০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলা : ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পিবিআই

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলা : ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পিবিআই - ছবি : নয়া দিগন্ত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিলেটে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাব হত্যা মামলার তদন্তকাজ শুরু করেছে পিবিআই। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে পিবিআই সিলেটের একটি টিম সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় তুরাবের শরীরে গুলি লাগার স্থানটি পরিদর্শন করে।

এ সময় সিলেটের সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কাদের তাপাদার, কবীর আহমদ সোহেল, সাইফুর রহমান তালুকদার, নুরুল ইসলাম ও তুরাবের বিপুলসংখ্যক সহকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেরকে তদন্তকাজ দ্রুত শেষ করার আশ্বাস প্রদান করেন পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: মুরসালিন।

এর আগে আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে মামলার নথিপত্র কোতোয়ালি থানাপুলিশ পিআইবিকে বুঝিয়ে দেয়।

শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই সিলেট মহানগরের বন্দরবাজারে কালেক্টরেট মসজিদের পাশে সড়কে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে সন্ধ্যায় মারা যান দৈনিক নয়াদিগন্ত ও জালালাবাদের রিপোর্টার এ টি এম তুরাব। ঘটনার এক মাস পর (১৯ আগস্ট) নিহতের ভাই আবুল আহসান মো: আযরফ (জাবুর) সিলেট অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালকে। এজাহারে আসামি হিসেবে পুলিশসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয় ২০০ থেকে ২৫০ জনকে।

মামলার ২ নম্বর আসামি হলেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ক্রাইম উত্তর) মো: সাদেক দস্তগীর কাউসার, ৩ নম্বর আসামি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, ৪ নম্বর আসামি সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মিজানুর রহমান ও ৬ নম্বর আসামি সেসময়ের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন।

অন্য আসামিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, থানার সদ্য সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) ফজলুর রহমান, থানার এসআই কাজি ‍রিপন সরকার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সিসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আফতাব উদ্দিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পিযূষ কান্তি দে, সিলেট সিটি করপোরেশনের পিআরও সাজলু লস্কর, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিসিকের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, নগরের চালিবন্দর নেহার মঞ্জিলের বাসিন্দা শিবলু আহমদ (মো: রুহুল আমিন), এসএমপির কনস্টেবল সেলিম মিয়া, আজহার ও ফিরোজ।

এজাহারে উল্লেখ করা হয় ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্তরা ও অবৈধ সরকারের অপেশাদার পুলিশ ও দুর্বৃত্ত দ্বারা ন্যাক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। আসামিরা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে একজোট হয়ে বাদির নিরপরাধ ছোট ভাই সাংবাদিক আবু তাহের মো: তুরাবকে (এ টি এম তুরাব) হত্যা করা হয়। দিন-দুপুরে শত শত মানুষের সামনে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে ২ থেকে ৫ নম্বর আসামি বাদিকে হত্যার হুমকি দেন। পরে আসামিরা রাষ্ট্রীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাদিকে ঢাকায় নিয়ে শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করান।

অপরদিকে, ঘটনার পাঁচ দিন পর তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়েরের উদ্দেশে অভিযোগ করেন। কিন্তু সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি পুলিশ।

পুলিশ ওই সময় জানায়, আগেই তাদের পক্ষ থেকে ৩৪ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েক শ’ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। তাই তুরাবের ভাইয়ের দায়ের করা অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে রেকর্ড করেছে তারা।

তবে পরবর্তীতে জানা যায়, পুলিশের এজাহারে গুলিতে মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখই নেই। এছাড়া মামলার এজাহারে আসামি হিসেবে কোনো পুলিশের নাম নেই, বরং আছে বিএনপি ও জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম। তাই পরে বাধ্য হয়ে তুরাবের পরিবারকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়।

এদিকে আদালতে মামলার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামিকে আটক করেনি পুলিশ। বরং মামলার ৬ নম্বর আসামি ঘটনার সময়ের সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন শিপনকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভোররাতে তার বাড়ি থেকে বিজিবি আটক করলেও কয়েক ঘণ্টার মাথায় ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ অবস্থায় মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দিয়েছেন আদালত।

দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পিবিআই। তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মোহাম্মদ মুরসালিনের নেতৃত্বে একটি টিম বুধবার বিকেল ৩টায় বন্দরবাজারের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় তুরাবের শরীরে গুলি লাগার স্থানটি পরিদর্শন করে। এ সময় সিলেটের সিনিয়র কয়েকজন সাংবাদিক ও তুরাবের সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শনকালে মোহাম্মদ মুরসালিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করেছি। দ্রুত তদন্তকাজ শেষ করার জোর প্রচেষ্টা চালাব। সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দী এবং মুঠোফোনে ধারণকৃত ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ যাচাইসহ বিভিন্নভাবে আমরা তদন্তকাজ চালাব। দোষী যে বা যারাই হোক প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবে পিবিআই।


আরো সংবাদ



premium cement
চুরি করে ১১ কোটি নাগরিকের তথ্য বিক্রি করা হয়েছিল : পুলিশ মিরসরাইয়ে বিজিবির অভিযানে অবৈধ কাঠ জব্দ শত চেষ্টা করেও ফ্যাসিবাদের সাথে আপস করাতে পারেনি : ইসলামী ঐক্যজোট কালীগঞ্জে যুবদল কর্মী হত্যা মামলায় যুবলীগ নেতা বাদল গ্রেফতার ফিরতে ইচ্ছুক লেবাননে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের নথিভুক্ত হতে হবে স্পেনের সাথে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়াতে চান ড. ইউনূস নামাজ পড়ে বাড়িতে এসে মারা যায় স্বামী, খবর শুনে স্ত্রীর মৃত্যু লেবাননে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের প্রত্যাবর্তনে কাজ করছে সরকার লেবানন সীমান্তে বিধ্বস্ত ইসরাইলি হেলিকপ্টার সিদ্ধিরগঞ্জে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরো ২ মামলা ‘আয়নাঘর ছিল শেখ হাসিনার ভয়ঙ্কর হাতিয়ার’

সকল