ইসলামভীতির উজানে কার্লাইল
- মুসা আল হাফিজ
- ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১৯:৪২, আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২, ১৯:৪৫
আমেরিকান রাজনৈতিক তাত্ত্বিক নরম্যান ড্যানিয়েলকে দিয়ে শুরু করা যাক। তার বিখ্যাত বই ‘The Arabs and Medieval Europe’ এবং ‘Islam and the West : the Making of an Image’। উভয় গ্রন্থই একটি বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সেটা হলো, প্রায় গোটা মধ্যযুগ এবং ইউরোপে রেনেসাঁসের প্রথম দিকে পশ্চিমা দুনিয়া ইসলামকে মনে করত ধর্মদ্রোহ, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং অস্পষ্ট শয়তানী ধর্ম। এডওয়ার্ড সাঈদ দেখান, গোটা এই সময়ে হজরত মুহাম্মদ সা:-এর প্রতি হিংস্র, সহিংস ও বিকৃত মনোবৃত্তি ছিল প্রতিষ্ঠিত। মানবতার শেষ নবীকে তখন চিত্রায়িত করা হয়েছে ভণ্ড, বিরোধের উদ্ভাবক, ইন্দ্রিয়পরায়ণ, ভানকারী এবং শয়তানের প্রতিনিধি হিসেবে। ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপূর্ণ মিথ্যায় মলিন এই প্রচারণার স্রোতে ভিন্ন এক প্রবাহ আসে মধ্য উনিশ শতকে।
মহানবীর জীবনকে দেখা ও দেখানোর প্রশ্নে পশ্চিমা মনের বিবর্তনে এ সময়টা গুরুত্বপূর্ণ এক মোড়। থমাস কার্লাইল (১৭৯৫-১৮৮১) এই বিবর্তনের গোড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন। ১৮৪০ সালে প্রদত্ত তার দুনিয়া কাঁপানো বক্তৃতা সিরিজ ‘On Heroes, Hero-worship, and the Heroic in History’ এই বিবর্তনের পথে প্রধান মাইলফলক। বিখ্যাত এ বক্তৃতায় তিনি আলোকপাত করেন হজরত মুহাম্মদ সা:-এর জীবন ও কর্মের ওপর। এরপরে তার আলোচনায় আসেন কবি ও নাট্যকার দান্তে এ্যালিগিয়েরি (১২৬৫-১৩২১) ও উইলিয়াম শেক্সপিয়র (১৫৬৪-১৬১৬), খ্রিষ্টধর্ম সংস্কারক, ধর্মতাত্তি¡ক মার্টিন লুথার (১৪৮৩-১৫৪৬) ও জন নক্স (১৫১৪-১৫৭২), ইংরেজি সাহিত্য সমালোচক, লেখক স্যামুয়েল জনসন (১৭০৯-১৭৮৪) ও রবার্ট বার্নস (১৭৫৯-১৭৯৬), ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১) এবং অলিভার ক্রমওয়েল (১৫৯৯-১৬৫৮) প্রমুখ।
কার্লাইলের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও দীর্ঘ বক্তৃতা ছিল হজরত মুহাম্মদ সা:কে নিয়ে, যেখানে তিনি নবীজীর বিরুদ্ধে পশ্চিমা মিথ্যাচার নাকচ করেন শক্ত-কঠোর ভাষায়। ইসলামের প্রকাশ্য বিরোধিতার ধারা প্রাচ্যতাত্ত্বিক জ্ঞানকাণ্ডের একটি অনমনীয় মেজাজ তৈরি করেছিল। কার্লাইল সেই ধারায় ছেদ আনেন। তিনি মহানবী সা:-এর প্রশংসা করেন। তার নিষ্ঠা, মহত্ত্বি, আত্মনিবেদন, প্রভাব ইত্যাদি বিষয় ভাষার ঐন্দ্রজালিক মোহময়তায় বিবৃত করেন।
এক ধরনের নিরপেক্ষতা ও গবেষণার আদলে এরপরে কথা বলেছে প্রাচ্যবাদ। কার্লাইলের পরে এই ধারার প্রকাশরীতিই যায় বদলে। ইসলামের বিরোধিতার জন্যও লেখকরা নতুন ভাষারীতির সন্ধান করেছেন গবেষণার মোড়কে। ফলে প্রাচ্যবাদের মূল চরিত্র জ্ঞানতাত্ত্বিকতার আবরণে কিছুটা অস্পষ্টতা লাভ করে। প্রাচ্যতত্ত্বে তখন আরব সংস্কৃতি, জ্ঞানচর্চা, ইতিহাস, গবেষণা, অধ্যয়ন, নিরপেক্ষতা, বুদ্ধিবৃত্তিক আদান-প্রদান, পর্যবেক্ষণ, যুক্তি-তর্ক ইত্যাদি শব্দগুলো জায়গা করে নেয়। কার্লাইলের ভাষণের আত্মায় এরই প্রস্তাবনা নিহিত ছিল। তিনি যে সর্বান্তকরণে মহানবী সা:-এর সত্যতাকে বিশ্বাস করতেন তা নয়। কিন্তু মহানবী সা:-কে বয়ান করার ক্ষেত্রে জ্ঞানচর্চার যে নির্মোহতা, দৃশ্যত তা প্রদর্শন করতে চেয়েছেন। পরবর্তী প্রাচ্যবাদ এর মধ্যে প্রত্যক্ষ করল আপন সঙ্গতি। পরবর্তী শতক ও দশকগুলোতে ইসলাম, কুরআন, ওহি, মুহাম্মদ সা:-এর বংশমর্যাদা, আভিজাত্য, নাম, শৈশব, কৈশোর, যৌবন, বিয়ে, নবুয়ত, তাফসির, হাদিস, ফিকহ, সুন্নাহ, জিহাদ, তাসাউফ ইত্যাদি প্রসঙ্গে প্রাচ্যতাত্তি¡ক বয়ান শাস্ত্রীয় চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করতে থাকল, যদিও তার মধ্যে প্রায়ই নিহিত থেকেছে একগুচ্ছ মিথ ও মিথ্যা।
কার্লাইল মিথ্যা পরিহারে সচেষ্ট ছিলেন। যদিও একজন খ্রিষ্টান তিনি। গণিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কার্লাইল সার্কেল। বিজ্ঞানে হাজির করেন পোলেমিক প্রক্রিয়া। ইতিহাসে নতুন তত্ত্ব হাজির করেন; বিশ্বের ইতিহাস আসলে মহাপুরুষদের জীবনী। স্কটিশ এই দার্শনিক, ব্যঙ্গলেখক, বাগ্মী আধুনিক ইতিহাস ভাবনার অন্যতম নির্মাতা। ইসলাম প্রশ্নে তিনি এডওয়ার্ড সাঈদ (১৯৩৫-২০০৩) এর মতো বুদ্ধিজীবীর কলমে নিন্দিত হলেও মুসলিম চিন্তকদের অনেকের কলমে তিনি ইসলামের দূরবর্তী বন্ধু হিসেবে বন্দিত।
১৭৯৫ সালের ৪ ডিসেম্বর, স্কটল্যান্ডের দক্ষিণে ডামফ্রিজ এবং গ্যালোওয়ের ছোট এক গ্রাম একলেফেচানে জন্ম। বিখ্যাত আনান একাডেমিতে পড়াশোনা। সেখান থেকে তার নিকটতম বন্ধু ছিলেন এডওয়ার্ড ইরভিং (১৭৯২-১৮৩৪), যিনি সমকালীন ক্যাথলিক এপোস্টলিক চার্চের বিখ্যাত ধর্মগুরু হয়েও সব সময় পকেটে বহন করতেন মুসলিম সাহিত্য। বিশেষত আলফু লাইলাহ; এরাবিয়ান নাইটস।
এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক হিসেবে কার্লাইল খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু তার গদ্য ছিল তরতাজা, সুন্দর। প্রাণময় শৈলী, কৌতুকপূর্ণ ভঙ্গি, উইট এর ব্যবহার, আর মাঝে মাঝে অব্যর্থ তীব্র আক্রমণ। জার্মান দর্শন ও সাহিত্য হরণ করেছিল তার মন। তিনি এর ভোক্তা ও অনুবাদক ছিলেন।
ইয়োহান গটলিব ফিকটে (১৭৬২-১৮১৪) ইয়োহান ভলফগাং ফন গ্যেটে (১৭৪৯-১৮৩২), ফ্রিডরিক শিলার (১৭৫৯-১৮০৫) প্রমুখের দর্শন, কবিতা, নাটক ও উপন্যাস তাকে আন্দোলিত করে। ১৮২৬ সালে তিনি বিয়ে করেন জেন বেলি ওয়েলশকে, যিনি ছিলেন দুর্দান্ত এক স্কটিশ লেখিকা। তার সাথে কার্লাইলের পরিচয় হয়েছিল জার্মানিতে। বিয়ের পরে প্রথম ছয় বছর উভয়ে স্কটল্যান্ডের একটি খামারে থাকতেন তিক্ত ঝগড়াঝাটিসহ। ১৮৩১ সালে এ দম্পত্তির লন্ডনে চলে আসা তাদের লেখালেখিতে আনে নতুন মাত্রা। লন্ডনের এম্পটন স্ট্রিটে চার বছর থাকার পর যান চেলসির চেইন রো আবাসিক রোডের ২৪ নম্বর বাসায়। কার্লাইল হাউজ হিসেবে যা বিখ্যাত এবং জাতীয় ট্রাস্ট্রের সম্পত্তি হিসেবে এখন জনগণের জন্য উন্মুক্ত। এখানে কার্লাইল লিখেছিলেন The French Revolution: A History (১৮৩৭) যা প্রকাশের পরপরই বিখ্যাত হয় এবং বিশ্ববরেণ্য হতে সময় নেয়নি তেমন। তার হাতে প্রাণ পায় Henry Duff Traill Gi Rxebx, John Sterling Gi Rxebx, Friedrich Schiller এর জীবনী।
জীবনী সাহিত্যের ক্ষেত্রে বইগুলো পরবর্তী লেখকদের জন্য দিশারী হয়ে ওঠে। কার্লাইলের বিখ্যাত গ্রন্থের তালিকা দীর্ঘ। German Romance: Translations from the German, with Biographical and Critical Notices (1827) Sartor Resartus: The Life and Opinions of Herr Teufelsdröckh in Three Books (1833) Past and Present (1843) Oliver Cromwell's Letters and Speeches: with Elucidations (1845) Latter-Day Pamphlets (1850) History of Friedrich II. of Prussia, Called Frederick the Great (1858) তার কাজের কিছু স্বাক্ষর, যা বুঝিয়ে দেবে সমকালের অগ্রসর লেখকরাও কেন কার্লাইলের প্রভাব এড়াতে পারেননি। ১৮৮১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে কার্লাইলের মৃত্যুর পর সেই প্রভাব হয়েছে আরো প্রসারিত।
কার্লাইল তার সবল, সফল এবং জীবন ও যুদ্ধজয়ী যথার্থ মানুষের তালাশে ছিলেন ক্লান্তিহীন। সেই তালাশের উচ্চতর এক নমুনা হজরত মুহাম্মদ সা: প্রশ্নে তার জ্ঞানীয় সন্ধান ও বয়ান। তার বিচারে মানব অগ্রগতি মূলত বীরদের ঘিরে এগিয়ে যায়। আর বীর বা নায়ক হতে পারেন এমন মানুষ, যার আছে অন্তর্দৃষ্টি। যিনি দেখতে পারেন সেই অদেখাকেও, যা দেখা অন্যদের জন্য দুরূহ। তিনি দেখতে পাবেন বস্তুগত ঘটনার ভেতর ও বাহির। দেখবেন দৃশ্যমান বিষয়সমূহের রূপ ও মাত্রা, চিত্র ও চরিত্র। তিনি বাস্তবতাকে দেখবেন নির্মোহ নজরে। তাকে ব্যাখ্যা করবেন সাধারণের সামনে। তিনি সৃষ্টি করবেন নতুন বাস্তবতা আর গড়ে তুলবেন ইতিহাস।
থমাস কার্লাইল তার প্রস্তাবিত গুণাবলির পূর্ণতা হজরত মুহাম্মদ সা:-এর মধ্যে অবলোকন করেন। On Heroes, Hero-worship এ মহানবী (সা:)-কে তিনি ইতিহাসের মহানায়ক হিসেবে অভিহিত করে বলেন, মহান প্রভু বিশ্বের মানুষের প্রতি সবচেয়ে মূল্যবান যে অনুগ্রহটি করেছেন, তা হলো তিনি আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন মুহাম্মদ সা:-এর মতো মহান জ্যোতিকে, যিনি ঊর্ধ্বজগত থেকে খোদার বাণী নিয়ে এসেছেন মানব সকাশে।
কার্লাইল বলেন, কোনো লোভ স্পর্শ করতে পারেনি মহানবী সা:-কে। জীবনের প্রথম বেলা থেকে তার আচরণে কখনো দেখা যায়নি কোনো বৈপরীত্য। জীবনভর লড়াই করেছেন সহিংসতা, অনাচার, অশালীনতা ও নীতিহীনতা, স্বার্থপরতা, খ্যাতির মোহ ও অবিচারের বিরুদ্ধে। বিশ্বকে তিনি দিয়েছেন সুশীল আইন ও নৈতিক বিধান। যাতে বর্বরতা ও প্রতিশোধ-প্রবণতা বিলুপ্ত হয় এবং নৈরাজ্য ও অনাচারের স্থান দখল করে শৃঙ্খলা ও সভ্যতা।
মহান লক্ষ্য অর্জনের সুদৃঢ় ইচ্ছা ছাড়া অন্য কোনো চিন্তা তার ছিল না। কল্যাণ কামনা ছাড়া ভিন্ন কিছু যিনি ভাবতেই পারেন না। বিশ্বের কোনো সম্রাটই তার মুকুট ও সিংহাসন নিয়ে কখনো অনুসারীদের এমন আনুগত্য পায়নি যা পেয়েছেন মুহাম্মদ সা:। তার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে নির্মমতার তুফান। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে যা ছিল অব্যাহত। সবই তিনি সহ্য করেছেন। সত্যিকার নায়কের যত বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত, সবই তার মধ্যে নিহিত। তার পরিচয় হিসেবে এটাই যথেষ্ট।
তার বিজয় ছিল মহত্ত্বের বিজয়। তার সত্তায় সদাযুক্ত এই মহিমা তার অনুসারীদের এমন আনুগত্য নিশ্চিত করেছিল, যা দেখে হজরত আব্বাসকে লক্ষ করে প্রতিপক্ষীয় কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান বলেছিলেন- কী বিস্ময়! আমি পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের সম্রাটদের দেখেছি! কিন্তু তোমার ভাতিজা যে গৌরবের অধিকারী, তার নজির তাদের মধ্যেও নেই। তারা মানুষকে শাসন করে গায়ের জোরে ও মাথার ওপর বর্শা ঝুলিয়ে! কিন্তু এই যে মুহাম্মদ সা: শাসন করছেন, তার শাসন মানুষের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত। তিনি মানুষের বিশ্বাস ও অনুরাগ এবং প্রেমের সম্রাট।
পশ্চিমা অপপ্রচারের বিপরীতে কার্লাইল বলেন, এই মহাপুরুষকে ঘিরে যেসব মিথ্যার পাহাড় বা স্তূপ গড়ে তোলা হয়েছে, তার দ্বারা আমরা কেবল নিজেদেরকেই কুৎসিত ও কলঙ্কিত করেছি!
শত্রুরা যদি সত্যের দৃষ্টি দিয়ে দেখত, তাহলে দেখত যে, এই মহাপুরুষের লক্ষ্যগুলো ছিল উচ্চতর এবং দুনিয়ার লোভ-লালসা, পদ-পদবি ও সাম্রাজ্য লাভের আকাক্সক্ষার ঊর্ধ্বে। বিদ্বেষবিষাক্ত প্রচারকদের অনেকেই মহানবী সা:-কে ইন্দ্রিয়পরায়ণ ও বিলাসী হিসেবে অপবাদ দিচ্ছিল। কার্লাইল বলেন, এ জাতীয় অপবাদ কতই না অন্যায়, কতই না অবিচার! যে অবিশ্বাসী আরবদের সাথে তার সঙ্ঘাত ছিল, তারাও তাকে পবিত্র ও সৎ এবং আমিন বা বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী বলে উল্লেখ করত। তিনি ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়স্ক একজন নারীকে বিয়ে করেছিলেন। ৫০ বছর বয়স পর্যন্তু এই বয়স্ক নারীকেই স্ত্রী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট থেকেছেন তিনি, অন্য স্ত্রী গ্রহণ করেননি। সেই মানুষকে কিভাবে ইন্দ্রিয়পরায়ণ বলে অপবাদ দেয়া যায়?
পশ্চিমা প্রোপাগান্ডা মহানবীকে নবুওতের মিথ্যা দাবিদার হিসেবে নিন্দা করত। কার্লাইল বলেন, একজন মিথ্যাবাদী কি একটি ধর্ম গড়ে তোলার ক্ষমতা রাখে আর সেই ধর্মকে বিশ্বময় ছড়াতে সক্ষম হয়? কিভাবে তা সম্ভব, আপনারা কি ভেবেছেন? স্রষ্টার শপথ! একজন মিথ্যাবাদী ও মূর্খ লোক একটি ঘর বানাবারও ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু মহানবী সা: যে ঘর গড়েছেন, তার মধ্যে কোটি কোটি মানুষ ১৪০০ বছর ধরে জীবন যাপন করছে।
কার্লাইল দৃঢ়তার সাথে বলেন, মহানবীর ধর্ম মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত, এমন দাবি করাটাই নির্লজ্জ ব্যাপার। এ ধরনের চিন্তার প্রচারকরা নিতান্তই গোবেচারা, দুর্বল! আমি ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখছি যে, মহানবীর জীবনের ভিত্তি পছন্দনীয়, নীতিও পছন্দনীয়, প্রতিটি কাজ পছন্দনীয়, প্রতিটি বৈশিষ্ট্যও পছন্দনীয়। ইউরোপের প্রচলিত ধর্ম-বিশ্বাসগুলোর বিপরীতে মুহাম্মদ সা: ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন কোনো অনৈতিকতা ও অশালীনতা শেখায় না, বরং কুরআনের দৃষ্টিতে মুসলমানদের মানবিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব হলো মহান আল্লাহর ইচ্ছার আলোকে এমন এক সুশৃঙ্খল ও নৈতিক জীবন গড়ে তোলা যা হবে অসাধারণ মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত ও সংযত।
পশ্চিমে ইসলামোফোবিয়ার পুরনো আবহাওয়ায় কার্লাইলের এ আওয়াজ ছিল স্রোতের উজানে এক প্রবল পাল্টা স্রোত। কার্লাইল জানতেন, এর মূল্যমানকে সহসা উপলব্ধি করতে প্রস্তুত নয় পশ্চিমা দুনিয়া। তবুও তিনি বলেছেন .... অস্তিত্বের মহারহস্য এবং এর সব প্রতাপ, ভীতি-বিহ্বলতা, ঔজ্জ্বল্য ও জ্যোতি ছিল মহানবী (সা:)-এর কাছে স্পষ্ট ... এমন ব্যক্তির বাণী হচ্ছে সরাসরি প্রকৃতির সারসত্য থেকে উঠে আসা খোদায়ী কালাম। মানুষের উচিত অন্য কিছু না শুনে এমন ব্যক্তির বক্তব্য অবশ্যই শোনা। কারণ, এমন বক্তব্যের তুলনায় অন্য সব বক্তব্যই শূন্যগর্ভ বাতাসের মতো।
লেখক : কবি, গবেষক
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা