০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মণিপুরে এখনো বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, বরাকে পুলিশ মোতায়েন

মণিপুরে এখনো বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, বরাকে পুলিশ মোতায়েন - ছবি : সংগৃহীত

অশান্তির আবহে ফের ভারতের মণিপুর সরকার জানিয়ে দিলো, এখনই রাজ্যে চালু হচ্ছে না মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। এর আগে সরকারি নির্দেশে বলা হয়েছিল, রোববার থেকেই ইন্টারনেট পরিষেবা স্বাভাবিক হতে চলেছে। কিন্তু ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করে রোববার নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে সরকার। তাতেই বলা হয়েছে, আপাতত আগামী বুধবারের আগে চালু হচ্ছে না ইন্টারনেট। রাজ্যের ৯টি জেলায় বাড়ানো হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ।

রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকাটি জারি করেছে বলা হয়েছে, মণিপুরের ৯টি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার মেয়াদ আরো দু’দিনের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং, বিষ্ণুপুর, থৌবল, চূড়াচাঁদপুর, জিরিবাম, ফেরজওল এবং কাংপোকপি জেলায় আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর থেকেই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে ওই জেলাগুলোতে।

অন্য দিকে, মণিপুরের পরিস্থিতি প্রতিবেশী রাজ্য আসামের ওপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। রোববার এমনটাই জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এ জন্য বরাক উপত্যকায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে সহিংসতা-বিধ্বস্ত মণিপুরের কোনো প্রভাব অসমে না পড়ে। উল্লেখ্য, আসামের কাছাড় জেলার বরাক উপত্যকা মণিপুরের জিরিবাম জেলার লাগোয়া। আর সম্প্রতি জিরিবাম জেলাকে ঘিরেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মণিপুরে।

গত মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন আরো বহু মানুষ। চলতি মাসে মণিপুরের জিরিবামে কুকি উগ্রবাদী এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, ওই সময় একদল কুকি উগ্রবাদী মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। দিন কয়েক পরে অপহৃত ছয়জনের মৃতদেহ নদীতে ভেসে আসে। প্রকাশ্যে আসে শিউরে ওঠার মতো ময়নাতদন্তের রিপোর্টও।

জিরিবামের এই ঘটনার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় মণিপুরে। বিচার চেয়ে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কারফিউ। ইন্টারনেট পরিষেবার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তার মাঝেই আবার গত ১৬ নভেম্বর রাজ্যের বেশ কয়েকজন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। হামলার চেষ্টা হয় মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক ভিটেতেও। এর পর গত ১৯ নভেম্বর পরিস্থিতি সামান্য নিয়ন্ত্রণে আসায় মণিপুরের পাঁচ জেলায় কারফিউ আংশিক শিথিল করা হয়। চালু করা হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা আপাতত বন্ধই রয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement