২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গাজা যুদ্ধের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে

গাজা যুদ্ধের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে - ছবি : সংগৃহীত

৭ অক্টোবর ২০২৩ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দল হামাস আকস্মিক আক্রমণ চালায় ইসরাইলের ভেতরে। তারা হাজার দেড়েকের মতো ইসরাইলিকে হত্যা করে এবং বেশ কিছু লোককে ধরে গাজায় নিয়ে যায়। এটি ছিল চারদিক থেকে ইসরাইলের অবরোধে রুগ্ণ একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে অবিশ্বাস্য এক আক্রমণ যা শুধু ইসরাইলকে নয়, গোটা বিশ্ববাসীকে হতচকিত করে। এই আক্রমণের পক্ষে বিপক্ষে যত মতই থাকুক, আমরা কেবল একটি পর্যবেকক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। সেটি জাতিসংঘ মহাসচিবের। তিনি বলেছেন, হামাসের হামলার পেছনে দীর্ঘদিনের নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিক্রিয়া কাজ করেছে। যাই হোক, ওই আক্রমণের পর দুটি ঘটনা ঘটে। এক. ইসরাইলি বাহিনী প্রবল আক্রোশে গাজাবাসীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। দুই. বিশ^জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিশ^বাসী। ফিলিস্তিনিদের বাঁচার অধিকারের যে প্রশ্নটি প্রায় বরফের নিচে চাপা পড়তে যাচ্ছিল সেটি আবারও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ওঠে বিশ^বাসীর বিবেকের সামনে।

দেড় হাজার ইসরাইলির প্রাণের বদলা হিসাবে ইসরাইলি বাহিনী এখন পর্যন্ত গাজার ২৫ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। এই ভয়ঙ্কর জিঘাংসা এখনো বিরতিহীনভাবে চরিতার্থ করে চলেছে তারা। তবে ফিলিস্তিনের পক্ষে সোচ্চার হয়ে ওঠা বিশে^র নানা প্রান্তের মানুষের কণ্ঠস্বর কিছুটা যেন স্তিমিত হয়ে পড়েছে। কীভাবে এটি ঘটল তাই দেখছিলাম নানা ওয়েবসাইট ঘেঁটে।

এরই মধ্যে সময় পেরিয়েছে প্রায় সাড়ে তিন মাস। কিন্তু বিশ্বের কোনো শক্তিই ইসরাইলকে নির্বিচার গণহত্যা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। সে চেষ্টাও করেনি। উল্টো যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যের দেশগুলো ইসরাইলকে অর্থ, অস্ত্র, নৈতিক সমর্থন সবকিছু দিয়ে উৎসাহিত করেছে, এখনো করছে। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে উচ্চকিত বিশ্বের গণমানুষের কণ্ঠস্বর চাপা পড়ে গেল কীভাবে?

এর পেছনে আছে তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর চরম অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড। আমাদের চোখে তাদের দ্বিচারিতার স্বরূপটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ইউরোপের দেশ ব্রিটেনে হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে অসংখ্য প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু দেশটির সরকার, বিশেষ করে তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান এসব বিক্ষোভকে ‘ঘৃণাত্মক মিছিল’ বলে বর্ণনা করেন। এই কট্টর ব্রিটিশ মন্ত্রী ফিলিস্তিনের জনপ্রিয় একটি স্লোগান সম্পর্কে বলেন, এটি ইসরাইল ও ইহুদিদের নির্মূল করার আকাক্সক্ষার ইঙ্গিত হিসাবে ব্যাখ্যা করা উচিত। স্লোগানটি হলো, ‘ফ্রম রিভার টু দ্য সি/প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি।’ শুধু সুয়েলাই কট্টর তা নয়, মুসলিম ও ফিলিস্তিনিদের প্রশ্নে সম্ভবত বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিমা জনগোষ্ঠীই চরম বিরূপ। এ বিষয়ে তারা গণতন্ত্র, সমঅধিকার, বাকস্বাধীনতা ইত্যাদি যা কিছুর তারা ফেরিওয়ালা, সেসব কোনো কিছুরই ধার ধারে না। ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করা বা প্রতিবাদ জানানো শুধু নয়, যে কোনো ধরনের বক্তব্য বিবৃতি দেয়া এমনকি তাদের কোনো কিছুতে আনন্দ প্রকাশ করাও পশ্চিমাদের জগতে নিষিদ্ধ। ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়ায় যে, ব্রিটিশ বামপন্থী দল লেবার পার্টি তাদের একজন পার্লামেন্ট সদস্য অ্যান্ডি ম্যাকডোনাল্ডকে পার্টি থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করে। ম্যাকডোনাল্ড-এর অপরাধ কী ছিল? অপরাধ এই যে, তিনি ফিলিস্তিনের পক্ষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতায় উপরে উল্লিখিত স্লোগানের শব্দগুলো ‘ফ্রম রিভার টু দ্য সি’ উচ্চারণ করেছিলেন।

একজন পার্লামেন্ট সদস্যকে যদি পার্টি থেকে বহিষ্কার হতে হয় তাহলে আর কারো পক্ষে কী ফিলিস্তিনের পক্ষে একটিও শব্দ উচ্চারণের সাহস থাকার কথা? সাধারণ মানুষ তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবে?

ব্রিটেনে এমপির বরখাস্ত হওয়া কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এরকম শত শত কিংবা হাজার হাজার ঘটনা ঘটেছে ইউরোপের দেশে দেশে।

আমেরিকার অবস্থা দেখুন। আর্ট ফোরাম আমেরিকার এক স্বনামধন্য পত্রিকা। বলা হয়, এটি বিশে^র সবচেয়ে মর্যাদাবান শিল্পবিষয়ক ম্যাগাজিন। এই পত্রিকাটি ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ বিষয়ে কয়েক হাজার লেখক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও বুদ্ধিজীবীর স্বাক্ষরসহ একটি খোলা চিঠি ছাপিয়েছিল ১৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে। খোলা চিঠিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন জানানো হয় এবং গাজার বাসিন্দাদের ওপর ইসরাইলি বর্বরোচিত বোমা হামলার বিষয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নীরবতার সমালোচনা করা হয়। এই অপরাধে আর্ট ফোরামের দীর্ঘ ছয় বছর ধরে নেতৃত্ব দেয়া প্রধান সম্পাদক ডেভিড ভেলাস্কোকে বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।

ভেলাস্কো বলেছেন, তিনি দুঃখ পাননি। কিন্তু হতাশ হয়েছেন, কারণ যে পত্রিকাটি সব সময়ই মত প্রকাশের এবং শিল্পীদের স্বাধীন কণ্ঠস্বরের পক্ষে কথা বলে এসেছে সেটি বাইরের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে।

একই অবস্থা কানাডায়। সেখানে গ্লোবাল নিউজ নামে এটি বার্তা সংস্থার সাংবাদিক ছিলেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত কানাডীয় নাগরিক জাহরা আল-আখরাস। তাকে বরখাস্ত করা হয় সামাজিক মাধ্যমে ফিলিস্তিনের পক্ষে দেয়া পোস্ট সরিয়ে নিতে অস্বীকার করার কারণে। গত অক্টোবরে এমন সময়ে জাহরাকে বরখাস্ত করা হয় যখন তিনি সন্তানের জন্মদানের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন।

সামাজিক মিডিয়ায় আল-আখরাস যেসব পোস্ট দিয়েছেন তার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেয়ায় জলবায়ু ইস্যুতে আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গকে ধন্যবাদ জানানো থেকে শুরু করে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গ্যালান্টের বক্তব্য রয়েছে। যেখানে গ্যালান্ট ফিলিস্তিনিদেরকে ‘নরপশু’ বলে সম্বোধন করেছেন। গাজা উপত্যকায় ‘কোনো নিরীহ মানুষ নেই’ বলে ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের মন্তব্যের সমালোচনা করেও পোস্ট দেন জাহরা। তাকে বরখাস্ত করে গ্লোবাল নিউজ বলেছে, জাহরার পোস্ট ‘সহিংসতার পক্ষে ওকালতি’ এবং তা সাংবাদিকতায় ‘গুরুতর পক্ষপাতিত্বের’ ধারণা দেয়।

জাহরাকে বরখাস্তের মতো ঘটনা কানাডায় অসংখ্য। একটি বিখ্যাত রেস্টুরেন্টের বাইরে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল করছিল জনতা। রেস্টুরেন্টের কাস্টমার এবং কর্মচারীদের কয়েকজন সেই বিক্ষোভ দেখতে বেরিয়ে এসেছিলেন। কর্মচারীরা বিক্ষোভকারীদের প্রতি হাত নেড়ে সমর্থন জানান এবং জনতার সঙ্গে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগানও দেন। এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের সবাইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

আরো উদাহরণ দিয়ে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না। শুধু বলি, পাশ্চাত্যের সব দেশে, প্রায় প্রতিটি সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সব ধরনের ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক এমনকি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানও ফিলিস্তিনের পক্ষে যে কোনো ধরনের বক্তব্য, বিবৃতি, প্রচারণা এবং সব রকম কর্মকাণ্ডের ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। শত শত শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, হাসপাতালের কর্মীদের বরখাস্ত করা হয়েছে। অটোয়া ইউনিভার্সিটি তাদের মেডিক্যালের আবাসিক ডাক্তার ই পেং জি-কে বরখাস্ত করে ব্যক্তিগত সামাজিক মাধ্যমে ফিলিস্তিনের পক্ষে মন্তব্য লেখার কারণে। সে মন্তব্যে ‘ফ্রম রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ স্লোগানের উল্লেখ ছিল। অটোয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বলছেন, ওই স্লোগানটিকে তারা ‘ইসরাইল থেকে ইহুদি জনগোষ্ঠীর জাতিগত নির্মূলের’ আহবান হিসাবে বিবেচনা করে। অর্থাৎ পাশ্চাত্য এটিকে ইহুদিবিরোধী (এন্টি-সিমেটিক) স্লোগান মনে করে।

ইসরাইলের পক্ষে সবচেয়ে নির্লজ্জ ভূমিকা নিয়েছে কিন্তু বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যারা সর্ববৃহৎ সামাজিক মাধ্যমগুলোর নিয়ন্তা। তারা সুপরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনের পক্ষের এবং গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার গণহত্যার বিরুদ্ধে সামান্যও সমালোচনামূলক সব পোস্ট সেন্সর করছে। কিন্তু ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ঘৃণা-বিদ্বেষমূলক প্রচারণায় উৎসাহ জোগাচ্ছে। তারা যুদ্ধের সব খবর, ভিডিও ও ছবি বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছে। ৭ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যবর্তী ২৩ দিনে একমাত্র টিকটক মধ্যপ্রাচ্য থেকে আপলোড করা নয় লাখ ২৫ হাজার ভিডিও সরিয়ে ফেলে। সাবেক টুইটার বা এক্স ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে অপসারণ করেছে সাড়ে তিন লাখের বেশি পোস্ট। আর মেটা বা ফেসবুক সরিয়েছে প্রায় ৮০ লাখ পোস্ট। এমনও হয়েছে, মেটা কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনপন্থী পোস্টদাতাকে সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত করেছে। পরে এর একটা ফালতু কারণ দেখিয়ে সেই অপকর্মে বিরতি দিয়েছে।
একটি নির্যাতিত জাতির বিরুদ্ধে খড়গহস্ত এবং বর্বর হত্যাকারী ইহুদিদের পক্ষে এই যে বেপরোয়া অন্যায় সমর্থন, এগুলো কেবল সামাজিক মাধ্যম কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেয় হচ্ছে তা নয়। এর পেছনে আছে পশ্চিমা সরকারগুলোর সরাসরি চাপ। এছাড়াও সরকারগুলো অবিরাম ভুয়া, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করছে সামাজিক মিডিয়ায়।

সচেতন পাঠকের মনে থাকতে পারে, ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর খোদ বিশে^র সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি কী বলেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বয়োবৃদ্ধ প্রেসিডেন্ট মি. জো বাইডেন বলেছিলেন, হামাসের আক্রমণকারীরা একটি ছোট্ট ইসরাইলি বালিকাকে গলা কেটে হত্যা করেছে। আর সেই ভিডিও তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন। পরে হোয়াইট হাউজ ব্যাখ্যা দেয়, না প্রেসিডেন্ট এমন কোনো ভিডিও দেখেননি। কিন্তু ব্যাখ্যা যেমনই দেয়া হোক, পাশ্চাত্যের ক্ষমতার কেন্দ্র যার হাতে সেই ব্যক্তির মিথ্যাচারের এই প্রবণতা ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার তীব্র অন্ধ ঘৃণার প্রকাশ ঘটিয়েছে। যার হৃদপিণ্ডের ভেতরে এমন গাঢ় অন্ধকার, তার হাতে বিশে^ শান্তির মশাল জ্বলবে এমন কোনো সুযোগ কি আছে?

এসব তথ্য আমরা তুলে ধরছি ফিলিস্তিনের পক্ষের জনগণকে হতাশ করার জন্য নয়, বরং তারা কত বড় ও কট্টর নীত-নৈতিকতার বোধশূন্য প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদের কণ্ঠ উচ্চকিত করছেন সেটি বোঝানোর জন্য। ফিলিস্তিনি তথা মুসলিমদেরকে কতটা ভয়াবহ বিরূপতার মোকাবেলা করতে হচ্ছে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। এমন ভাবার কারণ নেই যে, ফিলিস্তিনের পক্ষের সবাই নিশ্চুপ হয়ে পড়েছেন। তা নয়। বরং গাজা যুদ্ধ সারাবিশে^র ন্যায়বান শুভবুদ্ধির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। তাদের চেতনা সুসংহত করেছে। এই চেতনার বিস্ফোরণ ঘটবেই, আজ অথবা কাল।

আজকের এই পোস্টটি লেখার ইচ্ছে ছিল ফিলিস্তিনিদের প্রাণের স্লোগান ‘ফ্রম রিভার টু দ্য সি/প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ প্রসঙ্গে। পশ্চিমারা কেন এটিকে ইহুদি নির্মূলের আহবান বলে ভাবে আর এর প্রকৃত অর্থইবা কী, তাই নিয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমরা সে প্রসঙ্গে যাইনি আগাগোড়াই। সবশেষে এটুকু বলে যাই, ফিলিস্তিনের ম্যাপের দিকে তাকালে একটি বিস্ময়কর দৃশ্য দেখবেন। এলাকাটির পশ্চিম সীমান্তের অর্ধেকেরও বেশি অংশজুড়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে বয়ে গেছে একটি নদী। সেটির নাম জর্দান নদী, আরবিতে বলে ‘নহর আল উরদুন’। এটিকে ফিলিস্তিনের প্রাকৃতিক সীমানা বলা যায়। এই নদী থেকে পুব দিকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত যে ভূখণ্ড সেটিই হাজার হাজার বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের আবাস ভূমি, মাতৃভূমি। স্লোগানটির উদ্ভব এই ভৌগোলিক বাস্তবতা থেকে ১৯৬৪ সালে, যখন ইয়াসির আরাফাতের হাতে পিএলও বা ফিলিস্তিন লিবারেশন অরগানাইজেশনের সৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ওই স্লোগানের মর্মে ইহুদিবিদ্বেষ নয়, রয়েছে ফিলিস্তিনের ভূমিপুত্রদের পরস্পর মিলেমিশে থাকার গভীরতর চেতনা।

ই-মেল : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement