কলকাতায় ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে ২৯ জনের মৃত্যু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এখন পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছেন, ওই ২৯ জনের পরিবারকে দু’লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
শুক্রবার মমতা বলেছেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তার ফলে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তারা রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। বর্তমানে তারা সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন। শুক্রবার ডাক্তারদের সেই ধর্নার চতুর্থ দিন। রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা ওই কর্মসূচিতে শামিল হয়েছেন।
রাজ্যের অভিযোগ, ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে বহু মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত রাজ্যের হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২৯। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত ডাক্তারেরা। তাদের দাবি, কোনো হাসপাতালেই চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। সিনিয়র চিকিৎসকেরা পরিষেবা দিচ্ছেন। তারা বাড়তি পরিশ্রম করছেন। কোথাও বিনা চিকিৎসায় রোগীকে ফিরে যেতে হচ্ছে না। রাজ্যের দাবির প্রেক্ষাপটে জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা যুক্তি, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশায় এমনিতেই বহু মানুষ প্রতি দিন উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে মারা যান। সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই রাজ্য সরকার ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে কাঠগড়ায় তুলছে।
ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কাটাতে বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিনিধিদের নবান্নে ডাকা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। মমতা দু’ঘণ্টারও বেশি সময় নবান্নের সভাঘরে অপেক্ষা করেছেন। কিন্তু বৈঠক ভণ্ডুল হয়ে যায়। রাজ্য জানিয়েছিল, ডাক্তারদের ১৫ জন প্রতিনিধি নবান্নের বৈঠকে থাকতে পারবেন। জুনিয়র ডাক্তারেরা ৩২ জন গিয়েছিলেন। তাদের দাবি ছিল, বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। সেই দাবি মানতে রাজি হয়নি নবান্ন। এই বৈঠক ভণ্ডুল হয়ে যাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকায় সরাসরি সম্প্রচার সম্ভব নয়। তবে তিনি আশা করেছিলেন, বৈঠক হবে। ডাক্তারদের ক্ষমা করে দিচ্ছেন বলেও জানান মমতা। তিন দিনেও সমস্যার সমাধান করতে না পারায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছেও ক্ষমা চেয়ে নেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা