২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কানাডায় নিজ্জর হত্যা : এবার আঙুল মোদির দিকে

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি - সংগৃহীত

কানাডার আলোচিত ঘটনা খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে আগেই আঙুল তুলেছিলেন কানাডা সরকারের এক মন্ত্রী। এবার দেশটির সংবাদমাধ্যমের দাবি, খালিস্তানপন্থী নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা জানতেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।

জাস্টিন ট্রুডো সরকারের বরাত দিয়ে এই দাবি করেছে কানাডার একটি সংবাদমাধ্যম।

এই খবরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে দিল্লি। তবে এই ষড়যন্ত্রে মোদির সরাসরি যুক্ত থাকার প্রমাণ যে কানাডার গোয়েন্দাদের হাতে নেই তাও স্বীকার করেছে কানাডার সংবাদমাধ্যমটি।

কানাডা সরকারের বরাত দিয়ে ওই সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, নিজ্জরকে হত্যার ছক কষেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রী মোদি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে ছকের কথা জানানো হয়েছিল।

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘সাধারণত সংবাদমাধ্যমের খবর নিয়ে আমরা মন্তব্য করি না। কিন্তু কানাডা সরকারের সূত্র উদ্ধৃত করে যখন একটি সংবাদমাধ্যম এমন মন্তব্য করে তখন সেই ভিত্তিহীন মন্তব্যকে অবহেলার সাথেই খারিজ করা উচিত।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, ‌‘ভারতের বদনাম করার এই ধরনের চেষ্টার ফলে কানাডার সাথে দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কে আরো খারাপ হবে।’

কানাডার সংবাদমাধ্যমটির দাবি, তাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে যে অমিত শাহ, জয়শঙ্কর এবং ডোভাল মোদিকে না জানিয়ে এমন অভিযানে নামবেন না।

তবে মোদির সরাসরি যুক্ত থাকার প্রমাণ কানাডার গোয়েন্দাদের হাতে নেই বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

খালিস্তানপন্থী নেতাদের আশ্রয় দেয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের সাথে কানাডার টানাপড়েন চলছিল। গত বছরে হরদীপ সিংহ নিজ্জরসহ বেশ কয়েকজন খালিস্তানপন্থী নেতা কানাডায় নিহত হন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো দাবি করেন, এই ঘটনার সাথে ভারত সরকারের জড়িত থাকার তথ্য তাদের হাতে আছে। ভারতের পাল্টা দাবি, কানাডার ভোটে জিততে খালিস্তানপন্থীদের সমর্থন প্রয়োজন ট্রুডোর। তাই তিনি ভিত্তিহীন দাবি করে ভারতকে নিশানা করছেন। এরপরে অটোয়ায় নিযুক্ত তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার এই তদন্তের আওতায় রয়েছেন বলে দাবি করে ট্রুডো সরকার।

এর জেরে হাইকমিশনারকে সরিয়ে নেয় দিল্লি। ভারত ছাড়তে হয় দিল্লিতে নিযুক্ত কানাডার শীর্ষ কূটনীতিককেও। তারপরে কানাডার পার্লামেন্টের কমিটিতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন জানান, খালিস্তানিদের হত্যার পেছনে অমিত শাহের হাত রয়েছে।

এ তথ্য মার্কিন একটি সংবাদমাধ্যমকে জানানোর দায়ও স্বীকার করেন তিনি।

জবাবে ভারত জানায়, মরিসনের বক্তব্য অসত্য। দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের ফল ভালো হবে না।

অমিত শাহ সম্পর্কে কানাডার বক্তব্য উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। সেখানে খালিস্তানপন্থী গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার চেষ্টায় ভারত সরকারের কর্মী বিকাশ যাদব জড়িত বলে অভিযোগ করেছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বিকাশ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর কর্মী। দিল্লির পাল্টা দাবি, বিকাশ এখন আর ভারত সরকারের কর্মী নয়। বরং এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের মামলায় সাবেক আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য বিকাশকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement