১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

সাইফুর রহমান, স্বনির্ভর অর্থনীতির রূপকার

সাইফুর রহমান - ছবি : সংগৃহীত

আমি তখন জাপানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর। ঢাকা থেকে ইআরডি সচিব লুৎফুল্লাহিল মজিদ টোকিওতে দূতাবাসে এসে আমাকে বললেন, (অর্থমন্ত্রী) সাইফুর রহমান সাহেব আপনাকে না পেয়ে আমার কাছে হদিস জানতে চাইলেন, জবাবে তাকে জানালাম স্যার তিনি তো এখন জাপানে। কেন, কে পাঠাল? বললাম, স্যার আপনিই তো অনুমোদন দিয়েছিলেন তাকে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর করে জাপানে পাঠানোর। জাপানে পোস্টেড হওয়ার আগে আমি ইআরডির ফরেন এইড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস (ফাবা) অধিশাখার পরিচালক ছিলাম। সে সুবাদে ১৯৯১-এর প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান, নব্বইয়ের নতুন সরকারের শিল্পমন্ত্রী এম জহির উদ্দীন খান এবং অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের সাথে বৈদেশিক সাহায্যের আয়ন-ব্যয়ন বিষয়ে পরীক্ষা পর্যালোচনার ইনপুট সরবরাহ করা ছিল আমার দায়িত্ব। ইআরডির ফ্লো অব এক্সটারনাল রিসোর্সেস বইটি ডামফাস প্রজেক্টের আওতায় আধুনিক করার উদ্যোগে অর্থমন্ত্রীর সানুগ্রহ সমর্থন ও অনুপ্রেরণা ছিল। তিনি নিজে পেশাদার হিসাববিদ ছিলেন। ফলে আমি তখন একজন উপ সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা হয়েও সরাসরি মন্ত্রীর সাথে আমার কর্মসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইআরডির কাজ রেখে আমাকে জাপানে পদায়নের প্রশ্নে মন্ত্রীর তত্ত্বতালাসে লুৎফুল্লাহিল মজিদ স্যার বেশ আনন্দ, উৎসাহ বোধ করে জানতে চাইলেন, তাহলে স্যার মজিদকে ফিরিয়ে আনব? স্বভাবসুলভ ধমকের ভঙ্গিতে মন্ত্রী জানালেন, তাকে ফিরায়ে আনার জন্য কি জাপানে পাঠিয়েছি? জাপান থেকে ভালো কিছু শিখে আসুক।
২০০২-০৩ অর্থবছরের বাজেট ডকুমেন্ট তৈরির কাজ চলছে। আমি তখন অর্থ বিভাগের উপ সচিব উন্নয়ন। ‘বাজেট সংক্ষিপ্ত সার’ পুস্তকে আমি ১০টি পাই চার্ট/গ্রাফ প্রক্ষেপণে ডিজাইন করি। বাজেটে ডকুমেন্টে এটি ছিল প্রথম ও সূচনা উদ্যোগ, সেই থেকে মিডিয়াও এখনো তা ব্যবহার করে। মন্ত্রী বাজেট বিশ্লেষণে গ্রাফিক্সের ব্যবহারের উদ্যোগ দেখে বেশ খুশি হলেন। কয়েক দিন পর পর আমাকে ডেকে জানতে চাইতেন তোমার কেকগুলো বানানো কদ্দুর?

প্রসঙ্গ দু’টি উল্লেখের কারণ এই যে, তার যারা সাহচর্যধন্য হয়েছিলেন তাদের তিনি নতুন কিছু করার, কাজের গুণগত মান বাড়ানোর ব্যাপারে নিরন্তর উৎসাহিত করতেন। তিনি অর্থ বিভাগে আমাকে এবং ড. তারেককে (আমরা তখন যুগ্ম সচিব) সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত থাকার বা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নথিতে অনুমোদন নিয়ে রেখেছিলেন। তিনি জাপানি প্রশাসনের মতো মনে করতেন কর্মকর্তারা সূচনা মন্ত্রণালয় থেকে অন্যত্র বদলি না হয়ে বরং নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণের চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত অবদান রাখবে। ব্যয় বাজেটে সীমিত সম্পদ বণ্টনকালে আমজনতার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণের ওপর জোর দিতেন প্রবাদপ্রতিম এই হিসাববিজ্ঞানী বর্ষীয়ান রাজনীতিবদ। তার রাজনৈতিক অর্থনীতির কল্যাণ দর্শন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১২টি বাজেট দেয়ার কৃতিত্বের অধিকারী তিনি, ১২ বাজেট বক্তৃতায় (সঙ্কলিত) পাওয়া যাবে। নব্বইয়ের দশকের প্রথমার্ধে আর্থিক খাত সংস্কারসহ সোস্যাল সেফটিনেট-সহ জনকল্যাণমুখী বহু পদক্ষেপ বা প্রথা প্রবর্তন করেছিলেন এম সাইফুর রহমান।

১৯৯৫ সালে প্যারিসে ওইসিডির উদ্যোগে এইড হারমোনাইজেশন, এইড ইফেকটিভনেস অ্যান্ড রেজালটস বিষয়ের ওপর চূড়ান্ত ঘোষণা যা প্যারিস ডিক্লারেশন ২০০৫ নামে খ্যাত, আমি এর খসড়া প্রণয়ন কমিটিতে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে প্রতিনিধি সদস্য ছিলাম। ফ্রান্স সরকার ৯০টি দেশের অর্থমন্ত্রীকে দাওয়াত করেছিলেন প্যারিস ডিক্লারেশন ঘোষণায় উপস্থিত থাকতে। আমি প্যারিসে পৌঁছার তিন দিন পর ইআরডি সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং অর্থমন্ত্রী আসেন মিনিস্ট্রিয়াল মিটিংয়ে যোগ দিতে, প্ল্যানারি এক অধিবেশনে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। প্ল্যানারি মিটিং শেষে মন্ত্রী বললেন, হোস্ট গভর্নমেন্ট আমাদেরও বিশেষ লাঞ্চে দাওয়াত দিয়েছে, সেখানে আমাকে নিয়ে চলো। একটি বিরাট হল। তার ফ্লোরে সবাই সমবেত, অনেক কাউন্টার থেকে অল্পস্বল্প কুকিজ জাতীয় জিনিস বারবার এনে শুভাশীষ বসু (প্যারিসে আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর) আমাদের দিচ্ছিলেন। স্যার এগুলোকে অনেকটা অ্যাপিটাইজার/স্টার্টার মনে করে খাচ্ছিলেন আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলেন, ভাবছিলেন এই বুঝি ফরমাল সিটিং লাঞ্চ শুরু হবে, ৯০টি দেশের অর্থমন্ত্রীর সম্মানে দেয়া ফ্রান্স সরকারের মধ্যাহ্নভোজ। আনুষ্ঠানিক কোনো কিছু না দেখে আমাকে জানতে বললেন কখন লাঞ্চ সার্ভ হবে।

শুভাশীষের কাছে জানতে চাইলাম, তিনি বললেন স্যার এখন যা পাচ্ছেন বা খাচ্ছেন এটাই লাঞ্চ। শুনে আমার চক্ষু চড়কগাছ। কথায় আছে না, অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর। স্যারকে কিভাবে বলি। বলতে হলো। স্যার শুনে আমাকে বললেন, দ্যাখো এখান থেকে একটু শেখো। আজ ঢাকায় ৯০ জন না ৯ জন অর্থমন্ত্রী যদি আসত তাদের মধ্যাহ্নভোজ আয়োজনের জন্য তুমি কত টাকার বাজেট করতে, ভেবে দেখো। স্যার হতাশ হয়ে হোটেলে ফিরলেন। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রদূত তোফায়েল করিম হায়দার আমাদের হোটেলে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানালেন। শুভাশীষ আবার ভুল করে অন্য এক পথ দিয়ে হোটেলে নিতে গিয়ে দেরি করে ফেললেন। এপিএস কাইয়ুম চৌধুরী প্রমাদ গুনলেন; বললেন, দুপুরে লাঞ্চের নমুনায় স্যার বেশ আপসেট, এখন ডিনারে না জানি কী হয়। হোটেলে পৌঁছে জানা গেল ফরমালি ডিনার সার্ভ হতে ৪৫-৫৫ মিনিট সময় লাগবে। স্যার বললেন, আমাকে আপাতত এখনি সালাদ-জাতীয় কিছু দেয়া হোক। দেয়া হলো বড় এক প্লেট লেটুস শাকপাতা। ড্রেসিং মিশিয়ে স্যার আমাদেরও তার থেকে ভাগ দিয়ে আন্তরিক হলেন আমাদের সাথে। আমরা আপ্লুত হলাম। ভয় কেটে গেল। সে রাতে অনেকক্ষণ তার সাথে ছিলাম, আমার সাথে শেয়ার করলেন স্বনির্ভর বাংলাদেশ অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার চিন্তাভাবনা। জানালেন সরকারের তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের চিন্তাচেতনার দূরত্ব ও দৌরাত্ম্য এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রগলভতা মোসাহেবি দৃষ্টিভঙ্গি, স্বার্থান্ধতার কথা।

এম সাইফুর রহমানের কর্মভাবনায় ১৯৯০ দশকের গোড়ার দিকে, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ সমর্থিত কাঠামোগত সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে বাণিজ্য ও আর্থিক কর্মসূচিতে উদারনীতি বাস্তবায়ন শুরু হয়। এ সময় সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যহীনতার বিরুদ্ধে উদার বাজারমুখী নীতি গ্রহণ ছিল একটি বড় নীতিগত পরিবর্তন। আংশিকভাবে বৈদেশিক সাহায্য হ্রাসে এবং দেশের বাণিজ্য শর্তে পরিবর্তনে কিছুটা ভারসাম্যহীন অবস্থা সৃষ্টি হয়। ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে চলতি হিসাব রূপান্তরযোগ্য করা এবং ২০০৩ সালের জুন মাসে ভাসমান বিনিময়হার ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছিল আইএমএফের কাঠামোগত সমন্বয় কর্মসূচির অংশ। তার আমলে বাংলাদেশ প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, পাবলিক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট, প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বাস্তবায়নে সংস্কারনীতি গ্রহণ করা হয়। তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পদক্ষেপের ফলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক সংস্কারের আশার আলো দেখা দেয়। এটি ছিল সংসদীয় গণতন্ত্রের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। নব্বই দশকের সংস্কারগুলো আর্থিক ও বহিঃবাণিজ্য ঘাটতি একটি গ্রহণযোগ্য হারে কমাতে সাহায্য করে, যা সাহায্য প্রাপ্তির শর্তসাবুদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, মোট জাতীয় আয়ের শতকরা হিসাবে বিদেশী সাহায্যের হ্রাসের সাথে সাথে সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ বাড়তে থাকে।

এম সাইফুর রহমান
(জন্ম : ৬ অক্টোবর ১৯৩৫-মৃত্যু : ৫ সেপেটম্বর ২০০৯)
একই সময় জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস কৌশল (এনপিআরসি) দারিদ্র্যবিমোচনের রূপকল্প বাস্তবায়নে চারটি কৌশলগত সীমানা নির্ধারণ এবং বাস্তবায়ন শুরু সম্ভব হয়েছিল : ক. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনুকূল কর্মকাণ্ড বাড়ানো; খ. দরিদ্রপন্থী অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সঙ্কটাপন্ন খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানো; গ. কার্যকর নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং লক্ষ্যভিত্তিক প্রোগ্রাম তৈরি করা এবং ঘ. সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। চারটি কৌশলগত সীমার মধ্যে প্রথম তিনটি অর্থনৈতিক খাত দারিদ্র্যবিমোচনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালনে প্রয়োজন ছিল। ১৯৯১-৯৫ সময়কালে বাংলাদেশে আর্থসামাজিক ও প্রশাসনিক খাত ক্ষেত্রে বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়- পরিবেশ আইন পাস; সংশোধিত শিল্পনীতি ঘোষণা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সেঞ্জ কমিশন গঠিত; প্রাইভেটাইজেশন বোর্ড প্রতিষ্ঠা; সাউথ এশিয়া প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড অ্যারেঞ্জমেন্ট (সাফটা) প্রতিষ্ঠা, ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন। প্রথম সেল্যুলার ফোন পদ্ধতি চালু। কোম্পানি আইন সংশোধিত। টাকাকে চলতি হিসাবে লেনদেনে রূপান্তরযোগ্য ঘোষণা। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের ৮ নম্বর আর্টিকেলের মর্যাদাপ্রাপ্তি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আইন জারি; পেট্রোলিয়াম অ্যাক্ট পাস। মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে শিশুবিষয়ক কার্যক্রম সংযুক্ত। ১৯৯৫ সালে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ যথা- ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ (আইসিসিবি) গঠিত। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ চালু। অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা জারি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে পাওয়ার সেল গঠন। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন পাস। গ্যাসাধার বিধিমালা। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) প্রতিষ্ঠিত।

২০০১-০৬ সময়কালে বাংলাদেশ ব্যাংক আইন সংশোধন, বাংলাদেশ ব্যাংক (জাতীয়করণ) আদেশ ১৯৭২ এবং ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর সংশোধন, ব্যাংক রেট ৬ থেকে ৫-এ হ্রাস। মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো গ্রহণ। অথনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্যনিরসন ও সামাজিক উন্নয়ন কৌশল (পিআরএসটি) গ্রহণে প্রত্যাশিত সংস্কার কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে বিশ্বব্যাংক ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট ক্রেডিট (ডিএসসি) কর্মসূচির আওতায় ২০০৫-০৬ অর্থবছর নাগাদ বাংলাদেশকে ১৫০০ মিলিয়ন ডলার উন্নয়ন সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০০৫-০৬ অর্থবছর নাগাদ পোভার্টি রিডাকশন অ্যান্ড গ্রোথ ফ্যাসিলিটি (পিআরজিএফ) কর্মসূচির আওতায় ৫১০ মিলিয়ন ডলার উন্নয়ন ও দারিদ্র্যনিরসন সহায়তা দেবে মর্মে চুক্তি স্বাক্ষর। পাবলিক প্রকিউমেন্ট রেগুলেশন কার্যকর। অর্থঋণ আদালত আইন কার্যকর। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্ট পাস। দ্য চিটাগাং হিল ট্রাক্টস রেগুমেশন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট প্রণয়ন। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-২ চালু। এ সময়ে মানব উন্নয়ন সংক্রান্ত ইউঅ্যান্ডডিপির প্রতিবেদন বাংলাদেশের মধ্যমপর্যায়ের দেশ হিসেবে স্থান লাভ করে। ২০০৪ সালে নতুন আমদানিনীতি ২০০৩-০৬ অনুমোদন। বাণিজ্যনীতি (২০০৩-০৬) ঘোষণা।

রফতানিনীতি ২০০৩-০৬ প্রণীত হয়। পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণের সুদ মওকুফ ঘোষণা। কৃষি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রম জোরদার, রেলওয়ের কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ বরাদ্দ ও প্রকল্প গ্রহণ। জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে আইন পাস। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন প্রণয়ন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন গঠন। স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা সেক্টর (এইচপিএসপি) কর্মসূচি গ্রহণ। বাংলাদেশ ওজোনস্তর ক্ষয় (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা জারি। সিএনজি ও এলপি গ্যাস বিধিমালা জারি। পদ্মা সেতু নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি সমাপ্ত এবং স্থান নির্ধারণ। ইপিজেড ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশ›স অ্যাক্ট পাস। আর্সেনিক সমস্যা সমাধানে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইনফরমেশন সুপারহাইওয়ের সাথে সংযুক্ত হওয়ার কার্যক্রম শুরু। তৈরী পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে মাল্টি ফাইবার অ্যারেঞ্জমেন্ট তথা কোটা প্রথা বিলুপ্ত। পারস্পরিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সার্ক সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে এসএএফটিএ চুক্তি স্বাক্ষর। সামাজিক বনায়ন বিধিমালা প্রণয়ন।

সময়ের অবসরে, বিশেষ করে বিগত ১৬ বছরে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সব উন্নয়নের প্রেক্ষাপট বড্ড বেশি একদেশদর্শিতার ডামাডোলে প্রক্ষেপণকালে এম সাইফুর রহমান এবং তার সরকারের ভূমিকা ও সফলতা চিন্তাচেতনার চৌহদ্দির বাইরে নিক্ষেপের প্রয়াস চলে।

লেখক : উন্নয়ন অর্থনীতির বিশ্লেষক


আরো সংবাদ



premium cement
কুলিয়ারচরে ‘জশনে জুলুস’ মিছিলকে কেন্দ্র করে নিহতের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৯ সাম্প্রতিক বন্যায় ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি : উপদেষ্টা আমাদের আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি : যুবদল সভাপতি সুনামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফোরকান, সম্পাদক কাইয়ুম এনআইডি কার্যক্রম অন্য কোথাও গেলে ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে : ইসি সচিব ছাত্র আন্দোলনে ছররা গুলি, ৫ শতাধিক মানুষের অন্ধত্ব বরণ আবারো ক্ষমতায় ফেরার কৌশল আঁটছে শ্রীলঙ্কায় বিতাড়িত রাজনৈতিক পরিবারটি আজুখাইয়া সীমান্তে ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একজন নিহত মুরাদনগরে গোমতীর নদীর পানি কমার সাথে সাথে তীব্র হচ্ছে ভাঙ্গন ঈশ্বরগঞ্জে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত নাটোরে শেখ হাসিনাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

সকল