চ্যাট জিপিটি, প্রযুক্তির তোলপাড়
- মুজতাহিদ ফারুকী
- ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:২১
তথ্যপ্রযুক্তির জগতে সম্প্রতি তোলপাড় চলছে একটি নতুন কম্পিউটার অ্যাপ নিয়ে। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে চলছে তুমুল মাতামাতি, আলোচনা-সমালোচনা। হচ্ছে বিতর্ক, আসছে হঁশিয়ারি বার্তা। সার্চ ইঞ্জিন গুগল, যেটি তথ্যের জগতে সেরা সফটওয়্যার সেটিও এখন হুমকির মুখে। গুগলের মাথা বিগড়ে যাওয়ার দশা। সারা বিশ্বের সেরা সেরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ মাথা ঘামাচ্ছে, কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এই প্রযুক্তি পণ্যের বিষয়ে। প্রযুক্তির দাপটে চাকরি নড়বড়ে হয়ে পড়া পেশাজীবীদের দুশ্চিন্তা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে নতুন অ্যাপটি। কারণ এটি কেড়ে নিতে পারে অনেক পেশাজীবীর মুখের গ্রাস।
নতুন এই কম্পিউটার অ্যাপের নাম চ্যাট জিপিটি। নামটি অনেকেই হয়তো এখনো শোনেননি। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির ন্যূনতম খোঁজখবর রাখেন এমন কারো জানতে বাকি নেই। চ্যাট জিপিটি হলো একটি চ্যাটবট। একটি রোবট। যেমন গুগল। যেমন টিকটক। এরকম আরো চ্যাটবট আমরা সামাজিক মাধ্যমে বা অনলাইনে প্রায়ই দেখি। এটি কাজ করে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা দিয়ে। করা যায় অনেক কিছু। তথ্য অনুসন্ধান, ভিডিওচিত্র ধারণ- এসব তো আছেই। কিন্তু তার চেয়েও বড় ব্যাপার, এটি মানুষের মতো কথা বলে, প্রশ্নের জবাব দিতে পারে, উত্তরটি ঠিক মানুষের মতোই লিখে সাজিয়ে দিতে পারে। আপনি যদি একে কোনো একটি বিষয়ের ওপর একটি নিবন্ধ লিখে দিতে বলেন, সে ঝটপট লিখে দেবে, একদণ্ডে। এমনকি কবিতাও। আপনি শুধু প্রিন্ট করে নেবেন। যারা নিজের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন ব্লগ লিখেন তাদের তো পোয়াবারো। আপনার বিষয়টি বলে দিয়ে চ্যাট জিপিটিকে একটি ব্লগ লিখে দিতে বলুন, সে কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনাকে একটি ব্লগ লিখে দেবে। মনেই হবে না কোনো যন্ত্র এটি লিখেছে। এর অর্থ বুঝতে পারছেন?
শিক্ষক ক্লাসে যা পড়ান সেটি করে দেবে এই অ্যাপ। একজন হিসাবরক্ষক অফিসে যে কাজ করেন সেটিও করে দেবে। কম্পিউটারে বিভিন্ন সাইটের জন্য কপিরাইট করেন যে তরুণ তার কাজ করবে চ্যাট জিপিটি। একজন ছাত্রের বাড়ির কাজ করে দেবে। দেবে বলছি কেন? এরই মধ্যে বিশ্বের লাখ লাখ শিক্ষার্থী এটি দিয়ে হোমওয়ার্ক করতে শুরু করেছে। অথচ এর যাত্রা শুরু হয়েছে মাত্রই গত বছরের নভেম্বর মাসে। আমাদের দেশেও অনেকে এটি ব্যবহার করছেন।
চ্যাট জিপিটি আসলে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (Artificial Intelligence-AI) টুল। এটি তৈরি করেছে ভাষা প্রক্রিয়াকরণের অত্যাধুনিক AI মডেল OpenAI। চ্যাট জিপিটি সব ধরনের তথ্য এতটাই নিখুঁত এবং যৌক্তিকভাবে জানাতে পারে যে, বিস্মিত হতে হয়। এর পুরো নাম Generative Pretrained Transformer। বলা যেতে পারে, একটি আধুনিক নিউরাল নেটওয়ার্কভিত্তিক মেশিন লার্নিং মডেল বা (NMS) এটি। এই সফটওয়্যারটি আপনাকে গুগলের মতো রিয়েল টাইম সার্চের সুযোগই শুধু দেয় না; বরং আপনার জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের উত্তরও দেয় খুব স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট শব্দে। এই সফটওয়্যারটি তাই খুব দ্রুত সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছে। সংস্থার সিইও স্যাম অল্টম্যানের মতে, চ্যাট জিপিটি লঞ্চিংয়ের পর এক সপ্তাহেরও কম সময়ে ১০ লাখ ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে যায়। গত তিন মাসে কোটির ঘর ছাড়িয়ে কোথায় পৌঁছেছে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা সে খবর আর নিতে যাইনি। ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিসটিক্স নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুযায়ী, নেটফ্লিক্সের মতো বিনোদনের একচেটিয়া ওটিটির ১০ লাখ গ্রাহক পেতে সময় লেগেছে সাড়ে তিন বছর। যেখানে টুইটারের লেগেছে দুই বছর ও ফেসবুক সময় নিয়েছে ১০ মাস। ইনস্টাগ্রামের তিন মাস ও স্পটিফাইয়ের পাঁচ মাস।
এই সফটওয়্যারের স্র্রষ্টা ওপেন-এআই হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে এমন একটি গবেষণা সংস্থা, যা ২০১৫ সালে এলন মাস্ক এবং স্যাম অল্টম্যান শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরে এলন মাস্ক এই কোম্পানি থেকে বেরিয়ে যান।
সার্চ ইঞ্জিন গুগলের শিরপীড়ার কারণ হয়ে উঠেছে নতুন সার্চ টুল চ্যাট জিপিটি। চ্যাট জিপিটির সাফল্য দেখে কার্যত চিন্তায় পড়ে গেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। কারণটা বোধগম্য। আসলে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের যে মূল সংস্থা তার মোট আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে গুগল থেকে। বিশ্বের বৃহত্তম মেশিন লার্নিং টুল গুগলের তাই মাথায় হাত। এত দিনে তার সত্যিকারের সেয়ানা প্রতিদ্বন্দ্বী মাঠে হাজির। চ্যাট জিপিটির অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা স্বাভাবিকভাবেই টেক জায়ান্ট গুগলের টনক নাড়িয়েছে। তারা এখন চ্যাট জিপিটির বিকল্প উদ্ভাবনে জানবাজি রেখেছে। হাজার কোটি ডলার এরই মধ্যে তারা এ কাজে বিনিয়োগ করেছে। (সবশেষ খবর হলো, গত মঙ্গলবারই তারা বার্ড (BARD) নামে একটি চ্যাট বট ওপেন করেছে জনগণের মতামত নেয়ার জন্য। পরে সেটি গুগলে যুক্ত করা হবে।)
চ্যাট জিপিটিতে ইন্টারনেটের টেক্সট ডাটাবেস ভরে দেয়া আছে। ইন্টারনেটের ওয়েব পেজ, ওয়েব টেক্সট, বই, উইকিপিডিয়া, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে বিপুল ডাটাসমৃদ্ধ এই চ্যাট জিপিটি। আছে ৩০০ বিলিয়ন শব্দের অবিশ্বাস্য বিশাল ভাণ্ডার। পাশাপাশি এটি একটি বাক্যের পরবর্তী শব্দটি কী হওয়া উচিত সেটিও অনুমান করতে সক্ষম। ফলে কেউ যদি চ্যাট জিপিটিতে গিয়ে সার্চ করেন ‘বিশ্বমন্দা কী’? সে যথোপযুক্ত ও নির্ভুল উত্তর দেবে।
এই অ্যাপের সাহায্যে শিশুদের পড়ানোর কাজও শুরু হয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। ইদানীং শিক্ষার্থীরা চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করে তাদের হোমওয়ার্কও লিখছে। এটি শিক্ষার্থীদের স্কুলের হোমওয়ার্ক করার কাজে নানাভাবে সহায়ক হতে পারে। একজন ছাত্র যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ভূমিকা বিষয়ে নিবন্ধ লিখতে চায় এবং এ নিয়ে চ্যাট জিপিটিকে প্রশ্ন করে, তবে চ্যাট জিপিটি সাথে সাথে উত্তর দিয়ে দেবে। প্রশ্ন করলে, সে সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাসঙ্গিক তথ্যও তুলে ধরবে। এতে ছাত্রের পক্ষে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে নেয়া সম্ভব। আবার কোনো শিক্ষার্থী বইপত্র না ঘেটে, পড়ালেখার ধারে কাছে না গিয়েও চমৎকারভাবে তার হোমওয়ার্ক সেরে ফেলতে পারবে। আর এসবই চ্যাট জিপিটি করে দিচ্ছে গুগলের চেয়েও অনেক দ্রুত ও সহজে। এ কারণেই চ্যাট জিপিটি নিয়ে মানুষের মধ্যে একই সাথে উচ্ছ্বাস ও উদ্বেগ দুই-ই সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ এতে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে শিক্ষার্থীর পড়ালেখা করে নিজে থেকে চিন্তাভাবনা করে উত্তর লেখার ক্ষমতা লোপ পাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশের ওপর মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়বে। অনেক বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছেন, এই অ্যাপ ব্যবহার করলে শিশুদের যুক্তিবোধ যাবে কমে। তারা নিজে থেকে কিছু ভাবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। শিশুমনের তথা মানব জাতির ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যাবে। এ জন্যই বিশ্বের তাবত একাডেমিশিয়ান এখন দফায় দফায় বৈঠক করছেন। কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
বিশ্বের বহু দেশে শিক্ষাবিদরা শিক্ষার্থীদের জন্য চ্যাট জিপিটি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছেন।
স্কুল-কলেজগুলো এটি নিষিদ্ধ করতে চাইছে। ফ্রান্সের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে নিষিদ্ধ করেছে। আমেরিকায়ও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একই রকমের ব্যবস্থা নিয়েছে। ফ্রান্সের একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নিষিদ্ধই করেনি, কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তারা বলেছে, এই সফটওয়্যার ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে, এমনকি ফ্রান্সে কোনো উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হতে পারে। গুগলের মতো প্রযুক্তিকে টেক্কা দেয়া অত্যন্ত উন্নত চ্যাট জিপিটি অ্যাপটিকে মানব সভ্যতার জন্য হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ। আর সে কারণেই স্কুল-কলেজগুলো একের পর এক এটি নিষিদ্ধ করছে।
তবে চ্যাট জিপিটি একেবারে যে নির্ভুলভাবে সব প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারে এমন নয়। এর যথেষ্ট সীমাবদ্ধতাও আছে। সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে এটি উত্তর দিতে পারবে না। কারণ এর সিস্টেমে যে ডাটাবেস দেয়া আছে তাতে এসব বিষয় নেই।
তবে প্রতি মুহূর্তে এর ডাটাবেস সমৃদ্ধ করার কাজ চলছে। কোনো প্রশ্নের ভুল জবাব দিলে এর কর্মীবাহিনী প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি সিস্টেমে ইনপুট করে দেয়। এভাবে চ্যাট জিপিটির জ্ঞানের ভাণ্ডার ক্রমেই বাড়তে থাকে। পরে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর আরো দ্রুত ও নির্ভুলভাবে দিতে পারে সে। সুতরাং ভবিষ্যতে এটি আরো নিখুঁত ও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠবে সন্দেহ নেই। কিন্তু এখনই এটি যতটা দক্ষ তাতেই তো অনেকের ঘুম হারাম হওয়ার জোগাড়। প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাখ লাখ লোকের চাকরির ওপর খড়গ নেমে আসতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে এবং আরো নানাভাবে গবেষণা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস ইনসাইডার পত্রিকা। সেই গবেষণার ভিত্তিতে তারা চ্যাট জিপিটির কারণে ঝুঁকিতে পড়তে পারে এমন ১০টি পেশার তালিকা করেছে। এগুলোর মধ্যে আছে- প্রযুক্তিনির্ভর চাকরি, গণমাধ্যম, আইন পেশা, মার্কেট রিসার্চ এনালিস্ট, শিক্ষকতা, আর্থিক খাতের চাকরি, পুঁজিবাজারের কাজ, গ্রাফিক ডিজাইন, হিসাবরক্ষণ, গ্রাহকসেবা ইত্যাদি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে চ্যাট জিপিটি মানুষের চেয়ে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে এসব পেশার লোকদের কাজগুলো করতে পারে বলে এসব পেশায় লোকের চাহিদা কমে যাবে। ফলে চাকরি নিয়ে টান পড়বে অনেকেরই। এই মধ্যে বিশ্বের বেশ কিছু সংবাদ প্রতিষ্ঠান এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে কনটেন্ট লেখার কাজে। যদিও যন্ত্রের লেখা যাচাই ও সম্পাদনার জন্য তারা লোকবল রেখেছে। মেশিনের কাজে যান্ত্রিকতার ছাপ থাকে। মানবিক স্বকীয়তা, সাবলীলতা ও স্বতঃস্ফূর্ততা এবং বুদ্ধির দীপ্তি তাতে আশা করা যাবে প্রযুক্তি এখনো সে পর্যায়ে পৌঁছেনি।
তবে আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো- বিজ্ঞান-প্রযুক্তির অভিযাত্রা যখন থেকে শুরু হয়েছে তার কোনো পর্যায়েই প্রযুক্তির বিকাশ রোধ করা যায়নি। হয়তো সাময়িকভাবে রুদ্ধ করা গেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তিরই জয় হয়েছে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মানব জাতির জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ সেই পানসে বিতর্কে জড়ানোর দরকার দেখি না। কিন্তু চ্যাট জিপিটি শিক্ষার্থীদের জন্য নিষিদ্ধ করে কতটা সুফল পাওয়া যাবে তাতে আমাদের সংশয়ের কারণ আছে। আমাদের বিবেচনায় বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের কাজ হবে এই প্রযুক্তিটি কীভাবে ব্যবহার করলে এ থেকে সবাই লাভবান হতে পারে এমন একটি সর্বজনীন গাইডলাইন তৈরির চেষ্টা করা। যেমনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবের ক্ষেত্রে করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে লন্ডন থেকে সাংবাদিক কাজী জাওয়াদ একটি পোস্ট দেন ফেসবুকে। তাতে তিনি চ্যাট জিপিটি দিয়ে একটি অনুবাদের কাজ পছন্দ না হওয়ায় খেদ প্রকাশ করেন। তার মনে হয়েছে, যন্ত্র সম্ভবত কখনোই মানুষের মেধা ও মনন ছুঁতে পারবে না।
আমাদের এখনো গভীর বিশ্বাস, চিন্তা করা বা স্বপ্ন দেখা যন্ত্রের নয়, এটি একান্তভাবেই মানুষের এখতিয়ার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা