১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ৬ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

কমলগঞ্জে ও শাহাবাজপুরে বিলুপ্তির পথে ‘বাঁশ কোড়ল’

- ছবি : নয়া দিগন্ত

কাষ্ঠল চিরহরিৎ একটি উদ্ভিদ ‘বাঁশ’। ঘরবাড়ি তৈরি, আসবাবপত্র তৈরি ইত্যাদি কাজে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে পাহাড়ি অঞ্চলে মফস্বলের এলাকায় এই বাঁশই খাওয়া হয়। এই বর্ষা মৌসুমে শাহবাজপুর বাজারগুলোতে পাহাড়ি সবজি বিক্রেতাদের বিভিন্ন সবজির মধ্যে প্রধান সবজি হিসেবে বিক্রি করছেন ‘বাঁশ কোড়ল’।

মূলত বাঁশ গাছের গোড়ার কচি অংশকে ‘বাঁশ কোড়ল’ বলে পরিচিত সবার কাছে, যা মূলত পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের সবজির তালিকায় পছন্দের একটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়।

সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার সাতটি উপজেলায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের অন্যতম জনপ্রিয় সুস্বাদু খাবার ‘বাঁশ কোড়ল’। পাহাড়ের গহিনে প্রায় সব স্থানেই এ সবজি পাওয়া যায়। বর্তমানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের পাশাপাশি অনেক বাঙ্গালিদেরও জনপ্রিয় একটি খাবারে পরিণত হয়েছে।

বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি এলাকার গহিনে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া বাঁশ ও ব্যক্তিগত বাগানে বাঁশ জন্ম নেয়। এসব বাঁশ পরিণত হওয়ার আগেই স্থানীয় পাহাড়িরা বাঁশ গাছের গোড়ার কচি অংশ সংগ্রহ করে তা প্রতিদিন স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসে।

সরেজমিনে জানা গেছে, বছরের মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এ সবজির ভরা মৌসুম থাকে। স্থানীয় বাজারগুলোতে মুলি বাঁশ, ডলু বাঁশ, মিতিঙ্গ্যা বাঁশ, ফারুয়া বাঁশ, বাজ্জে বাঁশ, কালিছুরি বাঁশসহ বেশ কয়েক প্রজাতির বাঁশ কোড়ল পাওয়া যায়। প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র কিছু মানুষ এই বাঁশ কোড়াল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

আরো জানা গেছে, বর্ষার শুরুতে বৃষ্টির পানিতে মাটি নরম হলে এটি বাড়তে শুরু করে। মাটি হতে ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি গজিয়ে উঠলে এটি খাওয়ার উপযোগী হয়। জাতের ভিন্নতার সাথে সাথে এর স্বাদেও ভিন্নতা আসে।

শাহাবাজপুর বাজার এলাকায় সবজি বিক্রেতা জানান, ‘মুলি বাঁশ কোড়ল সবচেয়ে সুস্বাদু হওয়ায় সবার কাছে এটি জনপ্রিয়তা বেশি তবে দামের ক্ষেত্রে সবগুলো একই রাখা হয়।

ডা: নরুল আম্বিয়া বলেন, ‘দৈহিক সুস্থতায় বাঁশ বেশ উপকারী। বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে এর কার্যকারিতা অপরিসীম। তাইতো এই বাঁশের কোড়লকে চীনারা ‘স্বাস্থ্যকর খাবারের রাজা’ বলে থাকেন।’

বাঁশ কোড়ল বিক্রেতা নয়া দিগন্তের এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাঁশ কোড়ল আহরণ করে বিকেলে বাজারে বিক্রি করতে আসেন। কখনো ৪ শ’ আবার কখনো ৫ থেকে ৬ শ’ টাকার বাঁশ কোড়ল বিক্রি করেন।’


আরো সংবাদ



premium cement