বিয়ের আগের রাতে জানা গেল হবু বরের এইডস, যা করল কনেপক্ষ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ মার্চ ২০২০, ১৪:৩৯
রোববার ছিল বিয়ে। পাত্র-পাত্রী দুই বাড়িতেই ছিল শেষবেলার তোড়জোর। কিন্তু পাত্র যে এইচআইভিতে (এইডস) আক্রান্ত তা টের পায়নি পাত্রীপক্ষ। পাবেই বা কী করে? বিষয়টি যে গোপন রাখা হয়েছিল। তবে শেষেমেশ এইচআইভি নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও পুলিশের উদ্যোগে বিয়ের আগের রাতে হাটে হাঁড়ি ভাঙল। ভেঙে গেল বিয়ে। পাত্রীর পরিবার ধন্যবাদ জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও পুলিশকে।
এমন ঘটনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের। পাত্রের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের জেটিয়ায়। পাত্রীর বাড়ি নদিয়ার কল্যাণীতে। পাত্র এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করেন। গত আট বছর ধরে তিনি এইচআইভিতে আক্রান্ত। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু রোগের কথা গোপন রেখেই কল্যাণীর মেয়েটির সঙ্গে তার বিয়ের ঠিক হয়।
কনের বাড়িতে ছিল সাজসাজ রব। মেয়ের বাড়িতে আত্মীয়স্বজনরাও চলে এসেছিলেন। কিন্তু শনিবার রাতে আচমকা এক ফোনে বন্ধ হয়ে গেল বিয়ে। পাত্র এইচআইভি আক্রান্ত জেনে কনের বাড়ির মাথায় হাত! মেয়ে লগ্নভ্রষ্টা হোক, ক্ষতি নেই। এ বিয়ে কিছুতেই দেওয়া যাবে না। সিদ্ধান্ত নিতে কালক্ষেপ করেনি পাত্রীর পরিবার। সেই সঙ্গে তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটিকে। মূলত যাদের উদ্যোগে বিষয়টি জানতে পারা যায়।
কী ভাবে প্রকাশ্যে এল গোটা বিষয়টি? শনিবার বিকেলে বারাসাতের একটি স্বেছাসেবী সংস্থার দপ্তরে ফোন আসে। পাত্রের যেখানে বাড়ি সেখান থেকেই কেউ একজন, সম্ভবত কোনো পড়শি ফোন করে এইচআইভি আক্রান্ত হবু বরের কথা জানান। খবর পাওয়া মাত্র ব্যারাকপুরের মহাকুমাশাসক আবুল কালাম আজাদ ইসলাম মারফৎ বীজপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন সংস্থার সদস্যরা। রাতেই সকলে পুলিশকে নিয়ে পাত্রের বাড়ি পৌঁছয়।
সংস্থার এক সদস্য সুজয় মোদক বলেন, ‘প্রথমে ছেলেটি স্বীকার না করলেও পরে চাপে পড়ে সব কথা মেনে নেয়। যেহেতু ও নিয়মিত ওষুধ খায়, তাই ওকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে ও একজন এইচআইভি আক্রান্ত।’
রাতেই পুলিশ মেয়ের বাড়িতে ফোন করে থানায় দেখা করতে বলে। পাত্রীর বাড়ির লোক থানায় এসে বিষয়টি জানতে পারেন। তারপরেই মেয়েটির পরিবার বিয়ে বন্ধ করে দেয়। এ ভাবে এইচআইভি লুকিয়ে বিয়ে করতে আসায় বেজায় চটেছেন কন্যাপক্ষের লোকজন। বিয়ের জন্য পাত্রপক্ষকে দেওয়া নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও কয়েক ভরি সোনার গয়না ফেরত চান মেয়ের বাবা। ছেলের বাড়ি তা ফেরতও দিয়েছে।
এইচআইভি আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও এভাবে তা গোপন করে বিয়ে করতে যাওয়ার ঘটনায় হতবাক সকলে। অনেকেই থানায় অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন। তবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি পাত্রের পাশেই দাঁড়িয়ে তার কাউন্সলিংয়ের ব্যবস্থা করছে।
সংস্থা মনে করছে, ছেলেটির সঙ্গে কথা বলা দরকার। অন্যদিকে, জানা গেছে রোববারই কল্যাণীর মেয়েটির সঙ্গে কাঁকিনাড়ার একটি ছেলের বিয়ে হয়েছে। এই সময়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা