সিকিমে ধসে পড়ল তিস্তা প্রকল্পের একাংশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ আগস্ট ২০২৪, ২০:৩৭
ভারতের সিকিম রাজ্যে প্রবল বর্ষণে তিস্তা প্রকল্পের একাংশ ধসে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে সিকিমে লাগাতার ধস নামছে। বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের জাতীয় সড়ক। তারই মধ্যে বালুতারে গত কয়েক দিনে সবচেয়ে বেশি ধস নেমেছে। এখানেই তিস্তা নদীর উপর বাঁধ দিয়ে ৫১০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎপ্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, এদিন পাহাড়ের উপর আচমকাই কম্পন হয়। এরপর হুড়মুড় করে গাছপালাসহ পাহাড়ের একটি অংশ ধসে পড়ে। সেই ধস গিয়ে পড়ে বাঁধের উপর। সাথে সাথে বাঁধের একটি অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। আর্তনাদ করতে করতে মানুষ পালাতে থাকেন।
সিকিমে তিস্তার উপর একাধিক বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও। এরপর পশ্চিমবঙ্গেও গাজলডোবায় তিস্তার উপর বাঁধ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বালুতরে যে জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে, সেটি নির্মাণ করেছিল ন্যাশনাল হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন। তিস্তার উপর স্টেজ ফাইভ বাঁধ তৈরি করেছিল তারা। সেই বাঁধটি এদিন ভেঙে যায়।
এর আগে গত বছর মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছিল চুংথাংয়ে তৈরি আরেকটি বাঁধ। এখনো সেই বাঁধ পুরোপুরি ঠিক করা যায়নি। এদিন যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গও তৈরি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
পরিবেশবিদ অরূপ গুহ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, 'এমন যে হবে সে আশঙ্কা ছিলই। পাহাড়ে এবং ডুয়ার্সে তিস্তার উপর একের পর এক প্রকল্প তৈরি হয়েছে। নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। পরিবেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখন বোঝা যাচ্ছে।'
ডয়চে ভেলেকে একটি সাক্ষাৎকারে অরূপ আগেই জানিয়েছিলেন, তিস্তার উপর তৈরি বাঁধগুলোর মেয়াদকাল পূর্ণ হতে চলেছে। অথচ সম্পূর্ণ প্রকল্পই এখনো রূপায়ন হয়নি। ফলে যেকোনো সময় ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এদিনের বিপর্যয় তারই এক ইঙ্গিত।
এদিকে এদিনের ঘটনার ফলে গাজলডোবায় চাপ পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ সিকিমে প্রবল বৃষ্টিও হচ্ছে। তিস্তায় এখন অনেক পানি। গাজলডোবা পানি ছাড়লে তার নিচের অংশে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে