পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বোমা বিস্ফোরণে ৭ সৈন্য নিহত
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১০ জুন ২০২৪, ০৫:৪১
পাকিস্তানের প্রশাসন রোববার বলেছে, জঙ্গি-অধ্যুষিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এক সামরিক বহরকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনায় কমপক্ষে সাতজন সৈন্য নিহত হয়েছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে (কেননা গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয়ার অনুমতি নেই তার) এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ভিওএ-কে বলেন, লাকি মারওয়াত জেলায় বোমা বিস্ফোরণের পর উগ্রবাদীরা বন্দুক নিয়ে হামলা করেছিল। নিহত সৈন্যদের মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনও রয়েছেন।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা পরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করে এই মারাত্মক অতর্কিত হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, যানবহরের একটি গাড়ির কাছে এক বিস্ফোরক ডিভাইস বিস্ফারিত হয়।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, 'এই এলাকায় উপস্থিত সন্ত্রাসবাদীদের নির্মূল করতে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং এই জঘন্য কাজের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে।'
এই বোমা বিস্ফোরণের দায় কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে দাবী করেনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাকি মারওয়াত ও পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সীমান্ত-সংলগ্ন জেলাগুলোতে প্রায়শই বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা কায়দায় হানা দিয়েছে বিদ্রোহীরা।
এই সহিংসতার দায় দাবি করে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি, যাদেরকে বৈশ্বিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বলছেন, এই গোষ্ঠীর সদর দফতর রয়েছে আফগানিস্তানে। এরা অনেক বছর ধরে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে এবং কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীকে হত্যা করেছে।
প্রাদেশিক সন্ত্রাসবাদ দমন দফতর শনিবার জারি করা ষান্মাসিক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে টিটিপির নেতৃত্বাধীন হামলায় কমপক্ষে ৬৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও আরো ৮৫ জন আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের নেতারা বলে চলেছেন, প্রায় তিন বছর আগে তালেবান আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী ক্রিয়াকলাপ নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।
চীন ও পাকিস্তান এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে আফগানিস্তানের তালেবানকে 'সন্ত্রাসবাদ দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করতে ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দিতে' আহ্বান জানায়। এই আহ্বানের এক দিন পরই এমন হামলা। ইসলামাবাদের দাবি, কাবুলের তালেবান নেতারা টিটিপি নেতাদের আশ্রয় দিয়েছেন।
তালেবান কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে যে পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে হুমকি দিতে তারা কাউকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না। তবে, স্বতন্ত্র সমালোচকরা এই দাবির যাথার্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশিত জাতিসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান এখনো টিটিপির প্রতি 'সহানুভূতিশীল' এবং এই গোষ্ঠীকে অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করে তারা।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা