তুরাবের হত্যাকারী ওসিকে ছেড়ে দেয়ায় পুলিশ সুপার ও ওসির প্রত্যাহার দাবি
- আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট
- ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪১
শহীদ সাংবাদিক এ টি এম তুরাব হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে ও বিজিবির হাতে আটক সাবেক ওসি মঈনকে হবিগঞ্জের মাধবপুর থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার প্রতিবাদে সিলেটের সর্বস্তরের সংবাদকর্মীরা সিলেট পুলিশ সুপার ও ওসির প্রত্যাহার দাবি করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কার্যালয়ের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শহীদ তুরাব হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামি এসএমপির কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি মঈন উদ্দিন সিপনকে আটকের পর ছেড়ে দেয়ায় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ও মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুনকে অপসারণ করুন এবং কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি মঈনসহ তুরাব হত্যা মামলার আসামি পুলিশ কর্মকর্তা কাউসার দস্তগির,আজবাহার আলী শেখসহ সকলকে গ্রেফতার করুন।
বক্তারা বলেন, সিলেটের ইতিহাসে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক নিহতের ঘটনা এই প্রথম। এই ঘটনায় আমরা হতভম্ব, বিস্মিত ও গভীরভাবে ক্ষুব্ধ। ঘটনার পরে থানায় মামলা করলে পুলিশ তা জিডি হিসেবে গণ্য করে। পরবর্তীতে এক মাস পর সাংবাদিক তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯ আগস্ট আদালতে হত্যা মামলার করলেও এখন পর্যন্ত এর কোনো অগ্রগতি নেই। উপরন্তু এ মামলার ৬ নম্বর আসামি, ঘটনার সময় সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন সিপনকে তার বাড়িতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রাখার অভিযোগে রোববার দিবাগত রাতে বিজিবি আটক করে মাধবপুর থানায় এনে সোপর্দ করে। কিন্তু একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও পরদিন সোমবার দুপুরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। এই ঘটনায় সিলেটসহ দেশব্যাপি চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে তুরাব হত্যাকাণ্ডে জড়িত এসএমপি’র সাবেক কর্মকর্তা আজবাহার আলী শেখ ও গোলাম কাওসার দস্তগীরসহ সকল আসামিকে অবিলম্বে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করার জোর দাবি জানানো হয়। অন্যথায় সিলেটের সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিতে বাধ্য হবেন বলে ঘোষণা করা হয়।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, স্বরাষ্ট্র ও আইন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিপিজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: নুরুল ইসলামের পরিচালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষন করে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
অবস্থান কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সহ-সভাপতি খালেদ আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও দৈনিক নয়া দিগন্তের ব্যুরো প্রধান আবদুল কাদের তাপাদার, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিপিজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আতাউর রহমান আতা, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমদ হেলাল, বিপিজেএ সিলেটের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ এইচ আরিফ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান তালুকদার, সিলেটভিউ২৪ডটকম’র নিউজ ইনচার্জ মো: রেজাউল হক ডালিম, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল হাসিব।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক খবরপত্রের ব্যুরো প্রধান এম এ মতিন, বিপিজেএ সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশকার ইবনে আমিন লস্কর রাব্বী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুল মুহিত দিদার, মাই টিভি সিলেট প্রতিনিধি মিনাল কান্তি দাস, দৈনিক ইনফো বাংলা সিলেটের ব্যুরো প্রধান উৎফল বড়ুয়া, বিপিজেএ সিলেটের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রেজা রুবেল, সদস্য আজমল আলী, দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাহেদ আহমদ শান্ত, জাবেদ ইমরান, রেজওয়ান আহমদ, রুবেল মিয়া, আশরাফ উল্লাহ ইমন, শহিদুল ইসলাম সবুজ, রাহেল চৌধুরী তারেক, সবুজ আহমদ, জাকির আহমদ, বাবর জোয়ারদার ও ফয়সল আহমদ প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে এসএমপি পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিমের পক্ষে উপ-পুলিশ কমিশনার সদর ও প্রশাসন তোফায়েল আহমদ সাংবাদিকদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ টি এম তুরাবের হত্যারকারীদের আটক করার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
গত ১৯ জুলাই সিলেটের প্রাণকেন্দ্র কোর্ট পয়েন্টে (বর্তমানে তুরাব চত্বর হিসেবে নামকরণ হয়েছে) বিএনপির মিছিল চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময়ে প্রেস লিখা জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। এ টি এম তুরাব মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সিলেটের দৈনিক জালালাবাদে স্টাফ রিপোর্টার ও দৈনিক নয়া দিগন্তে সিলেট প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
গত ১৯ আগস্ট তুরাবের বড় ভাই আবু আহসান মোহাম্মদ আজরফ ওরফে জাবুর পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৮ জনকে আসামি করে সিলেট আদালতে হত্যা মামলা করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা