২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় নেতা বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে হত্যা

সালমান ও শাহরুখের মাঝে বাবা সিদ্দিকি - ছবি : সংগৃহীত

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের বান্দ্রায় এনসিপি নেতা জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে দুজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

শনিবার রাতে নির্মল নগরের কোলগেট গ্রাউন্ডের কাছে তার বিধায়ক পুত্র জিশান সিদ্দিকির অফিসের বাইরে গুলি করে খুন করা হয় সিদ্দিককে। দুই থেকে তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে খবর পুলিশ সূত্রে।

শনিবার রাতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, তিন আসামির মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তৃতীয়জন বর্তমানে পলাতক। তিনি বলেন, 'মুম্বাই পুলিশ প্রধান আমাকে জানিয়েছেন, দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজন উত্তরপ্রদেশের, অন্যজন হরিয়ানার। তৃতীয় হামলাকারী পলাতক থাকলেও পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করছে।

এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকী কে ছিলেন?
মহারাষ্ট্রের পশ্চিম বান্দ্রা কেন্দ্র থেকে বাবা সিদ্দিকি বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন তিনবার। ১৯৯৯, ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে পরপর ভোটে জিতেছেন কংগ্রেসের টিকিটে। ৪৮ বছর থাকার পর কংগ্রেস ত্যাগ করেছেন সিদ্দিকী। চলতি বছরের শুরুতে কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়ে সম্প্রতি অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেন বাবা সিদ্দিকী।

তিনবারের বিধায়ক বাবা সিদ্দিকি ২০০০ সালের গোড়ার দিকে কংগ্রেস-এনসিপি সরকারের সময়, বাবা সিদ্দিক খাদ্য ও নাগরিক সরবরাহ, শ্রম, খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এবং ভোক্তা সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

বলিউডে প্রভাবশালী
সালমান-শাহরুখ ঘনিষ্ঠ এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে এক কথাতেই ছুটে আসে গোটা বলিউড।
বিনোদন জগতের মানুষদের সাথে প্রতিনিয়ত উঠাবসা ছিল তার। বিপুল সম্পত্তির মালিক বাবা সিদ্দিকি। একটা সময় নিজেও অভিনয়ের দুনিয়ার মানুষ ছিলেন। তবে রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন। সালমান থেকে শাহরুখ, ক্যাটরিনা থেকে প্রীতি জিন্টা- বাবা সিদ্দিকির ইফতার পার্টিতে হাজিরা দিতেন বলিউডের প্রথম সারির তারকারা।

বাবা সিদ্দিকি, যার পার্টির আমন্ত্রণ কখনো উপেক্ষা করতেন না শাহরুখ-সালমানও! শত কাজ ফেলেও ছুটে আসতেন তার এক ডাকে। যখনই কোনো তারকা বিপাকে পড়েছেন, সাহায্য নিয়েছেন বাবা সিদ্দিকির থেকেই। শুধু শাহরুখ-সালমান নয়, সঞ্জয় দত্তের সাথেও রয়েছে খুব ঘনিষ্ঠতা। এদিনও বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুর খবর পেয়েই লীলাবতি হাসপাতালে ছুটেছেন সঞ্জু বাবা।

সালমান-শাহরুখের পুর্নমিলন হয় বাবা সিদ্দিকির হাত ধরে
দীর্ঘসময় মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল সালমান-শাহরুখের। ২০০৮ সাল নাগাদ ক্যাটরিনার জন্মদিনের পার্টিতে ঘটা একটা ছোট্ট ঘটনা থেকে শুরু মনমালিন্যের জেরেই চিড় ধরেছিল বলিউডের করণ-অর্জুনের সম্পর্কে। অবশেষে সব দূরত্ব ভুলে ২০১৪ সালে বাবা সিদ্দিকীর ইফতার পার্টিতে সালমানকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন শাহরুখ। যে ছবি আজও গাঁথা রয়েছে দুই তারকার ভক্তদের হৃদয়ে। এরপর বহুবার বাবা সিদ্দিকির পার্টিতে একফ্রেমে দেখা গেছে দুই খানকে।

কিভাবে মিটল দূরত্ব?
বাবা সিদ্দিক তখন বান্দ্রা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। বলা হয় যে ইন্ডাস্ট্রির অন্দর থেকেই সিদ্দিকিকে সালমান ও শাহরুখের মধ্যে মধ্যস্থতা করার জন্য অনুরোধ করেছিল এবং রাজনৈতিক নেতা সূক্ষ্ম উপায় করেছিলেন বন্ধুদের মধ্যে ঝামেলা মেটানোর। ইফতার পার্টিতে শাহরুখের পাশে বসেছিলেন সালমানের বাবা, বর্ষীয়ান চিত্রনাট্যকার সেলিম খান।

পার্টিতে আমন্ত্রিত সলমন টেবিলের কাছে আসার আগে শাহরুখ, সেলিম খানের সাথে গল্প করছিলেন। সালমান হেঁটে আসতেই শাহরুখ উঠে দাঁড়ান এবং একে অপরকে আলিঙ্গন! ব্যাস, এক চুটিকেই বলিউডের দুই সুপারস্টারে বড় বিরোধ নিমেষে শেষ হয়।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


আরো সংবাদ



premium cement