দেশে এখন ‘মাকাল’ ফলের বৃক্ষরোপণের মহোৎসব চলছে
- সালাহউদ্দিন বাবর
- ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:৩৮
নতুন বছরে অর্থাৎ চলতি ২০২৩ সালে বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক ও নৈতিকতার স্বরূপ কোন রূপ নিয়ে হাজির হবে তা হয়তো সবাই অল্পবিস্তর বুঝতে পারছেন গেল বছরের (২০২২ সালের) অভিজ্ঞতার আলোকে। এ বছর মানুষের চাওয়া ও প্রাপ্তি এই দুইয়ের মধ্যে যে ব্যবধান, গত বছর ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছিল। এ বছর কি সেই ব্যবধান ঘুচবে? ঘোচার ক্ষীণতম সম্ভাবনা হয়তো নেই; বরং তা আরো বিস্তৃতই হবে। তবে গেল বছরের শেষ পর্যন্ত দেশে আর্থসামাজিক অবস্থার ক্রমাগত যে নিম্নমুখিতা দেখা গেছে, এ বছর এমন কিছু উন্নতির সম্ভাবনা নিতান্ত কারণ কম যে, এ তো কোনো জাদুমন্ত্রের তেলেসমাতির বিষয় নয়, রাতকে দিনে পরিণত করা যাবে। অর্থাৎ এমন কোনো পদক্ষেপ ‘পজিশনের’ পক্ষ থেকে গ্রহণ করা, কোনোভাবেই সম্ভব নয় যা রাতকে দিনের আলোয় উদ্ভাসিত করে তুলতে পারে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং তাদের যোগ্যতা দক্ষতা সক্ষমতা রাতারাতি এতটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। প্রশাসন এই মুহূর্তে একটা ইউটার্ন দিতে পারে, সেটা ভাবাই যায় না। যা কিছু বলা হলো সে পরিপ্রেক্ষিতে ধরে নিতে হবে, এ বছর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ, স্বস্তি, প্রশান্তি পাওয়ার কোনো অবকাশ নেই, সব তথৈবচ।
দেশের প্রধান অপজিশন বিএনপি যে ২৭ দফা দিয়ে রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলে জনগণকে যে প্রত্যয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা অর্জনের প্রথম ধাপ হচ্ছে, একটা প্রশ্নমুক্ত অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি আদায় করে নেয়া। অবশ্য সেটা চাইলে যে পাওয়া যাবে তা কিন্তু নয়। সে জন্য প্রতিপক্ষকে তাদের চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান করে তুলতে হবে। অবশ্য প্রতিপক্ষের আশাবাদী হওয়ার একটা ইতিবাচক দিকই হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচিতে জনগণের মানসিক প্রস্তুতি এবং রাজপথে তাদের উপস্থিতি খুব আশাব্যঞ্জক। জনগণ অনেক এগিয়ে এসেছে, এ কথা এ জন্যই বলতে হয়, বিএনপি যেসব সমাবেশ ইতোমধ্যে করেছে সে সব জমায়েতে মানুষের ঢল নেমেছিল। সেখানে শুধু তাদের নেতাকর্মীরাই ছিল না, বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ তাতে সমবেত হয়েছিল, শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে। এটা একেবারেই নতুন সংযোজন। সে জন্য এখান থেকে তাদের নিয়ে বিএনপি এগিয়ে যেতে পারলে হয়। কেননা জনগণের অভিপ্রায় ও বিএনপির প্রত্যয় এখন প্রায় একবিন্দুতে এসে উপনীত হয়েছে। সহজ যোগ অঙ্কের মতো যেমন দুই দুই চার হওয়া স্বতঃসিদ্ধ, তেমনি জনগণ ও বিএনপির যে সম্মিলন ঘটেছে ও ঐক্য তৈরি হয়েছে, এমন ঐক্য তৈরির পেছনের কারণ হচ্ছে উভয়ের পিঠ দেয়ালে এসে ঠেকেছে। তাই কারো আর পিছনে হটার কোনো সুযোগ নেই বলে বোদ্ধা সমাজ মনে করে। তা ছাড়া পিছু হটার অর্থই নির্ঘাত এক ভয়াবহ এবং ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হয়ে যাওয়া।
তা ছাড়া এ বছর সব দলের জন্যই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার বছর। সেদিকটাও সামনে রেখে এটা নির্দ্বিধায় অনুমান করা খুব সহজ যে, চলমান আন্দোলনের সঙ্কটে অবশ্যই তার গতিবেগ আরো বাড়বে। অপর দিকে, মানুষের প্রয়োজন ও প্রাপ্তির যে বিরাট ব্যবধান তাতে জনগণ এখন ‘চিঁড়াচ্যাপটা’ হয়ে আছে। এসব কারণেই সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিকে জনগণ নানা কারণেই পক্ষশক্তির নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। তা ছাড়া বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা খুব একটা নতুন জিনিস না হলেও জনগণ সময়ের এক মহৌষধ বলে মনে করছে। তাই ২৭ দফা নিয়ে হেলাফেলা করে কারো পক্ষেই সেটা উড়িয়ে দেয়া সম্ভব নয়। সর্বোপরি দেশের কোটি মানুষের সম্পদে হিসাবে সেটা পরিণত হয়েছে। অপর দিকে যে কথাগুলো বলতে চাই সেটা কিছু আগেই অবশ্য কিছু বলেছি যে, সরকারের হাতে এমন কোনো আলাদিনের চেরাগ নেই যে, মুহূর্তে সব ইতিবাচক করে তুলতে পারে। তাছাড়া অদূরভবিষ্যতে যে নতুন অর্থনৈতিক সঙ্কট রাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে আসছে তাতে সার্বিক পরিস্থিতিটা অনিবার্যভাবে বিপদসঙ্কুল হয়ে উঠতে যাচ্ছে। সেজন্য জনজীবনের দুর্ভোগের মাত্রাই শুধু বাড়বে না, ক্ষোভের পরিমাণও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে তারা আরো প্রতিবাদী হয়ে উঠবে। বিষয়টি আরো পরিষ্কার করা যেতে পারে। রাষ্ট্রের বৈদেশিক ঋণের দায় পরিশোধ করতে এমনিতেই সরকারই নুইয়ে পড়েছে। তার ওপর এ বছর থেকে আরো বিরাট অঙ্কের বৈদেশিক ঋণের মূল অর্থ ও সুদের একটা বড় কিস্তি দেশের দেনার সাথে যোগ হবে। তাতে দেশের নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর আরো একটা বড় চাপ তৈরি হতে চলেছে যাতে দিশাহারা হয়ে যাবার মতোই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। সেজন্য সরকারের কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর শক্তিটুকু নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কোনো উপায়ই সরকারের থাকবে মনে হয় না। এমনিতেই দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ভারসাম্য একেবারেই নেই বললেই চলে। এখন বিশ্বপরিস্থিতির কারণে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের ঘাটতি এতটাই যে, সরকারের পক্ষে জরুরি প্রয়োজনের সব পণ্য আমদানি করতে ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ করতে পারছে না। এর অনিবার্য পরিণতি দেশে সব আমদানিজাত পণ্যের মূল্যস্ফীতি যে পরিমাণে বেড়েছে তাতে আরো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সে আঘাত লাগবে জনগণের বুকে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরো কমে যাবে। জনজীবনের দুর্ভোগ দুর্ভাবনা ও ক্ষোভের পারদ দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হতে বাধ্য। এদিকে বাড়তি ঋণের বোঝা কাঁধ থেকে নামানো খুব সহসা সম্ভব হবে বলে মনে করা যায় না। তাই দেশের সার্বিক পরিস্থিতির হয়তো এতটা অবনতি ঘটতে পারে যা কি না জনগণকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে দিতে পারে যে, তিলে তিলে নিঃশেষ হবার চেয়ে, পরিবর্তনের প্রহর গুনতে রাজপথে বাঁচার দাবি নিয়ে সোচ্চার থাকাই বরং শ্রেয়। জনগণের রাজপথে থাকার এমন প্রত্যয় যদি সৃষ্টি হয় তবে বিএনপির আন্দোলন অদূরভবিষ্যত্যের ক্ষুব্ধ সমুদ্রের গর্জনের মতোই হয়ে উঠতে পারে।
এখানে একেবারে হালের আরো একটি তথ্য সংযোজন করা জরুরি বলে উপলব্ধি করেছি। সম্প্রতি কয়েকটি দৈনিকের খবরে এই প্রকাশ, এ বছর বিশ্বের অর্থনীতি খুব খারাপ সময় পার করবে। এমন পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা। কিন্তু কতটা গভীর হবে সেটা নিয়ে উদ্বেগ ছিল সবার। এখন বিশ্ব অর্থনীতি আরো মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও সেটা প্রভাব ফেলবে মারাত্মকভাবে। মোদ্দা কথা বাংলাদেশের জন্য আরো একটি উদ্বেগের কারণ যোগ হলো। সব মিলিয়ে এটাই সাব্যস্ত হয় যে, এ দেশের মানুষ ক্রমাগত এক আঁধার রজনীতে নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে। অথচ রাষ্ট্রতরীর কাণ্ডারীদের এ থেকে ‘বেল আউটের’ ভাবনা না থাকলেও কথার ফুলঝুরি তৈরি করা হচ্ছে ছেলে ভোলানোর মতো করে।
দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যা পুঞ্জীভূত হবার পরিপ্রেক্ষিতে যে শিরঃপীড়া এখন পক্ষশক্তিকে যতটা বেচান করে তুলেছে সম্মুখের আসন্ন দিনগুলোতে হয়তো তাদের শিরঃপীড়া আরো বাড়বে। আশঙ্কা হচ্ছে, সে সময় যদি বিস্তৃত তাদের বর্তমান সময়ের চেয়ে হিতাহিত জ্ঞানে বন্ধ্যত্বতা আরো বেড়ে যায় এবং তাদের কঠোর কঠিন পথ ধরে এগিয়ে যাওয়াকেই বেছে নেয়; সেজন্য প্রতিপক্ষের নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে এখন যেভাবে অমানবিক পন্থায় মোকাবেলা করে চলছে খোদা না করুক পক্ষশক্তির এমন আচরণ যদি তাদের প্রতিপক্ষের ধৈর্য-সহ্যের সীমাকে অতিক্রম করে এবং তারা যদি পাল্টা কিছু করতে বাধ্য হয় তবে দেশ এক মহাদুর্যোগের মধ্যে গিয়ে যে পড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সব সময় পক্ষ-শক্তিকে যত বিপদ অস্থিরতার আসুক, মস্তিষ্ককে শীতল শান্ত রাখা তাদের জন্য উৎকৃষ্ট পন্থা। জনগণ এ পর্যন্ত কিন্তু পক্ষশক্তিকে তেমন সংযত থাকা শৈলী অনুসরণ করতে দেখেনি। যাই হোক বরং এটাই লক্ষণীয়, এখন পক্ষশক্তি কিন্তু আরো কঠিন পথ অনুসরণ করে চলতে শুরু করেছে। তবে এখন কৌশলটা হয়তো কিছু ভিন্ন হবে বলে মনে হচ্ছে। প্রতিপক্ষের মূলশক্তিকে এই মুহূর্তে ধরা ছোঁয়ার বাইরে রেখে তাদের সহযোগী শক্তিগুলোকে একে একে ধরে পঙ্গু করে দেয়ার পথ অনুসরণ করছে। গত বছর ৩০ ডিসেম্বর প্রধান প্রতিপক্ষের গণমিছিলের কর্মসূচি ছিল, সেদিন এক সহযোগীর ওপর প্রচণ্ড ক্র্যাকডাউনের আলামত লক্ষ করা গেছে। এভাবে ধীরে ধীরে এক এক ছোট বড় সহযোগীদের শায়েস্তা করা শেষ হলে মূল প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হওয়া সহজ হতে পারে।
২০২২ সালের শেষার্ধ থেকে এভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দিনকাল। এখন ২০২৩ সাল নির্বাচনের প্রস্তুতির বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগের সংসদ নির্বাচনের যে পথ পদ্ধতি দেশের মানুষ দেখেছে সেটা এখনো স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচন দিনটি ছিল ৩০ ডিসেম্বর, সেদিন আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসাবে পালন করে, পক্ষান্তরে বিএনপি দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে। কেন এই দুই পক্ষ-এমন ভাবে দিবস পালন তা হয়তো সবাই উপলব্ধি করেন। অথচ জনগণ আশা করে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে যেন সবাই যদি মিলিতভাবে গণতন্ত্র সুসংহত করার মতো করে সানন্দে পালন করতে পারে। সেজন্য পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তিকে সম্মিলিতভাবে গণতন্ত্রের বিজয়ের জন্য কাজ করতে উদ্যোগী হতে হবে। তবে এ কথা ঠিক, এজন্য অবশ্যই পক্ষশক্তির দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। সেভাবেই তাদের আগামী নির্বাচনের সময় অ্যাক্ট করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, এই দেশের জন্মের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল নির্ভেজাল গণতন্ত্র, এর পূর্বাপর কোনো বিশেষণ জুড়ে দেয়ার কোনো প্রয়োজন থাকতে পারে না।
আজ দেশের অবস্থা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, কেবল গণতন্ত্রই এ থেকে রক্ষা করতে পারে। সংবিধানে তা এভাবেই সন্নিবেশিত রয়েছে ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, সেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে।’ এই ধারার যে সৌরভ সৌন্দর্য্য সেটা বস্তুত ৫১ বছর বয়সী বাংলাদেশের রাজনৈতিক-নেতৃত্ব তার ঘ্রাণ নেয়া ও স্বস্তির মর্মটা উপলব্ধি করতে পারেনি। অবশ্য বিএনপি গণতন্ত্রের মূল চেতনাটি ধারণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়েই আছে সন্দেহ নেই। সেটা কারো পক্ষেই অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সংসদের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে বিএনপি দেশের একদলীয় শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। সংবাদপত্রের মুখে যে শক্ত ছিপি এঁটে দেয়া হয়েছে, বিএনপি তার অবসান ঘটায়। স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৭৫ তদানীন্তন আওয়ামী লীগ সরকারই সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সংবাদপত্র দলনের সব ব্যবস্থাই করেছিল। দ্বিতীয় যে পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে সেটা হচ্ছে, স্বচ্ছ প্রশ্নমুক্ত নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজন করেছিল বিএনপিই। এই ব্যবস্থাও সংবিধান থেকে রহিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের প্রাণশক্তি যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন তার পথে কাঁটা বিছিয়েছে আজকের পক্ষশক্তিই।
ক্ষমতাসীন দল তাদের ক্ষমতা সংহত করার কাজেই সারাক্ষণ ব্যতিব্যস্ত থাকায় এই জনপদের সামাজিক অস্থিরতা ও নৈতিক অবক্ষয় পানির ধর্মের মতোই ঢালুর দিকে নেমে যাওয়া শুরু করেছে। সেভাবে সামাজিক অব্যবস্থা নৈতিক অবক্ষয় এতটা দ্রুত বেগে নিম্নমুখী হয়েছে সেটা বলে শেষ করা যাবে না। একটা উদাহরণ দিয়ে এই নিবন্ধের ইতি টানা হবে।
এখন দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। বিদেশে বর্তমান কেউকেটাগণ বিপুল অর্থ ব্যয়ে বাড়ি কেনা শুরু করেছেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের জমা করা টাকার পাহাড় তৈরি হয়েছে। জানি না, এসব কিসের আলামত? তবে কিছু প্রশ্ন মনে জাগছে, বাড়ি কেনা বাবদ ও সুইস ব্যাংকে রাখা টাকার পাহাড় কি এ দেশের নিরন্ন মানুষের তিলে তিলে গড়া সঞ্চয়ের অর্থ নয়? শোনা যায় সবকিছু আজ শূন্য, ‘খোগলা’। বেলুন শুধু বাতাস দিয়ে ফোলানো যায়। দেশকে আজ শুধু বাতাস দিয়ে ফুলিয়ে রাখা হয়েছে। বাতাস বেরিয়ে গেলেই সব চুপসে যাবে। এসব ঘটছে শুধু ন্যায়-নীতি নৈতিকতার অভাবজনিত কারণেই। আজকে উপরে যে অপরাধ ও অন্যায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা অব্যাহত থাকার কারণ, এখন অন্যায় অপরাধকে আর কোনো অন্যায় ও অনিয়ম বলেই মনে করার মতো বোধ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সমাজপতিদের নেই। সমাজ থেকে যে শিক্ষা এখন পাওয়া যায় সেখানে ন্যায়পরায়ণতা শুদ্ধাচার নৈতিকতার কোনো অনুশীলন নেই। সমাজে এখন মাকাল ফলের বৃক্ষ রোপণের মহোৎসব চলছে।
ndigantababar@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা