২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ভারত-চীন কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ!

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই - ছবি : সংগৃহীত

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে মুখোমুখি বসলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যা মেটার পর এটিই প্রথম বৈঠক দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী সরানোর বিষয়ে কথা হয়েছে উভয়ের। ২০২২ সালের জুন মাসে গালওয়ানে ভারত ও চীনা সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। সামরিক স্তরে একাধিকবার আলোচনা হয়েছিল দু’দেশের। শেষে চলতি বছর অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলনের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকে সীমান্ত থেকে সেনাবাহিনী সরানোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছয় দুই দেশ।

ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা-সংলগ্ন অঞ্চল থেকে সেনাবাহিনী সরানোর কাজ কত দূর এগিয়েছে, সে বিষয়ে জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে আলোচনা হয় দু’দেশের মন্ত্রীর। বৈঠকের পর জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কিভাবে আরো উন্নত করা যায়, সে বিষয়েও কথা হয়েছে তাদের। পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। চীনও চাইছে ভারতের সাথে সম্পর্ককে আরও মসৃণ করতে। দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক শুরুর আগে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রও সেই আভাস দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, চীন ভারতের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত। পারস্পরিক ভরসা আরো বাড়াতেও উৎসাহী চীন।

ভারতের পক্ষ থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চীনা ফৌজের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছিল যে উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চীনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনাসদস্য। সেখান থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে কিছুটা শীতলতা তৈরি হয়েছিল।

গালওয়ান-ঘটনার পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। শেষে গত মাসে সীমান্ত থেকে সেনাবাহিনী সরানোর বিষয়ে ভারত ও চীন ঐকমত্যে আসে। চার বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থায় ইতি পড়ে। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশই দেপসাং, ডেমচক এলাকা থেকে সেনাসদস্যদের সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গত চার বছরে যত অস্থায়ী সেনাছাউনি তৈরি হয়েছিল, সেগুলোও সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দু’দেশই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেছে। সেনাসদস্যদের সরানোর চুক্তির পর এ বছরের দীপাবলিতে চীনা ফৌজের সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে মিষ্টি বিনিময় করতেও দেখা গিয়েছিল।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement