ভারতে দিন দিন বাড়ছে গরুর গোস্ত খাওয়ার প্রবণতা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ জুলাই ২০২৪, ১৫:২৭
ভারতের কেরালায় দিন দিন গরুর গোস্তের প্রতি টান বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি তথ্যে এমনটাই জানা গেছে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ এনভিস্টারস রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গেছে, ২০২০-২১ সালে কেরালায় বড় অংশের পরিবারের খাবার টেবিলে গরুর গোস্তই রাজত্ব করেছে। এমনকি মাটন এবং মুরগিও এর পরিমাণের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।
কেরালার মানুষ কতটা গরুর গোস্ত খেয়েছে
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ সালে কেরালায় প্রায় ১৪ লাখ ৩৪ হাজার গবাদি পশু জবাই করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে ওই বছর ১ লাখ ৫৩ হাজার টন গোস্ত খেয়েছিল কেরলবাসী। ২০১৮ সালের তুলনায় এই পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার টন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। হিসাব করে বলতে গেলে, তামিলনাড়ুর মানুষও এত গোস্ত খাননি। কারণ একই বছরে তামিলনাড়ুর পরিবারগুলোর পাতে ছিল ৫১ হাজার টন গোস্ত, যা কেরালার তুলনায় তিন ভাগ কম। আবার খ্রিস্টান মেঘালয়ের বাসিন্দারা ২০ হাজার টন গোস্ত খেয়েছেন, যা কেরালার তুলনায় সাত ভাগেরও কম।
কেরালায় মানুষ শুকরের গোস্তও অনেক বেশি খায়
কেরালায় গরুর গোস্তের পাশাপাশি শুকরের গোস্তের ব্যবহারও বেড়েছে। ২০১৮ সালে প্রায় ৯৮ হাজার শুকরের গোস্ত খাওয়া হয়েছিল। গোস্তের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার টন। ২০১৮ সাল থেকে ওই পরিমাণ আবার দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ২০২০-২১ সালে ২০ হাজার ৭০০ শুকরের গোস্ত খাওয়া হয়েছে। গোস্তের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার টন। ওই সময় পোল্ট্রি খরচ ১১ কোটি টাকা (১ লাখ ৭৮ হাজার টন) থেকে ১০ কোটি (১ লাখ ৬০ হাজার টন) নেমে এসেছিল। এসবেরই মাঝে মানুষ মটন খাওয়াও কমিয়ে দিয়েছে। ওই সংখ্যা জবাইও ১৬ লাখ ৯১ হাজার (২২ হাজার টন) থেকে কমে ১১ লাখে (১৫ হাজার টনে) হয়েছে।
বাংলার মানুষ কতটুকু গরুর গোস্ত খেয়েছে
তবে কেরালা, তামিলনাড়ু, মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলোর তুলনায় অনেক কম গরুর গোস্ত খেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। রিপোর্ট বলছে, ২০২০-২১ সালে ১৭ হাজার টন গোস্ত খেয়েছেন এ রাজ্যের মানুষ। যদিও বাংলার তুলনায় আরো কম অংক ঠেকেছে কর্ণাটক। ওই রাজ্যের মানুষ মোট ১২ হাজার টন গোস্ত খেয়েছেন।
মানুষ আজকাল এত বেশি গোস্ত খাচ্ছে কেন
কোট্টায়ামের এমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক এবং পরিচালক ডা. জিশা এমএস বলেছেন, জনসাধারণের মধ্যে একটি ধারণা রয়েছে যে সমস্ত সবজি কীটনাশক দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এর দরুণ টাটকা জীবাণুমুক্ত সবজি খাওয়ার জন্য, অনেকেই নিজে থেকে জৈব সবজি চাষ শুরু করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এর পিছনে সময় দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই মানুষ শিগগিরই এতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। তাছাড়া মানুষ এখন প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে আরো সচেতন হয়েছে। আর বেশিরভাগ মানুষই এখন কাজ করছেন। গোস্ত রান্না করা অত্যন্ত সহজ। তাই গোস্তের দিকে ঝুঁকছে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস