২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মৃত স্বামীর বুকে মাথা রেখে মারা গেলেন স্ত্রীও

মৃত স্বামীর বুকে মাথা রেখে মারা গেলেন স্ত্রীও -

বাড়ির উঠানে এসে পৌঁছেছে স্বামীর লাশ। কান্নার রোল পুরো বাড়িতে। স্বামীর লাশ বাড়ির উঠানে রাখতেই কান্না করতে করতে ছুটে এলেন বৃদ্ধা। প্রতিবেশীরা তখন তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি স্পর্শ করলেন স্বামীর লাশ। কাঁদতে কাঁদতে মৃত স্বামীর বুকে মাথা রাখেন। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। তার পরই নিথর হয়ে গেলেন বৃদ্ধা।

প্রতিবেশীরা ভেবেছিলেন, শোকে মূর্ছা গেছেন তিনি। পানির ঝাপটা দেয়া হয়। কিন্তু অনেক চেষ্টাতেও জ্ঞান ফেরেনি বৃদ্ধার। সাথে সাথে ডাকা হয় চিকিৎসক। তিনি এসে পরীক্ষা করে দেখেন নাড়ির স্পন্দন স্তব্ধ। স্বামীর লাশ আসার মিনিট তিনেকের ব্যবধানে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার।

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানা এলাকায়। এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিজন এবং প্রতিবেশীরা।

জানা গেছে, প্রায় ৫০ বছরের দাম্পত্য শঙ্কর মণ্ডল ও নিয়তি মণ্ডলের। ৮৫ বছরের শঙ্কর ও ৬৮ বছরের নিয়তির এক ছেলে এবং দুই মেয়ে। সকলেই বিবাহিত। নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার তাদের। দীর্ঘ দিন ধরে বয়সজনিত অসুখে ভুগছিলেন শঙ্কর। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল তার। দিন কয়েক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিবারের লোকজন তাকে ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসা হয়েছিল কিন্তু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন বৃদ্ধ। মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় শঙ্করের। লাশ বের করে উঠানে রাখা হয়েছিল। শেষবারের মতো স্বামীকে ছুঁতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিয়তি। কিন্তু আর ওঠেননি।

মঙ্গলবার রাতেই দম্পতির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে গ্রামের শ্মশানে।

একই দিনে বাবা-মা হারিয়ে অনন্ত মণ্ডল বলেন, ‘আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাবা-মাকে কোনো দিন আলাদা থাকতে দেখিনি। সব কিছুতেই দু’জনের মতামত এক ছিল। কখনো ঝগড়া হয়নি দু’জনের। বাবা আমাকে বকছেন। কিন্তু মা এসে আমাকে আগলে রাখছেন, এমনটাও হয়নি। এমনই ছিলেন ওরা। মৃত্যুও ওদের আলাদা করতে পারল না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কষ্ট হচ্ছে। তবুও কোনো একটা জায়গায় যেন শান্তি পাচ্ছি।’
সূত্র : আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement