১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আবারো প্রশংসিত জেসিন্ডার মমত্ব-মাতৃত্ব

জেসিন্ডা আরডার্ন - ছবি : সংগৃহীত

গত দুই মাসে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বিশ্ব নেতৃত্বে নিজের জন্য পৃথক একটি স্থান তৈরি করেছেন। সম্প্রতি নতুন করে আবারো প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি জেসিন্ডা গিয়েছিলেন একটি সুপারমলে। সেখানে লাইনে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এমন সময় সামনে দাঁড়ানো এক নারী বিল দিতে গিয়ে দেখেন তিনি তার পার্স আনেন নি। এ সময় তিনি খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। কারণ তার সাথে থাকা দুই বাচ্চাও কান্না জুড়ে দিয়েছিল। সেই অবস্থায় জেসিন্ডা নিজেই ওই নারীর বিল মিটিয়ে দেন।

আজ বৃহস্পতিবার তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি এ বিষয়ে বলেন, আমি ওই নারীর সাহায্যে এগিয়ে গিয়েছি। কারণ ওই নারী একজন মা, আর আমিও তো একজন মা।

বিষয়টি অবশ্য আগেই সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। কারণ ওই নারীর এক বান্ধবী হেলেন বারনেস বিষয়টি আগেই সেখানে শেয়ার করেন। তিনি বলেন, সুপারমার্কেটে আমার বান্ধবী কেনাকাটা করার পর সে দেখতে পায় তার পার্স আনেনি। সে সময় তার দুই শিশু সন্তানও কাঁদছিল। তখন আরডার্ন এসে তার পক্ষ থেকে বিল পরিশোধ করেন।

হেলেনের এ ঘটনা সেখানে ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই আরেকবার নতুন করে জেসিন্ডা আরডার্নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে পড়ে।

আটত্রিশ বছর বয়সী আরডার্ন গত জুনে এক কন্যা সন্তানের মা হন। দায়িত্বরত অবস্থায় মা হওয়ার দিক দিয়ে জেসিন্ডা বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী। নেভে নামের ওই শিশুকে নিয়েই তিনি নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে অংশ নিয়েছিলেন।

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ খুবই প্রশংসিত হয়। তিনি যেমন সাথে সাথেই মুসলমানদের পাশে এসে দাঁড়ান, তাদের ব্যথায় সহানুভূতিশীল হন, ঠিক তেমনি সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। একই সাথে হামলায় ব্যবহৃত সব ধরনের অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

সব মিলিয়ে তার পদক্ষেপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয় পুরো বিশ্ব। এমনকি নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও এমন একজন নেতা চাই।

 

আরো পড়ুন : রাসূলের (সা.) উদ্ধৃতি দিয়ে যে বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২২ মার্চ ২০১৯, ১২:৫৮
গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের হামলার শোক প্রকাশ করে আজ আল নুর মসজিদের কাছে হ্যাগলি পার্কে কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হয়েছেন। সেখানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নও। তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে তাদের উদ্দেশে বলেন, নিউজিল্যান্ড আপনাদের দুঃখে ব্যাথিত। আমরা সবাই এক।

মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা বলেন, পারস্পরিক উদারতা, সমবেদনা এবং সহানুভূতিতে বিশ্বাসীরা একটি শরীরের মতো। যখন শরীরের কোন একটি অংশ ব্যথা পায় তখন পুরো শরীরই সেই ব্যথা অনুভব করতে পারে।

মন্ত্রী ও নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীর ভেতরে অবস্থান করা আরডানের মাথায় কালো পোশাক ও হিজাব পরা ছিলেন। এমনকি হ্যাগলি পার্কের নারী পুলিশরাও একটি লাল গোলাপসহ কালো হিজাব পরেছিলেন।

এসময় আল নুর মসজিদের ইমাম জামাল ফাওদা ফাওদার ভাষণ সকলের মনকে ভালবাসায় পরিপূর্ণ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে নিউজিল্যান্ডে ঘটে যাওয়া হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় পুরো নিউজিল্যান্ড যেন মাথা নত করেছে। গত শুক্রবার আমি এ মসজিদটিতে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন এক সন্ত্রাসীর চোখেমুখে ঘৃণা ও ক্ষোভ দেখেছি। এতে অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪২ জন।

আজ একই স্থানে দাঁড়িয়ে যখন চারপাশে তাকিয়েছি, তখন নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের চোখে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পেয়েছি। এতে আরও লাখ লাখ মানুষের হৃদয় ভরে গেছে, যারা আমাদের সঙ্গে এখানে শারীরিকভাবে নেই, কিন্তু আত্মীকভাবে আছেন।

সন্ত্রাসী আমাদের দেশকে শয়তানি মতাদর্শ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে, যা বিশ্ববাসীকে হতাশ করে দিয়েছে।

কিন্তু এসব কিছু সত্ত্বেও আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে নিউজিল্যান্ড হচ্ছে একেবারে অবিচ্ছেদ্য। বিশ্ব ভালোবাসা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখতে পারে।

আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে কাউকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না।

শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের শয়তানি মতাদর্শ এই প্রথম আমাদের আঘাত হানেনি। এ ঘটনা আমাদের কঠিন আঘাত দিয়েছে। এতগুলো লোককে হত্যা সাধারণ কিছু নয়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সংহতি অসাধারণ।

হতাহতদের পরিবারগুলোকে আপনাদের ভালোবাসা, তাদের মৃত্যুকে বিফলে যেতে দেয়নি। তাদের রক্ত আশার বীজে পানি ঢেলে দিয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসী ইসলামের সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছেন। আর আমাদের ঐক্যের সৌন্দর্যও।

আমাদের মধ্য থেকে সর্বোত্তম মানুষগুলো সবচেয়ে ভালো দিনে, সেরা স্থানে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছিলেন।

তারা কেবল ইসলামের শহীদ নন, তারা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন।

আপনাদের হারিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ঐক্য ও তেজ জোরদার হয়েছে। আপনাদের চলে যাওয়া কেবল নিউজিল্যান্ডকেই সজাগ করেনি, বিশ্ব মানবতাকেও জাগিয়ে তুলেছে।

এখানে এ জমায়েতে বৈচিত্র্যের এই ছায়াগুলো আমাদের ঐক্যবদ্ধ মানবিতার ইচ্ছারই প্রকাশ। একটি উদ্দেশে হাজার হাজার মুসল্লি এখানে জমায়েত হয়েছেন, তা হচ্ছে- ঘৃণামুক্ত থাকা। কেবল ভালোবাসাই আমাদের উদ্ধার করতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
পাকিস্তানের করাচি থেকে আসা জাহাজটির কন্টেইনারে যা যা আছে সাবিনাদের জন্য ১ কোটি টাকা পুরস্কার বিওএ ও সেনাবাহিনীর নোয়াখালীতে ইবনে সিনা হাসপাতালের ২৫তম শাখার উদ্বোধন ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে মাস্কের দ্বারস্থ ইরান ‘সংস্কার শেষে একটি অর্থবহ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে’ আ.লীগ নেতার পরকীয়া প্রেমিকার আত্মহত্যা সশস্ত্রবাহিনীর বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা ৬০ দিন বাড়লো নোয়াখালীতে বাসের ধাক্কায় শিশু নিহত ঘুরে দাঁড়িয়ে মালদ্বীপকে হারালো বাংলাদেশ মণিপুরে অপহৃত ৬ জনের লাশ উদ্ধার, প্রতিবাদে মন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে হামলা পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে উগ্রবাদীদের হামলায় ৭ সৈন্য নিহত

সকল