২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ভারত ও চীনের সম্পর্কের বরফ এ বছর গলতে শুরু করেছে

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি - ছবি : ভয়েস অব আমেরিকা

বিতর্কিত হিমালয় সীমান্তে প্রায় সাড়ে চার বছরের সামরিক দ্বৈরথের পর ভারত ও চীনের মধ্যে ২০২৪ সালে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। বিতর্কিত অঞ্চল থেকে উভয় দেশই তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করছে।

তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, এশিয়ার দুই মহাশক্তিধর দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে এখনো সবচেয়ে বড় বাধা হলো পারস্পরিক অনাস্থা।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়ন জয়শঙ্কর চলতি মাসে সংসদে বলেন, ‘সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে নয়াদিল্লি ও বেইজিং-এর মধ্যে সম্পর্ক খানিকটা উন্নতির দিকে গেছে। তবে, তিনি সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফেরানোর ওপর বেশি জোর দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে পূর্ব-শর্ত হলো সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখা।’

বিতর্কিত অঞ্চলে উভয় দেশের সৈন্যরা মুখোমুখি সঙ্ঘাত থেকে পিছু হটলেও হাজার হাজার সৈন্য এ শীতে পঞ্চমবারের মতো এখনো হিমালয়ে রয়েছে এবং সীমান্ত বরাবর কামান ও যুদ্ধবিমান এখনো মোতায়েন রাখা হয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে দুর্বলভাবে চিহ্নিত ও নির্ধারিত ৩৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত অঞ্চল নিয়েই বিবাদ ও বিতর্ক। ২০২০ সালে সীমান্তে খণ্ডযুদ্ধের পর অস্থিরতা ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় ও চারজন চীনা সৈন্য নিহত হয়েছিল। পাঁচ বছর পর গত সপ্তাহে সীমান্ত বিতর্ক নিয়ে উচ্চ-পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মধ্যে বেইজিং-এ বৈঠক হওয়ার পর উভয়পক্ষই সুনিশ্চিত করেছে যে, তারা সমাধান সূত্র খুঁজতে দায়বদ্ধ যে সমাধান ‘ন্যায্য, যৌক্তিক ও উভয়পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য।’

ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা আবার যাতে তিব্বতে যেতে পারেন এবং পার্বত্য গিরিপথ দিয়ে যাতে বাণিজ্য পুনরায় শুরু করা যায় সেজন্য দুই দেশ সম্মত হয়েছে।

অক্টোবরে রাশিয়ায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মধ্যে বৈঠকের পরই সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লি জিয়ান গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদদাতাদের বলেন, ‘পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে ও মত-পার্থক্য দূর করতে ভারতের সাথে কাজ করতে বেইজিং প্রস্তুত।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অর্থনৈতিক সমন্বয়ের চাকা এবার দ্রুত গড়াবে। চীনের নজর ভারতের ক্রমবর্ধমান বাজারের দিকে এবং নয়াদিল্লি চীন থেকে আরো পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী কারণ ভারত উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠতে চাইছে। সীমান্ত সঙ্কট সত্ত্বেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বিকাশ লাভ করেছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের সংঘর্ষের পরিণতিতে চীনের বিনিয়োগ ও ভিসা দেয়ার ওপর কড়াকড়ি চাপিয়েছিল ভারত।

রিও ডি জেনিরোতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি উড়ান চলাচল পুনরায় চালু করার (অতিমারির সময় এই উড়ান চলাচল বাতিল করা হয়েছিল) এবং চীনের নাগরিকদের ভিসা পাওয়া সহজতর করতে অনুরোধ করেছেন।

সূত্র : ভিওএ


আরো সংবাদ



premium cement