২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইরানের চাবাহার বন্দর পরিচালনার জন্য ১০ বছরের চুক্তি ভারতের

- ছবি : সিয়াসত ডেইলি

ইরানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দরে একটি টার্মিনাল পরিচালনার জন্য ১০ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। এর ফলে আঞ্চলিক সংযোগের পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সোমবার দুই দেশের মধ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় বলে জানিয়েছে প্রেস ট্রাস্ট ইন্ডিয়া।

চুক্তির মাধ্যমে প্রথমবারের কোনো বিদেশি বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিলো ভারত। এর প্রভাব পড়বে ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার বাণিজ্যেও। কারণ প্রতিবেশী পাকিস্তানকে বাইপাস করে সরাসরি মধ্য এশিয়ার বাজার ধরার চেষ্টা করছে ভারত।

সরকারি বিবৃতি অনুসারে, ভারতের বন্দর, নৌপরিবহন ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের উপস্থিতিতে ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) এবং ইরানের পোর্ট অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (পিএমও) মাধ্যমে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চাবাহার পোর্ট অপারেশনে দীর্ঘমেয়াদী দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ভারতের আইপিজিএল এবং ইরানের পিএমওর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তির ফলে ১০ বছরের জন্য চাবাহার বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প করবে ভারত। এই চুক্তির লক্ষ্য আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানো এবং ভারত, ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য সহজতর করা। ১০ বছরের দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং আস্থা বাড়াবে।’

তেল সমৃদ্ধ ইরানের দক্ষিণ উপকূলে সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত চাবাহার বন্দরটি ভারত ও ইরানের মধ্যে সংযোগ এবং বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। আঞ্চলিক বাণিজ্য, বিশেষ করে আফগানিস্তানের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপনের জন্য ভারত চাবাহার বন্দর প্রকল্পের জন্য জোর দিয়ে আসছে।

ভারত ও ইরান বন্দরটিকে আইএনএসটিসি প্রকল্পের মূল কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আইএনএসটিসি হলো ভারত, ইরান, আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, রাশিয়া, মধ্য এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য ৭ হাজার ২০০ কিমি দীর্ঘ পরিবহন প্রকল্প।

২০০৩ সালে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ খাতামির ভারত সফরের সময় বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। ২০১৩ সালে চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত।

২০১৫ সালে বন্দর নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় তেহরান ও দিল্লির মধ্যে। পরে ২০১৬ সালের ২৩ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইরান সফরের সময় চুক্তিটি কার্যকর করা হয়।

চাবাহার একটি সামুদ্রিক বন্দর। চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে ভারতের লক্ষ্য পাকিস্তানকে বাইপাস করে আফগানিস্তান এবং এর বাইরে মধ্য এশিয়ায় সরাসরি প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। গুজরাটের কান্ডলা বন্দর চাবাহার বন্দরের সবচেয়ে কাছের বন্দর। দূরত্ব মাত্র ৫৫০ নটিক্যাল মাইল। অপরদিকে চাবাহার ও মুম্বাইয়ের মধ্যে দূরত্ব ৭৮৬ নটিক্যাল মাইল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে চাবাহার বন্দরের জন্য ১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল।

সূত্র : সিয়াসত ডেইলি

 


আরো সংবাদ



premium cement