২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার নিলেন অনুরা কুমারা দিসানায়েকে - সংগৃহীত

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে যখন ভারত সফর করেছিলেন, ওই সময় কেউ অনুমান করতে পারেনি যে মাত্র সাত মাসের মধ্যে তিনি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে তার বৈঠক হয়েছিল। পরে সন্তোষ প্রকাশ করে জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জানান, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো মজবুত করার বিষয়ে দু’জনের মধ্যে ‘সন্তোষজনক’ আলোচনা হয়েছে।

এই বামপন্থী নেতাই এখন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) এবং ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি)-এর জোটের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তিনি।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাত্র ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন অনুরা কুমারা দিসানায়েকে। তবে এইবার নির্বাচনের প্রথম দফায় দিসানায়েকের ঝুলিতে ছিল ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছিলেন ৩২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ভোট। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট গণনা শুরু হয় এবং ৫৫ বছর বয়সী দিসানায়েকেকে জয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরে অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানান শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাইকমিশনার সন্তোষ ঝা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তরফ থেকেও তাকে অভিনন্দন বার্তা জানানো হয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়ে মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথমে নীতি’ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রীলঙ্কার একটা বিশেষ স্থান রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী মোদির অভিনন্দনের জবাবে শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি, আপনার সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দু’দেশের সহযোগিতা আরো জোরদার করার জন্য আপনার যে প্রতিশ্রুতি, তার পাশে রয়েছি। দু’দেশ এবং সমগ্র অঞ্চলের নাগরিকদের স্বার্থে আমাদের এই সহযোগিতা।’

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা যখন ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছিল, তখন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসার এক সরববিরোধী হিসেবে বিবেচনা করা হতো দিসানায়েকেকে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল একজন নেতা হিসেবে নিজেকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করেছিলেন তিনি। এর ফলে একে একে শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের একটি বড় অংশ তার সমর্থনে এগিয়ে আসেন।

এখন প্রশ্ন হলো বামপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত অনুরা কুমারা দিসানায়েকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ায় ভারতের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে?

শ্রীলঙ্কার বিদেশ নীতিতে ভারতের অবস্থান
রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পরে, অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সামনে একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেই তালিকায় আছে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট, দুর্নীতি এবং জাতিগত উত্তেজনার মতো অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ।

এর পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার বিদেশ নীতিকে তিনি কোন দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এবং তার নিরিখে ভারতের সাথে দেশটির সম্পর্কই বা কোন পথে যাবে সেটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

মতাদর্শের দিক থেকে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি ডানপন্থী। অন্যদিকে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে বামপন্থী আদর্শের নেতা। সাধারণত বামপন্থী সরকারকে মতাদর্শগতভাবে চীনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে মনে করা হয়। এই পরিস্থিতিতে দিসানায়েকে কি ভারতের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়াবেন?

অধ্যাপক হর্ষ ভি পন্থ দিল্লির ‘অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের স্টাডিজ অ্যান্ড ফরেন পলিসি’ বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান।

তার মতে, দিসানায়েকে এবং জেভিপি (জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা) অতীতে কিছুটা ‘ভারতবিরোধী’ ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই নীতিতে পরিবর্তন দেখা গেছে।

অধ্যাপক পন্থ বলেন, ‘তার দল জেভিপি ঐতিহ্যগতভাবে ভারতবিরোধী। শুরু থেকেই তারা সে দেশে ভারতের প্রভাবের বিরুদ্ধে। ইতিহাস ঘাঁটলে আপনি দেখতে পাবেন ওরা বহুবার ভারতের বিরুদ্ধে সহিংস প্রতিবাদ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় ভারতের প্রভাব কমানোর বিষয়টা বরাবরই দিসানায়েকের কাছে একটা বড় অ্যাজেন্ডা। তবে আমার মনে হয় সাম্প্রতিক বছরে দিসানায়েকের বক্তব্য কিছুটা ভারসাম্যপূর্ণ এবং চিন্তাশীল হয়েছে। তিনি সুশাসন, ভারসাম্য ও জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। এই বিষয়টা তার সরকারের নজরে থাকবে বলে আমার মনে হয়। বিশেষত আইএমএফের (ইন্টারন্যাশানাল মানিটারি ফান্ড বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) প্যাকেজের পরবর্তী প্রভাব ও সমাজে তার ফল সে কথা কথা মাথায় রেখে। এই সমস্ত ইস্যুই কিন্তু নির্বাচনে তার জয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

