এই খলরাজনীতির শেষ কোথায়
- ড. আবদুল লতিফ মাসুম
- ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:০৪, আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:৪৮
খলনায়ক, খলরাজনীতি অনৈতিক তথা নেতিবাচক বিষয়াবলিকে নির্দেশ করে। নাটক বা সিনেমায় খলনায়কের অভিনয় দেখে আমাদের মধ্যে ঘৃণার উদ্রেক হয়। সমাজ ও সংসারে ব্যক্তি যখন প্রতারণা, জালিয়াতি ও মিথ্যাচার করে তখন মানুষ ক্ষুব্ধ হয়। ব্যক্তি ও সমাজ খলভূমিকাকে যতই অগ্রাহ্য করুক, রাজনীতিতে তা একটি অপ্রিয় বাস্তবতা। কিন্তু এরিস্টোটলের মতো যারা রাজনীতিকে নৈতিক বিষয় মনে করেন, তারা খলরাজনীতিকে ঘৃণা করেন। তারা রাজনীতিকে সেবা, কল্যাণ ও আদর্শের বাহন মনে করেন। তবে রাজনীতিতে বুদ্ধিমত্তা, কৌশল ও প্রচারণা অসিদ্ধ নয়। প্রচারণার নামে যদি আপনি প্রতারণা করেন তা হলেই তা অনৈতিক। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাজনীতিকে যেমন মহান বিষয় হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে, তেমনি নেতিবাচক মন্তব্যও বিরল নয়। স্যামুয়েল জনসন বলেন, ‘পলিটিক্স ইজ দ্য লাস্ট শেল্টার অব দ্য স্কাউন্ড্রেলস’। রাজনীতি এভাবে বদমায়েশদের শেষ ঠিকানা হিসেবে চিহ্নিত হলেও ভালো-মন্দ মিলিয়েই চলছে রাজনীতি। এটিই বাস্তবতা।
বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে বিশুদ্ধাচার অসম্ভব নয়। যদি তার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব থাকে ভালো মানুষদের হাতে। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, বিগত ৫০ বছর ধরে ভালো মানুষদের শাসন আমরা খুব কমই দেখেছি। রাজনীতি সম্পর্কে মানুষের ধারণা এটি ভালো মানুষদের কাজ নয়। অতীত থেকে যে বদ্ধমূল ধারণার সৃষ্টি হয়েছে তা হলো- রাজনীতি মানেই শঠতা, নীচতা, প্রতারণা, নোংরামি, নৃশংসতা, পাশবিকতা ও স্বার্থপরতা। গ্রামের লোকেরা বলে, রাজনীতির মধ্যে পলিটিক্স ঢুকেছে। যখন একজন অপরজনকে ঠকায় বা প্রতারণা করে তখন তারা বলে- ‘আমার সাথে পলিটিক্স করো!’ তার মানে যা কিছু খারাপ তাই রাজনীতি। মজার ব্যাপার হলো, ব্যক্তিগত আচার-আচরণে এসব ভাবলেও তারা জাতির নেতাদের পরিচ্ছন্ন দেখতে চান। আমেরিকার মতো সমাজেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের সামান্য দোষ-ত্রুটিও তারা গ্রহণ করতে রাজি নয়। বাংলাদেশে এই অনুভূতি এখনো গরিষ্ঠ অংশে প্রবহমান যে, ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’। কেউ বলে না চুরি করা মহাপুণ্যের কাজ। কিন্তু তারা সবাই চুরি করে। কিন্তু বিস্ময় উৎপাদিত হয় তখনই, যখন চোর জনসম্মুখে নিজে চুরির নিন্দা করে। আসলে বাংলা ভাষায় ‘চোরের মায়ের বড় গলা’ প্রবাদবাক্যটি এমনি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ সবই সত্য কথা, তবে বিজ্ঞ মানুষরা এর একটি সীমারেখা টানতে চান। তারা কুরআনের ভাষা উদ্ধৃত করে বলেন ‘আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীকে পছন্দ করেন না।’ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তাদের বিবেক বিবেচনা ও মতের ভিত্তিতে একটি সীমারেখা ইতোমধ্যেই নির্ধারিত করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, তারা সীমালঙ্ঘন করেছে।
বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি সবারই জানা কথা। দেশ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। এগোয়নি একটুও। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রওনক জাহান বলেন, ‘ওয়ান্স এগেইন অ্যাট দ্য স্টার্টিং পয়েন্ট’। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাজনীতি মাপার কিছু শর্ত আছে। লুসিয়ান ডব্লিউ পাইয়ের তিনটি প্রধান শর্ত হচ্ছে- ১. সমতা; ২. দক্ষতা এবং ৩. বিকেন্দ্রীকরণ ও বিশেষীকরণ। এরকম আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ শর্তের মধ্যে রয়েছে যথার্থ নির্বাচন তথা জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে সরকার গঠন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের ৫২ বছরের ইতিহাসে কোনো দিকেই কোনো রাজনৈতিক উন্নয়ন ঘটেনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ভাষায় বরং রাজনৈতিক অনুন্নয়ন ঘটেছে। সেটি অবশ্য ভিন্ন বিষয়। আলোচনা করছিলাম খলরাজনৈতিক আচরণ নিয়ে। এটি রাজনৈতিক অনুন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। সততা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও নীতি-নৈতিকতা যখন রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ না করে অন্যায়-অনিয়ম, স্বৈরাচার-মিথ্যাচার ও শঠতা-প্রতারণা প্রাধান্য লাভ করে তখন খলের রাজনীতি না বলে কি উপায় থাকে? এমনিতেই আমরা দীর্ঘকাল ধরে রাজনৈতিক অনৈতিকতায় বসবাস করছি, তবুও অতিসাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিবেকবান মানুষের কাছে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন বছরের প্রথম দিনের খবর, জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের পর এবার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ ছেড়েছেন উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ভ্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন উকিল আবদুস সাত্তার । দলীয় সিদ্ধান্তে ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তিনি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। কিন্তু গত নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির কোনো ব্যাপারেই তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। স্থানীয়ভাবে আলোচনা চলছিল যে, আওয়ামী লীগ ভ্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন উন্মুক্ত রেখেছে মূলত বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগ করা উকিল আবদুস সাত্তারকে জিতিয়ে আনতে। পরবর্তী খবর চমকপ্রদ। তিনি নির্বাচন কার্যালয় থেকে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এরপর কেন্দ্রীয় বিএনপিও তাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। এরপর ক্ষমতাসীন দলের সাথে আব্দুস সাত্তারের সমঝোতার বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে।
উল্লেখ্য, এর আগেও আওয়ামী লীগ এই আসনে প্রার্থী দেয়নি। গত নির্বাচনে এখানে জাতীয় পার্টির সাথে আসন সমঝোতা করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু আবদুস সাত্তারের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন মঈনের সাথে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসতে পারেননি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালেও ভ্রাহ্মণবাড়ীয়া-২ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দু’বারই সংসদ সদস্য হয়েছিলেন জিয়াউল হক মৃধা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল জানাচ্ছে, আবদুস সাত্তারের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। তাকে ভোটে আনতে পারলে বিএনপির সংসদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। ওই আসনে আরো সাতজন প্রার্থী রয়েছেন। এ দিকে স্থানীয় বিএনপি উকিল আবদুস সাত্তারকে সেখানে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তিনি (উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া) এখন নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শেষ বয়সে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা লাভের আশায় দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছেন।’ সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাকে জিতিয়ে আনতে চায়। এর আগে আওয়ামী লীগের ১৭ জন প্রার্থী হলেও কাউকেই মনোনয়ন দেয়া হয়নি। রাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এটিকে আওয়ামী লীগের অনৈতিক কূটকৌশল হিসেবে দেখছেন। এই কূটকৌশলের পেছনে রয়েছে আবদুস সাত্তারের ছেলে। সেই নাকি আওয়ামী লীগের সাথে দেনদরবার করে বৃদ্ধ ও অতিমাত্রায় নির্ভরশীল পিতাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছেন। এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে- সরকার যেকোনো মূল্যে আবদুস সাত্তারকে জেতাবে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃত্ব সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ।
তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ এমন দল নয় যে, অন্য দল থেকে কাউকে ভাড়াটে হিসেবে এনে প্রার্থী করতে হবে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করছেন, নেতার অভাব নয়, স্বভাব থেকেই আওয়ামী লীগ এই আচরণ করছে। দীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগ তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও নির্বাচনী প্রাধান্য থাকলেও এ ধরনের কূটকৌশল অনেকবার এস্তেমাল করেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতাসীন হয় তখন এভাবেই বিএনপির দু’জন এমপিকে ভাগিয়ে নিয়ে প্রতিমন্ত্রিত্বও দেয়া হয়। ভাগিয়ে নেয়ার উদাহরণ বিএনপিরও রয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা সাখাওয়াত টোপ গেলেন। প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। উভয় ক্ষেত্রেই এসব লোক জনগণ কর্তৃক পরিত্যক্ত ও পরাজিত হয়েছেন। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীনদের এই আচরণ আরো আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। স্বচ্ছ নির্বাচন নয়, এই বাঁকা পথেই যে আগামী নির্বাচন তা উকিল আবদুস সাত্তারের ঘটনা প্রমাণ করল।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের খল রাজনীতির আরেকটি নিকৃষ্ট উদাহরণ, তারেক রহমানের সহধর্মিণী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের। মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর পরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবাইদা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট জোবাইদার করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন। একই সাথে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবাইদাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ-টু-আপিল করেন জোবাইদা।
উল্লেখ্য, অবৈধ ওয়ান-ইলেভেনের সরকার রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে এরকম অসংখ্য মামলা দায়ের করে। ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের মামলাগুলো নিষ্পত্তি করলেও বিরোধী বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মামলাগুলো বহাল রাখে। সেরকম একটি মামলায় দেশনেত্রী আটক আছেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার রায় হয়ে আছে। এখন রাজনীতি বিচ্ছিন্ন একজন পরিচ্ছন্ন মহিলার বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এই মামলা সচল করা হয়েছে। আগামী নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বেড়েই চলেছে। শুধু তাই নয়, গত ৫ জানুয়ারি তাদের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে। পিপি মোশাররফ হোসেন বলেন, দুর্নীতির এই মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদার বিরুদ্ধে গত ১ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়ে ছিলেন আদালত। সম্প্রতি আদালতে প্রতিবেদন এসেছে, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। এ নিয়ে আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী পলাতক আসামি তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন। ১৯ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। আগামীতে যেকোনো সুবিচার পাওয়া যাবে সে আশা দুরাশা। ইতঃপূর্বে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়ার অপরাধে দেশান্তরি হতে হয়েছে।
বিএনপীর শীর্ষ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন দাবি করেছেন, প্রতিহিংসাপরায়ণ এই সরকার তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা: জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট কাল্পনিক অভিযোগে মামলা ও রায় দিয়ে গোয়েবলসের মতো মিথ্যাচার করছে। তারেক রহমান ও ডা: জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, তা অবান্তর, ভিত্তিহীন ও অমূলক। যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশি। দুর্নীতি দমন কমিশন যেন আজ বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকার আবারো নেতাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। আর এই চক্রান্তের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, যেসব সম্পত্তির মালিক তারেক রহমান নন, কোনো দলিলে বা চুক্তিতে যেখানে তারেক রহমানের নাম, স্বাক্ষর বা সংশ্লিষ্টতা নেই, তাকে সেসব সম্পত্তির গায়েবি মালিক বানিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমনকি তারেক রহমান ও ডা: জোবাইদা রহমানের কর পরিশোধকৃত সম্পদ নিয়েও কাল্পনিক অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাজনীতি একটি স্বাভাবিক বিষয়। এটি অস্বাভাবিক হয়ে যায় তখনই, যখন প্রতারণা ও প্রতিহিংসা রাজনীতির অঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়। উপরোক্ত দুটো উদাহরণ উচ্চারিত বিশেষণের প্রতিধ্বনি করে। এই রাজনীতির বৈশিষ্ট্য নিয়ে তারা বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষের ওপর অবৈধ কর্তৃত্ব করছে। অতীত তাদের মিথ্যাচার ও প্রতারণায় পরিপূর্ণ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এর সাক্ষ্য। বর্তমান সময় জনগণ কোনো ব্যতিক্রম দেখছে না; বরং সরকার নির্বাচন নিয়ে ভয়ানক ষড়যন্ত্র করছে। গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ মন্তব্য করেছেন। এতে বোঝা যায়, নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য সরকারই এমন সব কর্মকাণ্ড করবে যাতে নির্বাচন গ্রহণ অসম্ভব হয়ে পড়বে। ষড়যন্ত্রের কথা বলে নিজেদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রকে জায়েজ করতে চায় তারা। সুতরাং আদর্শলিপির সেই বাক্য ‘খলের আশ্বাস বাক্য না করিবে বিশ্বাস’ হোক রাজনীতিকদের চূড়ান্ত উপলব্ধি।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা