২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মড়ার উপর অর্থনীতির খাঁড়ার ঘা

মড়ার উপর অর্থনীতির খাঁড়ার ঘা - নয়া দিগন্ত

জানের বদলে মালের অঙ্কের ক্ষতি বেশি করে দেখাতে গিয়ে অর্থনীতির তথ্যসাবুদ আড়ালের চেষ্টা স্পষ্ট। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নির্ণয়ে প্রাণহানি বা জানের চেয়ে মালের ক্ষয় জানান দেয়ার দিকে ঝোঁক বেশি সরকারের। বেসরকারি খাতগুলোও সেই পথে হাঁটছে। মাছ-গোশত থেকে গার্মেন্ট, সিমেন্ট ইত্যাদি খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার হিসাব দাঁড় করতে কেউ কার্পণ্য করেনি। প্রাণহানির খবরে যেতে গরজ কম তাদের। গত ১৭-১৮ বছরের মধ্যে এবারের আন্দোলন সরকারকে রাজনৈতিকভাবে কাবু করেছে ধারণাতীতভাবে। শিশু-কিশোরসহ শিক্ষার্থীদের নিরীহ গোছের আন্দোলন এ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাতে পারে, তা ভাবেনি সরকার। তারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও তরুণদের ক্ষোভ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে সরকারের মেট্রোরেল, বিটিভিসহ বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি জানান দেয়ার বিপরীতে আন্তর্জাতিক মহলগুলো বেশি করে জানতে চাচ্ছে হত্যাসহ দমনের নানা ধরন সম্পর্কে। কিভাবে গুলি করা হয়েছে, এমনকি হেলিকপ্টারে কী পরিমাণ গোলাবারুদ খরচ করা হয়েছে- সেসব হিসাব নেয়ারও চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক মহলগুলোর। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তা বেশি বেশি জানতে আগ্রহী। কোটা আন্দোলন ইস্যুতে চলমান পরিস্থিতিতে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের পাঠানো চিঠির জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধানের পক্ষ থেকে জবাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, পরিস্থিতির সুযোগ নেয়া তৃতীয় পক্ষের সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পার্থক্যের বিষয়ে পরিষ্কার হতে হবে। বর্তমানে ঘটনার বিচারিক ও প্রশাসনিক তদন্ত চলছে। এ সময় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশন ও এর সংশ্লিষ্টদের বাংলাদেশ নিয়ে চূড়ান্ত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত। তা না হলে সেটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমসহ মানুষের ধারণা অন্যদিকে প্রভাবিত করতে পারে। এর আগে, গত ২৩ জুলাই জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লেখেন।

যাতে, বলা হয়েছে আন্দোলন কেন্দ্র করে হতাহতদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ, স্বাধীন এবং স্বচ্ছ তদন্ত চায় জাতিসঙ্ঘ। চিঠিতে শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, গণগ্রেফতার ও নির্যাতনে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কমিশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানানো হয়েছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যুক্তরাজ্য, চীন, সুইডেন, কাতার, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, ভারত, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রসচিব। বলেন, ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে দেশে এবং বিদেশে যে নানা গুজব ছড়াচ্ছে সেগুলো স্পষ্ট করতে বিদেশী মিশনগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবে সরকার। গ্রেফতারের সংখ্যা, অতিরিক্ত বল প্রয়োগ হচ্ছে কিনা, বাকস্বাধীনতা আছে কিনা- এসব বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে কয়েকটি দেশের। জানান, র্যাব হেলিকপ্টার থেকে গুলি করেনি বিষয়টি প্রমাণ করে এমন ভিডিও দেখানো হয় বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের। প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান জানান, সরকারের নেয়া পদক্ষেপে আস্থা আছে বিদেশী বন্ধুদের। এর মাঝে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জননিরাপত্তার জন্য সেনা মোতায়েন ও কারফিউ দেয়া হয়েছে, গণভবন রক্ষার জন্য নয়। এমন দাবি করে তিনি বলেছেন, দেখামাত্র গুলি করার বিষয় ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এভাবে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, কোটা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতিপুতি বলেননি তিনি।

রাজনীতি-কূটনীতির এ ডামাডোলের মধ্যে চলমান পরিস্থিতির কারণে রফতানি রেমিট্যান্সসহ দেশের অর্থনীতির সব খাতে অনিশ্চয়তা। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডির সর্বশেষ প্রতিবেদনেও তা ফুটে উঠেছে। এতে দেখা যায়, বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুদাসলে বাংলাদেশকে প্রায় ৩৩৬ কোটি ডলার শোধ করতে হয়েছে। এর মধ্যে মূল ঋণ ২০১ কোটি ডলার, আর সুদ প্রায় ১৩৫ কোটি ডলার। আর এর মধ্য দিয়ে এই প্রথমবারের মতো এক বছরে বিদেশী ঋণ পরিশোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বিদেশী ঋণ পরিশোধের এই চাপ শুরু হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট। এর প্রভাবে জিনিসপত্রের দাম সামনে আরো বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তার ওপর এই সময়েই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রফতানি আয় আরো কমে যাওয়ায় আরেক ধাক্কায় পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। বহির্বিশ্বে ইন্টারনেট যোগাযোগ টানা কয়েক দিন বিচ্ছিন্ন থাকায় গার্মেন্ট শিল্পসহ কয়েকটি খাতে বিদেশী ক্রেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আস্থার চরম সঙ্কট। বিদেশী অনেক অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। নতুন অর্ডারেও বন্ধ্যত্ব।

এর সাথেই বিভিন্ন দেশে রেমিট্যান্সবিরোধী প্রচারণার ধকল। কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতায় হতাহতের প্রতিবাদে প্রবাসীদের একটি অংশ ‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানো’র বিষয়ে ক্যাম্পেইন করছে। নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনার কৌশলও এরই মধ্যে হোঁচট খেয়েছে। তা গোপন রাখতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে লুকোচুরি চলছে। গত এক দশকে হরতাল-অবরোধের মতো অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম চলমান ছিল। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়নি। এ ছাড়া করোনাকালেও কিছু পণ্য জাহাজে উঠেছে। ক্রেতা প্রতিনিধিরা বাসায় বসেও কাজ করেছেন। এবারের পরিস্থিতি সব বরবাদ করে দিয়েছে। কেবল ব্যবসায়-বাণিজ্য বা অর্থনীতি নয়, গোটা বাংলাদেশ সম্পর্কেই বাজে বার্তা গেছে বিশ্বময়। এমন কাহাতক অবস্থার মধ্যেই দেশের তৈরী পোশাক, বস্ত্রকল, প্লাস্টিক পণ্য, সিমেন্ট, ইস্পাতসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু হয়েছে।

কোটা আন্দোলন, কারফিউ, সেনা মোতায়েন, বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি চাপা রেখে ক্ষয়ক্ষতিকে বড় করে দেখানোর সাথে ঘুরে দাঁড়ানো ও মিলকারখানায় কর্মযজ্ঞকে ফোকাসের চেষ্টা করছে সরকার। ব্যবসায়ীরা সরকারের সাথে আছে প্রমাণের চেষ্টা আরো জোরদার। কিন্তু বিদেশীদের মন গলানো ও ভয় কাটানোর পথে এখন পর্যন্ত সাফল্যের লক্ষণ নেই। বিদেশে থাকা প্রবাসীদেরও আয়ত্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দেশে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার দিনগুলোতে বাইরের দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা বিক্ষোভ করেছে। আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশেও এবার বিক্ষোভ হয়েছে। তা কেবল নজিরবিহীন নয়, ধারণারও বাইরে। এর অনিবার্য জেরে দেশে প্রবাসী আয় তলানিতে পড়ে গেছে। ২১ থেকে ২৭ জুলাই সাত দিনে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে মাত্র ১৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এর মধ্যে ১৯-২৩ জুলাই সময়ে সরকারি ছুটি ও সাধারণ ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ ছিল। এ ছাড়া টানা পাঁচ দিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং ১০ দিন মোবাইলে ইন্টারনেট সেবা ছিল না। তার ওপর কারফিউ জারি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রবাসী আয়সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য বলছে, জুলাই মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে ৪০-৫০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। এর মধ্যে ১-২০ জুলাই আসে ১৪২ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। সেই হিসাবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।

এর আগে জুনে আসা ২৫৪ কোটি ডলার প্রবাসী আয় ছিল গত তিন বছরের মধ্যে একক কোনো মাসে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে যায়। তখন প্রতি মাসে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ গড়ে ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। বিপুল প্রবাসী আয় আসার কারণে একপর্যায়ে বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে তৈরি আবহের মধ্যে বিদায়ী জুলাইয়ের শেষ দিকে লাগা ধাক্কা সামলানোর দৃশ্যত পথ নেই সরকারের হাতে। সরকারের বা কোনো দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ তিনটি। রফতানি পণ্য দ্বিতীয় প্রবাসী আয় ও বিদেশী সাহায্য। পুরো বিশ্বের জিডিপিতে ৯.৪ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসী আয়। সেখানে এখন মারাত্মক খরার টান।

কোটাবিরোধী আন্দোলন ইস্যু এখানে প্রধান কারণ ও একমাত্র কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ, আমেরিকার কয়েকটি দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রবাসীরা সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যে কোনো কোনো সমাবেশ থেকে রেমিট্যান্স ‘শাটডাউনের’ ঘোষণাও এসেছে। প্রবাসীদের আর দেশে ফিরতে না দেয়ার মতো হুমকি পরিস্থিতিটাকে আরো জটিল করেছে। পরিস্থিতি সামনে আরো কোন দিকে মোড় নেবে, এ নিয়ে শঙ্কার শেষ নেই।

অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির দুরবস্থা, বিদেশী ঋণ শোধের চাপ, তীব্র বেকারত্ব, ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়ম, অবিচারের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ার ক্ষতের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহে চলছে স্মরণকালের অনিশ্চয়তা। সেই সাথে সরকারের কূটনৈতিক জোড়াতালির সম্পর্কে ঘা বেশ দগদগে। দেশের অর্থনীতিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, ব্যাপক অর্থ পাচার, মেগা কর ও শুল্ক ফাঁকির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও এনবিআর তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে চরমভাবে ব্যর্থ।

দেশে ৬০ লাখেরও বেশি শিক্ষিত বেকার রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর ৩০ লাখের বেশি যুবক কর্মসংস্থানের আশায় শ্রমবাজারে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকে অথচ সেখানে, তিন লাখেরও বেশি ভারতীয়, ৬০ হাজার চীনা এবং ২০ হাজার শ্রীলঙ্কা অননুমোদিতভাবে বাংলাদেশে কাজ করছে এবং বছরে তারা ৪.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি তাদের দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এদিকে দেশে বৈদেশিক চাকরি কমবেশি বন্ধ, সম্প্রতি সরকার সমর্থিত একটি শক্তিশালী জনশক্তি রফতানি সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে, মালয়েশিয়ার শ্রম রফতানি গুরুতর সমস্যায় পড়ে। পাশাপাশি সৌদি আরব ২০১৮ সালে ঘোষিত ভিশন-২০৩০ এর অধীনে ৭০ শতাংশ বিদেশী কর্মীকে ফেরত পাঠাতে যাচ্ছে, যাতে প্রায় ২০ লাখ বাংলাদেশীকে বেকার করে দেবে এবং তারা দেশে ফিরে আসবে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে গত ছয় বছর ধরে বিষয়টি সমাধানে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

চলমান পরিস্থিতির বিচারব্যবস্থার বিভিন্ন নেতিবাচক খবর এখন নিয়মিত আইটেমে পরিণত হয়েছে, যা সাধারণ মানুষ এবং তরুণদের মধ্যে মানসিক প্রভাব ফেলছে ফলে এখনই যথাযথ রাজনৈতিক সমাধান না হলে সামনে আরো মাশুল গোনার লক্ষণ পরিষ্কার। দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার আরো বৃদ্ধির আশঙ্কাও ভর করেছে কারো কারো মধ্যে।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
[email protected]

 


আরো সংবাদ



premium cement