২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মণিপুরে হু হু করে ঢুকছে মিয়ানমারের পাচার হওয়া অস্ত্র!

মণিপুরে হু হু করে ঢুকছে মিয়ানমারের পাচার হওয়া অস্ত্র! - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের মণিপুর রাজ্যে সংঘাতে ক্রমেই বাড়ছে মিয়ানমার থেকে পাচার হওয়া অস্ত্রের সংখ্যা। সদ্য গত ১৩ ডিসেম্বর আসাম রাইফেলস একাধিক সামগ্রী উদ্ধার করেছে মণিপুরের পূর্ব ইম্ফলে উগ্রবাদীদের গা ঢাকা দেয়ার গোপন ডেরা থেকে। সেখানে স্টার লিঙ্কের অ্যান্টেনা আর রাউটারও উদ্ধার হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই সমস্ত জিনিসপত্র মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে মণিপুরে ঢুকছে।

উল্লেখ্য, সাধারণত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এমএ৪ অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করে থাকে। সেই এমএ ফোর অ্যাসল্ট রাইফেল সদ্য মণিপুর থেকে উদ্ধার হয়েছে। জানা যাচ্ছে, সেই রাইফেল মিয়ানমারে তৈরি হয়। সেনাবাহিনীর তরফে অফিশিয়ালরা বলছেন, গত ৫ থেকে ৬ মাস ধরে তারা মিয়ানমারে তৈরি এমন বহু অস্ত্র মণিপুর থেকে উদ্ধার করে চলেছেন। কখনো তা উগ্রবাদীদের কাছ থেকে উদ্ধার হচ্ছে, আবার কখনো তা উগ্রবাদীদের গা ঢাকা দেয়ার ডেরা থেকে বেরিয়ে আসছে।

তবে অস্ত্রের বেশিভাগেরই ধরন দেখে তা মিয়ানমার থেকে পাচার হওয়া অস্ত্র বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু যে অস্ত্র তা নয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পোশাক এমনকি বুলেট প্রুফ ভেস্টও মণিপুরের বুক থেকে উদ্ধার হচ্ছে। শুধু গত সপ্তাহেই মণিপুরের বুকে এমন ৭টি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে, যেখানে ‘মেড ই বার্মা’ বা 'বার্মায় উৎপন্ন' কথাটি লেখা রয়েছে। উদ্ধার হয়েছে মিয়ানমারে তৈরি সেদেশের সেনাবাহিনীর এমএফোর রাইফেল ও একে ৪৭ রাইফেল রয়েছে।

ভারতের সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার বলছেন, 'এখানে ফোর্স যে সমস্ত দেশীয় পিস্তল উদ্ধার করে তা ভারতে তৈরি সাধারণত হয় না। একজন সাধারণ নাগরিক এটিকে আলাদা করতে চিনে নিতে সক্ষম নাও হতে পারেন। কিন্তু যেহেতু আমরা মিয়ানমারের তৈরি জিনিসগুলি পুনরুদ্ধার করতে অভ্যস্ত, তাই আমরা পার্থক্য করতে পারি।'

তিনি বলছেন, মিয়ানমারের দেশীয় পিস্তলগুলোর 'গ্রিপ' বা ধরার জায়গা আলাদা হয়। অনেক পিস্তলে লেখাও থাকছে ‘মেড ইন বার্মা’। ফলে সেনাবাহিনীর অফিসারদের সেগুলো চিনে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই মণিপুরের চান্ডেলে স্টারলিঙ্কের অ্যান্টেনা আর রাউটার উদ্ধার হয়েছে। একটি ‘কর্ডন অ্যান্ড সার্চ’ অপারেশনে উদ্ধার হয়েছে এগুলো। সেখানে একে ৪৭ রাইফেলও উদ্ধার হয়েছে।

ভারতের এক সিনিয়র অফিসার বলছেন,' যদিও অস্ত্রাগার থেকে একে-৪৭ রাইফেল লুট করা হয়েছিল এবং তার অনেকগুলো উদ্ধার করা হয়েছে, আমাদের বাহিনী মিয়ানমারের রাইফেলগুলো উদ্ধার করছে।'

দুই ধরনের রাইফেলের পার্থক্য নিয়ে তিনি বলছেন,'আমরা রাইফেলের সিরিজের উপর ভিত্তি করে মিয়ানমার-তৈরি অস্ত্রকে আলাদা করতে পারি। ভারতে নিরাপত্তা বাহিনী বা পুলিশ যেগুলো ব্যবহার করে সেগুলোর বেশিভাগই আইএ দিয়ে শুরু করে সিরিয়াল নম্বর থাকে, তবে মিয়ানমার থেকে পাচার করাগুলোর একটি ভিন্ন সিরিজ রয়েছে।'

গত ১৯ মাসে, মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে, বাহিনী শত শত বুলেটপ্রুফ ভেস্ট এবং সামরিক পোশাক উদ্ধার করেছে। বলা হচ্ছে, দুই গোষ্ঠীই মণিপুরে সাধারণ মানুষের নজর এড়াতে ‘সীমান্তের ওপার থেকে প্রচুর পরিমাণে এই ইউনিফর্ম (সেনাবাহিনী) পেয়েছে।’

সেনাবাহিনীর সদস্যরা বলছেন, এমনকি উদ্ধার হয়েছে সেনাবাহিনীর বুটও।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement