২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যে বোধ যত্নে লালিত হতো

লেখক : সালাহউদ্দিন বাবর - ফাইল ছবি

স্বাস্থ্যের জন্য অতি কটা বা তেঁতুলের মতো টক কোনোটাই উপযোগী নয়। তেমনি হৃদয়-মনের বিষণ্ণতা, হতাশা মনোজগতে বৈকল্য সৃষ্টি করে। রাজনীতির অঙ্গনের তিক্ততা অসহিষ্ণুতা সমাজে বিষবাষ্প তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ। এখন এই ত্রয়ীর উপস্থিতি ঘটেছে বলে রাষ্ট্রযন্ত্রের চলার পথ অনেকটা কণ্টকাকীর্ণ ও অমৃসণ হয়ে উঠেছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অগ্নিমূল্যের ফলে দেশের মানুষ তাদের চাহিদা পূরণের মতো খাদ্যদ্রব্য কিনতে পারছে না। এতে তারা পুষ্টিহীনতার শিকার হচ্ছে, দেহে সহজেই রোগ বালাইয়ের সংক্রমণ ঘটছে। এসব দুর্ভোগে তাদের মনোজগৎ ভরে গেছে বিষণ্ণতায়। শুধু তাই নয় মনোজগতে বিষণ্ণতা হতাশা সৃষ্টি হওয়ায় জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে উঠছে বহু মানুষের মন মস্তিষ্ক। রাজনীতির অঙ্গন হানাহানি, সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ, অসহিষ্ণুতায় ভরে গেছে। সব মিলিয়ে এই জনপদ হালে বাসযোগ্যের পরিবেশ হারিয়ে ফেলতে চলেছে বললে সম্ভবত বাড়িয়ে বলা হবে না।

তারপরও প্রশাসন তথা কর্তৃপক্ষ মহলে কোনো খেদ, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে বলে মনে হয় না। সবাই নির্বিকার নিশ্চল। তাদের দেহ ভঙ্গিমা এটাই জানান দিচ্ছে যে, দেশের বিদ্যমান পরিবেশ-পরিস্থিতি সবই যেন স্বাভাবিক। কোনো ব্যত্যয়-ব্যতিক্রমের আভাসটুকু পর্যন্ত তাদের চেতনায় উঁকি দেয় বলে মনে হয় না। অথচ চতুর্দিক থেকে এক অনিবার্য অনাসৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। সে জন্য কেউ কি বলতে পারবে দেশ এখন কোন গন্তব্যের দিকে ছুটছে! এমন লক্ষ্যহীন অভিযাত্রা কতটা ভয়ঙ্কর! যারা এই রাষ্ট্রতরী সামাল দেয়ার দায়িত্ব জবরদস্তি করে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তারা কি সেটা উপলব্ধি করতে পারছেন না?

রাজনীতিতে দায়দায়িত্ব হস্তান্তরের যে শান্তিপূর্ণ পথ-পদ্ধতি, সেটা অনুসরণ-অনুশীলন হচ্ছে না। অক্ষম হলেও তাদের সক্ষমতা প্রমাণের নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে সব অনর্থ ঘটছে সে প্রচেষ্টা এমনভাবে হচ্ছে, সেখানে আইন-কানুন, নীতি-নৈতিকতা, সংযম-সহিষ্ণুতার কোনো বালাই নেই। পরিস্থিতির সাথে সঠিক বোঝাপড়াটা হয়ে উঠছে না।

এমন পথে চলতে গিয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক কর্তা-কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেই সাথে জনগণও এখন প্রশাসন নিয়ে নিরাসক্ত-নিস্পৃহ, তিতি-বিরক্ত। এমন গুমোট পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকলে কোনো কিছুই সচল-সক্রিয় থাকতে পারে না। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ না ঘটা পর্যন্ত কারো পক্ষে স্বাভাবিক থাকা সম্ভব নয়। সে জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের এখন চিত্ত-চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে, দেশ দশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ জ্ঞান করে তার ষোল আনা স্বার্থ রক্ষার জন্য সব রাজনৈতিক ও সর্বস্তরের সামাজিক শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে, সমন্বিত প্রচেষ্টা তথা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসকে সফল করতে হবে। এই মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হতে হবে, এই জনপদের স্বত্বাধিকার ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ভেতর বসবাসকারী প্রতিটি নাগরিককে। তাদের আশা-আকাক্সক্ষা, পছন্দ-অপছন্দ সামনে রেখে অগ্রসর হলেই সব সঙ্কটের অবসান ঘটতে পারে। এর আর কোনো ভিন্ন পথ খোলা নেই, এখন কেউ ভিন্ন পথে হাঁটতে যাওয়ার অর্থ হলো আত্মঘাতী হওয়া, অন্ধকার অমানিশা ডেকে আনা। জনগণের শুদ্ধতার পথে ফেরার সব বন্ধ দরজা, জানলাগুলো খুলে দিতে হবে।

গোটা বিশ্ব এখন এমন সব বিপর্যয়ের সম্মুখীন, সবারই ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রতিটি দেশ নিজের মতো করে ভাবছে, তাদের ভূ-খণ্ডকে নিরাপদ-নির্বিঘ্ন ও মানুষের ভালো করার চেষ্টাকে এই মুহূর্তের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সব কিছুকে সামনে নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

আর এখন এটাই সঠিক পথ। আমরা এই পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো ভূ-খণ্ড নই বা এ জনপদ ভিন্ন কোনো গ্রহের টুকরো নয় যে, আমাদের সেই একই রোগ সারাতে ভিন্ন ব্যবস্থাপত্রের প্রয়োজন হবে। দেশের সমস্যা বলতে এই ভূখণ্ডের মানুষের সমস্যাকেই বোঝায়, এই সঙ্কট দূর করতে প্রথমে সমস্যার ভেতরে যেতে হবে, বুঝতে হবে, এজন্য সক্ষম সব ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েই এই বোঝাটা শুরু হওয়া বাঞ্ছনীয়। ঘোরা পথে গেলে বা ভুল পথে অগ্রসর হওয়ার অর্থ সমস্যা শুধু সমস্যাই থেকে যাবে না, সময় ক্ষেপণ হবে এবং তাতে সবারই সমস্যা বাড়বে; এটাই অনিবার্য এবং একপর্যায়ে সব কিছু আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে।

এখন সবারই এ কথা পরিষ্কারভাবে বুঝতে ও শুনতে হবে, কোনো রাষ্ট্র যদি নিজেকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি দিতে চায়। তবে সে জন্য অবশ্যই তাকে নির্ভেজালভাবে সততার সাথে সেই চেতনা তথা সবার মনোবাঞ্ছনার কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কোন ক্ষেত্রে আছি, কোন ক্ষেত্রে নেই, ‘দো দিল বান্দা’ হলে চলবে না। কারোরই ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না, আমাদের প্রধান আইন ও দিকনির্দেশনা গ্রন্থ তথা সংবিধান দেশকে কোন পথে অগ্রসর হওয়ার কথা বলেছে। সেটি অনুধাবন করতে হবে। আমাদের শাসনতন্ত্রের প্রস্তাবনায় অন্যান্য বিষয়ের সাথে গণতন্ত্রকে মূলনীতি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং শাসনতন্ত্রে ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে এবং প্রশাসনে সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশ নিশ্চিত হইবে।’ এই ধারা থেকে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়, গণতন্ত্র-নির্বাচন ও সব স্তরে জনপ্রতিনিধিদের কার্যকর ভূমিকা ও আবশ্যকতার বিষয়ে। এই ধারার আলোকে এমন প্রত্যয়-প্রতিষ্ঠা পায়, যে নির্বাচনে কোনো গোঁজামিল নেই, জনপ্রতিনিধি মানে স্বঘোষিত কোনো নেতৃত্ব নয়। এমন কিছু পেতে হলে, প্রশ্নমুক্ত অংশগ্রহণমূলক ভোট হতে হবে। গণতন্ত্রের কথা বলা হবে আবার সাথে থাকবে জোরজবরদস্তি। এ দুইয়ের মধ্যে কোনো সক্ষমতা থাকতে পারে না। কিন্তু এক দশকেরও বেশি সময় হবে নির্বাচন এখন গিল্টি করা সোনার মতো খাঁটি অথবা ‘সোনার পাথর বাটি’র মতো। কিন্তু এমন বোধ ব্যাখ্যা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

দেশে বিদ্যমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে, এই ভূখণ্ডকে আর সচল অর্থবহ রাষ্ট্র বলা যাবে না। সচল রাষ্ট্রের যে সংজ্ঞা বৈশিষ্ট্য তাকে সামনে রাখলে এবং দেশের এখনকার হাল-হকিকত তুলে আনলে বর্তমান দেশের নিশ্চলতার স্থবিরতার এক প্রকট ছবি দিবালোকের মতো স্পষ্ট হবে। দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবন এখন যে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে, সেটা নজিরবিহীন, অতীতের যেকোনো সময়ের সাথে এর কোনো তুলনা হতে পারে না। রাষ্ট্রের কোষাগারের অবস্থা উদ্বেগজনক, রফতানি আয় তলানিতে পৌঁছেছে, রেমিট্যান্স আসার পথ রুদ্ধ হতে চলেছে। অর্থের সংস্থান না থাকার কারণে পণ্য আমদানি সীমিত করা হচ্ছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সব পণ্যের মূল্য স্ফীতি ঘটছে। সব মিলিয়ে দেশের এখন গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা।

এমন দুরবস্থা সৃষ্টির কারণ একটি দুটি নয়, অনেক। তার অন্যতম হচ্ছে কর্তৃপক্ষের অক্ষমতা, দূরদৃষ্টির অভাব এবং অদক্ষতার জন্য দেশে সুশাসনের প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। সুশাসন বলতে যা বোঝায় সেটা ন্যায্যতার প্রতিষ্ঠা, জবাবদিহিতার অনুশীলন, প্রশাসন পরিচালনায় অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হওয়া তথা সবার কাজের সঠিক মূল্যায়ন করা, আইনকে তার সরল পথ ধরে চলতে দেয়া। এসবসহ সুশাসনের অন্যান্য যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলোর প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হওয়া। বরাবর এটাই লক্ষ্য করা গেছে যে, দেশের সংবিধানকে সবসময় অবজ্ঞা অবহেলা করা হয়েছে। অথচ বিশ্বের সব দেশে রাজনৈতিক প্রশাসন তাদের সংবিধানকে অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ ও তার দিকনির্দেশনাকে রাষ্ট্র পরিচালনার ‘গাইড বুক’ হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। আমাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে কথা বলে বটে কিন্তু তার আলোকে কাজ করে না। কেবল তারা বাকচাতুর্যে লিপ্ত থাকে। তাই বলতে হয়, শূন্য কলস বাজে বেশি। এভাবেই বহু সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় দেশ সমস্যার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। তার সর্বাঙ্গে ব্যথা।

ওপরে যা কিছু বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তার সবটাই রাজনৈতিক সঙ্কট। দেশকে রাজনৈতিক ব্যবস্থাদি থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চলছে। অথচ গণতান্ত্রিক দেশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বহু মত ও পথের সহ-অবস্থান এবং সবার জন্য জনগণের কাছে তাদের কর্মসূচি-কর্মপদ্ধতি তুলে ধরার নির্বিঘ্ন অধিকার। কিন্তু আজকের অবস্থা কী পক্ষশক্তি প্রতিপক্ষকে তাদের অবস্থান-উপস্থিতি কোনোভাবে সহ্য করতে পারছেন না, তাদের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ-সহায়তা দিচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীনদের যুদ্ধংদেহী ক্যাডাররা প্রতিপক্ষ সংগঠনের মাঠে ময়দানের সভা-শোভাযাত্রায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করে দিচ্ছে। এটা কোনোভাবে স্বাভাবিক বিষয় নয়। আইন এক পাশে ফেলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মামলা করা হচ্ছে।

এর সুদূরপ্রসারী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া অবশ্যই রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে রাজনীতি ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতি মানুষের আস্থা বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাবে যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চেতনাকে নস্যাৎ করবে।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র থেকে রাজনীতি যদি নির্বাসনে পাঠানো হয় তবে তার শূন্যস্থান পূরণ করবে কে? অবশ্যই ‘অ্যানার্কি’, সহজ বাংলায় নৈরাজ্য, যা মূলত আদিম যুগে ফিরে যাওয়া। সেখানে থাকবে না কোনো শৃঙ্খলা, যার যত পেশিবল, সেই বিধি বিধানের বিকল্প হয়ে উঠবে। ব্যক্তিবিশেষের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হবে সবাই, কেউই রক্ষা পাবে না। কারো অধিকারের মূল্য দেয়া হবে না। শক্তি, অজ্ঞানতা সবকিছুর নিয়ামক হয়ে দাঁড়াবে।

এখন বিবেচনার বিষয়, আমারা কোনটা বেছে নেবো, দেশ দশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়ায় প্রাধান্য দেবো নাকি ব্যক্তি-গোষ্ঠীর অভিলাষকে! জাতি আজ এই অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন। তবে এ কথা সত্য, তৃতীয় বিশ্বে সাধারণকে কখনোই অসাধারণ হয়ে উঠতে দেয়া হয় না। যারা এমন অন্যায় অবিচার করে তাদের মধ্যে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সঠিক বোধ বিবেচনা জাগরূক হোক তারা এ ভূখণ্ডের ‘মাইক্রোস্কোপিক মাইনোরিটি’ তারা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ঘাড়ে তাদের মতলববাজি চাপিয়ে দিয়ে নিস্তার পাবে না। ইতিহাস কিন্তু কেরামুন-কাতেবিনের মতো নেপথ্যে থেকে সব কিছু টুকে রাখছে। একদিন আজকের কেউ থাকবে না সেদিন কিন্তু আঁধারেও ভেতরেও সব কিছু কালো বিড়ালে জ্বলন্ত চোখের মতো ঝলসে উঠবে। সেই অনাগত দিনে আজকের সব খলনায়কদের কপালে গঞ্জনার কোনো শেষ থাকবে না।

ইতিহাস কাউকে অতি বা অবমূল্যায়ন করে না। সূত্র নিক্তিতে তুলে সব পরিমাপ করে। যাক, আমরা যদি অতীতের দিকে তাকাই তবে অবাক হতে হয়। এ দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্থপতি এবং অবিসংবাদিত নেতার, গণতন্ত্রের প্রতি কতাটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। সে সময় সরকারের বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি কী পরিমাণ অসহিষ্ণু ছিল, তারা প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে বস্তুত লড়াই করতে নেমেছিল। এসব কিছুই ধৈর্য-সহ্যের সাথে মোকাবেলা করা হয়েছিল। ইতিহাস থেকে সেটা মুছে ফেলা যাবে না। অবশ্য আজ তারা সেই ক্ষয়িষ্ণু শক্তি ভোল পাল্টে ফেলেছে। তাদের হালের আচরণ দেখলে সেই কথাই মনে উদয় হয়, আর সেটা হলো, কিছু লোক কখনো কখনো এমন আচরণ করে তারা খ্রিষ্টবাদে ধর্মগুরু পোপের চেয়েও যেন খ্রিষ্ট ধর্মের প্রতি অধিকতর ধর্মনিষ্ঠ। এরা বস্তুত খলনায়ক।

কথা শেষ করতে চাই, এভাবে, সব ভালো কাজ যুগে যুগে অনুকরণীয় অনুসরণীয়, এর সাথে দ্বিমত করার কোনো অবকাশ নেই, এই বোধকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর প্রতি তখনই সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা সম্মান দেখানো সম্ভব যদি তার আদর্শকে অনুসরণ করা হয়, প্রতিফলন ঘটানো হয়। আমাদের বক্ষ্যমাণ নিবন্ধের মূল চেতনাটি গণতন্ত্র, তাই বঙ্গবন্ধুর যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সযত্নে লালন করতেন তাকে স্মরণে নিয়েই এবং আজ তার উত্তরসূরিদের সেপথেই চলা উচিত। এটা আমাদের বিবেচনা; পরামর্শ নয়। কেননা পরামর্শ যে পর্যায় থেকে আসতে পারে, আমাদের অবস্থান সেখানে নয়।

একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমাদের যে পর্যবেক্ষণ তাই এখানে উল্লেখ করেছি, একজন সত্যনিষ্ঠ সংবাদকর্মীর সত্য বলার সৎ সাহস থাকা উচিত। যদিও এর অনুশীলন প্রায়শ বিপজ্জনক। দেশে বহু সংবাদকর্মী এ জন্য নিগ্রহের শিকার হয়েছেন, এমনকি জীবনাবসান পর্যন্ত হয়েছে।

ndigantababar@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement