২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিজেপির সাথে দর কষাকষি শুরু নীতিশের

নরেন্দ্র মোদি এবং নীতিশ কুমার - সংগৃহীত

লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার সাথে সাথে ভারতীয় রাজনীতিতে এই মূহূর্তে সব থেকে আলোচিত নাম নীতিশ কুমার। লোকসভা নির্বাচনের পর নীতিশ তুমি কার? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতীয় রাজনীতিতে।

জেডিইউ যে বিজেপির দিকেই ঝুঁকে তা বলাই বাহুল্য। তবে নীতিশ কুমার বরাবরই রাজনীতিতে তার এবং তার দলের স্বার্থ ছাড়া কোনো কিছুই করেন না। আর হাতি গর্তে পড়েছে, এবার তো ব্যাঙে যা করার তাই করবে। বিজেপি ব্যাকফুটে যেতেই পাল্টা তাদের সাথে এবার দর কষাকষি শুরু করে দিলেন নীতিশ কুমার।

নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে আনতে, পাল্টা নীতিশ দাবি করতে চলছেন চার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ।

জনতা দল ইউনাইটেডের হাতে রয়েছে ১২ জন সাংসদ। অন্ধ্র প্রদেশের টিডিপিও সমর্থন দিতে চলেছে বিজেপিকে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করতে চলছেন নীতিশ কুমার।

জানা গেছে, কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ অর্থ বাড়ানোর জন্য দাবি জানাবেন তিনি, চাইবেন চার ক্যাবিনেট মন্ত্রণালয়। তাতেই শেষ নয়, পাশাপাশি বিহারে দ্রুত নির্বাচনেরও দাবি জানাতে চলছেন তিনি।

এবার নীতিশ কুমার যদি ১২টি আসনের জন্য এত কিছু চান, সেক্ষেত্রে চন্দ্রবাবু নাইডুও যে বসে থাকবেন না, তা বলাই বাহুল্য। নির্বাচনের আগেই অবশ্য জেডিইউকে জানানো হয়েছিল, তাদের তিনটি ক্যাবিনেট মন্ত্রণালয় এবং একটি রাষ্ট্রমন্ত্রী দেয়া হবে। এক্ষেত্রে আরো একটি রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ জেডিইউ বাড়াতে চাইছে, পাশাপাশি চারটি ক্যাবিনেট মন্ত্রণালয় চাইছে।

নীতিশ কুমারের দলের এক শীর্ষনেতা জানান, রেল মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, গ্রামোন্নয়নের মতো মন্ত্রণালয় তারা চান, যেন রাজ্যের জন্য উন্নতি করতে পারেন তারা।

গত ১৮ বছরে নীতিশ কুমারের সরকার ভালো উন্নতির চেষ্টা চলছে বিহারে, সেই উন্নয়ন জারি রাখতেই এতগুলো মন্ত্রণালয় চাইতে চলছেন তারা। পাশাপাশি লোকসভা ভোটে বিহারে জেডিইউ এবং বিজেপির জোটের ভালো ফলের পর নীতিশ কুমার চাইছেন, এই হাওয়াকে কাজে লাগিয়েই দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন সেখানে করতে, যেন জয়ের ব্যাপারে অনেকটা এগিয়ে থাকতে পারেন তারা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে নীতিশ কুমার আরজেডির হাত ছেড়ে বিজেপির সাথে ফের বিহারে সরকার গঠন করেছিলেন। এরপর থেকেই সেখানে দ্রুত বিধানসভা নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরব হয়েছে এনডিএ জোটের দলগুলো। তবে ২০২৫ সালে নভেম্বরে বিহারের বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আরো একটা দাবি করতে চলেছে বিজেপির থেকে, তা হলো আর্থিক বরাদ্দ রাজ্যের জন্য বৃদ্ধি করা। ওই রাজ্যে ৯৪ লাখ গরিব পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জেডিইউ, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে যেন সমস্যা না হয়, তাই আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে চলছেন তারা।

আগামী পাঁচ বছরের জন্য আড়াই লাখ কোটি রুপি বিহার সরকার, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর পরিবারের জন্য বরাদ্দ করেছে। সেই অর্থের জোগানে যেন টান না পড়ে এবং রাজ্যের পিছিয়ে পড়া মানুষ যাতে পর্যাপ্ত সাহায্য পান, সেই লক্ষ্যই অনড় জেডিইউ। বিহারকে যেন বিশেষ স্বীকৃতি দেয়া হয় উন্নয়নের জন্য, সেই আবেদনও করতে চলেছে নীতিশ কুমারের দল। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই দর কষাকষিতে এগিয়ে থাকতে পারলে অনেকটাই স্বস্তিতে থাকবে জেডিইউ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement