০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

মাওলানা ছিদ্দিক আহমদের সমাজচিন্তা ও রাজনৈতিক দর্শন

মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ - ছবি : সংগৃহীত

শায়খুল হাদিস খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: বাংলাদেশের এক যুগশ্রেষ্ঠ আলিমে দ্বীন, বাগ্মী ও রাজনীতিবিদ। প্রবল স্মৃতিশক্তি, অপূর্ব বাগ্মিতা ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের ফলে সমসাময়িককালে তিনি খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। মাওলানা ছিদ্দিক আহমদের বক্তব্য, লেখনী ও কর্মসাধনার মূল লক্ষ্য ছিল সমাজ পরিবর্তন। তিনি মনে করেন, সমাজের ইমারত যদি নৈতিক ব্যবস্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়, তা হলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা স্থায়ী রূপ পরিগ্রহ করবে। যুক্তি প্রয়োগে সত্যকে পরিস্ফুট করার আগ্রহ ছিল তার প্রবল। ইসলামী আদর্শনির্ভর একটি কল্যাণরাষ্ট্র ছিল তার আজীবনের লালিত স্বপ্ন। তিনি মনে করেন, সমাজের অভ্যন্তর থেকে সেই কাক্সিক্ষত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালাতে হবে, ওপর থেকে চাপিয়ে দিলে সমাজ তার ভার বহন বেশি দিন নাও করতে পারে। নবুওয়তি পদ্ধতির আদলে খিলাফতের মাধ্যমে রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তনে পূর্ব থেকে জনমানসকে প্রস্তুত করতে হবে। তিনি মাদরাসায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে সমাজসচেতন ও বিজ্ঞানমনষ্ক করার প্রয়াসী ছিলেন। আলেমরা যাতে সমাজের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করতে পারেন এ লক্ষ্যে তাদের নিজেদের সার্বিকভাবে গড়ে তুলতে তিনি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তার মতে, একজন মাদরাসা শিক্ষার্থীকে এমনভাবে সমৃদ্ধ করতে হবে, যাতে তার অর্জিত জ্ঞান সমাজ ও দেশের কাজে নিয়োজিত করতে পারেন। মূল্যবোধ সংরক্ষণ ও নৈতিকতানির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠায় মাদরাসা শিক্ষার্থীদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। নিকট অতীতে মাদরাসা থেকে উত্তীর্ণ হয়ে বহু মানুষ নিজ নিজ কর্মস্থলে, জ্ঞানচর্চা, সাংবাদিকতা, রাজনীতি ও সমাজসেবায় কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন।

সমসাময়িক বহু আলেমের থেকে তিনি ছিলেন অধিকতর উদারচেতা ও যুক্তিবাদী। বাঙালি মুসলিম সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারাচ্ছন্ন কর্মকাণ্ডের প্রতি গঠনমূলক সমালোচনা তার অগ্রসর মানসের পরিচয় বহন করে। তিনি কবর পাকাকরণ, কবরপূজা, পীরপূজা, ওরস, কবরে বাতি জ্বালানো, সনাতনধর্মাবলম্বীদের অনুকরণে বিভিন্ন পর্ব পালন, মাদকের বিস্তার, কিশোর গ্যাং, হিল্লøা বিয়ে, যৌতুক, বিয়ের নামে অনৈসলামিক কার্যকলাপের প্রচণ্ড বিরোধী ছিলেন। মুসলিম জাতির স্বর্ণালি অতীত ও গৌরবগাথার বিবরণী শুনিয়ে তিনি সমাজকে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করতে চেয়েছেন। স্থায়ীভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্দেশ্যে সুদভিত্তিক ঋণের পরিবর্তে জাকাত ও উশরভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বারোপ করেন। ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান ঘুচাতে সম্পদের সুষম বণ্টনের পক্ষপাতী ছিলেন তিনি।
বিদয়াতপন্থী অনেক আলেমের সাথে প্রকাশ্য বিতর্ক প্রতিযোগিতায় (মুনাজারা) অংশগ্রহণ করে নির্ভেজাল তাওহিদ ও সুন্নাতে রাসূল সা:-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে তিনি গৌরবোজ্বল অবদান রাখেন।

কাদিয়ানি মতবাদ, ১৯৬১ সালে জারিকৃত মুসলিম আইন, ড. ফজলুর রহমানের চিন্তাদর্শনের বিরুদ্ধে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তেজোদ্দীপ্ত ও যুক্তিগ্রাহ্য ভাষণ দিয়ে এগুলোর অসারতা খণ্ডন করেন। তিনি মনে করতেন, পরগাছা যেমন বেশি দিন সুযোগ পেলে মূল বৃক্ষকে নিঃশেষ করে দেয়; তেমনি শিরক, বিদয়াত ও কুসংস্কার যদি একবার মুসলমানদের সমাজ জীবনে প্রবেশ করে শিকড় বিস্তারের সুযোগ পায় তাহলে ধর্মের মৌল কাঠামো বিধস্ত করে দেয়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরগাছার মতো শিরক, বিদয়াতের শিকড় কেটে দেয়া দরকার। মিয়ানমারের আকিয়াব ও ইয়াঙ্গুনে খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: খাকসার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইনায়েত উল্লøাহ মাশরেকির সাথে ‘আল কুরআনের অলৌকিক ক্ষমতা (ইজাযুল কুরআন)’ বিষয়ে বিতর্কে অংশ নিয়ে তার বক্তব্যের সপক্ষে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করতে সক্ষম হন। মাওলানা মাশরেকি ও তার অনুসারীরা পবিত্র কুরআনের অলৌকিকত্বে বিশ্বাস করতেন না (মুফতি জসীম উদ্দীন, দারুল উলুম হাটহাজারীর ইতিহাস, পৃষ্ঠা-১৩১)।

ইসলামী শিক্ষার নিরলস খেদমত ও কুসংস্কারবিরোধী আন্দোলন ছাড়াও খতিবে আযম আধুনিক সভ্যতা, জীবনবোধ ও আধুনিক জাহেলিয়াত থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন ইসলামবিরোধী চ্যালেঞ্জের বুদ্ধিবৃত্তিক মোকাবেলায় বিরাট অবদান রাখেন। দীর্ঘ পৌনে ২০০ বছরের বৈদেশিক শাসন, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জড়বাদী জীবন দর্শনের প্রভাবে এ দেশের মুসলিম সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ’৪০ ও ’৫০ দশকে তা অনেক আধুনিক শিক্ষিত যুবকেরই ঈমান-আকিদা হরণ করে নেয়। মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: ক্ষুরধার যুক্তি উপস্থাপন করে সে সব আধুনিক জিজ্ঞাসা-চ্যালেঞ্জের দাঁতভাঙা জবাব দেন। সেই দিন তার মতো যুক্তিবাদী আলেম না থাকলে আধুনিক জাহেলিয়াতের ভিত এ দেশে আরো বেশি মজবুত হয়ে যেত। মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-এর দ্বারা বহু পথহারা আধুনিক শিক্ষিত ব্যক্তি কেবল পুনরায় ইসলামের পথে ফিরে আসেননি; বরং দেশের ওলামায়ে কেরামও তার আন্দোলনে নতুনভাবে আত্মচেতনা ফিরে পান। কারণ তিনি সেই সময় একজন দার্শনিক বক্তা ও বিদয়াত, শিরক ইত্যাদি কুসংস্কারের ধ্বজাধারীদের বিরুদ্ধে অপ্রতিদ্বন্দ্বী বাগ্মী হিসেবে খ্যাতির শীর্ষে (মাওলানা জুলফিকার আহমদ কিসমতী, বাংলাদেশের সংগ্রামী ওলামা ও পীর মাশায়েখ, ঢাকা, পৃষ্ঠা : ২৮০-২৮২)।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন ‘অসহযোগ’ ও ‘খিলাফত’ আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে। ছাত্রাবস্থায় ও শিক্ষকতার প্রাথমিক জীবনে শায়খুল ইসলাম আল্লøামা হোসাইন আহমদ মাদানী রহ:-এর রাজনৈতিক চিন্তাধারার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সদস্য হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি মাওলানা আতহার আলী রহ:-এর আহবানে আল্লামা শিব্বির আহমদ উসমানী রহ:-এর নেতৃত্বাধীন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামে যোগদান করেন। পরবর্তীতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও প্রাদেশিক পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসন থেকে পূর্বপাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য (এমএলএ) নির্বাচিত হন। ইসলামপন্থী ছয়টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লিগের (আইডিএল) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি নেজামে ইসলাম পার্টিকে পুনরুজ্জীবিত করেন এবং আমৃত্যু দলীয় সভাপতির পদে আসীন ছিলেন। একসময় ওলামা-মাশায়েখদের কাছে রাজনীতি ছিল নিষিদ্ধ বৃক্ষের মতো অস্পৃশ্য; কিন্তু খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ:-এর প্রচেষ্টায় বহু রাজনীতিবিমুখ আলেম সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়ে দেশসেবায় মনোনিবেশ করেন। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার কর্মসাধনার রাজনীতিকে তিনি ইবাদত বলে গণ্য করেন। সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রাম তার কাছে সারা জীবনের কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়। পশ্চাৎপদ বাঙালি মুসলমানদের আর্থসামাজিক উন্নয়নই ছিল তার রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য। লক্ষ্য অর্জনের এ পথপরিক্রমায় অন্যায়, ভীতি ও প্রলোভনের কাছে তার উচ্চ শির কখনো অবনত হয়নি। ক্ষমতার রাজনীতির পাপ-পঙ্কিলতায় না জড়িয়ে তিনি সারা জীবন মুসলিম স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। রাজনীতি করেও তিনি রাষ্ট্রীয় কোনো সুবিধা গ্রহণ করেননি। জিয়াউর রহমান নিজের মন্ত্রিসভায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানালেও তিনি এতে সম্মত হননি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি নেজামে ইসলাম পার্টিকে পুনরুজ্জীবিত করেন এবং আমৃত্যু দলীয় সভাপতির পদে আসীন ছিলেন। পিডিপি গঠিত হওয়ার পর নেজামে ইসলাম পার্টিকে পুনর্গঠিত করেন। এটি না করলে হয়তো নেজামে ইসলাম পার্টির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব থাকত না। পাণ্ডিত্য ও যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তিনি ইসলামী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সাংগঠনিক প্রতিভা তার সাথে মিলত হলে সফলতা আরো বেশি আসত। তিনি অনেক সময় হয়তো ঝুঁকি গ্রহণ করেননি, এটি যেমন সত্যÑ আবার বেশি ঝুঁকি নিলে হয়তো গোটা আলেম সমাজ সঙ্ঘাতে পতিত হতো (লেখক কর্তৃক গৃহীত সাক্ষাৎকার, হাকিম মাওলানা আজিজুল ইসলাম রহ:, সাবেক প্রিন্সিপাল, তিব্বিয়া কলেজ, ঢাকা, ২৯ আগস্ট, ১৯৮৭)।

মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: ছিলেন এ দেশের একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সারা দেশের দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণীর ওলামা-মাশায়েখের প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি। উপমহাদেশে রাজনৈতিক আন্দোলন ও পরাধীনতার অক্টোপাস থেকে মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ওলামায়ে কেরামের ভূমিকা মুখ্য হলেও পরবর্তী পর্যায়ে আলেম সমাজের বিরাট অংশ রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে পড়েন। রাজনীতিবিমুখ আলেমদের রাজনীতির ময়দানে এনে ইসলামের সাম্য ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে সেদিন যারা খানকাহ ও মাদরাসা ছেড়ে রাজনীতির ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন- মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: ছিলেন তাদের অন্যতম (মাওলানা জুলফিকার আহমদ কিসমতী, প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৮২)।

খতিবে আযম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ. এ দেশে ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী সব রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যের প্রতীক ছিলেন। মাওলানার আজীবন সাধনা ছিল কালেমাপন্থী সব মুসলমানকে এক প্ল্যাটফরমে সমবেত করা। বাংলার তন্দ্রাচ্ছন্ন জাতির ঘুম ভাঙানোর জন্য দেশের আনাচে-কানাচে তিনি যে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছেন আজো তা ইথারে ইথারে ভাসছে। তার মতো সর্বগুণে গুণান্বিত ব্যক্তিত্ব এ দেশে খুব কম জন্ম নিয়েছেন। তিনি ছিলেন নিঃস্বার্থ রাজনীতিক ও বিপ্লবী সংস্কারক। তিনি আত্ম-বিস্মৃতির দুর্ভোগ থেকে জাতিকে মুক্তি দেয়ার লক্ষ্যে সারা জীবন মেহনত করে গেছেন (মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, দৈনিক আজাদী, চট্টগ্রাম, ৯ আগস্ট ১৯৮৭)। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ইসলামপন্থী ছয়টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠন করেন ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লিগ-আইডিএল। মাওলানা ছিলেন আইডিএলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত ইসলামী জনগোষ্ঠীকে এক প্ল্যাটফর্মে সঙ্ঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অরাজনৈতিক ধর্মীয় সামাজিক সংগঠন ইত্তেহাদুল উম্মাহর ছিলেন সভাপতি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর ড. শব্বির আহমদ খতিবে আযমের ঐক্য প্রয়াসের মূল্যায়ন করে বলেন, “মুসলিম বিশ্বে পরিব্যাপ্ত মতপার্থক্যের মারাত্মক ‘দলাদলি’ ও অশুভ পরিণতি সম্পর্কে সজাগ থেকে তিনি ওলামা সম্প্রদায়ের ঐকান্তিক দায়িত্ব ও কর্তব্যকর্মে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য ‘আপস মীমাংসার’ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। তার ক্ষুরধার মেধা, চর্চাগত বিদ্যাভ্যাস, ক্ল্যাসিকেল ব্যুৎপত্তিসহ আধুনিকতার ধারাপ্রবাহের সাথে সমন্বয় সাধন তৎপরতায় তিনি যে রাজনৈতিক ব্যক্তিসত্তায় আত্মপ্রকাশ করেন তা সমকালে নজিরবিহীন। কওমি মাদরাসাগুলোতে মেধাগত বিচারের লক্ষ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক আন্তঃমাদরাসা পরীক্ষাগুলোর সংগঠন প্রতিষ্ঠায় নানাবিধ বাধাবিপত্তির মুখে মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ রহ: পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন। তিনি বিশদ পরিকল্পনা অনুসারে সরকারি মাদরাসায় শিক্ষিত ছাত্রদের সাথে বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রে সাযুজ্য আনয়নপূর্বক ‘ওলামাদের’ মধ্যে সার্বিক সমন্বয় সাধনের আগ্রহী ছিলেন। মোটকথা, সালফে সালেহিনদের রীতিসিদ্ধ অনুসরণিকাসহকারে উলামাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠা পুনরুদ্ধারে খতিবে আযম সাহেবের চিন্তা-কর্ম তৎকালীন পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী ১৯৫৪ সালের প্রথম নির্বাচন থেকে অব্যাহত সংগ্রামে পরিণতি লাভ করে।” (ড. শব্বির আহমদ, প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৮)

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও গবেষক
[email protected]

 


আরো সংবাদ



premium cement