল বাগানসহ ১৬টি চা বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
জানা গেছে, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এনটিসির বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিক নেতারা গত রোববার বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে বৈঠক করে এই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। চা শ্রমিকদের ভাষ্য, শ্রমিকদের পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া আছে। মজুরি না পেয়ে অর্থকষ্ট নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। মালিকপক্ষ বকেয়া মজুরি পরিশোধ না করলে তারা কাজে ফিরবেন না।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন জানিয়েছে, সারাদেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৬টি চা বাগান আছে। এসব বাগানে প্রায় ১৭ হাজার চা শ্রমিক কাজ করেন। তাদের ওপর আরো ৩০ হাজার মানুষের ভরণপোষণ নির্ভর করে।
কমলগঞ্জের পদ্মছড়া চা-বাগানের বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের ঘরে খাবার নেই। তারা অনেক কষ্ট করে চলছেন। এখন পেটে ক্ষুধা নিয়ে শ্রমিকেরা কাজ করবেন কিভাবে?
চা শ্রমিকদের কর্মবিরতির কর্মসূচিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলগঞ্জ উপজেলার এনটিসির এক ব্যবস্থাপক জানান, ‘শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি না দেয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। টাকা না থাকায় শ্রমিকদের বেতন দেয়া যাচ্ছে না। জরুরিভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদী।’
ন্যাশনাল টি কোম্পানির মহা-ব্যবস্থাপক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সাংবাদিকে জানান, ‘শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার জন্য তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের পরিচালনা পর্ষদ পূর্ণাঙ্গ পুনর্গঠন না হওয়ার কারণে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে সমস্যা হচ্ছে। আশা করছেন, শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পরিষদর গঠন হবে এবং শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতে পারবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন চা বাগানগুলোতে উৎপাদনের সময়। এখন যদি শ্রমিকেরা কর্মবিরতিতে যান, তাহলে চা বাগানের অনেক ক্ষতি হবে।’