১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ভারতের জম্মু-কাশ্মির বিধানসভায় বিধায়কদের মধ্যে ধস্তাধস্তি

জম্মু-কাশ্মির বিধানসভায় বিধায়কদের মধ্যে ধস্তাধস্তি -

ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরকে আবার ৩৭০ ধারার অধীনে নেয়ার প্রস্তাবকে ঘিরে বিধানসভায় ধ্বস্তাধস্তি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাকতে হয়েছে মার্শাল।

বিধানসভা নির্বাচনের পর জম্মু ও কাশ্মির বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই বিধায়কদের মধ্যে সংঘর্ষ হলো। সেটাও হলো ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনা নিয়ে। এই ৩৭০ অনুচ্ছেদের জন্যই কাশ্মির কিছু বিশেষ অধিকার ভোগ করত।

নরেন্দ্র মোদি সরকার ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে। বুধবার বিজেপির বিরোধের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মির বিধানসভায় ধ্বনিভোটে একটি প্রস্তাবে গৃহীত হয়েছে। সেখানে ৩৭০ ধারা আবার চালু করার দাবি করা হয়েছে। সে জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারকে আলোচনা করার কথাও বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়রকরা। বিজেপির বিধায়ক সুনীল শর্মা যখন বলছিলেন, তখন বিধায়ক শেখ খুরশিদ একটা ব্যানার নিয়ে ওয়েলে নেমে পড়েন। খুরশিদ হলেন বারামুলার সাংসদ ইঞ্জিনিয়র রশিদের ভাই। সেই ব্যানারে ৩৭০ ধারা ও সংবিধানের ৩৫ এ অনুচ্ছেদ ফিরিয়ে আনার দাবি ছিল। রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবিও করা হয়েছিল।

ওই সময় বিজেপির কয়েকজন বিধায়ক ওয়েলে নেমে পড়েন। একজন খুরশিদের হাত থেকে ব্যানারটি ছিনিয়ে নিতে যান। অন্যরা ব্যানারটি ছিঁড়তে চান। ওই সময় পিপলস কনফারেন্সের সাজ্জাদ লোন সেদিকে চলে যান। বিধায়কদের মধ্যে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয়। কিছক্ষণ ধরে গোলমাল চলতে থাকে। স্পিকার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন। মার্শাল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সাজ্জাদ লোনের অভিযোগ
সাজ্জাদ লোন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়করা খুরশিদকে বাঁচাতে আসেননি। আমরা তার সাথে নির্বাচনে লড়েছি। কিন্তু কাশ্মিরি হিসাবে আমি যখন দেখেছি, তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তখন তাকে বাঁচাতে গেছি। আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি।’

তার অভিযোগ, বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব তিনি সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের মুখপাত্র টুইট করে বলেন, ‘আমরা বিজেপির সঙ্গী। এসব বাজে কথা অনেক হয়েছে।’

বিজেপির অভিযোগ
বিরোধী নেতা সুশীল শর্মা সাংবাদিকদের বলেছেন, ওই প্রস্তাব যতক্ষণ প্রত্যাহার না করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা বিধানসভা চালাতে দেবেন না। বিজেপি বিধানসভার বাইরেও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে।

বিজেপির অভিযোগ, স্পিকার ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতার মতো ব্যবহার করছেন। তিনি স্পিকারের মতো নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছেন না।

দিল্লিতে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের সমালোচনা করে বলেছেন, তারা জম্মু ও কাশ্মিরে সংবিধানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছে।

ওমর আবদুল্লার বক্তব্য
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলেন, পিডিপি প্রথমে একটা প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ঠিক থাকলে তারা নিশ্চয়ই ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাথে আলোচনা করত।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মিরের মানুষ ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত সমর্থন করে না।

বুধবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের আনা প্রস্তাব ধ্বনিভোটে গৃহীত হয়।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement