০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

ভয়ে গা ছমছম করে

এপিং ফরেস্ট, এসেক্স - ছবি : সংগৃহীত

১৫ এপ্রিল। প্রবেশদ্বারে টানানো কালো বোর্ডে লেখা রয়েছে- Welcome to Hainault Forest Country Park. আমরা যখন প্রবেশ করি, তখন জনবিরল। কারপার্কিং এলাকাও শূন্য। দক্ষিণ দিকে প্রবেশপথ থেকে শুরু করে পূর্ব-পশ্চিম বরাবর সুপ্রশস্ত রাস্তা। রাস্তার দক্ষিণ পাশে কয়েকটি শেড, অশ্বশালাসহ ট্রাক্টর ইত্যাদি জাতীয় সরঞ্জাম। উভয় দিকে কয়েকখণ্ড ঘাসের জমি। জমিগুলো কয়টি গাছের গাছ দিয়ে আড়াআড়ি বাউন্ডারি টানা। দেখে মনে হয়, গবাদিপশুর জন্য এরকম করা হয়ে থাকতে পারে। উত্তর দিকে বিশালাকারের একটি হ্রদ। হ্রদে নানা প্রকারের হাঁসসহ জলচর পাখি। হ্রদের পরই বন। আমরা গাড়ি পার্ক করে মাঝখানের পথ ধরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর বেশ কয়েকজন প্রাতঃভ্রমণকারী প্রবেশ করে। গাড়ি করেও প্রবেশ করতে শুরু করে প্রাতঃভ্রমণকারীরা। বুঝতে অসুবিধা হয় না, নিরিবিলি এই প্রাতঃভ্রমণের জন্য উপযুক্ত স্থান।

হ্রদের দক্ষিণে এক জায়গায় পার্কের মানচিত্রসহ কোথায় কী করা হয়েছে বা হবে এই নির্দেশিকা টানানো রয়েছে। টানানো নির্দেশিকা দেখে হ্রদের দিকে এগোতে থাকি। হ্রদের পরই শুরু হয়েছে বন। নীরব নিস্তব্ধ বন দূর থেকে দেখেই ভয় করে। হ্রদে অগণিত প্রকার জলচর পাখি। পাখির মধ্যে হাঁসের সংখ্যাই বেশি। আকার-প্রকার ও বর্ণের দিক দিয়ে হাঁস যে কত প্রকারের থাকতে পারে, এখানে না এলে বিশ্বাস করা কঠিন। পুকুরের চার দিকে চলার রাস্তা। কোথাও কোথাও জলচর পাখির জলকেলিসহ রোদে পাখা সঞ্চালনের জন্য ঘাটলার মতো শেড করে দেয়া হয়েছে। হাঁস বাচ্চাসহ মাঠে উঠে আসে ও নির্ভয়ে বিচরণ করে। জলচর পাখির স্বর্গরাজ্য।

হ্রদের পরই বন শুরু। আমরা পুকুরপাড় দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে বনের দিকে যাই। বনের দক্ষিণ দিকে উত্তর-পশ্চিম বরাবর রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। ভোরের রোদের আলো-ছায়া খেলা করা হালকা বন। মায়াময় পরিবেশ। লক্ষণীয়, রাস্তা থেকে কিছু দূর পরপর বনের ভেতর প্রবেশপথ রয়েছে। বনের দিকে পায়ে চলার পথ কোনো কোনোটা এতই সরু যে, হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকতে হয়। কোনো কোনো অন্ধকার পথের দিকে তাকালেই ভয়ে গা ছমছম করে। এসব সরু পথ দিয়ে ভেতরে প্রবেশের রোমাঞ্চই আলাদা। ভয়কে জয় করার জন্য এসব পথ দিয়েই কিনা মানুষ গভীর জঙ্গলে চলে যায়।

ঘণ্টা তিনেক বন ও হ্রদের পাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করে ফেরার পথে টানানো মানচিত্র এবং নির্দেশিকা পড়ে জানতে পারি :
Hainaul Forest Country park. Park Gates will be locked at the Time Indicated below 6.60 PM. Please allow enough Time to Exit your Vehicle Before Gate Closing and vehicle remaining in the park after this time will be locked in overnight. Hainaul Forest Country park is a Country park located in Greater London, with portions in Hainult in the London Borough of Redbridge, the London borough of Havering and in the Lambourne parish of the Epping Forest District in Essex

এসেক্স (Essex) পূর্ব লন্ডনের উত্তর-পূর্বের একটি কান্ট্রি। একসময় এসেক্সের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে ছিল বন। বনের আদি নাম এপিং ফরেস্ট। যার উত্তরে দ্যাইউন বোইস, দক্ষিণে অ্যালডবরো হ্যাচ, পূর্বে হ্যাভরিং-অ্যাটে-বোওয়ার ও পশ্চিমে লেটনস্টোন। ১৫৪৪ সালে অষ্টম হেনরি এক সমীক্ষায় এর সীমা নির্ধারণ করেছিলেন প্রায় তিন হাজার একর। বনভূমি কেটে কৃষি জমিতে রূপান্তর শুরু হয়েছিল। পায় ৯২ শতাংশ পুরনো বনভূমি কেটে ফেলে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ১৮৫১ সালের পার্লামেন্টের এক আইনে বনভূমি কেটে ফেলার নিন্দা করা হয়। স্যার ওয়াল্টার বেসান্ট তার ‘গার্ডেন ফেয়ার’ উপন্যাসে বনভূমি ধ্বংসের তীব্র নিন্দা করেছেন। এর ফলে জনসচেতনা বৃদ্ধিসহ এপিং ফরেস্টের এমন পরিণতির জন্য শুরু হয় বিরোধিতা ও নিন্দা। এওয়ার্ড নর্থ বাক্সটনের নেতৃত্বে ফরেস্টের অবশিষ্ট অংশ রক্ষার জন্য জনচাপ বৃদ্ধি হয়। চাপের মুখে ১৯০৬ সালে ৮০৪ একর জমি কেনা হয় যার মধ্যে রয়েছে, খেলার জায়গা, পার্কল্যান্ডস, অসংখ্য পাবলিক ফুটপাথ, হ্রদ, হাইনল্ট ফরেস্ট গলফ ক্লাব এবং ফক্সবারোন ফার্ম আর কিছু অংশ বিরল প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক
E-mail : [email protected]


আরো সংবাদ



premium cement
ইফার দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত ঢাকা ওয়াসার কেউ দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা : উপদেষ্টা আসিফ ২২ ফেব্রুয়ারি হাবের নির্বাচন রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে ২ জনকে হত্যা ৪২ লাখ টাকাসহ প্রতারক চক্রের সদস্য গ্রেফতার ডিএমপি কমিশনারের সাথে য্ক্তুরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ তারুণ্যের উৎসবে স্থান পাচ্ছে জুলাই আগস্টের তথ্যচিত্র মৃত্যুবার্ষিকী : রফিকুল ইসলাম আধুনিক অটোমোবাইলস জোন প্রতিষ্ঠার দাবি ওয়েলফেয়ার অব ড্রাইভারস্ এন্ড মেকানিক্সের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার অভিযোগ, আটক ৩ ১০ লাখ টাকার অনুদানের চেক শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর

সকল