মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচন : 'ভারতবিরোধী' মাইজ্জুর দলের বিপুল জয়
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৫, আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৩
মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচনে 'ভারতবিরোধী' এবং 'চীনপন্থী' হিসেবে বিবেচিত মোহাম্মদ মুইজ্জুর দল বিপুলভাবে বিজয়ে হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী তারা পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
স্থানীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, মুইজ্জুর পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) ৯৩ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টে অন্তত ৬২টি আসন পাচ্ছে। আর প্রধান বিরোধী দল মালদ্বীপস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এমডিপি) পাচ্ছে ১৫টি আসন।
এই নির্বাচনকে মালদ্বীপে ভারত ও চীনের প্রভাব বিস্তারের লড়াই হিসেবে দেখেছিলেন অনেকে। মালদ্বীপের পার্লামেন্ট নির্বাচন বিশেষ গুরুত্ব ছিল আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে। ভারতীয় পক্ষ মনে করেছিল, ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতির ফলে নির্বাচনে মুইজ্জুর দল খারাপ করবে। কিন্তু বাস্তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। অনেকেই বলছেন, মুইজ্জুর চীন-প্রীতির দিকেই ঝুঁকে তার দলকে ভোট দিয়েছেন মালদ্বীপের নাগরিকেরা।
বিশ্বের অনেক দেশের নজর ছিল এই নির্বাচনের দিকে। গত সেপ্টেম্বরেই 'ভারতপন্থী' হিসেবে বিবেচিত ওই দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহম্মদ সোলিকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন মুইজ্জু। কিন্তু পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখে সোলির দল এমডিপি। ফলে পার্লামেন্টের ‘বাধায়’ বহু সিদ্ধান্তই কার্যকর করতে পারেনি মুইজ্জুর সরকার। তাই এই ভোটে জিতে তারা মালদ্বীপের পার্লামেন্টেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখতে চেয়েছিল।
কোনো কোনো কূটনৈতিক মহলের কথায়, এই নির্বাচন মূলত দু’টি কারণের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল। মুইজ্জুর ‘ভারতবিরোধী অবস্থান’ এবং ‘চীন ঘেঁষা নীতি’ মালদ্বীপের মানুষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য তা পরখ করার একটা পরিসর তৈরি করছিল এই নির্বাচন।
মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সাথে মালদ্বীপের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। ইতিমধ্যে চীনের সাথেও ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন মুইজ্জু। এমনকি, মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনাসদস্যদের সরানোর নির্দেশও দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার মালদ্বীপ থেকে সেনাসদস্যদের সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। এই আবহেই এসে পড়ে ওই দেশের পার্লামেন্ট নির্বাচন। মালদ্বীপের বিরোধী দলগুলো মুইজ্জু সরকারের ভারতবিরোধী অবস্থানের বিরোধিতা করে প্রচারও করে। কিন্তু কোনো কিছুই মইজ্জুর দলের পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পথে বাধা হতে পারেনি।
সূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা