তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল অস্বচ্ছতায় আবদ্ধ
- ইকতেদার আহমেদ
- ০৭ আগস্ট ২০২৩, ১৯:৫৩
বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলেও এ দেশে যে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীন সুষ্ঠু হয় না এটি রূঢ় বাস্তবতা। বাংলাদেশের সংবিধান জন-অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিতে রচিত। সংবিধানে জন-আকাঙ্ক্ষা বা জনগণের চাওয়াকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ, আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, সাম্য ও সুবিচার নিশ্চিতের উদ্দেশ্যেই সংবিধানটি প্রণীত হয়েছে। উপরোক্ত বিষয়গুলো নিশ্চিতের দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের ওপর বর্তায়। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার কারণে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য চরিতার্থের মানসে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার প্রয়াস নেয়া হয় তা বারবার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাস অবলোকনে দেখা যায় এ যাবৎকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে সাতটি নির্বাচন ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশিষ্ট চারটি নির্বাচনের মধ্যে প্রথমোক্তটি কর্মরত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির অধীন, মধ্যবর্তী দু’টি সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন এবং শেষোক্তটি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত সাতটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিটিতেই ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলীয় সরকার হিসেবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এ তিনটি দলের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারবহির্ভূত সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনের প্রতিটিতেই নির্বাচনের অব্যবহিত আগের ক্ষমতাসীনরা পরাভূত হয়েছে।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠুতা নিরূপণে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাংবিধানিক কাঠামোয় প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাস্তবায়নকালীন জন-আকাঙ্ক্ষা বা জনচাওয়া যেমন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সপক্ষে ছিল বর্তমানেও যে তা অনুরূপ রয়েছে এ প্রশ্নে কেউ বিতর্কে অবতীর্ণ হতে চাইলে যেকোনো ধরনের মানসম্পন্ন জরিপের মাধ্যমে এর যথার্থতা নিরূপণ সম্ভব।
সংবিধানে কী আছে বা নেই তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জন-আকাঙ্ক্ষা বা জনচাওয়া কী এবং কী করলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং দেশ সমৃদ্ধি ও উন্নতির পথে অগ্রসর হবে। সংবিধান জনগণের জন্য এবং সংবিধানের জন্য জনগণ নয়। সংবিধান দেশের অপর সব আইনের মতো একটি আইন; তবে অন্যান্য আইনের ওপর এটির প্রাধান্য রয়েছে। সংবিধানে জন-আকাঙ্ক্ষা বা জনচাওয়ার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বিধানের অবসানে ব্যর্থ হলে দেশ ও জাতির জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে।
পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই সমাজ গতিশীল। গতিশীল সমাজে আইন স্থবির হলে তা সময় ও যুগের চাহিদা মেটাতে পারে না। আর এ কারণেই সময় ও যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়া পূরণে আইনের পরিবর্তনের আবশ্যকতা দেখা দেয়। আইনের এ পরিবর্তন তিনটি পদ্ধতিতে করা যায়। এর একটি হলো সন্নিবেশন এবং অপর দু’টি বিয়োজন ও প্রতিস্থাপন।
বাংলাদেশের সংবিধানে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সন্নিবেশন পরবর্তী ১৯৯৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এর বাতিল চেয়ে রিট দায়ের করা হলে তা একটি দ্বৈত বেঞ্চ থেকে সংক্ষিপ্ত আদেশে প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে ১৯৯৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগে পুনঃরিট দায়ের করা হলে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি অন্তে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহালের সপক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। হাইকোর্ট বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সিদ্ধান্ত দেয়ার সাত বছর পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করে শুনানির ব্যবস্থা করা হলে সংক্ষিপ্ত আদেশে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সাতজন বিচারকের সবাই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার বিষয়টি জাতীয় সংসদের মাধ্যমে অবলুপ্ত করে পরবর্তী দু’টি নির্বাচন বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এবং জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন।
আপিল বিভাগের উপরোক্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার ১৬ মাস পর অবসরে থাকাবস্থায় সংক্ষিপ্ত আদেশদানকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক সংক্ষিপ্ত আদেশ থেকে বিচ্যুত হয়ে ৪ : ৩ বিভাজিত রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করেন। বিভাজিত রায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ যে চারজন বিচারক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের সপক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেন তাদের একজন এসকে সিনহা ইতঃপূর্বে প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত আদেশের সাথে একাত্ম হয়ে পরবর্তী দু’টি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে অনড় থাকেন।
সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ আদেশ পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় চারজন বিচারকের সংক্ষিপ্ত আদেশ থেকে বিচ্যুতি আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রণিধানযোগ্য যে, যেকোনো আদালত কর্তৃক প্রকাশ্য আদালতে আদেশ প্রদান পরবর্তী করণিক ভুল বা আকস্মিক ফসকান ব্যতীত অপর কিছু সংশোধনের সুযোগ বারিত। রায় ঘোষণা বিষয়ে দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিমালায় যে নির্দেশনা রয়েছে তাতে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে যে, রায় অবশ্যই প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত ও স্বাক্ষরিত হতে হবে। উচ্চ আদালতের বিচারকরা শপথের অধীন এবং তারা যেমন শপথ গ্রহণ ব্যতিরেকে পদে আসীন হন না অনুরূপ অবসরগ্রহণের সাথে সাথে শপথ থেকে অবমুক্ত হন। অবসরগ্রহণ পরবর্তী যেকোনো আদালতের বিচারক রায় প্রদানপূর্বক স্বাক্ষর দিলে তা বেআইনি ও অকার্যকর এবং আইন দ্বারা অনুমোদিত নয়।
সংক্ষিপ্ত আদেশ ও পূর্ণাঙ্গ রায় এবং অবসর পরবর্তী স্বাক্ষরিত রায় পর্যালোচনায় দেখা যায় পূর্ণাঙ্গ রায়ে চারজন বিচারক পরবর্তী দু’টি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেন। সে নিরিখে বিভাজিত রায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক পরবর্তী দু’টি নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের সপক্ষে। অবসর-পরবর্তী প্রদত্ত রায় বেআইনি ও অকার্যকর বিধায় এটি ৩ : ৩ সমভাবে বিভক্ত রায়। এরূপ সমভাবে বিভক্ত রায়ের ক্ষেত্রে বিধান হলো এটি তৃতীয় বিচারকের কাছে শুনানির জন্য উপস্থাপিত হবে এবং শুনানি অন্তে তিনি যে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন তার সিদ্ধান্তটি ৩ : ৩ অনুপাতে বিভক্ত সিদ্ধান্তের সাথে যুক্ত হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত হিসেবে কার্যকর হবে। আলোচ্য ক্ষেত্রে এটি করা হয় নাই বিধায় অদ্যাবধি এটি সমভাবে বিভক্ত রায়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ সংসদীয় কমিটি দেশের ১০৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সাথে আলোচনার পর প্রদত্ত সুপারিশে তিন মাস মেয়াদে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রেখে সংবিধান সংশোধনের সর্বসম্মত মতামত দেন। মতামত প্রকাশের পরবর্তী দিন কমিটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলে তাদের সুপারিশে প্রদত্ত মতামতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তদস্থলে সংসদ বহাল রেখে ক্ষমতাসীন দলীয় সরকারের অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান সন্নিবেশনপূর্বক সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ করা হয়। এ ধরনের সুপারিশে দেশের বিশিষ্টজনের সাথে মতবিনিময়ের সামগ্রিক প্রক্রিয়া প্রহসনে পর্যবসিত হয়ে জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়া অবদমিত হয়।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলবিষয়ক আপিল শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্টের আটজন বিশিষ্ট আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করতে বলা হলে একজন ব্যতীত অপর সাতজন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রেখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষজ্ঞের মতামতও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহালের সপক্ষে ছিল।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী প্রবর্তন পূর্ববর্তী গণভোটের বিধান বহাল ছিল। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে গণভোটের বিধান সন্নিবেশিত হয় এবং দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটিকে সীমিত করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করলেও দ্বাদশ সংশোধনী এখনো বহাল রয়েছে। এ বাস্তবতায় গণভোট আয়োজন ব্যতিরেকে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের সাংবিধানিক সিদ্ধতা বিতর্কের আবর্তে পতিত হয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ-পরবর্তী শপথগ্রহণ করাকালীন ব্যক্ত করতে হয় যে, তারা বাংলাদেশের সংবিধান ও আইনের রক্ষণ, সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবেন। শপথে উচ্চারিত বাক্যের মাধ্যমে শপথগ্রহণ করাকালীন সংবিধান ও আইনের যে অবস্থান ছিল তা হতে বিচ্যুত হলে শপথ ভঙ্গের দায় এসে যায়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সংবিধানে সাংবিধানিক আদালতের বিধান থাকায় বিচারকদের পক্ষে এ দায় এড়ানো সম্ভব। আমাদের বিচারকদের এ ধরনের দায়ের অবমুক্তিতে সংবিধানের চতুর্থ সংশাধনীতে সুপ্রিম কোর্টের রিট ক্ষমতা বাতিল করে সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিধান করা হয়েছিল।
বর্তমান ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ পর্যায়ের অনেককে প্রায়ই বলতে শুনা যায় সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সুযোগ নেই। স্বভাবতই প্রশ্ন দেখা দেয় সংবিধানের বাইরে ইতঃপূর্বে এ দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল কি-না? কর্মরত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অসাংবিধানিক সরকারের অধীন রাজনৈতিক দলসমূহের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সংবিধানের একাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটিকে বৈধতা দেয়া হয়।
নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান ও আইনের ব্যত্যয়ে অনুষ্ঠিত হলেও অদ্যাবধি এ তিনটি নির্বাচনের কোনোটিরই প্রতিবিধান করা হয়নি। নবম সংসদ নির্বাচন পূর্ববর্তী সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনবিষয়ক সব বিকল্প নিঃশেষিত না করে গঠন করায় এটি সংবিধানসম্মত ছিল না। এ সরকারটিকে অদ্যাবধি সাংবিধানিক বৈধতা দেয়া হয়নি। পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ে এ সরকারের কার্যকলাপকে যে বৈধতা দেয়ার প্রয়াস নেয়া হয়েছিল তা যে বিচারবহিভূত বিষয়কে অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিত আলোচনার অবতারণায় করা হয়েছিল এ প্রশ্নের সুরাহা অনাগত দিনে অবশ্যম্ভাবীভাবে হওয়া সমীচীন।
দশম জাতীয় সংসদটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫(২) এর অবজ্ঞা ও উপেক্ষায় গঠিত হওয়ায় এর সাংবিধানিক সিদ্ধতা যে ভবিষ্যতের জন্য অশনিসঙ্কেতের জন্ম দেবে তা ভেবে এর অবসান দেশ ও জাতির স্বার্থে জরুরি। অনুরূপ একাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনের ভোট নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে ভোটবাক্স ভর্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করায় এটি বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন উদাহরণ হয়ে রয়েছে। এর বিহিত করা না হলে উত্তর-পশ্চিম আকাশের কালো মেঘের ঝড়ে অন্যায় অনিয়মের বেড়াজাল ছিন্ন হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়ায় অন্তর্বর্তী অথবা নির্দলীয় সরকার ব্যতীত নির্বাচন অনুষ্ঠানের অপর কোনো বিকল্প আপাত অনুধাবনের পথ রুদ্ধ। সংবিধান ও আইনের যেকোনো আঙ্গিকে বিচার করা হলে নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন যেমন অস্বচ্ছতায় আবদ্ধ অনুরূপ জন-আকাঙ্ক্ষা ও জনচাওয়ার অবজ্ঞা ও উপেক্ষায় নেহায়েত নিরেট সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধতা নানাবিধ প্রশ্নবাণে জর্জরিত। জাতির ক্রান্তিলগ্নে এহেন কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে অন্তর্বর্তী অথবা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তনই একমাত্র সহায়ক।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
E-mail: [email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা