বাংলাদেশ কি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ
- ড. মো: মিজানুর রহমান
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:০০
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে তলাবিহীন ঝুড়ির খেতাব নিয়ে। সে বাদনাম ঘুচিয়ে সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য খাদ্যঘাটতি ছিল ২৫-৩০ লাখ টন। এই ঘাটতি মোকাবেলায় স্বাধীনতার পরই সবুজ বিপ্লবের ডাক দেয়া হয়। স্লোগান ছিল- কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও গ্রামীণ উন্নয়নের লক্ষ্যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় যেখানে কৃষির গুরুত্ব ছিল অন্যতম।
সরকার, গবেষক এবং সম্প্রসারণবিদদের যৌথ প্রচেষ্টায় দেশের কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়। আধুনিক বীজ ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য প্রায় প্রতিটি প্রধান ফসল, মৎস্য ও পশুসম্পদের জন্য রয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান। গবেষণার ফল কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের রয়েছে দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক। অনেক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। মেধাবী কৃষিবিদগণ বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশের কৃষি সেক্টরে ভূমিকা রাখছেন। এ ছাড়াও সরকার কৃষকের আধুনিক সার, ওষুধ, পানি, বীজ সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়। ইদানীং প্রতি অর্থবছরের বাজেটে কৃষি খাতে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়, যার বেশির ভাগ ব্যয় হয় জ্বালানি ও সারের জন্য। কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ দেয় কৃষি ব্যাংক।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে অনুপ্রেরণা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষে বাংলা অঞ্চলসহ ভারতবর্ষের প্রায় ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। খেতে না পেয়ে এত মানুষের মৃত্যুর দুঃসহ স্মৃতি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগায়। ষাটের দশকে উন্নত উপকরণ ব্যবহার এবং আধুনিক যন্ত্র ও প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগতে শুরু করে কৃষিতে। ১৯৬৫ সালে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) দেশে আধুনিক জাতের ধান চাষ শুরু করে যার ফলন ছিল অনেক বেশি।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ডাল-ভাত নিশ্চিত করতে দেশে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান ও ফসলের চাষ বাড়তে থাকে। আশি থেকে নব্বইয়ের দশকে কৃষিযন্ত্র এবং উপকরণের উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতকরণ থেকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়ে তা বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়। ধীরে ধীরে বিজ্ঞানীদের আনা নতুন প্রযুক্তি ও সেবা গ্রহণ করার আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করেন কৃষকরা। ফলে দেশে শীতকালে ফসল উৎপাদন অর্থাৎ বোরো ধান ও সবজি চাষে বিনিয়োগ বেড়ে যায়। কৃষি বৃষ্টিনির্ভরতা থেকে সেচের দিকে এবং দেশী জাত থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের দিকে ধাবিত হয়।
পুকুরে মাছ চাষ ও পোলট্রিশিল্পের বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়। নতুন নতুন কৃষি অবকাঠামো গড়ে ওঠে। দুর্যোগে কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়। সামগ্রিকভাবে দেশে কৃষিবান্ধব একটি আবহ তৈরি হয়। কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার শুরু হয়। ফলে খাদ্য উৎপাদন বাড়তে থাকে।
এফএওর বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫২ বছরে বাংলাদেশে প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ গুণ। ১২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী দেশ। পোলট্রি শিল্পে গত ১০ বছরে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০০ শতাংশ। ১০ বছরে দুধের উৎপাদন তিন গুণ বেড়েছে।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১ শতাংশ হারে চাষের জমি কমছে। তদুপরি কৃষির অগ্রগতির ফলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ইফপ্রি) ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন মতে, দেশের দারিদ্র্য নিরসনে কৃষি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনবিষয়ক বিভ্রান্তি
গত দশক থেকেই সরকার বলতে শুরু করে বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের উৎপাদিত খাদ্যশস্য এখন রফতানি হচ্ছে বিদেশেও। স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রারম্ভিক বছরগুলোয় দেশে খাদ্যসঙ্কট দেখা দেয়; দুর্ভিক্ষে মারা যায় অসংখ্য মানুষ। ওই ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতি যেন আর না ঘটে, সে জন্য সরকার খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছিল। খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কোনো সরকারই চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি।
তবে খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে। সাধারণ দৃষ্টিতে কোনো পণ্যে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণতা’ মানে এটা বোঝায় যে পুরো অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে দেশে পণ্যটি পর্যাপ্ত উৎপাদন হয়, আমদানির প্রয়োজন পড়ে না। যেহেতু আজকের বিশ্বে বেশির ভাগ পণ্যই রফতানি ও আমদানিকৃত, সেহেতু স্বয়ংসম্পূর্ণতার সংজ্ঞা আরো বিস্তৃত হয়ে এমন এক বাজার পরিস্থিতিকে বোঝায়, যেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো পণ্যের নিট রফতানি ধনাত্মক।
কিন্তু বাড়তি উৎপাদনের মধ্যেও বাংলাদেশকে সবসময়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়েছে। সাধারণভাবে এটা ইঙ্গিত দেয় যে দেশ কখনোই খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল না। অতএব, সরকারের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবি তাদের রাজনৈতিক প্রচারণামাত্র। স্বয়ংসম্পূর্ণতা সম্পর্কে এসব বিচিত্র মন্তব্যের কারণ হয়তো কর্তা ব্যক্তিরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা দাবির ক্ষেত্রে উল্লিখিত সংজ্ঞা ব্যবহার করেননি। তারা সম্ভবত ক্যালরিভিত্তিক ধারণা ব্যবহার করেছেন। প্রথম দিকে নীতিনির্ধারকদের চ্যালেঞ্জ ছিল স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা। কাজেই প্রয়োজনীয় ন্যূনতম ক্যালরি হিসাব করেছিল এফএও। উদাহরণস্বরূপ, বিবিএসের হিসাব করা পুষ্টিমান পরিপূরণে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পরিমাণ ছিল দৈনিক ২১২২ কিলোক্যালরি। বিদ্যমান খাদ্যাভ্যাসে নির্ণীত ক্যালরি নিশ্চিতে দৈনিক জনপ্রতি কতটা খাদ্যশস্য প্রয়োজন তার ভিত্তিতেই বার্ষিক চাহিদা সহজেই হিসাব করা হয়েছিল। প্রতি বছর দেশে প্রয়োজনীয় মোট খাদ্যশস্যের পরিমাণ নির্ধারণে এটাকে মিডইয়ার পপুলেশন দিয়ে গুণ করা হয়েছিল। যদি কোনো সময় এই হিসাবকৃত পরিমাণের চেয়ে বাড়তি উৎপাদন হয়, সেটিকে মনে করা হয়েছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। এই মানদণ্ডে চলতি শতকের শুরু থেকেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল। এ সংজ্ঞায় দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার দুই দশক পরও খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবি বিভ্রান্তিকর এবং তার কোনো ব্যবহারিক তাৎপর্যও নেই।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার যখন বাজারভিত্তিক সংজ্ঞা প্রয়োগ করা হয়, তখন খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিষ্প্রভ হয়ে যায় এবং বিপুল ঘাটতি সামনে আসে। প্রকৃতপক্ষে, শুরু থেকেই বাংলাদেশকে তীব্র খাদ্য ঘাটতিতে ভুগতে হয়েছে। এ ঘাটতি চলতি শতকের শুরু নাগাদ ধীরে ধীরে কমছিল, তবে তারপর থেকে ঘাটতি বেড়ে চলছে। গত পাঁচ বছরে এটি অনেকটাই বেড়েছে, যখন খাদ্যশস্যের বার্ষিক গড় আমদানি অনুপাত অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
আরেক আশঙ্কাজনক প্রবণতা হলো, মূল খাদ্যশস্য চাল উৎপাদনে স্থবিরতা। গত শতকে যেখানে প্রতি বছর চালে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল সেটি ২০০১-২১ পর্বে কেবল ১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসে এবং অতিসম্প্রতি ২০১১-২১ পর্বে তা কেবলই শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশে নেমে আসে। গত শতকে বেশ সফল হওয়া উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তেজ হারিয়েছে। কৃষিবিজ্ঞানীরা খাদ্যশস্য উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানোর নতুন পদ্ধতি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত খাদ্যশস্য আমদানি আরো বাড়বে।
বিদ্যমান জনমিতিক প্রবণতা অনুসারে আগামী দশক বা পরবর্তী সময়ে দেশের জনসংখ্যা গড়ে প্রতি বছর শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ হারে বাড়বে। যদি দেশ প্রতি বছর মোট জাতীয় আয়ের (জিএনআই) অন্তত ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে পারে তাহলে মাথাপিছু আয় ৬ শতাংশ হারে বাড়বে। যদি ধরে নিই যে খাদ্যশস্যের চাহিদার আয় স্থিতিস্থাপকতা শূন্য দশমিক ২, তাহলে আগামী দশকে প্রতি বছর খাদ্যশস্যের মোট চাহিদা প্রায় ২ দশমিক ১ শতাংশ বাড়বে। এই ধারণা যদি ঠিক থাকে তাহলে ২০৩১ সালে খাদ্যশস্যের অভ্যন্তরীণ চাহিদার পরিমাণ হবে ৫৪ দশমিক ২৬ মিলিয়ন টন।
আগামী দশকে আমরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারি, তা হলো ২০৩১ সাল নাগাদ ১১ মিলিয়ন টনের বেশি খাদ্যশস্যের ঘাটতি হতে পারে, যা গত এক দশকে বার্ষিক গড় খাদ্যশস্য আমদানির দ্বিগুণ। এ ঘাটতি মেটানোর একমাত্র উপায় উচ্চহারে উৎপাদন বাড়ানো; কিন্তু গত দশকের অভিজ্ঞতা ততটা আশাব্যঞ্জক নয়। আরেকটা উপায় হতে পারে অন্য খাদ্যশস্য উৎপাদনের দিকে যাওয়া। একই সাথে দরকার হবে খাদ্যবহির্ভূত শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি যেন খাদ্যশস্যের ক্ষতির চেয়ে কম না হয় সেটি নিশ্চিত করা। তেমনটা হলে আমাদের আরো খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে।
এটি স্পষ্ট যে বাংলাদেশে অদূরভবিষ্যতে বড় ধরনের খাদ্যঘাটতির শঙ্কা আছে। সুতরাং স্বয়ংসম্পূর্ণতার বিভ্রান্তিকর নীতি পরিহার করে এখন নজর দেয়া উচিত খাদ্যনিরাপত্তার ওপর। এটিই অধিক উন্নত ও সচ্ছল দেশগুলোয় খাদ্যনীতির অন্যতম ভিত্তি। খাদ্যনিরাপত্তা পুরো জাতির পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্যের লভ্যতাকে বোঝায়।
বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম খাদ্য আমদানিকারক
এফএও’র সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিশ্ববাজার থেকে প্রায় ১২.৫ মিলিয়ন টন খাদ্যপণ্য আমদানি করে বিশ্বের খাদ্য আমদানিকারক দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় বাংলাদেশ। এফএওর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ প্রায় ৯৩.৩ মিলিয়ন টন কৃষিপণ্য উৎপাদন করেছে এবং এই বছর বিশ্ববাজার থেকে প্রায় ১২.৫ মিলিয়ন টন খাদ্যপণ্য আমদানি করেছে।
এফএওর প্রতিবেদনে অবশ্য বলেছে, খাদ্য রফতানিতে বাংলাদেশের অবস্থান তলানির দিকে। বিশ্বের প্রধান ছয়টি খাদ্যপণ্যের মধ্যে চাল উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে আছে দেশ। ২০২২ সালে বাংলাদেশ প্রয়োজনের ১১.২ শতাংশ খাদ্য আমদানি করে। সুতরাং বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কথাটি বাস্তবতাবিবর্জিত বলেই মনে হয়। ফলে দেশে কোনো ধরনের জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিলে সবসময় বিশ্ববাজারের সাথে চুক্তিভিত্তিক বাধ্যবাধকতার ওপর নির্ভর করতে পারবে না। ভবিষ্যতের প্রতিকূল অবস্থার কথা মাথায় রেখেও অভ্যন্তরীণ খাদ্যবাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে বাংলাদেশকে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। দ্রুত অপ্রত্যাশিত চাহিদার প্রভাব কমাতে হবে। নাহলে আগামী দিনে খাদ্য পরিস্থিতি মোকাবেলা কঠিন হতে পারে।
লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা