১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

অন্তর্ভুক্তি বনাম বিচ্যুতি

-

মতৈক্য আর মতানৈক্যের মাঝখানে বিভেদের যে দেয়াল সেটি ভালো ও মন্দ- উভয়ের জন্যই সঙ্কট সৃষ্টি করে। ভালোকে ভালো থাকতে না দেয়া আর মন্দকে আরো মন্দ হতে বাধ্য করার ক্ষেত্রে এই সঙ্কটের অবদান সুবিদিত। উভয় সঙ্কটে পড়ে শুভ চিন্তারা শুভ উদ্যোগের পাড়া থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে সরে পড়ে। আর নানান ধরনের অশুভ আচার-আচরণ পাড়া মাত করে ফেরে। ষোলো শতকের ব্রিটিশ বণিক ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা স্যার টমাস গ্রেশাম (১৫১৯-৭৯) অনেক বুঝেশুনে এই অবস্থাকে Bad money drive away good money from the market বলে বর্ণনা করেছেন। ভালো আর মন্দকে একসাথে এক পাড়ায় বসবাস করতে দিয়ে ভালোর আলোয় মন্দকে কলুষমুক্ত হতে সাহায্য করা যেখানে উচিত সেখানে ভালোকে পত্রপাঠ মাঠ থেকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিয়ে ওয়াকওভারের পরিবেশ সৃষ্টি করা সভ্যতার সঙ্কট সৃষ্টির জন্য অতি উপাদেয় উপাদান।

সমাজ ও অর্থনীতিতে টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতির অভীপ্সা আকাক্সক্ষায় সব পক্ষ ও অনুষঙ্গকে নিরবচ্ছিন্ন নিঃশর্ত ঐকমত্যে পৌঁছানোর তাগিদে সবারই বিচ্যুতির পরিবর্তে অন্তর্ভুক্তির অবয়বে আসার অবকাশ রয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতির উন্নয়ন ভাবনায় সমন্বিত উদ্যোগের প্রেরণা ও মতবাদ হিসেবে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি (Financial inclusion) তথা সার্বিক সামাজিক অন্তর্ভুক্তির (Social Integration) দর্শন বিশেষ বিবেচনা ও ব্যাপক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসছে। Social Business-এর ধারণা দ্রুত দৃষ্টিসীমার মধ্যে এসে যাচ্ছে। এমনকি এই কিছু দিন পর্যন্ত পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় অংশীদারিত্ব হিসেবে শ্রমের মূল্যয়ন সরাসরি স্বীকৃত না হলেও এটি ক্রমেই অনিবার্য উপলব্ধিতে পরিণত হতে চলেছে যে, কোনো উৎপাদন ও উন্নয়ন উদ্যোগে ভূমি, শ্রম ও পুঁজি ছাড়াও মালিক-শ্রমিক সব পক্ষের পারস্পরিক সম্মান-সমীহের সমন্বিত ও পরিশীলিত প্রয়াস প্রচেষ্টাই সব সাফল্যের চাবিকাঠি। মানবসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমের দ্বারা দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়াসকে সমাজবিজ্ঞানীরা করপোরেট কালচারের প্রেরণা হিসেবেও শনাক্ত করেন। স্থান-কাল-পাত্রের পর্যায় ও অবস্থানভেদে উন্নয়ন ও উৎপাদনে সবাইকে একাত্মবোধের মূল্যবোধে উজ্জীবিত করার প্রেরণা হিসেবে শিল্পোন্নত বিশ্বে অন্তর্ভুক্তিকরণের দর্শনকে ব্যাপক বিবেচনা করা হচ্ছে।

অনেক উন্নয়নশীল দেশের জাতীয় নেতৃত্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশ্নে অন্তর্ভুক্তির চেতনা গোটা দেশবাসীকে ভাববন্ধনে আবদ্ধকরণের উপায় ও উপলক্ষ হিসেবে দেখাতে চাইছেন। দারিদ্র্য নিরসন থেকে শুরু করে সমাজে সম্পদের বণ্টনবৈষম্য দূরীকরণ এবং এমনকি সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও সবাইকে দল-মত, ধর্ম-লিঙ্গ, অর্থনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে এক সামিয়ানার নিচে শামিল করতে অন্তর্ভুক্তিকে মন্ত্র হিসেবে মানতে ও মানাতে আগ্রহ উদ্যোগের অভাব নেই।

শুধু সবল সক্ষম সর্বভুক ভোক্তা ভজনের দ্বারা নয়- তৃণমূল পর্যায়ে সঞ্চয়ের অভ্যাস বাড়িয়ে, বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে দেশের অর্থনীতিকে স্বয়ম্ভর করার মন্ত্র মানতে ও মানাতে মধ্যস্বত্বভোগীর উপদ্রব এড়িয়ে, প্রতারণা-প্রবঞ্চনার পথ মাড়িয়ে, আপব্যয় অপচয় রোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। বিয়ের উৎসবে সামাজিকতার দোহাই দিয়ে নানান অনুষ্ঠানের নামে অর্থ অপচয়ে সংযমী হওয়ার যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে যেকোনো উদীয়মান ও স্বনির্ভরতা প্রত্যাশী সমাজে। দিনের বেলাতেও রাস্তার বাতি জ্বালানো, ট্যাপের মুখ খোলা রেখে পানি অপচয়ের মতো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ক্ষতির দিকটি বিদ্যুৎ আর পানি উৎপাদনে ব্যয়ের পরিমাণ বিচেনায় এনে বুঝতে হবে। বৃক্ষরোপণে শুধু ‘দিবস’ আর ‘উচ্চমহলের নির্দেশমতে’ পালনের সীমারেখায় না বেঁধে একে সহজাত বোধ, উপলব্ধি ও কর্তব্যজ্ঞানে আনার অনিবার্যতা অনস্বীকার্য। প্রযুক্তি গবেষণায় এই মনোনিবেশ আবশ্যক হবে যে, কিভাবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার আর পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব। অফিস আর বাসাবাড়ির করিডোর, বাথরুম, টয়লেটে, রাস্তায় বিজলি বাতির অপরিণামদর্শী ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য মনোভাব, ভঙ্গি আয়ত্তে আনতে, একে পরিশীলিত ও পরিমিতি বোধের আওতায় আনতে প্রযুক্তিজ্ঞানকে কাজে লাগানোর প্রতিযোগিতা গোটা বিশ্বে জোরেশোরে শুরু হয়ে গেছে।

মানবসম্পদ সৃষ্টি, গণসুস্থতা আর আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠার সরোবরে উন্নয়ন অর্থনীতির ফুল বিকশিত হয়। যে সমাজে শিক্ষকতা, চিকিৎসা আর আইন ব্যবসায় মহৎ পেশা হিসেবে বিবেচনার সুযোগ দিনে দিনে তিরোহিত হয় সে সমাজে বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ও সমাজসেবার আদর্শ প্রতিষ্ঠা অসম্ভব হয়ে ওঠে, সেখানে সামাজিক সুবিচার ও গণকল্যাণ আকাঙ্ক্ষায় চিড় ধরতে বাধ্য। সুশাসন ও জবাবদিহিতার পরিবেশ পয়মাল হতে হতে সমূহ সর্বনাশও সহনশীল হয়ে ওঠে। পরীক্ষায় উত্তরণনির্ভর বিদ্যাচর্চায় বাস্তব শিক্ষার লেশমাত্র যে থাকে না সে উপলব্ধি করতে রূঢ় বাস্তবের মোকাবেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় না। সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়লেই দেশে শিক্ষার উন্নতিসহ জনসম্পদ বৃদ্ধি ঘটে না; বরং তাতে স্বল্পশিক্ষিত বেকারের বিকারজনিত সমস্যারই উদ্ভব ঘটে। অসম্পন্ন শিক্ষা সমাধান আনে না; বরং সমস্যা বাড়ায়। শিক্ষা খাতে জিডিপির সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ মিললেও শিক্ষা জনসাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে কি না, দেশের অধিকাংশ অধিবাস যে পল্লীতে সেই পল্লীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে শহরের হাইব্রিড বিদ্যাচর্চার ব্যবধান বাড়ছে কি না সে বিচার-বিবেচনা আবশ্যক। প্রাথমিক জুনিয়র মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে শহর আর গ্রামের পাসের হারের ব্যাপক ব্যবধান আসন্ন সমাজে ব্যাপক বিচ্যুতির ফাটল স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। যে শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক জনগণের করের টাকায় বেতন পান, তার বিনিময়ে তার যে দায়িত্ব পালনের কথা তা পালন না করে; বরং তার শিক্ষকতার পরিচয়কে পুঁজি করে অত্যধিক পারিশ্রমিকে গৃহশিক্ষকতার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারই শুধু করেন না, গণশিক্ষার ব্যয় বাড়িয়ে চলেন। সমাজের কাছে যে সম্মান ও সমীহ তার প্রাপ্য তা তার এই ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে দ্রবীভ‚ত হয়ে যায়। অথচ এই একই সমাজে এই কিছুদিন আগেও এমনকি ঔপনিবেশিক পরাধীন পরিবেশেও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে (তখন সরকারি অনুদান ছিল যৎসামান্য) শিক্ষাদান ছিল নিঃস্বার্থ জ্ঞানদানের বিষয় এবং আত্মত্যাগের আদর্শে ভাস্বর। আর সে সুবাদে শিক্ষক পেতেন সমাজের সর্বোচ্চ সমীহ ও সম্মান। শিক্ষক দায়িত্ববোধের আদর্শ হতেন শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের মনে জ্ঞানের আলো জ্বালানোকে ব্রত মনে করতেন শিক্ষকরা। আর আজ শিক্ষকের মনের দৈন্য অধিক অর্থ উপার্জনের অভীপ্সায় অন্তর্লীন। চিকিৎসাবিদ্যার প্রধান লক্ষ্যই যেখানে হওয়ার কথা দুস্থ পীড়িতজনকে রোগমুক্তির সন্ধান দেয়া সেখানে স্রেফ ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি কেন মুখ্য হয়ে দাঁড়াবে এ মহৎ পেশায়। অসুস্থ ব্যক্তির উপযুক্ত চিকিৎসা পাওয়া যেখানে মৌলিক অধিকার সেখানে রাষ্ট্রীয় চিকিৎসাব্যবস্থা এতই নাজুক ও অবহেলায় ন্যুব্জ যে ক্লিনিকের কসাইয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে অগণিত অসহায় অসুস্থ মানুষকে। এনজিও দ্বারা কমিউনিটি চিকিৎসাব্যবস্থা চালু করা হয়েছে- সেখানে হাসিমুখে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে নবীন প্রবীণ স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু সরকার পরিচালিত চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানে কেন সেবার মান আদৌ উন্নত হবে না, যদিও সেখানে বাজেটের বিপুল বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় দেখানো হয়ে থাকে। জনগণের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাজেটে বিপুল ব্যয় বরাদ্দ দেখানো হবে আর সেই সেবা পাওয়ার জন্য আবার বাড়তি ব্যয়ের বোঝা কেন বহন করতে হবে রাষ্ট্রের নাগরিককে। অন্যায় অবিচারের প্রতিকার প্রার্থীর পক্ষাবলম্বনের জন্য আইনজীবী হবেন আসামি বাদি-বিবাদির বন্ধু। আইনের মারপ্যাঁচে নিজের ন্যায্য দাবি যাতে হারিয়ে না যায় সে সহায়তা চেয়েই তো অসহায় অশিক্ষিত মক্কেল আসে আইনজীবীর দ্বারে। নিজের পেশাগত দায়িত্ব ও মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে স্রেফ ব্যবসায়িক দৃষ্টিতে বাদি-বিবাদি উভয় পক্ষের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অনুক্ষণ অনুযোগ বিচারপ্রার্থীর বোবাকান্নার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশ ও সমাজের স্বার্থকে থোড়াই কেয়ার করে অনেকে বিদেশী বহুমুখী কোম্পানির অনেক অন্যায্য দাবির সপক্ষে লবিং করেন স্রেফ পেশাগত ও ব্যবসায়িক স্বার্থে। ‘সেবা পরম ধর্ম’ কিংবা ‘সততা সর্বোত্তম পন্থা’ এসব মহাজনবাক্য কি শুধু নীতিকাহিনীতে ঠাঁই পাবে, বাস্তবে তাদের সাক্ষাৎ মিলবে না?

করদাতাকে যদি কর আহরণকারী আস্থায় না আনতে পারেন, তাকে সহায়তা সহযোগিতার মনোভাব না প্রদর্শন করতে পারেন তাহলে করদাতা নিজেকে উন্মুক্ত করবেন না তার কাছে, বিচ্যুত সেই পরিবেশে পারস্পরিক অবিশ্বাস ভয়ভীতি ফাঁকিজুঁকির অন্ধগলির অন্তরালে চলে যেতে পারেন তিনি। করদাতাকে সহায়তার মনোভাব নিয়ে কথা বলতে হবে- হিসাবায়ন ও অন্যান্য বিষয়ে তার সাথে খোলামেলা আলাপ করে তাকে সঠিক আয় ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বিদেশে কেউ বেশি কর পরিশোধ করলে হিসাবান্তে তার অতিরিক্ত পরিশোধিত টাকার চেক তিনি না চাইতেই তার ঠিকানায় চলে আসে। সেখানে করদাতারা মনে করেন, যেটুকু কর দেয় সেটুকুই তাকে দিতে হবে তার কাছ থেকে কম কিংবা বেশি নেয়া হবে না। এর বিপরীতে যদি এ ধারণা পরিব্যাপ্ত হয় যে, রাজস্ব বিভাগে করজালে একবার বাঁধা পড়লে টাকা দিতেই হবে। বেশি দিলে ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম এবং হরেকরকম ঝামেলা ঝক্কিতে আকীর্ণ তাহলে কর দফতরের থেকে বিচ্যুত হয়ে যেভাবে হোক যত দূরে থাকা যায় সে চেষ্টা চলতে থাকে। কর আহরণকারীর পক্ষে এ ধরনের নিরুৎসাহী করদাতার পেছনে ধাওয়া করতে সময় ও বুদ্ধির ব্যয় হয় বেশি। অথচ এটি প্রয়োজন হতো না যদি আস্থার পরিবেশ সৃজন সম্ভব হতো। এ কথা বলা বাহুল্য, করদাতারও দায়িত্বশীল ও সক্রিয় সাড়া তথা সহযোগিতা ছাড়া রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে বাঞ্ছিত সফলতা অর্জন সম্ভব হয় না। এর জন্য প্রয়োজন আস্থার পরিবেশ সৃজন। আয় হলে আয়কর, সম্পদ সৃষ্টি হলে সম্পদ কর, আমদানি হলে আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজিত হলে মূল্য সংযোজন কর দেয়ার প্রশ্ন উঠবে।

করদাতার ন্যয্য আয় বৃদ্ধি, তার ব্যবসায়বাণিজ্যের সুযোগ ও পরিবেশ এবং আমদানি-রফতানির প্রকৃত অগ্রগতি এবং মূল্য সংযোজন-উত্তর সামগ্রীর বাজারজাতকরণের সার্বিক পরিস্থিতির টেকসই উন্নয়ন ব্যতীত বর্র্ধিত রাজস্ব আয়ের সুযোগ সীমিত। আর এ ক্ষেত্রে করদাতা ও আহরণকারীর পারস্পরিক উপলব্ধির প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। করদাতা যদি রাজস্ব সংগ্রহকারীকে এড়িয়ে চলে এবং রাজস্ব আহরণকারী যদি করদাতাকে শুধু সংশয় সন্দেহের চোখে দেখে তাকে তাড়িয়ে বেড়ানোর মতো পরিবেশ যদি সৃষ্টি হয় তাহলে, বলা বাহুল্য- উভয়েরই সমস্যা।

রাষ্ট্রাচারে বিধিবিধান অনুসরণ যেহেতু দায়িত্ব ও কর্তব্যের পর্যায়ে পড়ে সেহেতু রাষ্ট্র ও নাগরিক উভয় পক্ষেরই পারস্পরিক সহযোগিতার ব্যাপারটি গুরুত্ববহ। রাষ্ট্র ও নাগরিকের পারস্পরিক স্বার্থে বিষয়টি অনেকটা ডিম আগে না মুরগি আগের মতো। রাষ্ট্র্র নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও সেবার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবে এবং এর জন্য নাগরিক রাষ্ট্র্রকে পাথেয় পরিশোধ করবে। রাষ্ট্র্র ধারকর্জ করে নাগরিকসুবিধা সৃষ্টি করলে কৃতজ্ঞ নাগরিক পাথেয় পরিশোধ করবে না নাগরিক আগে সব পরিশোধ করলে রাষ্ট্র্র সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে হাত দেবে? কোনটি আগে? যেকোনো ক্ষেত্রেই সৃষ্ট জটিলতা, অসম্পূর্ণতা, অস্বচ্ছতা পুরো পরিবেশটিকে প্রশ্নবোধক করে তুলতে পারে। পাথেয় তথা রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়ায় অনুপ্রেরণাপ্রদায়ক সহজ সাবলীল ব্যবস্থা যেমন থাকা দরকার আবার সে সহজীয় সুযোগের অসদ্ব্যবহার যাতে না হয় তা নিশ্চিতকরণার্থে প্রতিবিধানের ব্যবস্থাও থাকা দরকার। করদাতা যাতে হয়রানির শিকার হয়ে নিরুৎসাহিত না হন এটি দেখাও যেমন জরুরি, যেমন জরুরি কর প্রদান এড়িয়ে চলার বা ফাঁকিজুঁকি দিয়ে পার পাওয়ার প্রতিরোধাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ, তেমন জরুরি জবাবদিহির পরিবেশে নাগরিকের সব মৌলিক অধিকার ও দাবি পূরণে রাষ্ট্র্রের স্বচ্ছতাসুলভ আচরণ ও সেবা সুনিশ্চিত করা। সেবাপ্রাপ্তি সুনিশ্চিত হলে পাথেয় পরিশোধের পালে বাতাস বইবে। পারস্পরিক বিচ্যুতিতে নয় অন্তর্ভুক্তির সরোবরে ফুটুক সাফল্যের শাপলা।

লেখক : উন্নয়ন অর্থনীতির বিশ্লেষক


আরো সংবাদ



premium cement
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় আসলে কী হয়েছিল? মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করুন : তথ্য উপদেষ্টা বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়ন প্রচেষ্টায় নজর ভারতের এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট নাটোরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে যুবদল নেতাসহ গ্রেফতার ৬ বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে ঢাবিতে নামবে ‘মোবাইল কোর্ট’ ভিসা সমস্যার সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা মার্চেন্ট শিপিং ফেডারেশনের শহীদ পরিবার পাচ্ছে ৫ লাখ, আহতরা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হলেন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম

সকল