অধ্যাপক পন্থ জানান, ২০২২ সালে মহিন্দা রাজাপাকসার সরকার যেভাবে পড়ে গিয়েছিল এবং রনিল বিক্রমাসিংহে ক্ষমতায় এসেছিলেন, ওই সময় শ্রীলঙ্কাকে যেভাবে সাহায্য করেছিল ভারত সে কথা মাথায় রেখেই নতুন সরকারকে কাজ করতে হবে।

চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজের অধ্যাপক গ্ল্যাডসন জেভিয়ারও মনে করেন, ভারতের তরফে করা আর্থিক সহায়তার কথা নতুন প্রেসিডেন্ট স্মরণে রাখবেন।

বিবিসির তামিল সার্ভিসের সংবাদদাতা মুরলীধরন কাশী বিশ্বনাথনের সাথে কথোপকথনের সময় অধ্যাপক জেভিয়র বলেন, ‘কিছু ভারতীয় প্রজেক্টের সমালোচনা করেছেন তিনি (অনুরা কুমারা দিসানায়েকে)। কিন্তু তিনি কখনো চীনের সমালোচনা করেননি। তাই ধরে নেয়া যায় যে তার মধ্যে এক ধরনের পক্ষপাতিত্ব রয়েছে। তবে শ্রীলঙ্কা এখনো অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছে। তাদের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন কিন্তু এখনো অব্যাহত থাকবে। যখন শ্রীলঙ্কায় গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা গিয়েছিল, তখন ভারত তৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। আমি মনে করি, নতুন প্রেসিডেন্ট এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন। আমার মনে হয় না, তিনি ভারতকে বের করে দিয়ে ওই দেশেকে আরো কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলবেন।’

জাফনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহিলন কাদিরগামার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করেন। তার মতে, এই মুহূর্তে জেভিপি কোনো দেশের সাথে খুব নৈকট্য যেমন রাখবে না, তেমনই খুব দূরত্বও তৈরি করবে না।

বিবিসি তামিল সার্ভিসের সংবাদদাতা মুরলীধরন কাশী বিশ্বনাথনের সাথে কথোপকথনের সময় তিনি বলেন, ‘বিষয়টা হলো জনতা বিমুক্তি পেরামুনার কিন্তু সেই পুরনো জেভিপি নেই। এটা একটা মধ্যপন্থী দলে পরিণত হয়েছে। তবে রনিল বিক্রমাসিংহের মতো তিনি ভারতের পক্ষে অতটা অনুকূল হবেন কিনা তা বলা সম্ভব নয়। আমি মনে করি, কোনো দেশের সাথে তিনি খুব ঘনিষ্ঠ বা বৈরী হবেন না। তিনি বুঝবেন এখন কঠোর অবস্থান নেয়ার সময় নয়।’

ভারত ও চীনের মধ্যে ভারসাম্য
ভারত ও চীন দু’দেশই কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কার সাথে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক সঙ্কটের লড়াই করা শ্রীলঙ্কাকে সহায়তা করেছে দু’দেশই।

এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো শ্রীলঙ্কার ভৌগোলিক অবস্থান। বাণিজ্য ছাড়াও সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রীলঙ্কার সমুদ্রসীমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এখন এই প্রসাথে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার ভারত ও চীনের সাথে কিভাবে ভারসাম্য বজায় রাখবে?

এর উত্তরে অধ্যাপক পন্থ বলেন, ‘রাজাপাকসের সরকার চীনের প্রতি খুব ঝুঁকে ছিল এবং শ্রীলঙ্কাকে তার ফলও ভোগ করতে হয়েছিল। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময় চীনকে কোথাও সমর্থন করতে দেখা যায়নি। কিন্তু ভারত সহায়তা করেছিল। সুতরাং আমি মনে করি, এটা একদিক থেকে একটা মানদণ্ড হয়ে উঠেছে। সবাই ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়, তারাও তাই করবে। কিন্তু কোনো একটা দেশের প্রতি কি তারা বেশি ঝুঁকবে? এটা একমাত্র সে দেশের ভবিষ্যৎ নীতিমালা থেকেই জানা সম্ভব।’

অধ্যাপক পন্থ বলেন, ‘আপনি যদি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে থাকেন, তাহলে ভারত এবং চীন দু’টিই এমন দেশ যাদের উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। একই সাথে ভারতকে এখন আগের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও বিবেচনা করা যাবে না যেমনটা তাদের দল দেখত। ভারত এখন সক্ষম, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং পরিসংখ্যান অনুসারে শিগগিরিই তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে। তাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে কিন্তু এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এগিয়ে যেতে হবে।’

অধ্যাপক পন্থ এবং অধ্যাপক জেভিয়ার দুজনেই অনুরা কুমার দিসানায়েকের সাম্প্রতিক ভারত সফরের কথাও উল্লেখ করেছেন।

অধ্যাপক পন্থ বলেন, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে যখন ভারতে এসেছিলেন, ওই সময় আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তিনি। এই বিষয়ে ভারতের ‘সংবেদনশীলতার’ কথা মাথায় রাখা উচিত বলেও জানান।

তিনি বলেন, ‘এখন দেখার বিষয় হলো তারা কিভাবে এই (ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্কে সমতা বজায় রাখা) বিষয়টাকে বাস্তবায়ন করে। কারণ দিনের শেষে দু’জনের (দু’দেশের) সাথেই ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে তাদের।’

অধ্যাপক জেভিয়ার বলেন, ‘২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সাথে ভারতের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল এবং তাকে কিন্তু একেবারে উপেক্ষা করা হয়নি। এই প্রথমবার জেভিপির সংস্পর্শে এসেছিল ভারতীয় পক্ষ।’

এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রফেসর পন্থ মালদ্বীপের উদাহরণ টেনে এনেছেন।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও মালদ্বীপের সাথে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয় বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টা পুরোপুরি বদলে যায়।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এখানেও আমরা একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পাব। আমার মনে হয় না, আজকের পরিস্থিতিতে আপনি ভারতকে রাগিয়ে শ্রীলঙ্কায় কাজ করতে পারবেন।’

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ তার নির্বাচনী প্রচারের সময় ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়েছিলেন। মুইজুকে চীন-পন্থী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মালদ্বীপের সাথে ভারতের সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত মিলেছে।

কয়েকদিন আগে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রধান মুখপাত্র হিনা ওয়ালিদ জানিয়েছিলেন যে প্রেসিডেন্ট মুইজ শিগগিরই ভারত সফর করবেন।

বায়ু শক্তি প্রকল্পের বিরোধিতা
তবে নির্বাচনের আগে দিসানায়েকে যেভাবে ভারতীয় ব্যবসায়ী আদানি গোষ্ঠী পরিচালিত বায়ু শক্তি প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গ স্মরণে রেখে তার দলকে ‘ভারত-বিরোধী’ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে একটা রাজনৈতিক বিতর্কের সময় দিসানায়েকে আদানি গোষ্ঠীর বায়ু শক্তি প্রকল্পকে বাতিল করার অঙ্গীকার করেছিলেন। এই প্রকল্প ‘শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্বের ক্ষয়’ বলেও সেই সময়ে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

জাফনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহিলন কাদিরগামার জানান, শুধুমাত্রে এই একটা ইস্যুর ওপর ভিত্তিতে সম্পর্কের বিষয়ে কোনো উপসংহারে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ‘একটা ভারতীয় প্রকল্প বলেই যে আদানির বায়ু প্রকল্প নিয়ে বিরোধিতার, বিষয়টা তেমন নয়। শুধু জেভিপি নয়, অন্যরাও এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক কারণে এই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে।’

নতুন সরকারের কাছে ভারতের প্রত্যাশা
অধ্যাপক পন্থ মনে করেন, ভারতকে আগে বুঝতে হবে শ্রীলঙ্কার নতুন সরকারের অর্থনৈতিক নীতি কী এবং তারা কিভাবে সরকার চালায়।

তিনি বলেন, ‘তিনি যদি এমন অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে আসেন, যাতে শ্রীলঙ্কা স্থিতিশীল থাকে, তাহলে তা ভারতের জন্যই মঙ্গলজনক হবে। ভারতের জন্য সমস্যা হলো, যখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো অর্থনৈতিক দুর্দশার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে তখন ভারতকে সেখানে সহায়তা করতে হয়।’

একই সাথে ভারতের জন্য যে বিষয়গুলো সংবেদনশীল সেই দিকে শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার নজর রাখছে কিনা, সেটাও ভারত লক্ষ্য রাখবে।

অধ্যাপক পন্থ বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ভৌগোলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরেই সেদিকে নজর রয়েছে চীনের। সেখানকার অবকাঠামো ও বন্দরে শ্রীলঙ্কার অংশ কতটুকু, আর চীনের অংশই কতটুকু, এই সব বিষয় ভারত খতিয়ে দেখবে। একইসাথে লক্ষ্য রাখবে যে নতুন সরকার কিভাবে এই বিষয়গুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে।’
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement