২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

এরদোগানের তুরস্ক মাথা তুলছে

এরদোগান - ফাইল ছবি

গত ১০ বছরে ইন্দো-প্যাসিফিকে, মধ্যপ্রাচ্যে, আফ্রিকার কৌশলগত সংযোগস্থলে তুরস্কের সামরিক উপস্থিতি দেখা গেছে। আত্মরক্ষামূলক অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে দেশটি। আঞ্চলিক রাজনীতিতে জোরালো ভূমিকার দাবি তুলছে। তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো বন্ধু ও ন্যাটোর বড় শক্তিশালী দেশ। কিন্তু এখন সে অনেক বিষয়ে পশ্চিমের দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করছে। এসব কারণে এখন পাশ্চাত্য বলতে শুরু করেছে, তুরস্ক নব্য-অটোমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চায় বা তার কাজ শুরু করেছে।

তুরস্ক বহুদিন ধরে সামরিক খাতে বড় ধরনের ব্যয় অব্যাহত রেখেছে। স্নায়ুযুদ্ধের পরও দেশটি সামরিক খাতে জিডিপির ২ শতাংশের বেশি ব্যয় করছে। ২০১৫ সালে প্রতিরক্ষা ব্যয় ছিল ১.৮ শতাংশ, ২০২২ সালে ১.২ শতাংশ। ২০২৩ সালে তুরস্ক ঘোষণা করে, ২০২৪ সালে সামরিক ব্যয় ১৫০ গুণ বৃদ্ধি করবে। এই হিসাবে ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের পর তুরস্কের অবস্থান। দেশটিতে রয়েছে ১০ লক্ষাধিক স্থলবাহিনীর সদস্য, অতিরিক্ত রিজার্ভ বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী। ২০২৪ সালের গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার সূচকে তুরস্কের অবস্থান অষ্টম। ন্যাটোতে তৃতীয়, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পর।

তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থানও গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণে রয়েছে সঙ্ঘাতপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্য, উত্তরে রাশিয়া। কাছাকাছি আরো আছে সেনসেটিভ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। সাম্প্রতিক সময়ে তুর্কি সামরিক বাহিনী বিভিন্ন দিকে সম্প্রসারিত হচ্ছে। দেশে একটি শক্ত প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেখানে উৎপাদিত সামরিক অস্ত্র প্রয়োজন মিটিয়ে রফতানিতে প্রসারিত হয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের পতন হয়। কামাল আতাতুর্ক মুসলিম ও ইসলামী ঐতিহ্য পরিত্যাগ করে পশ্চিমা মডেল অনুকরণ করে ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর দেশের ভিত্তি রচনা করে। এই সময়ে অন্তর্মুখিতার কারণে তুরস্ক ১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রথম দিকে নিরপেক্ষ ছিল। তুরস্ক জাতিসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিল ও জাতিসঙ্ঘের ব্যানারে কোরিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের সৈন্যরা কোরিয়ার যুদ্ধে নৈপুণ্য প্রদর্শন করে সুনাম পায়। পশ্চিমাদের সাথে মিলেমিশে কাজ করায় তাদের সুনাম বাড়ে।

বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে তুরস্ক তার পশ্চাৎপদতা আস্তে আস্তে ঝেড়ে ফেলতে শুরু করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এককভাবে কাজ করতে থাকে। ১৯৭৪ সালে গ্রিক জাতীয়তাবাদের অভ্যুত্থানের পর তুরস্ক সাইপ্রাসে হস্তক্ষেপ করে, কেননা গ্রিস দ্বীপটিকে একীভূত করতে চেয়েছিল। দ্বীপে গ্রিক সাইপ্রিয়টরা সংখ্যগরিষ্ঠ। তুর্কি সংখ্যালঘুদের রক্ষার জন্য তুরস্ক দ্বীপটি দখল করে, আজো সেখানে ৪০ হাজার তুর্কি সেনা অবস্থান করছে। এরা উত্তর সাইপ্রাসে অবস্থান করছে। উত্তর সাইপ্রাসকে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অন্য কোনো দেশ স্বীকৃতি না দিলেও সামরিক উপস্থিতি স্বীকার করে। বিবাদ অব্যাহত থাকলেও একটি দ্বিরাষ্ট্র হিসেবে সমাধান দিলে সাইপ্রাসে শান্তি ফিরে আসতে পারে এবং বিবাদের অবসান হতে পারে।

এরদোগানের উত্থান ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে পরিপক্ব ঘুঁটি চালিয়ে তিনি তুরস্ককে আরো উচ্চাসনে নিয়ে গেছেন। এরদোগান তুরস্কের সামরিক বাহিনীকে পেশাদারীকরণকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তুর্কি সেনাবাহিনী পুরনো অবয়ব ও কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসেছে। সামরিক প্রয়োজনে দেশের ২১ থেকে ৪১ বছরের পুরুষদের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এই বয়সীদের এক বছরের সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মডেল তৈরি করেছেন। এই মডেলে নিয়োগ পাওয়া কঠিন হলেও ২০১৬ সালে ৮০ হাজার চুক্তিভিত্তিক সেনা কাজ করছিল। মাত্র ছয় বছর পর তুর্কি সেনাদের অর্ধেকের বেশি পেশাদার সেনায় রূপান্তরিত হয়। তুর্কি সেনাবাহিনীতে পেশাদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

২০১১ সালে সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে, তুরস্ক বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে আহ্বান জানায় এবং কোনো স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি এলাকা প্রতিষ্ঠিত হবে না বলেও ঘোষণা দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও একই আহ্বান জানান নতুবা জোর করে আসাদকে সরানোর ঘোষণা দেন। তুরস্ক ও রাশিয়া কুর্দিদের বিষয়ে একটি বোঝাপড়ায় পৌঁছে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে আমেরিকান সেনাদের প্রত্যাহারের পরে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় আক্রমণ পরিচালনা করে। কুর্দি সেনারা ১৮ মাইল ভেতরে চলে যেতে বাধ্য হয়। পাশ্চাত্যের সমালোচকরা তুরস্কের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূলের অভিযোগ আনে। তুরস্ক ইরাকের কুর্দি অবস্থানেও হামলা চালায়। সেখানে তুরস্ক শতাধিক ঘাঁটি বানায়। উত্তর ইরাকজুড়ে এসব ঘাঁটি রয়েছে। তুরস্ক ইরাকের উত্তর সীমান্তের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ইরাক ও তুরস্কের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে এই মর্মে যে, ইরাক পিকেকে জঙ্গিদের সাফ করতে সহায়তা করবে এবং রাস্তা নির্মাণে সহায়তা করবে যা ভারত ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যের একটি ক্রসরোড তৈরিতে সহায়তা করবে, যেটি পারস্য উপসাগরে পৌঁছার রাস্তা ও রেলের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে।

কাতারে তারিক বিন জিয়াদে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, এটি ২০১৫ সালে নির্মিত হয়। ২০১৯ সালে এই ঘাঁটিতে নৌ ও বিমানঘাঁটি সংযুক্ত করার ফলে বড় এক অবকাঠামোতে পরিণত হয় ও প্রসারিত হয়। এখন সেখানে পাঁচ হাজার সেনা রয়েছে। এই ঘাঁটিকে সৌদি আরবের জন্য হুমকি মনে করা হয়। কয়েক বছর আগে সৌদি আরবেও তাদের স্বার্থ রক্ষায় তুর্কি সেনাঘাঁটি করার প্রস্তাব দেন এরদোগান, কিন্তু বাদশাহ অনুমোদন দেননি।

ইরাক ডেভেলপমেন্ট রোড সফলভাবে শেষ হলে তুরস্ক সৌদি তেলের উপর আরো কম নির্ভরশীল হবে। উল্লেখ্য, কাতার ২০২২ সালে তার সৈন্যদের তুর্কিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের অনুমতি দিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কাতারকে সৌদি আরব ও অন্যান্য আরব লিগ রাষ্ট্রগুলো অবরুদ্ধ করেছিল এরই পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্কের সাথে সহযোগিতা কাতারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইরাক, পারস্য উপসাগর এবং সিরিয়ায় তুরস্কের নিরাপত্তা উদ্বেগ রয়েছে।

২০১৭ সালে তুরস্ক সোমালিয়ার মোগাদিসুর কাছে বৃহত্তম বিদেশী সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে। সোমালিয়ার দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়। তুরস্ক ওই ঘাঁটিতে হাজার হাজার সোমালি সেনাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। মানবিক ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টার বিনিময়ে আঙ্কারাকে সোমালিয়ায় অফশোর এবং উপকূলীয় তেল সম্পদের উন্নয়নের অধিকার দেয়া হয়েছে। জলদস্যুতা জর্জরিত এই অঞ্চলে জলদস্যুতা-বিরোধী অভিযান করারও অধিকার রাখে। ব্যস্ত শিপিং লাইনগুলো এখন তুর্কি সহায়তার উপর নির্ভরশীল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক ও সোমালিয়া তাদের সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত করেছে। যেমন একটি সোমালি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠন ও উন্নয়ন। বিনিময়ে তুরস্ক সোমালিয়ার একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে উৎপন্ন রাজস্বের ৩০ শতাংশ পাবে।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে তুর্কি সংসদ লিবিয়াতে সামরিক হস্তক্ষেপ অনুমোদন করে। এই আক্রমণে লিবিয়ার সরকারি বাহিনীকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং লিবিয়া ও জাতিসঙ্ঘ এতে সবুজ সঙ্কেত দেয়। ওই সরকার গাদ্দাফি পরবর্তী লিবিয়ার বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃত। উত্তর-পূর্ব লিবিয়া এবং দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কের মধ্যে পুরো ভূমধ্যসাগর বিস্তৃত ১৮ মাইল প্রশস্ত একটি একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করতে সম্মত হয়। এই জলরাশিতে মূল্যবান তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে। এই বিশাল জলরাশিতে গ্রিসেরও কিছু অংশ রয়েছে। গ্রিসকে উপেক্ষা করা হয়েছে মর্মে গ্রিস আপত্তি তুলে। লিবিয়ার সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। লিবিয়া ক্রাইসিসে সংযুক্ত আরব আমিরাত, রাশিয়া ও মিসর জড়িত।

লিবিয়ায় তুর্কি বাহিনী মোতায়েনের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তুর্কি অবস্থান সংহত হলে এটি আরো বাড়াতে পারে। আর্মেনিয়া আজারবাইজান যুদ্ধে তুর্কি ড্রোন সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। ২০২২ সালে আঙ্কারা ও বাকু প্রতিরক্ষা সহযোগিতা স্বাক্ষর করে। তুর্কি সামরিক বিশেষজ্ঞরা তখন থেকে আজারবাইজানে রয়েছে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের জন্য। সেখানে তুর্কি বিমানঘাঁটিও রয়েছে। আজারবাইজানের অবকাঠামো তুরস্ককে ককেশাস ও কাস্পিয়ান সাগরে আরো শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে। বলা যায়, এটি চীনের বেল্ট ও রোড ইনিশিয়েটিভের নিজস্ব সংস্করণ। চীনকে তার ভূখণ্ডের মাধ্যমে ইউরোপের সাথে সংযুক্ত করা।

তুরস্ক এক দশকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অস্ত্র বিক্রেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব বাজারের ১.৬ শতাংশ শেয়ারসহ শীর্ষ অস্ত্র রফতানিকারক দেশের তালিকায় ১১তম স্থানে রয়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তুরস্কের অস্ত্র বাজারের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭০ শতাংশ। সৌদি আরব বৈরী হলেও তুর্কি অস্ত্রের বড় ক্রেতা। এতে বোঝা যায়, জটিল ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে তুরস্ক কতটা পারঙ্গম হয়ে উঠেছে। তুরস্কের বাইয়ারাকতার ড্রোন প্রমাণিত জনপ্রিয় আইটেম এবং আঙ্কারা এই সফলতা পেয়ে আরো আধুনিক সমরাস্ত্র নির্মাণ ও বিপণনে নজর দিয়েছে। যেমন রাশিয়ার এস-৪০০ প্রতিস্থাপন করার জন্য দেশীয় বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম উন্নয়ন করছে যা আরো শক্তিশালী, নিখুঁত ও আইরন ডোমের চেয়ে বেশি কার্যকর হবে। এ ছাড়া তুরস্ক-পাকিস্তান সাবমেরিন ও বিমানবাহী রণতরী নির্মাণ শুরু করেছে। এ ছাড়া পঞ্চম প্রজন্মের ফাইটার জেট ‘কান’ টেস্ট ফ্লাইট সম্পন্ন করছে। এটিও জনপ্রিয় রফতানিযোগ্য পণ্য হবে। তুরস্ক ইতোমধ্যে আঞ্চলিক সামরিক শক্তি হিসেবে বিকশিত হয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধে তুরস্ক উভয় পক্ষেই খেলেছে। ইউক্রেন তুর্কি বাইয়ারাকতার ড্রোন ব্যবহার করেছে, আবার রুশ নৌবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির জন্য দারদানেলেস এবং বসফোরাস বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যান্য ন্যাটো মিত্রের মতো তুরস্ক রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি; বরং এস-৪০০ এর মতো ডিফেন্স সিস্টেম কিনেছে।

কিছু পশ্চিমা পর্যবেক্ষক মনে করেন, এরদোগান নব্য-অটোমান সাম্রাজ্যের ক্ষেত্র রচনা করেছেন। ন্যাটো মিত্রদের তুলনায় পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সাথে অনেক এরদোগানের সখ্যতা বেশি। কামাল আতাতুর্ক যে হাজিয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করেছিলেন, এরদোগান সেটিকে আবার মসজিদে পরিণত করেছেন।

এক সময় অটোমান সুলতানরা শুধু তুরস্কের নয়, সমগ্র সুন্নি মুসলমানদের নেতা হিসেবে ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্ব নেতৃত্বের আকাক্সক্ষা দেখিয়েছেন। তুরস্ক দীর্ঘকাল ধরে ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তি ছিল। ১৬ শতকে অটোমান সাম্রাজ্য উচ্চতার শিখরে ছিল, দক্ষিণে পারস্য উপসাগর থেকে উত্তরে দানিউব এবং ক্রিমিয়া পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছিল।

২০১৬ সালের শুরুর দিকে তুর্কি মিডিয়া মানচিত্র প্রকাশ করা শুরু করে, যেখানে দেশের সীমানা উত্তর সিরিয়া থেকে ইরাক পর্যন্ত এবং ভূমধ্যসাগর থেকে ইরানের সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত দেখানো হয়েছিল। আর্মেনিয়ার অংশও এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরদোগান ১৯২৩ সালের লুসান চুক্তির সমালোচনা করেন। ১৯ শতকে ‘ইউরোপের রুগ্ন মানুষ’ নামে পরিচিতি পেলেও এরদোগানের নেতৃত্বে বর্তমান তুরস্ক ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাসহ শূন্যতা পূরণ করতে আগ্রহী। তিনি কি পারবেন মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের আসন ফিরে পাবার মতো একটি মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র হিসাবে তুরস্ককে গড়ে তুলতে?

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব ও গ্রন্থকার


আরো সংবাদ



premium cement