সুষ্ঠু নির্বাচন সোনার পাথর বাটি
- সালাহউদ্দিন বাবর
- ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:০৩
কোনো প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্যের সাথে যদি তার ভূমিকা সম্পূরক বা সাযুজ্যপূর্ণ না হয় তবে সেই প্রতিষ্ঠান নিয়ে শত প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। সে ক্ষেত্রে তাদের ওপর আস্থা সরে গিয়ে অবিশ্বাস সংশয় তৈরি হতে বাধ্য। এরকম লক্ষ্যচ্যুত ও ভারসাম্যহীনভাবে চলা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছা সম্ভব হয় না। সে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে বাধ্য। দেশের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অবস্থা এখন সেই পর্যায়ে। এসব বিষয় নিয়ে দেশে এবং দেশের বাইরে সমান উদ্বেগ উৎকণ্ঠা সৃষ্টিই শুধু নয়, নিকট ভবিষ্যতে এর মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হতে বাধ্য। এমন এক সঙ্গীন মুহূর্তে ইসির প্রধান ও প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে দেশে গণতন্ত্রকে ‘রেস্টোর’ বা পুনরুজ্জীবিত করার সাংবিধানিক দায়িত্ব পুরোপুরি নিষ্ঠার সাথে পালন করা। কিন্তু ইসির দায়িত্বশীলরা দীর্ঘ সময় ধরে এ কথা সে কথা বলে সর্পিল পথে অগ্রসর হচ্ছেন। হালে তাদের ভূমিকা, ভাষ্য থেকে এটা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ হয়ে উঠছে, তারা প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্রেই বিশ্বাসী নন। ইসি আগামী নির্বাচনে ১৫০ সংসদীয় আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের আলোচনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি দল ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের বিপক্ষে মত দিয়েছে। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার নির্বাচনী জোটের শরিক, ১১টি দল ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে। এই পরিসংখ্যান সামনে রাখলে এটা পরিষ্কার হবে ইসি আসলে গণতন্ত্রের প্রতি কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে জন্য অতীতের দুই ইসির মতোই তাদের কাছে গণতন্ত্রের পক্ষে ভূমিকা রাখার আশা করার অর্থ অরণ্যে রোদন ভিন্ন আর কিছু নয়।
ইসির অতি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত তথা ইভিএমের পক্ষে কেন মত দিয়েছে সে বিষয়টি এই ইসির শিকড় সন্ধান করলেই কিন্তু পরিষ্কার হবে। এবার প্রথমবারের মতো ইসি একটি আইনের অধীনে গঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই আইনের রচনার ধারা তথা পথ পদ্ধতির প্রতি যদি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয় তবে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি বেরিয়ে আসবে। তখন সেটি দিবালোকের মতো স্বচ্ছ হয়ে উঠবে। এই আইন রচনার জন্য সরকারের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর পক্ষে এই আইনের জরুরত বা প্রয়োজনীয়তা কতটা সেই বিষয়টিও বোঝা যাবে। যেকোনো আইন রচিত হয় বৃহৎ উদ্দেশ্য সামনে রেখে। জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করাই আইনের মূল লক্ষ্য। সরকারের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক সংগঠনগুলো এই আইনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সংবিধানের দাবি পূরণের লক্ষ্যে তা রচনার জন্য সোচ্চার হয়েছিল। প্রথমে সরকার গড়িমসি করলেও হঠাৎ তড়িঘড়ি করে বিদ্যুৎগতিতে সেই আইন তৈরি এবং অনুমোদনও করে নেয়া হয়। কিন্তু সে আইনের স্বরূপ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, এ আইনটি ‘খাড়া বড়ি থোড়, থোড় বড়ি খাড়া’ গোছের একটি আইন, যা কিনা রচয়িতাদের পক্ষেই কথা বলবে। এবার এই আইনের আলোকে (?) গঠিত হয় সার্চ কমিটি। আগের এক সার্চ কমিটির এক সদস্যকে এবার সার্চ কমিটির প্রধান করা হয়। তা ছাড়া কমিটিতে এমন একজন ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যিনি ক্ষমতাসীন দল থেকে একাদশতম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আবেদন করেছিলেন। অতীতে সেই সার্চ কমিটি কতটা যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব নিষ্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিল তা ভেঙে বলতে যাওয়া বাতুলতা মাত্র।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘সংলাপ’ নামক নাটকের আয়োজন করেছিলেন। সবাইকে বোঝাতে চেয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। কিন্তু ফলাফল ‘অশ্বডিম্ব’। লোক দেখানোর জন্যই বস্তুত সেই সংলাপ করা হয়, আমন্ত্রিতদের কথা প্রকৃতপক্ষে শোনাই হয়নি। ইসির মনে যে ‘কানপড়া’ ছিল সে অনুসারেই তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। ইসির সিদ্ধান্ত, ১৫০ আসনে ইভিএম-এ ভোট হবে। এ দিকে আওয়ামী লীগ চেয়েছিল ৩০০ আসনেই ইভিএম ভোট, কিন্তু ইসির সিদ্ধান্ত দেড় শ’ আসনে। তবে এটা কি ইসির স্বাধীন সিদ্ধান্ত! না, সেটি বলার কোনো কারণ নেই। স্মরণ করা যেতে পারে, ক্ষমতাসীনদের সুহৃদ এবং তাদের নির্বাচনী জোটের সঙ্গী তরিকত ১৫০ আসনে ইভিএম-এ ভোট নিতে ইসিকে পরামর্শ দিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, রাজনৈতিক দল হিসেবে তরিকতের সামান্যতম গুরুত্ব নেই। কিন্তু লক্ষ করা গেছে, ইসি গঠন এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাদের দেয়া পরামর্শই অনুসরণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া জনগণের স্মৃতিশক্তি এতটাই দুর্বল যে, তারা সব ভুলে যাবেন এমন ভাবারও কোনো কারণ নেই। বর্তমান আউয়াল কমিশন তার আগে হুদা কমিশন, এই দুই কমিশনেরই সিইসি ও অন্য কমিশনারদের নাম সার্চ কমিটির কাছে তরিকতই দিয়েছিল। তরিকতের হেডকোয়ার্টার ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের নিভৃত এক কোণে, তা ছাড়া এটা একটা ‘পীর-মুরিদী’ গোছের সংগঠন। তরিকত মূল ধারার কোনো রাজনৈতিক দল নয়। খোদ চট্টগ্রাম মহানগরীতেই তাদের কোনো অস্তিত্ব বলতে গেলে নেই।
অথচ অবসরে যাওয়া সব কর্মকর্তাদের তথ্য উপাত্ত তাদের কাছে মজুদ থাকে কিভাবে। সে এক রহস্য, জানি না তারা কোনো বিশেষ কোয়ার্টারের মুখপাত্র কি না। নেপথ্য থেকে কেউ তাদের ব্রিফিং দেয় কি না, সেটিই তারা উগরে দিচ্ছে কি না।
এটা একটা প্রশ্ন হয়ে আছে যে, সার্চ কমিটি গঠিত হয় রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে এটা ঠিক, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার আছে কি না, সেটি বোঝার বিষয়। সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি স্বাধীন (?)ভাবে মাত্র দুটি বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে সক্ষম। ৪৮(৩) অনুচ্ছেদে রয়েছে, ‘সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুসারে কেবল প্রধানমন্ত্রী ও ৯৫ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুসারে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্র ব্যতীত রাষ্ট্রপতি তাঁহার অন্য সকল দায়িত্ব পালনে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কার্য করিবেন। এই বিধানের নির্দেশ মোতাবেক রাষ্ট্রপতিকে সিইসিসহ অন্যান্য কমিশনদের নিয়োগ দানের পূর্বে অতি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ শুনতে হবে’। এর মাধ্যমে এটা পরিষ্কার, সব সময়ই কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সরকারপ্রধানদের ‘ইনভলমেন্ট’ বা সম্পৃক্ততা থাকবেই। সে জন্য সরকারপ্রধানের পছন্দ অপছন্দ অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।
এ দিকে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হতে এখনো এক বছরের চেয়ে বেশি সময় বাকি রয়েছে বটে, কিন্তু ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের পুরোপুরিভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পাশাপাশি বিএনপিসহ সরকারি দলের প্রতিপক্ষ অন্যান্য সংগঠন তাদের অনুকূলে জনমত তৈরির চেষ্টা শুরু করছে। এ ছাড়া আগামী নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের পশ্চিমের সুহৃদ শুভাকাক্সক্ষীরাও গভীরভাবে মনোনিবেশ করছেন। তবে দিনের শেষে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে উপনীত হয়, সেটি দেখার বিষয়। তবে এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়, সাধারণ মানুষ এখনো কিন্তু আগামী নির্বাচন সম্পর্কে সম্পূর্ণ আশাবাদী হতে পারছেন না। এর কারণ দীঘর্ দিন থেকে দেশে ভোট নিয়ে একরকম ক্যারিকেচার বা প্রহসন চলছে। সেটা এখনই রাতারাতি পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে সেটি দুরাশা বলেই মনে করছে জনগণ। প্রায় এক দশক থেকে মানুষ বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন দেখে আসছে, কিন্তু কোথাও থেকে তো কোনো উৎসাহব্যঞ্জক বার্তা আসছে না। তাই তাদের হতাশা কাটছে না। সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে ইসির ভূমিকা এবং তাদের অসহায়ত্ব ও পশ্চাদপসরণ মানুষের ভেতর গভীর ক্ষত ক্ষোভ তৈরি করেছে। ইসির সদস্যদের সক্ষমতার পরিমাপ হয়ে গেছে।
আগামী নির্বাচন অর্থাৎ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কতটা গুণগত পার্থক্য লক্ষ করা যাবে, নাকি দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো প্রহসনে পরিণত হবে, তার শেষ কথা বলার সময় এখনো আসেনি। কিন্তু ইতোমধ্যে যেসব আলামত দেখা যাচ্ছে, তাতে মানোত্তীর্ণ নির্বাচনের আশা করা কোনোভাবে সম্ভব নয়। এ পর্যন্ত যে দু’টি বিষয় লক্ষ করা যাচ্ছে, তার প্রথমটি হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। ইসি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের অভিমত নাকচ করে দিয়ে, ক্ষমতাসীন দল ও তার শরিকদের পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে ১৫০টি সংসদীয় আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ ইভিএমবিরোধী দলগুলোসমেত নির্বাচন নিয়ে গবেষণা, পর্যালোচনা বিশেষ করে যারা ইভিএম সম্পর্কে বিশেষভাবে ওয়াকিবহাল, তারা এ পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ সম্পর্কিত বহু দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার পরও ইসি অন্ধ ও বধিরের মতো পক্ষপাতিত্বমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বসে আছেন। ইসির এমন একগুঁয়েমিই বলে দিচ্ছে, তাদের দিয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা একেবারেই অসম্ভব ব্যাপার। তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াল কী? অবাধ সুষ্ঠু স্বচ্ছ নির্বাচনের সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন তো থেকেই গেল।
গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে এখন আবার নতুন উপসর্গ যোগ হয়েছে। বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে দেয়া হচ্ছে না। তারা মাঠে নামলেই পুলিশের সহযোগিতায় হামলা করা হচ্ছে, মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে, উল্লেখিত রাজনৈতিক শক্তিকে যেন নির্মূল করার সব চেষ্টাই হচ্ছে। মাত্র কিছুকাল আগে ক্ষমতাসীন সংগঠনের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিরোধী দলগুলোকে তাদের সভা-সমাবেশ করার ব্যাপারে আশ্বাসবাণী উচ্চারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার তারা মাঠে নামার সাথে সাথে যে আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে, তাতে কি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দেয়া হচ্ছে না? গণচীনের নেতা মাও সেতুং তাদের বিপ্লব শেষ হওয়ার পর একটা ফাঁদ পেতেছিলেন। তিনি একটা তত্ত্ব দিলেন ‘শত ফুল ফুটতে দাও।’ এরপর তাদের প্রতিপক্ষ যারা তারা সেই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তৎপরতা শুরু করেছিল, লেখালেখি করেছিল তারা বিপ্লবের প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হলেন এবং তাদের পরিণতি হয়েছিল ভয়াবহ। এখন পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দেশে প্রতিপক্ষকে মাঠে নামিয়ে এমন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে মাঠে নামার ‘শখ আর না জন্মে।’
যাই হোক, বাংলাদেশের গত ৫০ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস একেবারেই অপরিচ্ছন্ন। এখনো এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস সবার অলক্ষ্যেই রচিত হচ্ছে। আজ না হয় কাল, কাল না হয় বহু বছর পর; এ দেশের উত্তরসূরীরা এই ইতিহাস পাঠ করবেন, তখন যার যেভাবে যতটুকু পাওনা মূল্যায়ন ঠিক ততটুকু তাদের জন্য তোলা থাকবে। তারা জানবে, একদিন এদেশের প্রাণপুরুষ এ জনপদকে স্বপ্নের দেশে পরিণত করা থেকে এগিয়ে নেয়ার কালে অপরিণামদর্শীরা তাকে বাঁচতে দেয়নি। তার উত্তরসূরিরা কোথায় কিভাবে এই জনপদকে নিয়ে কোথায় চলেছেন, তাও আগামী প্রজন্ম জানবে। সে দিন আমরা কেউ থাকব না। কিন্তু মহাকাল সব কিছু তার বক্ষে সযত্নে রক্ষা করে যাবে। এটা কি আমরা সবাই ভাবছি! আর কতকাল এখানে নির্বাচন সোনার পাথর বাটি হয়ে থাকবে!
ndigantababar@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা