আধুনিকতা শেষ কথা নয়
- মুসা আল হাফিজ
- ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:০৯
বহু শতাব্দীর এজ অব ডার্কনেসের মৃত গুহা থেকে জেগে উঠল ইউরোপ। গুহার ভেতর নতুন উদ্যমের ঢেউ, নতুন প্রাণের তরঙ্গ। প্রাচীন গ্রিসের দর্শন গান গাইছে, শিল্প ও সাহিত্য মাথা তুলছে। বিজ্ঞানও পেখম বিস্তার করছে। সবুজ সম্ভাবনার উঠান বড় হচ্ছে ক্রমেই। এই যে উদয় ও উদগম, এই যে দৃষ্টি উন্মোচন, স্পেন ও ইতালির পথ ধরে দীর্ঘকাল ধরে মুসলিম প্রভাব কাজ করেছে এর মর্মমূলে।
আলো ও অগ্রগতির পেছনে হাঁটতে পারা ভুলে গিয়েছিল খ্রিষ্টীয় ইউরোপ। এবার সেখানে ঘটল বিস্ময়ের উত্থান। এর কেন্দ্রে ছিল জ্ঞান, যুক্তি ও জিজ্ঞাসা, অভিজ্ঞতাবাদ। পরীক্ষামূলক পদ্ধতির বিকাশ। প্রকৃতিকে জানা ও জয় করা। আরবদের বৈজ্ঞানিক গ্রন্থাবলির অনুবাদ আন্দোলন ছিল এ পথের প্রথম দরজা উন্মোচন। একাদশ ও দ্বাদশ শতকে লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি, বাথের এডেলারড, আফ্রিকান কনস্ট্যান্টিন, পিটার এবেলার্ড প্রমুখ ছিলেন এ আন্দোলনের প্রাণপুরুষ। আরবদের জ্ঞান অধ্যয়নের আন্দোলন শুরু হয় এর পরে। এর নাম পড়েছে আরববাদ। এটি সংগঠিত করেন রবার্ট গ্রোসেটেস্ট, জন ডান্স স্কোটাস, রজার বেকন, জোভান্নি বোক্কাচ্চো ও ফ্রান্সিস বেকন প্রমুখ।
মধ্যযুগে পশ্চিমা জীবনের সব কিছুর সব কিছু ছিল ঈশ্বরে বিশ্বাস। সব ভাবনা ঈশ্বর থেকে শুরু হতো, ঈশ্বরে গিয়ে শেষ হতো। সব কাজ, চিন্তা ও ধারণার বৈধতা-অবৈধতার পাহারাদারি করত গির্জা। সবই করত ঈশ্বরের নামে। যা কিছু গির্জার ইচ্ছা ও ব্যাখ্যার অনুকূল, তা ছিল সঠিক। যা কিছু গির্জাপতিদের অবস্থান ও স্বার্থের জন্য অস্বস্তিকর মনে হতো, তা প্রত্যাখ্যান করা হতো ঈশ্বরের নাম করে। জীবনের সব বন্ধনমুক্তির প্রয়াস বাধাগ্রস্ত করার প্রধান শৃঙ্খল হয়ে উঠল গির্জার আরোপিত ঈশ্বর। রেনেসাঁসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল। সে সব কিছুর কেন্দ্র থেকে ঈশ্বরকে সরাতে চাইল, সেখানে প্রতিস্থাপন করতে চাইল হিউম্যানিজম বা মানবতন্ত্রকে। ঈশ্বরকে জীবন থেকে সরাতে চাইলেও সরাতে পারেনি রেনেসাঁ। ঈশ্বর বিশ্বাসকে সে মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তিবাদের হাতে ছেড়ে দিলো। উভয়ের মধ্যে কোথাও সমঝোতা হলো, কোথাও জ্বলতে থাকল দ্বন্দ্ব।
এই বিরোধ ও সমঝোতার উপত্যকা দিয়ে ঝড় এলো ধর্মজীবনেও। জার্মানির মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬ সাল) ক্যাথলিক চার্চের স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে করলেন বিদ্রোহ। ১৫১৭ সালে যাজক টেটজেল সেন্ট পিটার্স চার্চ সংস্কারের অজুহাতে জার্মানির স্যাক্সনিতে যান। সেখানে তিনি পাপমুক্তির ছাড়পত্র হিসেবে ইনডালজেন্স বা মার্জনাপত্র বিক্রি করতে শুরু করেন। মার্টিন লুথার এই মার্জনাপত্র বিক্রির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। প্রথমবারের মতো খ্রিষ্টান চার্চ ও পোপতন্ত্রের বিরুদ্ধে শুরু হলো আন্দোলন। খ্রিষ্টের শেষ নৈশভোজের স্মরণে খাদ্যরূপে রুটি ও মদ গ্রহণ রীতি (The Eucharist), খ্রিষ্টধর্মের আনুষ্ঠানিক দীক্ষাগ্রহণ (Baptism), দোষী ব্যক্তিকে পাদ্রি কর্তৃক শান্তি প্রদান (Penance) এবং অর্থের বিনিময়ে পাপমুক্তি (Indulgence) ক্রয় প্রভৃতি অহেতুক আচার-অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করেন লুথার। এ আন্দোলনের ফলে খ্রিষ্টানরা দু’টি সম্প্রদায়ে ভাগ হয়ে যায়। পোপতন্ত্রের অনুগামী বা সমর্থকরা ক্যাথলিক (Catholic) এবং পোপের বিরোধিতাকারী তথা লুথারের সমর্থকরা প্রোটেস্ট্যান্ট (Protestant) বা প্রতিবাদী নামে পরিচিতি পান।
সময়ের এই চক্রে ঘটনাগুলো ঘটে চলছিল অব্যাহতভাবে। প্রাকৃতিক জগৎকে বোঝার চেষ্টায় Natural Philosophy বা প্রাকৃতিক দর্শনের প্রসার, যার আওতায় ছিল চিকিৎসাবিজ্ঞান, জ্যোতিষ, অপরসায়ন (alchemy), ম্যাজিক, গণিত, জ্যামিতি, শারীরবিদ্যা ইত্যাদি।
জঁ বুরিদারেন ‘ইমপেটাস তত্ত্ব’, কোপারনিকাস লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, পিকোদেল্লা মিরানদোলা, কেপলার ও গ্যালিলিও প্রমুখের আবিষ্কার, নিউটনের ফিলোসফি ন্যাচারালিস প্রিনসিপিয়া ম্যাথমেটিকার প্রকাশ, বীজগণিত ও ত্রিকোণমিতির ক্ষেত্রে উন্নতি, যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রযুক্তির বিস্তার, চিত্রাঙ্কনে নতুন দৃষ্টি ও আঙ্গিকের চল, ধাতুবিদ্যা, জাহাজ নির্মাণ ও কারিগরি শিল্পে বিজ্ঞানের প্রয়োগ, যুক্তি বিজ্ঞান পদার্থ ও শরীর বিজ্ঞানের উন্নতি, পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা ও গাণিতিক ব্যাখ্যা, অর্থনীতির প্রয়োজনে নতুন বিজ্ঞানের জন্ম, উৎপাদননির্ভর, মুদ্রানির্ভর, মুনাফানির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, গ্রহণক্ষেত্রের গতিপথ, আবর্তন ইত্যাদি নিয়ে নতুন কৌতূহল, নৌ-পরিবহন, উপনিবেশ স্থাপন, বাণিজ্য, যুদ্ধ, নরহত্যা, জাতিহত্যা... একের পর এক ঘটছিল ঘটনার পর ঘটনা। এসবের ক্রমধারা নিশ্চিত হয় ছাপাখানার প্রচলনের পরে।
১৪৫৫ সালে গুটেনবার্গ ২৬টি ধাতুর তৈরি স্থানান্তরযোগ্য ২৬টি অক্ষর দিয়ে টাইপ (Movable Type) ছাপাখানা স্থাপন করেন জার্মানির মেনাজ শহরে। তিনি শুধু ছাপাখানাই স্থাপন করেননি, তৈলাক্ত কালির ব্যবহারও তিনি করতে শেখেন। ১৪৫০ সালের দিকে ইউরোপে সর্বপ্রথম নেদারল্যান্ডে ব্লক বই তৈরি হলো। ইংরেজি ভাষায় ইংল্যান্ডে প্রথম গ্রন্থ মুদ্রণ করলেন ইউলিয়াম ক্যাক্সটন (William Caxton)। আমেরিকায় মুদ্রণযন্ত্র প্রবর্তিত হয়েছিল ১৬৩৮ সালে। রেনেসাঁ যুগে কমপক্ষে তিন হাজার বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল, এ সবের ফলে বিজ্ঞানচর্চা প্রসারিত হয়।
পঞ্চদশ শতকের মধ্যভাগ থেকে ইউরোপীয় চেতনায় বিশ্বচরাচর সম্পর্কে নতুন বোধের সঞ্চার হতে থাকল। যার গর্ভ থেকে জন্ম নেয় আধুনিক বিজ্ঞানের ধারাবাহিক উত্থান। এ সময় মানুষ, সমাজ ও জীবনের বিকাশ প্রকৃতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ভৌগোলিক অভিযানের জোয়ার আসে, রেনেসাঁ সংগঠিত হয়, খ্রিষ্টধর্মের সংস্কার ঘটে, এর পর ঘটে প্রতিসংস্কার, রিজন বা এনলাইটেনমেন্টের ক্রমবিকাশ ঘটে, সাহিত্যে আসে রোমান্টিক যুগ, বিশেষ চরিত্র নিয়ে বিকশিত হয় ভিক্টোরীয় যুগ। এরপর একে একে ঘটতে থাকে ফরাসি বিপ্লব, ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধ, মানবতাবাদের উত্থান, আমেরিকান বিপ্লব, শিল্পবিপ্লব, ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ, ১৮৪৮ সালের বিপ্লব ইত্যাদির উত্থান। বস্তুবাদী দর্শনের উদ্ভব ঘটে, প্রাযুক্তিক আবিষ্কারের অগ্রগতি নিশ্চিত হয়, যুক্তিবাদ হয়ে উঠে জীবনের চালক। প্রথা, ঐতিহ্য, ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক অনুশাসন ইত্যাদি প্রত্যাখ্যানের ভেতর দিয়ে নির্মিত হতে থাকে নতুন প্রথা, ঐতিহ্য, বিশ্বাস, অনুশাসন। এসবের কেন্দ্রে থাকে মানুষ ও মানুষের চিন্তা, উদ্ভাবন। এরই মধ্য দিয়ে বিকশিত হয় একটি সর্বপ্লাবি প্রকল্প; মডার্নিটি-আধুনিকতা।
কী এই আধুনিকতা? রেওয়াজি সংজ্ঞায়ন ও স্বীকৃতি আধুনিকতার স্বভাব ও রীতিতে উপেক্ষিত। সে কোনো কেন্দ্রকে যেমন কেবলা মানে না, তেমনি সে প্রতিষ্ঠানবিরোধীও। জন্মটা তার ইউরোপে। তাই বলে সে ইউরোপীয় নয়। তার পেছনে প্রধানত আত্মবিনিয়োগ করেছে বিশেষ সভ্যতার মানুষ। তাই বলে সে কোনো বিশেষ সভ্যতারও নয়। এমনকি সে কোনো বিশেষ কালের ব্যাপার হতেও রাজি নয়। কিন্তু আধুনিকতা একটি দার্শনিক আন্দোলন হিসেবেই তো বিকশিত হয় অষ্টাদশ ও উনিশ শতকে। তার বিকাশক্ষেত্র ছিল পশ্চিমা সমাজ। মানুষের জীবনে ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী রূপান্তর সে নিয়ে আসে। সে বহুমাত্রিক পরিবর্তন ও সাংস্কৃতিক প্রবণতা হিসেবে ক্রমবিকশিত, ক্রমপ্রসারিত। আধুনিকতার কাণ্ডারিদের সৃষ্টি ও দৃষ্টিতে এর বয়ান ও বয়ন তো একেবারে অস্পষ্ট নয়। তারা ঐতিহ্যবাহী শিল্প, স্থাপত্য, সাহিত্য, ধর্মীয় বিশ্বাস, দর্শন, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, দৈনন্দিন কাজকর্ম এমনকি বিজ্ঞানেও আধুনিকতার অভিঘাত স্পষ্ট করেছেন। যার ফলে পুরোপুরি শিল্পায়িত সমাজের উত্থান ঘটেছে এবং তাদের বিচারে নতুন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোতে পুরোনো যা কিছু, তা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও সেকেলে হয়ে পড়েছিল। আধুনিকতা ব্যাপক ও গভীর পরিবর্তন নিয়ে আসে সামাজিক চিন্তাধারায়, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে, আবিষ্কার ও উদ্ভাবনে, শিল্প ও নগরায়নে, কল্যাণ চিন্তা ও প্রকল্পে, সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণে, আর্ট, নন্দন ও মননচর্চায় এবং শিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থায়। প্রতিটি ক্ষেত্রে আধুনিকতা বিশ্বের সবার কাছে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দিয়েছে এবং তার প্রতিফলন দেখতে চেয়েছে।
বাজার অর্থনীতি, শিল্পজাত ব্যবস্থা ও নগরকেন্দ্রিক জীবনপরিক্রমাকে প্রণোদিত করেছে। সামাজিক বিন্যাসে সে আনে পরিবর্তন। নতুন শ্রেণিচেতনা ও শ্রেণিঅবস্থান সৃষ্টি করে, তৈরি করে নতুন চালক ও শাসক শ্রেণী, শাসনপ্রস্তাবনা। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন বিন্যাস দেয়। গণতন্ত্র, ধনতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে দেয় প্রবল বিক্রম ও প্রতিষ্ঠা। তার জীবনবাদিতার মর্মমূলে থাকে বস্তুবাদ এবং স্পষ্ট বা প্রচ্ছন্ন ভোগবাদ। এই যুগের বৈশিষ্ট্যের শিরোভাগে রয়েছে যুক্তিবাদ। সেক্যুলারিজম আধুনিকতার প্রাণভোমরা। মানবমহিমা, ব্যক্তিবাদ, মানবাধিকার, নারীমুক্তি ও সাম্য-স্বাধীনতার সেøাগান বিপুলভাবে উচ্চারিত হয়েছে আধুনিকতার কণ্ঠে। যার সমবায়ে এক ধরনের বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও সংস্কৃতির জন্ম হয়, যাকে আধুনিকতা বলে বিবেচনা করা হয়। এসবের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার আধুনিকতার মানদণ্ড হিসেবে স্বীকৃত ও বিবেচিত হয়ে এসেছে।
‘আধুনিক’ বা modern কথাটির প্রথম ব্যবহার ঘটে ১৬ শতকের শেষ ভাগে। প্রথম যখন কথাটির চল হলো, তখন সে বোঝাত বর্তমানকে, এখনকে, সাম্প্রতিকতাকে। এ কথাই বলেছেন রেমন্ড উইলিয়ামস, বিখ্যাত ‘Key Words. A Vocabulary of culture and society’ গ্রন্থে। এর মানে পরিষ্কার। আধুনিকতার একটি কালগত অবস্থান রয়েছে। ইতিহাসের ধারণায় যা কিছু অতীত, তা থেকে সে আলাদা। সে একটি সীমারেখা। সে সাবেককে বর্তমান থেকে আলাদা করে। বর্তমানকে জীবিত করে নতুনত্বে। সে মধ্যযুগের পরের। তাহলে তো তার কয়েক শতাব্দীর অতীত তৈরি হয়। কিন্তু কোনো বিশেষ সময়ের দাসী নয় সে। ফলে সে এই যে জ্বলজ্বল করছে আজ, সেই আজও। আধুনিকতা এভাবে নিজেকে হাজির করে এবং নিজের বিকল্পকে খারিজ করে।
এর ফলে দেখানো হয় সে হচ্ছে বর্তমান এবং সে-ই হচ্ছে ভবিষ্যৎ। সে গতকাল ছিল বর্তমান, আজো সে-ই বর্তমান। এভাবেই চলবে। যেন আধুনিকতায় এসে চূড়ান্তে পৌঁছে গেছে ইতিহাস। দর্শন। বিজ্ঞান। সভ্যতা। সে যেন শেষ গন্তব্য। আর কোনো গন্তব্য নেই। কাল চলমান। কিন্তু আধুনিকতা ছাড়া মানুষ কোথাও যেতে পারে না, যেতে পারছে না। যেতে পারবে না। অতএব এই জায়গায় এসে আধুনিকতা নিজেই হয়ে উঠল এক শৃঙ্খল, এক প্রাচীর, এক কারাগার। অথচ জীবনের উপর চেপে বসা শৃঙ্খল ও সীমাকে নস্যাৎ করবে বলে আধুনিকতার জন্ম! আধুনিকতার জন্মের মধ্যে নিহিত আছে এই তত্ত্ব যে, আধুনিকতার পরেও কিছু আছে। যা এই আধুনিকতা নয়। যা ভিন্ন কিছু, ভিন্ন পথ, ভিন্ন বিকল্প।
লেখক : কবি, গবেষক
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা