মণিপুরে বিজেপির পর এবার কংগ্রেসের দফতরেও অগ্নিসংযোগ, বিক্ষোভ থামাতে পুলিশের গুলি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৪১
ভারতের মণিপুরে বিজেপির পর এবার কংগ্রেসের দফতরেও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। তাদের থামাতে বিক্ষোভ লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। সোমবার (১৮ নভেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। উত্তেজনা, হিংসা এবং অশান্তির নতুন ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে গোষ্ঠীহিংসার প্রথম পর্বে মোটের উপরে শান্ত থাকা জিরিবাম জেলা। রোববার ওই জেলার বাবুপাড়া এলাকায় উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে কুড়ি বছর বয়সী এক যুবকের।
জিরিবাম থানা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বিজেপি এবং কংগ্রেসের দু’টি দলীয় দফতরেও আগুন লাগিয়েছে উত্তেজিত জনতা। উন্মত্ত জনতা দুই দলের দফতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল এবং অন্য আসবাবে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর আগে রাজধানী ইম্ফলে বিজেপি দফতরে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল।
গত সোমবার জিরিবামে আসাম সীমানা লাগোয়া অঞ্চল থেকে অপহরণ করা হয়েছিল ছয়জনকে। অভিযোগের তীর ছিল কুকি গোষ্ঠীর দিকে। দিনকয়েক পর নদীতে ছয়টি লাশ ভেসে আসে, যা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। নদীতে লাশ মেলার পর থেকেই দিকে দিকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে মেইতেই গোষ্ঠী। শনিবার রাতে রাজ্যের ছয় এমপির বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এমনকি ইম্ফল পূর্ব জেলার লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়িতে হামলার চেষ্টাও হয়। তাদের নিরস্ত করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়।
রোববারও জিরিবাম জেলার জিরি নদীতে লাশ ভাসতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একটি ছিল এক ষাটোর্ধ্ব নারী। অপরটি বছর দুয়েকের এক শিশুর। তার লাশটি মুণ্ডহীন ছিল। রোববারই মেইতেই গোষ্ঠী মণিপুর সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি অভিযুক্তদের ধরা না হয়, বিক্ষোভ আরো তীব্র হবে। রোববার রাত থেকে জিরিবাম জেলায় একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটতে থাকে। হিংসার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মণিপুর পুলিশ। তারা সকলেই ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম এবং বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা। রাজধানী ইম্ফলসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জারি করা হয়েছে কার্ফু। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও।
কার্ফুর মধ্যেই রোববার রাতে জিরিবামের অন্তত পাঁচটি গির্জা, স্কুল, পেট্রল পাম্প এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। কোথাও কোথাও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগও উঠেছে। কে বা কারা এই হামলা করেছে, তা অবশ্য এখনো স্পষ্ট নয়।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা