কাশ্মিরে নিষিদ্ধ জামাত-ই-ইসলামি, ২০০ কর্মী আটক, বাড়ি সিল
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ মার্চ ২০১৯, ১৫:০৩, আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯, ১৫:০৯
কাশ্মিরের পুলওলামায় আত্মঘাতী হামলার জেরে চলমান উত্তেজনার মধ্যে সেখানে জামাত-ই-ইসলামিকে (জেইআই) পাঁচ বছরের জন্য বেআইনি ঘোষণা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত চারদিনে দলটির দুই শতাধিক কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এসবের ধারাবাহিকতায় স্থানীয় প্রশাসন এই দলের বেশ কিছু নেতাকর্মীর ঘর সিল করে দিয়েছে। জম্মু-কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু বাড়ি ইতোমধ্যে সিল করে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট জেইআইয়ের সঙ্গে যুক্ত সব প্রতিষ্ঠান এবং সম্পত্তি সিল করার আদেশ জারি করে।
নয়াদিল্লির অভিযোগ, জেইআইয়ের সঙ্গে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এবং জম্মু ও কাশ্মিরে স্বাধীনতাকামী আন্দোলন বেড়ে যাওয়ার পেছনে তাদের হাত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ৪৪ জন সিআরপিএফ সদস্য নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে নিরাপত্তা সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে বেআইনি ক্রিয়াকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে এ সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জম্মু-কাশ্মিরের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল - পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) কেন্দ্রীয় সরকারের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। পিডিপির প্রধান মেহবুব মুফতি বলেন, ‘জামাত-ই-ইসলামিকে নিয়ে সরকারের এত অস্বস্তি কেন? মৌলবাদী হিন্দু গোষ্ঠীগুলো ভুল তথ্য ছড়িয়ে পরিস্থিতিকে বিকৃত করে ফেলেছে।
সরকারের এ পদক্ষেপের মাধ্যমে কাশ্মিরিদের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকেই নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাধারণ সম্পাদক আলি মোহাম্মদ সাগরও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি তুলে তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্ত রাজ্যের শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
এদিকে, গত পাঁচ দিন ধরে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ জম্মু ও কাশ্মিরে সশস্ত্র ও স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার মামলায় মিরওয়াইজ উমর ফারুকের বাড়িসহ সাতটি জায়গায় স্বাধীনতাকামীদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। এনআইএ'র দাবি, মিরওয়াইজ উমর ফারুকের বাসস্থান থেকে উচ্চ প্রযুক্তির ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা পাওয়া গিয়েছে।
এছাড়া সেখান থেকে বিভিন্ন স্বাধীনতাকামী দলের লেটার হেড এবং পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তির জন্য ভিসার সুপারিশ করা চিঠিও উদ্ধার হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
আরো পড়ুন : কাশ্মিরে স্বাধীনতাকামী নেতাদের বাড়িতে তল্লাশী
নয়া দিগন্ত অনলাইন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:১৪
ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী নেতাদের বাড়িতে তল্লাশী চালিয়েছে। স্বাধীনতাকামীদের আন্দোলনের পেছনে আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি খুঁজে বের করতে এ অভিযান চালায়।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটায় তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গিয়ে অভিযান চালায়। এতে পাকিস্তানে জয়েশ-ই মোহাম্মদের ঘাঁটিসহ বেশ কিছু স্থানে হামলা চালিয়ে বেশ ক্ষতিসাধন করে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতের এ অভিযানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ২০০-৩০০ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, এতে কোনো ক্ষতিক্ষতি হয়নি।
এ ঘটনার পরপরই এনআইএ কর্মকর্তারা শ্রীনগরে মিরওয়াইজ ফারুক, ইয়াসিন মালিক, সাবির সাহ, আশরাফ সেহারি, জাফর ভাট এবং সইদ আলি গিলানির ছেলে নইম গিলানির বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযান চালানোর আগে স্থানীয় পুলিশ ও সিআরপিএফের সদস্যরা ওইসব এলাকা ঘিরে ফেলে।
এনআইএ জানায়, হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে ঠিক কী পরিমাণ অর্থ পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে প্রবেশ করছে, এবং সেই সব কাজে কারা সাহায্য করছে তা বের করতেই মূলত এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
ইয়াসিন মালিককে গত শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়। আর সাবির শাহ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে দিল্লির তিহার জেলে আটক আছেন
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার এক সপ্তাহ পর ভারত সরকার কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী নেতাদের নিরাপত্তা উঠিয়ে নেয়। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই বাড়ি তল্লাশির এ ঘটনা ঘটে। সপ্তাহের শেষ দিকে ভারত সরকার কাশ্মিরে আধা-সামরিক বাহিনীর ১০০টি কোম্পানি সেখানে মোতায়েন করে।