১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পাকিস্তান-বাংলাদেশ সখ্য নিয়ে ভারতে উদ্বেগ, ভীত ভারতীয় গোয়েন্দারা

পাকিস্তান-বাংলাদেশ সখ্য নিয়ে ভারতে উদ্বেগ, ভীত ভারতীয় গোয়েন্দারা - ছবি : আনন্দবাজার পত্রিকা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পালাবদলের পরে পরিস্থিতি বদলেছে। পাকিস্তানের সাথে সখ্য বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে নতুন সরকার। পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসার নিয়ম সহজ করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানও বাংলাদেশী নাগরিকদের আরো বেশি সংখ্যায় ভিসা দেবে বলে জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রমাদ গুণছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা।

তাদের অনেকেই দাবি করেছেন, পাকিস্তানবিরোধী হওয়া সত্ত্বেও হাসিনা সরকারের আমলে এ রাজ্যে বাংলাদেশী নানা সংগঠন প্রভাব বিস্তার করেছিল। জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), আল কায়দা ইন্ডিয়া সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস)-সহ একাধিক সংগঠনের আস্তানা পাওয়া গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। যার পিছনে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের মদদও মিলেছিল। এবার সহজে ভিসা পাওয়ার সূত্র ধরে তাদের প্রভাব আরো বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সখ্য বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তার কারণ। কারণ, তাতে দেশের পূর্ব এবং পশ্চিম, দু’দিকেই এক মনোভাবাপন্ন প্রতিবেশী থাকবে। তাছাড়া, এতদিন বাংলাদেশে নানা সংগঠনের আঁতুড়ঘর থাকলেও ওই দেশের গোয়েন্দা এবং সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় করে তার মোকাবিলা করার সুযোগ ভারতের ছিল। কিন্তু সরকারিভাবে বাংলাদেশে পাকিস্তানের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে ভারতের পক্ষে তা সমন্বয় সাধন কার্যত অসম্ভব হবে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সাবেক সেনাকর্তাদের একাংশ সমাজমাধ্যমে যা বলছেন, তা-ও যথেষ্ট চিন্তার বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে। ওই ধরনের বক্তব্য সংগঠনগুলোকে মদদ জোগাতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং গোয়েন্দাদের একাংশ বলছেন, ভিসা নিয়ে ক্রমাগত বাংলাদেশে আসতে পারে পাকিস্তানি নানা সংগঠনের সদস্যরা। ভারতের পূর্ব দিকেও নিজেদের সংগঠনের শাখা তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশী তরুণদের মধ্যে আরো ভারত-বিদ্বেষী মনোভাব উস্কে দিতেও পারে।

গোয়েন্দাদের একাংশ এ-ও বলছেন, ভারত-পাক সীমান্তে বিএসএফ থাকে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন থাকে সেনাবাহিনী। স্পর্শকাতর দেশ হওয়ায় নজরদারিও অনেক বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা কম থাকায় এবং ভৌগোলিক কারণে নজরদারি তুলনায় কম। তাই পাকিস্তান থেকে ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে পারে সংগঠনগুলোর নেতারা। তারপর সুযোগ নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়তে পারে এ রাজ্যে। যদিও গোয়েন্দাদের অনেকে এ-ও বলছেন যে সাম্প্রতিক পালাবদলের পরে বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি অনেক বাড়ানো হয়েছে। তাই সীমান্ত গলে ঢোকা ততটা সহজ না-ও হতে পারে। তবে এরই মধ্যে রাজ্যে জাল পাসপোর্ট ও সরকারি পরিচয়পত্র তৈরির একটি চক্র ধরা পড়েছে। তা-ও চিন্তা বাড়িয়েছে গোয়েন্দাদের। ওই চক্রের ওসব সংগঠনের সাথে যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement

সকল