রাশিয়া বন্ধুত্ব লুটের চুক্তি করেছে
- ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী
- ১৮ মার্চ ২০২৩, ২১:৩৩
আমরা অবিরাম কপচাই, রাশিয়া আমাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু। রাশিয়াও সেভাবে চলে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত-রাশিয়া চুক্তির ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমরা এমন ভেটো পাওয়ারের অধিকারী একটি মিত্রদেশকে পাশে পেয়েছিলাম। তখন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে ছিল এবং পাকিস্তানের অখণ্ডত্ব রক্ষায় প্রতিশ্রুতি বদ্ধ ছিল। সেখানে ভেটো পাওয়ারের ক্ষমতা সম্পন্ন রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল অনেক প্রবল হয়েছিল। ভারত-রাশিয়া চুক্তির আগ পর্যন্ত ইন্দিরা গান্ধীও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। ফলে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের সরকারগুলো রাশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ থেকেছে।
ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতার ঋণ শোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের কাছে ভারতের আর চাওয়ার কিছু নেই। তারা ট্রানজিট পেয়েছে, করিডোর পেয়েছে, ব্যবহারের জন্য রেলপথ, সড়কপথ পেয়েছে। নদীবন্দরগুলো কার্যত বিনামূল্যে ব্যবহার করেছে। এর এসব চুক্তি এমনভাবে করা হয়েছে যে, এক সাথে যদি বাংলাদেশের ১০টি জাহাজও বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলেও ভারতের জাহাজকে খালাস করতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ভারত তিস্তার পানি না দিলেও আমরা ভারতকে কৌশলগত ফেনী নদীর পানি ব্যবহার করতে দিচ্ছি। ফেনী নদী সম্পূর্ণ বাংলাদেশের। এটি কোনো আন্তর্জাতিক নদী নয়। এ নদীর পানি ব্যবহার করতে দিয়েছি। তেমনিভাবে এ নদীর উপরে তথাকথিত মৈত্রী সেতু নির্মাণ করতে দিয়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছি। যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, ভারতীয়দের খাবার পানি সংকট, ফেনী নদীর পানি নিয়ে তারা পান করতে চায়। কেউ পানি খেতে চাইলে তাকে না করি কিভাবে?
কিন্তু ভারত না করতে পারে; বাংলাদেশ থেকে নেপাল ও ভুটানে সরাসরি পণ্য পরিবহনে মাত্র ১২ মাইলের একটি ভারতীয় এলাকা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এটুকুও ব্যবহার করার সুবিধা বাংলাদেশকে ভারত কখনো দেয়নি যদিও তারা অনেক মধুর মধুর কথা শুনিয়েছে। বাংলাদেশ ভুটান নেপাল সড়ক যোগাযোগের চুক্তির মুলা আমাদের সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছে। সেপথ ধরে ভারত বাংলাদেশে আসছে যাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বাংলাদেশ নেপাল-ভুটানে যেতে পারছে না। এই অনুমোদন না দেয়ার পক্ষে ভারত একেক সময় একেক যুক্তি দেখায়।
কখনো বলে, ভুটান অন্য দেশের যান চলাচল তাদের দেশে চায় না। কিন্তু ভুটানের যাবতীয় পণ্য আমদানি হয় ভারত থেকে, এমনকি দিয়াশলাই পর্যন্ত। সেখানে ছোট হলেও বাংলাদেশের একটি বাজার আছে। নেপালে তো আছেই। ভারত যখন খুশি তখন নেপালের ওপর তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। সে পথে কয়েক বছর আগে ভারতীয় বন্দর থেকে নেপালে জ্বালানি তেলের সরবরাহ এবং রান্নার সিলিন্ডার গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ভারত। বন্ধ করে দেয় ওষুধ সরবরাহও। ফলে নেপাল এক চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। কিন্তু নেপালিরা তাদের আত্মমর্যাদায় বলীয়ান হয়ে সিলিন্ডারের গ্যাসের পরিবর্তে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করতে শুরু করে। চীন লাখ লাখ গ্যাস সিলিন্ডার উপহার হিসেবে নেপালকে দেয়। ওষুধও পাঠায়। ভারত সরকার তখন বলে, আমরা তো বন্ধ করিনি। ট্রাক ড্রাইভাররা নেপালে পণ্য নিয়ে যেতে অস্বীকার করছে; ফলে জ্বালানি তেল ও সিলিন্ডার গ্যাস ও ওষুধ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।’ এমনই মিত্র ভারত।
রাশিয়া থেকে আমরা প্রধানত আমদানি করি গম ও সার। ইউক্রেন থেকে আমরা গম আমদানি করি। সে আমদানি রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর আপতত বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ার ঋণ দেয়ার কথা ১১৩৮ কোটি মার্কিন ডলার(১১.৩৮ বিলিয়ন) যা বাংলাদেশী মুদ্রায় এক লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প। প্রকল্পটিতে রাশিয়ার দেয়া ঋণের সুদের হার পৃথিবীতে সর্বোচ্চ, ৪ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার দেয়া ঋণের চেয়ে রূপপুরের দেয়া রাশিয়ান ঋণের সুদের হার দ্বিগুণ। এ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা এবং গ্রেস পিরিয়ড (ঋণ নেয়ার পর কিন্তু দেয়ার মাঝে বিরতি) কম।
বিপুল টাকা ঋণ নিয়ে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও বাড়তি সুদ নিয়ে দেশে যেমন সমালোচনা রয়েছে তেমনি উদ্বেগ রয়েছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঝুঁকি নিয়ে। এর মধ্যে সামনে এলো চুক্তির সেই ভয়াবহ শর্ত। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের যাবতীয় কাজ করবে রাশিয়ার কোম্পানি। কিন্তু রাশিয়ার ঠিকাদার যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারলে জরিমানা দিতে হবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ টাকাও দেয়নি নির্মাণ কাজও করেনি। রাশিয়ান ঠিকাদাররা নির্মাণকাজ ঢিলে করে দিয়ে যদি কাজে বিলম্ব করে তাহলে বাংলাদেশ কেন জরিমানা দিতে যাবে? এর কোনো সদুত্তর কারো কাছে নেই। আসলে আদানির সঙ্গেই বলি আর রাশিয়ার সঙ্গেই বলি, চুক্তিগুলোর ভেতরে এরকম দুস্তর ফাঁক রয়েছে। আর সে কারণে সরকার এ চুক্তিগুলো করার আগে একটি দায়মুক্তির আইন করেছে। সে আইন হলো, বিদ্যুৎ খাতে সম্পাদিত কোনো চুক্তির কোনো বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। সেজন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যাবতীয় অপকর্মের দক্ষিণ হস্ত বলে কুখ্যাত গ্রুপ আদানির কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে তা বাংলাদেশের স্বাভাবিক দামের তিনগুণ মূল্যে এবং এই চুক্তি ২৫ বছর মেয়াদি।
এই ২৫ বছরের মধ্যে যদি কোথাও কয়লার দাম বাড়ে, পরিবহন ভাড়া বাড়ে সে অনুযায়ী বাংলাদেশকে তার দায় বহন করতে হবে। কার্যত আদানির সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি এই চুক্তিটি একটি দাসখত লিখে দেয়ার শামিল। একে ‘২৫ বছরের বিদ্যুতের গোলামি চুক্তি’ হিসেবেও অভিহিত করা যায়। তাছাড়া এই চুক্তি সংশোধনের কোনো কায়দা নেই। বাংলাদেশ নাকি চুক্তি পর্যালোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল, আদানি গ্রুপ তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ আসুক বা না আসুক, বাংলাদেশকে প্রতি বছর আদানিকে ৪৫ কোটি ডলার করে ক্যাপাসিটি চার্য দিতে হবে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক এলাহীকে ভারতীয় সংবাদপত্র প্রশ্ন করেছিল যে, আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ চুক্তির শর্তগুলো কী? জবাবে তিনি বলেছেন, ‘এটা অত্যন্ত গোপন, প্রকাশ করা যাবে না।’ গত ১০ বছরে শেয়ার জালিয়াতি ও নানা ধরনের প্রতারণার মাধ্যমেও মোদির মদদে আদানি গ্রুপ ভারতের সেরা ধনী হিসেবে উঠে এসেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা খুঁজে বের করেন, এই চুক্তিতে কী ভয়াবহ শর্তাবলি রয়েছে। এটি তো শুধু আদানির সঙ্গে চুক্তি। ভারতের সাথে আরো যেসব গোপন চুক্তি করা হয়েছে তার বিস্তারিত আমরা জানতে পারিনি। নিশ্চয় সেখানেও এভাবে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী শর্তাবলী রয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাশিয়ার সাথে দুটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। একটি হলো আন্তঃসরকার চুক্তি। অন্যটি আন্তঃসরকার ঋণ চুক্তি। ঋণ চুক্তির একটি দফায় বলা হয়েছে নতুন একটি পঞ্জিকা বছর শুরুর অন্তত ছয় মাস আগেই বাংলাদেশ ও রাশিয়া নতুন বছরে রূপপুরে কত টাকা ব্যয় হবে তা ঠিক করবে। যদি নির্ধারিত অর্থ ব্যয় না হয় তাহলে অঙ্গীকার ফি দিতে হবে। এই অর্থ দুই দেশের সম্মতির ভিত্তিতে মার্কিন ডলার অথবা অন্য মুদ্রায় পরিশোধ করা যাবে। সে টাকা বাংলাদেশকে দিতে হবে বছরের তিন মাসের মধ্যে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দুই দফা রাশিয়ার সাথে ঋণ চুক্তি সই করে সরকার। প্রথম দফায় ঋণ চুক্তি হয় ২০১৩ সালে; পরিমাণ ৫০ কোটি ডলার। এই ঋণ দিয়ে রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিস্তারিত সমীক্ষাসহ প্রাথমিক কাজ করা হয়। এই ঋণের সুদ পরিশোধ শুরু হয় ২০১৮ সাল থেকে। মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আরেকটি চুক্তি সই হয় ২০১৬ সালে। এর আওতায় বাংলাদেশকে রাশিয়া ১১৩৮ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। এ ঋণের কিস্তি শোধ করা শুরু হবে ২০২৭ সাল থেকে।
ইআরডির তথ্যে বলা হয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে রূপপুর প্রকল্পে শুধু এক বছর (২০১৮) নির্ধারিত অর্থের পুরোটা ব্যয় হয়েছিল। ২০১৯ সাল থেকে ব্যয়ের হার কম। ওই বছর ৪৯ শতাংশ, ২০২০ সালে ৬৮ শতাংশ, ২০২১ সালে ৭৩ শতাংশ ও ২০২২ সালে ৩৯ শতাংশ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। এই সময়ে ৮৪১ কোটি ডলার ব্যয়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল বাংলাদেশ ও রাশিয়া। ব্যয় হয়েছে ৫৪৬ কোটি ডলার যা নির্ধারিত অংকের ৬৫ শতাংশ। যেহেতু পুরো অর্থ ব্যয় হয়নি সেহেতু জরিমানা দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। নথিপত্রে দেখা যায়, বাংলাদেশ ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ, ২০২১ সালের ২৯ মার্চ তিন দফায় রাশিয়াকে ৭৪ লাখ ২১ হাজার ৪০৮ ডলার জরিমানা করেছে যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৭৮ কোটি টাকা। ২০২১ সালের জন্য নির্ধারিত ২৯ লাখ ২১ হাজার ডলার (৩১ কোটি টাকা), যা ২০২২ সালের মার্চে পরিশোধ করার কথা ছিল; তবে রাশিয়ার অনুরোধে এখনো পরিশোধ করা হয়নি। উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে গত বছর মার্চে রাশিয়ার সাথে লেনদেনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। সে কারণে ২০২১ সালের জরিমানার অর্থ পরিশোধ স্থগিত রাখতে বলেছে রাশিয়া।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজটি করছে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট। রাশিয়ার সরকারই এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের একটি নথিতে বলা হয়েছে একটি বছরে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে তা ঠিক করা হয় রাশিয়ান ঠিকাদারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় যে পরিমাণ অর্থ ছাড়ের অনুমোদন দেয়, রাশিয়ান ঠিকাদাররা সময় মতো কাজ শেষ করতে পারে না বলে তা পুরোটা ব্যয় হয় না। তারা সময়মতো কাজ শেষ না করলে বাংলাদেশ শুধু তাগিদ দিতে পারে। এর বেশি কিছু চুক্তি অনুযায়ী করার কিছু নেই। তাই ঠিকাদার কাজে দেরি করলে বাংলাদেশের কাছ থেকে জরিমানা আদায় অযৌক্তিক।
২০২০ ও ২০২১ সালে জরিমানা পরিশোধের দায় থেকে বাংলাদেশের অব্যাহতির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিল রাশিয়া। বাংলাদেশ চায় ওই বছরগুলোর জরিমানা অব্যাহতি দেয়া হোক এবং চুক্তির সংশোধনী আনা হোক। বাংলাদেশে মনে করে, নানা কারণে রূপপুরের কাজে দেরি হতে পারে। তাই ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশ জরিমানা অব্যাহতির বিষয়ে দর কষাকষি করেছে। পাত্তা দেয়নি রাশিয়া।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পের বিভাগীয় প্রধান অলক চক্রবর্তী বলেছেন, রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে এবং দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২৫ সালে কার্যক্রমে আসার কথা। এ সময়ের মধ্যে যাতে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়। অবশ্য এ ধারণা করা হয়েছে এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে না এবং ব্যয়ও বাড়বে। আর সেজন্য বাংলাদেশকে কোটি কোটি টাকা জরিমানার মধ্যে পড়তে হবে। একইভাবে আদানিকেও বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। এ বিষয়ে সাবেক বিদ্যুৎ সচিব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, রূপপুর প্রকল্পে অঙ্গীকার ফি থাকারই কথা নয়। কারণ রাশিয়ার ঋণ তো বাণিজ্যিক ঋণ। এ ধরনের ফি থাকে বিশেষ ছাড়ে, স্বল্প সুদের ঋণে। যে ঋণ বিশ্বব্যাংক, এডিবির মতো প্রতিষ্ঠান দেয়। তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ঋণ চুক্তির সময় বাংলাদেশ অঙ্গীকার ফি’র বিষয়ে রাজি হয়েছে কেনো, সেটাই প্রশ্ন। যারা চুক্তির শর্তগুলোর পর্যালোচনার দায়িত্বে ছিলেন তাদের জবাবদিহিতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জনাব খান বলেন, তাদের তো দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে এবং এগুলো নিয়ে আদালতে যাওয়া যাবে না।
শেষ কথা, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বাংলাদেশে যে প্রকল্প রাশিয়া ১১.৩৮ বিলিয়ন ডলারে করছে একই ধরনের প্রকল্প তারা করেছে ভারতে মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলারে। এমন ভালোবাসার নজির দুনিয়ায় খুব কমই আছে।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা