২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
দেখা-অদেখা

‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে’

‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে’ - ছবি : নয়া দিগন্ত

মর্ত্যরে মনুষ্যকুলের বিষয়-আশয়কে যদি সপ্তম আকাশ ছাড়িয়ে ঊর্ধ্বলোকে চলে যেতে বলা হয়, তবে এ মাটির সমাজে বসবাসরত জনগণের কোনো গতি হবে? প্রকৃত কথা হচ্ছে, মর্ত্যে অবস্থান করেও যদি এখানকার মানুষের জীবনযাপন নিয়ে দুঃখ-কষ্ট গ্লানি বেদনা ও মর্মপীড়া যাদের দেহমনকে স্পর্শ করে না, তারাই স্বপ্নের ঘোরে ঊর্ধ্বলোকে ভ্রমণবিলাস করতে পারেন। তবে গোল বাধতে পারে তাদের নিয়েই, যাদের নিয়ে সেসব মানুষ, যাদের স্কন্ধে মর্ত্যরে মানুষের বহু দায়দায়িত্ব রয়েছে। তাদের এমন স্বপ্নবিলাস সমাজে বিপদ বিসম্বাদকে আমন্ত্রণ জানানোরই শামিল। তাদের স্বপ্নের এমন ঘোর তাদের আসল সত্য ও সমস্যাকে বুঝতে ব্যত্যয় ঘটায়। দিন শেষে তারা ব্যর্থ হন। বাস্তব পরিস্থিতিকে আত্মস্থ করতে অসমর্থ হন। তাহলে সেটিই নিছক কথামালা বা বাচালতায় পর্যবসিত হবে এবং পরিহাস করা বলে জ্ঞান করা হতে পারে। সব কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যই সমালোচনার বাক্যবাণে জর্জরিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। মানুষের দুঃখ-যাতনা কখনোই যাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারে না, তারা কেন আনন্দলোকে বসবাস করে যে, এখনকার প্রতিটি মানুষ আজ কঠিন এক সময় পার করছে, অভাব অনটনের নির্দয় কশাঘাতে জর্জরিত। সেই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ সেই সব গোষ্ঠী বিশেষ, যারা নিজেদের স্কন্ধে জোর জবরদস্তি দায়িত্বভার গ্রহণ করে নিয়েছে; যেখানে তাদের বোধ হওয়া উচিত মানুষের অপ্রাপ্তিজনিত সীমাহীন কষ্ট-যাতনা অহর্নিশ অনুভব করা।

সাথে সাথে কাজে কর্মে সে কষ্ট দূর করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া। যদি সে দায়িত্ব পালনে তারা ব্যর্থ হয়, তবে তো এমন প্রশ্ন উদিত হবেই যে, দায়িত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম নয় তারা। তবে সে দায়িত্ব ঘাড়ে নিয়ে চলার প্রয়োজন আর উদ্দেশ্য কি নিছক নিজেদের দম্ভে শ্রীবৃদ্ধি করা? বুঝতে হবে ক্ষমতার দাবির পেছনে থাকতে হবে সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সে আলোকে কর্তব্যনিষ্ঠা সপ্রমাণ করা। এখন বেলা অপরাহ্ন, সারা দিনমান হেলা-অবহেলায় গেছে। মুহূর্ত কালের মধ্যেই অন্ধকার নেমে আসবে। এই সময়টুকুতে কারো ভাগ্য বদলের আঞ্জাম দেয়া কি সম্ভব? যা ৯০ দিবসে হয়নি তা এখন ৯ দিনে করতে পারা; সেটি একান্ত কল্পলোকের ভাবনা নয় কি? মানুষকে সুদিনের আশায় ভাসাতে জাগানিয়া গীত গান শুনিয়ে অনেক দূরে নিয়ে আসা হয়েছে, অপেক্ষায় থেকে থেকে তারা অনেকটা চাতকের মতো এখন নাকে বাঁধা মূলার দিকে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে তাকিয়ে আছে, কিন্তু এক ফোঁটা বারিবিন্দুও ঝরেনি, চাতকের এখন ছাতি ফাটার দশা।

তার পরও কি আনন্দ আর তৃপ্তিতে সে সব মহারথীগণ থাকবেন? হাবভাব আর কণ্ঠে যেন দিগি¦জয়ী হয়ে ঘরে ফেরার উল্লাস। তারা মনে করে, তারা নিজেরাই নিজেদের একমাত্র উত্তম বিকল্প, সে যেন এক অনন্য সাধারণ অনুভ‚তির জোয়ার। সে কারণে এতটাই আহ্লাদে আটখানা, যেন স্বর্গ মুখে ভাসিয়েছেন ভেলা। সবাইকে যেন তাদের কটুকথা, গর্হিত কর্মকাণ্ড অমৃত সমান ও অতুলনীয় বলে ধরে নিতে হবে। এই চেতনায় উজ্জীবিত হতে না পারলে বা তাতে ঘাটতি দেখা দিলে গুরুদণ্ড তথা নরক বাস অতি অনিবার্য। এমন এক অভ‚তপূর্ব পরিস্থিতির মধ্যে কাটছে এই ভ‚খণ্ডের বেশির ভাগ মানুষের দিন ক্ষণ।

চার দিক থেকে নানা অপবাদ অভিযোগের এক সয়লাব এখন চলছে। তার পরও হুঁশ-জ্ঞান নেই সমালোচনা শোনার, যে আলোকে পরিশুদ্ধ হওয়ার কোনো প্রয়াস-প্রচেষ্টা নেই। এসব যাতে শুনতে না হয়, মনোজগতের দুয়ারগুলো যেন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, তারা বিশুদ্ধতার সব দিক থেকে উত্তীর্ণ। স্খলন বলে তাদের অভিধানে কোনো শব্দ নেই। তাদের সব প্রয়াসই অনিন্দ সুন্দর তুলনাহীন। এটাই ভাবতে হবে তারা ঊর্ধ্বলোকের মানুষ, তাদের দিয়ে অবাঞ্ছিত কিছু সংঘটিত হবে এমন চিন্তা বিকৃত মস্তিষ্কের কেবল ভাবনা। এমন কিছু ভাবলে গ্রাহ্য করা হবে না। তাতে কারো পিত্তি জ্বলে গেলেও রা শব্দ করা যাবে না। অশুচিকর, কষ্টকর, বেদনা-বিধুর এসব শব্দ উচ্চারণ করার অর্থ হবে কাণ্ডজ্ঞানহীন, অর্বাচীন ক্ষেপা বখে যাওয়া মস্তিষ্কের উদ্ভট প্রলাপ। এমন একদর্শিতা জ্ঞানবদ্ধতা সমাজের মানুষকে এখন এক দুর্বিষহ পরিবেশের মুখোমুখি এনে ফেলেছে, সে এক দমবন্ধ হওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ দেশের প্রধান আইন গ্রন্থে যেখানে দিক দিশা দেয়া আছে; মানুষ যেমনটি চেয়েছিল একটি মুক্ত স্বদেশ ভ‚মি, তার রূপকল্প সেখানে সন্নিবেশিত রয়েছে; কিন্তু আজকের বাস্তবতা তা থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছে। দেশের সেই ‘মাদার ল’ বুকে’ স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এই স্বাধীন-সার্বভৌম প্রায় ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ভ‚ভাগের মালিক বা স্বত্বাধিকারী এই জনপদে বসবাসকারী নাগরিকরা। এই বিধি কোনো প্রতীকী বিষয় বা অ্যাবস্ট্রাক্ট কিছু নয়, এর সোজা সরল অর্থ দ্যোতনা ব্যাপক ও বিস্তৃত। সদা সর্বত্রই সেই জনগণের অভিপ্রায়, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, সম্মতি-অসম্মতি, পছন্দ-অপছন্দকে সর্বোচ্চ জ্ঞান করতে হবে। তাদের এই জনপদ কাদের দ্বারা পরিচালিত হবে তার ফায়সালা তারাই করবে। এ ক্ষেত্রে এতটুকু ব্যত্যয় ঘটলে বুঝতে হবে জনগণের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ, আইনের পরিপন্থী ও জবরদস্তিমূলক। আজকে সভ্য দুনিয়ায় জবরদস্তিমূলক কোনো কার্যক্রমকে কেউই বৈধতার সনদ স্বীকৃতি দেয় না। যে কেউ এমন অনিয়মের চর্চা করবে, তার পক্ষে আইনি কোনো ভিত্তি বৈধতা থাকবে না। এসব যদি বিবেচনায় নেয়া হয়, তবে এটাই সাব্যস্ত হবে, এখন কিন্তু ‘জনগণ নয় পেশি বলই’ চর্চিত হচ্ছে। আইন গ্রন্থের যে শুদ্ধ চেতনা, সেটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। নিরীহ শান্ত মানুষের সব চেয়ে বড় বেদনার বিষয় যে, তাদের অধিকার যা বিশ্বজনীনভাবে স্বীকৃত, সেটা কেড়ে নিয়েছে পেশি বল। এখানে যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যাবে এভাবে যে, বিশ্বসভার যে প্রতিনিধি সম্প্রতি এ দেশে এসেছিলেন, তিনি আভাসে-ইঙ্গিতে এটাই বুঝিয়ে গেছেন, অধিকারহারা মজলুম মানুষের আর্তনাদ শুনতে হবে। তার প্রতিকার করতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড্ড বেশি পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। আরো লক্ষণীয়, যতটা আন্তরিক হওয়া দরকার এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কিছুমাত্র উদ্বেগ নেই। খুন গুমে সেই হতভাগ্য পরিবারের সদস্যরা যে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ার দাবি তুলছেন তাতে কোনো সাড়া দিচ্ছে না প্রশাসন, এটি যেন অরণ্যে রোদনের মতো।

এ দিকে দিশাহারা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সদস্যের কেউ কেউ যেন মাপজোখ ছাড়া পথে ঘাটে যত্রতত্র ভারসাম্যহীনের মতো বক্তব্য দিয়ে দেশের বহু মূল্যের স্বাধীনতা বিকিয়ে দেয়ার জন্য হাটে তুলছেন। তিনিই সেই ‘সম্মানিত’ সদস্য, যিনি কিনা মানুষকে আকাশচারী হতে বলেছিলেন। উড়ে এসে রাজনীতিতে জুড়ে বসা সেই লোকটি সম্প্র্রতি এমন কথা বলেছেন। ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার সেটি করতে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।’ তিনি বলেন, আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে (প্রথম আলো, ১৬ আগস্ট)’ ‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে, আমাদের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে, কোমরের জোর নেই, তাই আপনাদের (ভারতে) সাহায্য-সহায়তায় টিকে থাকতে চাই। ‘বড় আশা করে এসেছিল ফিরায়ো না’। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোন বিবেচনায় এমন ভিখারি হতে গেলেন? দলের নেতারা এখন উঠেপড়ে লেগেছেন ‘শাক দিয়ে মাছ’ ঢাকতে কিন্তু তা কি হয়? এখন এটিও পরিষ্কার- তিনি কেন মানুষকে স্বর্গে পাঠাতে চেয়েছিলেন, সবাই যখন আনন্দলোকে বিরাজ করবে তখন শূন্য মাঠে মানুষকে ‘ঘোল’ খাওয়ানো।

কিছুমাত্র কষ্টকর হবে না। আসুন কোরাস গাই- ‘শূন্য এ ঘরে ক্ষমতার পাখি মোর, আয় ফিরে আয়।’ তোর বিহনে, বিরহ ব্যথায় আমার কাল যে কাটবে না, যুগ-যুগান্তরে আমারই আঙ্গিনায় থাকতে হবে। কিভাবে আমারই বধূয়া আন বাড়ি যাবে আমারি আঙ্গিনা দিয়ে? কেন ভুলে যেতে হবে, ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি হেরে গিয়ে দানা পানি তো ছাড়েনি, তবে আজ কেন এত ‘মাতম মর্সিয়া’? আগেই উল্লেখ করেছি ক্ষমতা জনগণের, তবে কেন এত উতলা? তাহলে এটাই বুঝতে হবে, নিজেদের কৃতকর্মের জন্য জনগণের আস্থা রাখতে পারছে না। আরো জিজ্ঞাসা- কবেইবা আপনারা জনগণের ওপর আস্থা রেখেছেন? বিগত দুটো সংসদ নির্বাচনে আপনাদের যে প্র্যাক্টিস, অনুশীলন, মানুষ দেখেছে সেটিতো স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ।

নিজের মাজার জোর নেই, পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আপনাদের পরোয়া কিসের? আপনাদের সুহৃদ সুজন আছে, যাদের ব্লাঙ্ক চেক দিয়েছেন, তারা কাঠ কেটে বন উজাড় করেছে এবং ড্রেজার দিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন করেছে, তাদের বলুন না কিছু কাঠ দিয়ে যেতে যাতে, ঠেকা দিয়ে আপনারা দাঁড়াতে পারেন, আর বালু উত্তোলনকারীদের হুকুম দিন, আপনাদের পায়ের নিচে কিছু বালু ফেলে যেতে যাতে আপনারা ডেবে না যান। তা ছাড়া আপনাদের ক্ষমতা পাওয়ায় বহু ‘ ‘বেনিফিশিরি’ সৃষ্টি হয়েছে, তাদের আহ্বান জানানো যেতে পারে, মৌসুম বুঝে মাঠে প্রলয় নৃত্য শুরুর জন্য। সেই নৃত্যের প্রকম্পে মানুষ ভোটের দিনে ঘর থেকে বের হতে সাহস না করে। আর ভোটটা এমন রজনীতে করুন যখন ঘোর অমাবস্যা, নিকষ কালো। তা ছাড়া আশীর্বাদপুষ্ট নির্বাচন কমিশন তো রয়েছে।

তারা ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক করুন, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের অসম্মতিকে উপেক্ষা করে ইভিএমের প্রোগ্রামেতে এমন জুৎসই ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ‘ট্রাম্প’ করার সব আয়োজন ঘড়ির কাঁটার মতো এতটুকু হেরফের না হয়। এভাবে নির্বাচন হলে জনগণের ভোটের শক্তি কোথায় ‘কারপাস তুলার’ মতো হাওয়ায় উড়ে দেশান্তরী হবে তার আর খোঁজ পাওয়া যাবে না। আপনারা বহু ঋণ করে অনেককে সুবিধা দিয়েছেন, এখন তার দেনা শোধ দিতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৌচাকে ঢিল ছুড়েছেন, মানুষের রক্ত দিয়ে বহু মূল্যে কেনা স্বাধীনতা বিকিয়ে দেয়ার কথা উচ্চারণ করেছেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, এর প্রতি ইঞ্চি জমিতে বসবাসকারী মানুষ তাতে বিস্ফোরিত হয়ে উঠছে। মোমেন সাহেব ঝোলায় থাকা কালো বিড়াল বের করে এনেছেন, তার সহযোগীরা এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা যতই করুন না কেন কোনো ফায়দা হবে না। বন্দুকের নল থেকে যে গুলি বেরিয়ে গেছে তাকে কখনই ফেরানো সম্ভব নয়। এ দিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। নিরপেক্ষ তাত্তি¡ক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক আমলা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রখ্যাত আইনজীবীসহ রাজনীতিবিদগণ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করছেন।

এসব বিজ্ঞজনের বক্তব্যের নির্যাস হচ্ছে এমন- রাজনীতিবিষয়ক বক্তব্যে চটকদার, মুখরোচক কথার খুব একটা গুরুত্ব নেই। বিশ্বপরিস্থিতি, আন্তঃরাষ্ট্র সম্পর্ক, দেশের সম্মান, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে কিছু বলা খুবই স্পর্শকাতর এবং মন মগজ ঠিক রেখে ঔচিত্যবোধ, সৎভাব বজায় রেখেই কথা বলতে হবে। বৃহত্তর সংস্থায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আর পররাষ্ট্র মন্ত্রিত্ব করা এক নয়। মোমেন সাহেব যা বলেছেন, সেটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত। তার এমন বক্তব্য যুক্তিযুক্ত ও সম্মানজনক নয়, তিনি দায়িত্বশীলদের মতো ভেবেচিন্তে কথা বলেননি। দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন কথা শুনে অনেকেই হতভম্ব, বিস্ময়ে বিমূঢ়।

আমরা বহুবার এই কলামে বলেছি, বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক নির্বাহীদের একটা বড় অংশ প্রকৃতপক্ষে দক্ষতা, যোগ্যতা, পরীক্ষায় মানোত্তীর্ণ নয়; রাজপথে স্লোগান, মিটিং মিছিলে পারঙ্গম বটে। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাকরণ হচ্ছে ভিন্ন বিষয়। সেখানে জ্ঞানগরিমার প্রয়োজন হয়; দূরদৃষ্টি, কৌশল, মানুষের দুঃখ-বেদনা উপলব্ধি থাকতে হবে। ক্ষমতা উপভোগের বিষয় নয়, পরিশ্রম,দেশ ও দশকে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়।

ndigantababor@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement