পদ্মা সেতু নিয়ে লঙ্কাকাণ্ডের নেপথ্য কারণ
- গোলাম মাওলা রনি
- ০৭ জুলাই ২০২২, ২১:০০
পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে সেই ২০০৯ সাল থেকে আজ অবধি যা কিছু হয়েছে তা বিশ্বের কোনোকালে অন্য কোনো স্থাপনার ক্ষেত্রে ঘটেনি। নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার আগে বিশ্বব্যাংক আইএমএফ, জাইকা, আইডিবি, এডিবিসহ বিশ্বের বাঘা বাঘা গণমাধ্যম, বিদেশী আদালত থেকে শুরু করে আমাদের দেশের আইন আদালত, দুর্নীতি দমন কমিশন, সুশীল-সাংবাদিকরা যা করেছেন তা যদি একত্র করা হয় তাহলে মহাভারত-রামায়ণ-ইলিয়ড-ওডিসি কিংবা বিষাদসিন্ধু অথবা মহা শ্মশানের সম্মিলিত মহাকাব্যগুলোর চেয়ে বিরাট ইতিকথা রচিত হয়ে যাবে। অন্য দিকে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর যে দিন উদ্বোধন করা হবে বলে ঘোষণা করা হলো সে দিনটিকে টার্গেট করে যা কিছু করা হয়েছে, তার সাথে তুলনা করার মতো দৃষ্টান্ত সারা দুনিয়ার হাজার বছরের ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
পদ্মা সেতু নিয়ে এ যাবৎকালে যত কাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে জনৈক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য। তিনি সম্ভবত পদ্মা সেতু প্রকল্পের হোমরা-চোমরা টাইপের কিছু একটা হবেন। সাংবাদিকরা যখন তার কাছে পদ্মা সেতুর উপর গিয়ে মানুষের সেলফি তোলার ফোবিয়া, টিকটক ভিডিও করার ঘটনা, নামাজ পড়া, সেজদা দেয়া, হাত দিয়ে সেতুর নাট-বল্টু খোলাসহ জনৈক ব্যক্তির জলবিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করেন তখন তিনি ভারি আশ্চর্য হয়ে জবাব দেন- কী করে ওসব নিয়ন্ত্রণ করব, বা এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার আগাম ব্যবস্থা নেব। কারণ ওসব লঙ্কাকাণ্ড যে ঘটতে পারে, তা আমাদের মন-মস্তিষ্ক কল্পনাও করতে পারেনি।
ভদ্রলোকের কথা শোনার পর আমাদের মনে হলো, তিনি সত্য কথা বলেছেন। কারণ লঙ্কাকাণ্ডগুলো ঘটার পর আরো অনেক পাবলিকের মতো আমিও আশ্চর্য হয়েছি এবং একেকটি ঘটনার রঙ্গরসের দৃশ্য দেখে কৌতুক অনুভব করেছি। আবার নাট-বল্টু হাত দিয়ে খোলার দৃশ্য দেখার পর হাপিত্যেশ করেছি। কিন্তু ঘটনাগুলো কেন ঘটল, তা যেমন ভাবিনি, তেমনি ওগুলো আগাম প্রস্তুতি নিয়ে কিভাবে বন্ধ করা যেত তা ভাবা তো দূরের কথা ওসব চিন্তা মাথার মধ্যে ঢুকানোর জন্য যদি ইয়া ঢাউস আকৃতির গজাল অর্থাৎ পেরেক মেরে মাথা ফুটো করে ঢুকানোর চেষ্টা করতাম তবুও হয়তো বাজে চিন্তাগুলো মস্তিষ্কে অনুপ্রবেশ করানো যেত না।
লঙ্কাকাণ্ডগুলোর মধ্যে যদি প্রথমেই জলবিয়োগের ঘটনাটি ব্যাখ্যা করি তবে আমাদের চরিত্র ও অভ্যাস সম্পর্কে নিদারুণ সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। যারা এখনো পর্যন্ত জলবিয়োগ শব্দটি বুঝতে পারেননি তাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, পদ্মা সেতুর ওপর বসে কবিগুরুর সেই বিখ্যাত বাঙাল যেভাবে মূত্র বিসর্জন করেছে, সেই দৃশ্যের পূর্বাপর কার্যকারণ নিয়ে যদি পদ্মা সেতুর হোমরা-চোমরারা এখনো গবেষণা শুরু না করেন তবে অমন ঘটনা একটির পর একটি ঘটতে থাকবে।
কারণ আমাদের দেশের ছেলে-বুড়োদের বিরাট একটি অংশ শৈশব ও কৈশোরে জলবিয়োগের ক্ষেত্রে যে অভ্যাস রপ্ত করেছে, তা এই মহাবিশ্বের অন্য কোনো দেশে ঘটে না। এরা পানিতে নেমে ওই কর্মটি করতে বেশ মজা পেত। এর বাইরে বড় কোনো গাছের মগডালে উঠে নিচের পুকুর, জলাশয় কিংবা প্রবহমান নদ-নদীতে জলবিয়োগের ঘটনা গ্রামাঞ্চলে আগের চেয়ে কমেছে বলে আমার মনে হয় না। এর বাইরে কাউকে জল বিয়োগ করতে দেখলে নিজের তলপেটে জলবিয়োগের যন্ত্রণা অনুভব করা ও সেই লোকটির পাশে বসে অথবা দাঁড়িয়ে মহাতৃপ্তি নিয়ে প্রাকৃতিক কর্মটি করার লোকজনের অভাব আমাদের এখনো দেখা দেয়নি।
আপনি যদি রাস্তাঘাটে চলাফেরা করেন, তা সে গ্রাম অথবা শহর হোক, আপনি দেখতে পাবেন যে, বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে এবং সেসব সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ। আপনি আরো লক্ষ করবেন, সাইনবোর্ডের নিচেই লোকজন বেশি বেশি মূত্র বিসর্জন করছে। তো এসব বেহায়া কর্ম বন্ধ করার জন্য সরকারি দফতরের বড় কর্তারা কিসব চিন্তা করেন তার একটি নমুনা আপনাদের কাছে প্রকাশ করার লোভ সংবরণ করতে পারছি না।
একবার সরকারের বড় একটি দফতরে এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল, সভায় উপস্থিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তৎকালীন বড় কর্তা প্রস্তাব করলেন, আমাদের দেশের মানুষ যেহেতু ধর্মভীরু, সেহেতু ‘এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ’ কথাটি আরবি হরফে লিখে লটকিয়ে রাখলে কেউ আর জলবিয়োগ করবে না। উপস্থিত লোকজন একবাক্যে বড় কর্তার বুদ্ধির প্রশংসা করলেন। প্রকল্পটি পরে বাস্তবায়ন করা হয়েছিল কি না তা আমি বলতে পারব না, তবে সেদিনের সেই স্মৃতি আজো আমাকে নিদারুণভাবে নাড়া দিয়ে যায়।
জলবিয়োগের উল্লিখিত অভ্যাসগুলোর সাথে অন্যান্য বদভ্যাস যথা, বিছানায় প্রস্রাব করা, গোসল করতে নেমে নদী-পুকুর-সাগর বা সুইমিংপুলে সব বয়সী লোকজনের জলবিয়োগের বদভ্যাসকে মাথায় রেখে যদি পদ্মা সেতু পরিচালনায় নিযুক্ত কর্তারা সেতুটিকে পবিত্র রাখার জন্য নীতিমালা তৈরি করেন তবে তা অনেক বেশি কার্যকর হবে।
উল্লিখিত ঘটনার পর আমি যে বিষয়টি নিয়ে অবাক হয়েছি তা হলো, যারা নাট-বল্টু খোলার সাথে অভিযুক্ত তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখে। তাদের কর্মকাণ্ড দেখার পর আমি সেই ১৯৭৩-৭৪ সালের নস্টালজিয়ায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছি এবং সেটি কী তা বলার আগে পদ্মা সেতু নিয়ে আবার আঁতেলগিরির নমুনা আপনাদের না জানিয়ে পারছি না। আমি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলাম। সেতুটি নির্মাণের প্রেক্ষাপট-জটিলতা ও সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে বিরাট এক নিবন্ধ লেখার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
আমার মনের মধ্যে এমন এক ভাবভঙ্গি পয়দা হয়েছিল যে, আমি যেসব অজানা তথ্য পরিবেশন করব তা পাঠ করে পাঠকরা সব সাধু সাধু বলা আরম্ভ করবে এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবটি যে আমার ছিল ও টানা দুই বছর সেই প্রস্তাব কিভাবে জনপ্রিয় করেছি এবং সরকার আমার সেই প্রস্তাবটি কিভাবে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে, তা সবিস্তারে বর্ণনার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছিলাম। কিন্তু নাট-বল্টু খোলার দৃশ্য দেখার পর আমার নিজের মাথার সব নাট-বল্টু আউলা-ঝাউলা হয়ে গেছে।
আমি অবাক হয়ে শুধু ভাবছি, এমন অদ্ভুত অভিনব ও সূ² চিন্তা কী করে ওই সব যুবকের মাথায় এলো। আমাদের মতো আঁতেলরা যেভাবে গত সাত-আট বছর ধরে লাখো মুখে প্রচার করছি যে, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে এবং ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু নির্মাণে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
অন্য দিকে আমাদের প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য সরকারি আঁতেলরা যেখানে পদ্মা সেতুর প্রতিটি পাইল নদীর কত ফুট গভীরে ঢুকেছে, নদীর তলদেশের মাটি কিভাবে সরে গেছে অথবা পদ্মার মতো সমচরিত্রের নদী আমাজান কেন দুনিয়ার পরাশক্তিধর দেশগুলো এখনো সেতু তৈরি করতে পারছে না- ইত্যাদি বলে সেতুবিরোধী কথাবার্তার দাঁতভাঙা জবাব দিচ্ছেন সেখানে সাধারণ দু’জন যুবক-হাত দিয়ে পদ্মা সেতুর কয়েকটি নাট-বল্টু খোলার দৃশ্য ভিডিও করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের যেভাবে নাস্তানাবুদ করেছেন তা রীতিমতো বিস্ময়কর এবং আমাদের মতো আঁতেলদের জন্য দুরন্ত এক চপেটাঘাত।
আমি নাট-বল্টু খোলা নিয়ে যতটা না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি ঘটনার নায়কদের নিয়ে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের বেসামাল আচরণ, কথাবার্তা ও তৎপরতা দেখে যা আমার মধ্যে সত্তরের দশকের নস্টালজিয়া সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমাদের শৈশবে গ্রামের বেশির ভাগ ছেলে-মেয়ে পাঁচ-ছয় বছর পর্যন্ত নেংটা থাকত। মেয়েদের মাঝে মধ্যে হাফপ্যান্ট পরানো হতো বটে কিন্তু অনেকেই তা খুলে ফেলত এবং তার উদোম সঙ্গী-সাথীদের সমাজে একীভ‚ত হয়ে শিশুসুলভ খেলাধুলা করত। তারা যেন হারিয়ে না যায় এ জন্য প্রায় সবার কোমরে অনেকগুলো ঘণ্টা পরানো হতো। তাদের দিকে যেন কারো কুনজর না পড়ে এ জন্য কপালের এক কোণে কালি বা কাজলের টিপ পরানো হতো। অনেক ছেলের কান ফুঁড়িয়ে কানফুল পরানো হতো। মেয়েদের চুলের বেনি, চোখের কাজল, পায়ের আলতার সাথে পাল্লা দিয়ে অনেক বাবা-মা বা দাদা-দাদী তাদের আদরের ছেলে শিশুটির চুলও লম্বা করে রাখতেন এবং কাজল দিয়ে ছেলেদের সাজাতেন। এসব নেংটার দল যখন খেলত-দৌড়-ঝাঁপ করত তখন কী যে একটি দৃশ্য তৈরি করত তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
আমার শৈশবে এক নেংটা হঠাৎ করেই ভীষণ লজ্জিত হয়ে পড়ল। খেলতে গিয়ে নাবালকটি আরেক নাবালকের সাথে কুস্তি শুরু করে দিলো। এরপর শিশুসুলভ কুতাকুতি করতে গিয়ে একজনের পশ্চাৎদেশ থেকে বিরাট এক কৃমি বের হয়ে এলো। সঙ্গী-সাথীরা সেই কৃমির রক্তাক্ত মুখচ্ছবি দেখে অতি চিৎকার করে উঠল। কুস্তিগির যখন টের পেল যে, সর্বনাশ ঘটে গেছে তখন সে লজ্জায় মুখ ঢেকে বুবু ও বু বলে চিৎকার দিতে থাকল। এ অবস্থায় তার স্নেহময়ী দাদী এসে তাকে উদ্ধার করলেন বটে কিন্তু সেই বালক আর কোনোদিন নেংটা হয়ে খেলতে বের হয়নি এবং সে দিনের ঘটনার সাক্ষীদের সামনে জীবনে কোনোদিন দ্ব›দ্ব-সঙ্ঘাতে লিপ্ত হয়নি, যা তাকে পরবর্তী জীবনে একজন সফল ভদ্রলোক হতে সহায়তা করেছে।
আমরা আজকের আলোচনার একেবারে প্রান্তসীমায় চলে এসেছি। উল্লিখিত ঘটনা ছাড়াও পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং তৎপরবর্তী নানা রকম কর্মকাণ্ড যেভাবে একটির পর একটি ঘটে যাচ্ছে তাতে করে এই মহান স্থাপনাটির সুনাম সুখ্যাতি বাড়ছে না কমছে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। পৃথিবীর সেই আদিকাল থেকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বহু স্থাপনা তৈরি হয়েছে। মিসরের পিরামিডের বয়স পাঁচ হাজার বছর। চীনের মহাপ্রাচীরের বয়স ক্ষেত্রবিশেষে দুই হাজার দুই শ’ বছরের বেশি হয়ে গেছে। মহাচীনের প্রথম সম্রাট শি হুয়ান টি পৃথিবীর অতি আশ্চর্য দু’টি কর্ম করে গেছেন। একটি হলো টেরাকাটা আর্মি ও অন্যটি হলো- মহাপ্রাচীরের নির্মাণকাজ। একইভাবে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে সুয়েজ খাল খনন, প্রাচীন দুনিয়ার বাতিঘররূপে পরিচিত আলেকজান্দ্রিয়ার লাইট হাউজ অথবা জর্দানের প্রাচীন পেত্রা নগরীতে পাহাড় কেটে বিশাল বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ এবং সেই পাহাড়ি বসতি নাপতীয়দের সাম্রাজ্যের রাজধানীরূপে খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ থেকে ২০০ অব্দ পর্যন্ত টানা ২০০ বছরের রাজকীয় ইতিহাস দর্শনে মানুষ এখনো বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে পড়ে।
ইতিহাসের উল্লিখিত আশ্চর্যতম নিদর্শনের সাথে তুলনা করে আমরা যদি আগামী এক হাজার বছর পরের পদ্মা নদী ও পদ্মা সেতুর পরিণতি কল্পনা করতে পারি, তবেই আমাদের আবেগ ও উচ্ছ্বাস পূর্ণতা পাবে। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত আবেগ, সীমা অতিক্রম করা ভাবসাব ও অসম্পূর্ণ প্রপাগান্ডা সবসময়ই বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং এসব কর্মে সাধারণ মানুষের মনে অহেতুক কৌতূহল ও বিরক্তির ভাব চলে আসে। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে যেন সংশ্লিষ্টরা কোনো বাড়াবাড়ি করতে না পারে সে জন্য কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তবে সেই সতর্কতার সাথে মেধা, মননশীলতা, দক্ষতা ও অন্যের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে সেতুকে কেন্দ্র করে মানুষের আতঙ্ক ও বিরক্তি চরমে পৌঁছবে, যা শাসকদল আওয়ামী লীগের জন্য হিতে বিপরীত হয়ে পড়বে।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা