২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কতটা সুখে রয়েছি আমরা

- ছবি : নয়া দিগন্ত

জাতিসঙ্ঘ মানুষের সুখও পরিমাপ করতে চায়। যদিও তার অন্যতম প্রধান কাজ যুদ্ধবিগ্রহ রোধে এটি অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি শক্তিধর কয়েকটি দেশের দ্বারা ব্যবহৃত হয়ে গেছে। জাতিসঙ্ঘ টেকসই উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় এখন বছর বছর সুখী মানুষের একটি ইনডেক্স তৈরি করা হয়। কয়েকটি সুনির্দিষ্ট পরিমাপক তারা এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করলেও এতে ধাঁধা ও রহস্যের উপাদান বেশি পাওয়া যায়। ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত হিসেবে দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষের দেশ ফিনল্যান্ড। এ যাত্রায় আমাদের অবস্থানও রয়েছে। তালিকাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আমরা শতক বা সেঞ্চুরিতে ঘুরপাক খাচ্ছি।

গুরুত্বপূর্ণ জরিপ প্রতিষ্ঠান গ্যালপ এ কাজে সাথী হয়ে থাকে জাতিসঙ্ঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানটির। গ্যালপ ১৯৩৫ সাল থেকে মানুষের ধারণা ও মতামত নিয়ে গবেষণা করে আসছে। জরিপের ক্ষেত্রে গ্যালপ ব্যাপক নাম কুড়ালেও সুখী মানুষের সূচকটি যেন এক ভিন্ন রকমের বাস্তবতা। এর সাথে বাস্তব জীবনের ভোগ ও আর্থিক সঙ্গতি অনেক ক্ষেত্রে সমান্তরালে চলছে না। সুখী মানুষের সূচক প্রস্তুত করতে গিয়ে গ্যালপ মানুষের জীবনযাপন ও এর বোধ নিয়ে জানতে চায়। এতে থাকে সম্ভাব্য সবচেয়ে কস্টকর জীবন ও সর্বোচ্চ সন্তোষজনক জীবনের ব্যাপারে মানুষের অনুভূতি। এ ক্ষেত্রে তারা বেশ কয়েকটি চলক নির্ধারণ করেছে। একজন ব্যক্তি নিজে কোন অবস্থানে রয়েছেন এবং ভবিষ্যতে তিনি কোথায় যেতে চান তার মানমাত্রা জানতে চাওয়া হয়। দৈবচয়নের ভিত্তিতে নমুনা নির্বাচন করা হয়। সুখ পরিমাপকারী সূচকগুলোর প্রতি আমরা একনজর চোখ বুলিয়ে নিতে পারি।

১. মানসিক কল্যাণ : আশাবাদিতা, জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও পারদর্শিতা লাভের সুযোগ কিংবা পারদর্শিতা অর্জন। ২. স্বাস্থ্য : দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় শারীরিক শক্তি ও সার্বিক সক্ষমতা। ৩. সময়ের ব্যবহার : আনন্দ বিনোদন লাভের সুযোগ। অবকাশ গ্রহণ ও অবসর নিয়ে নিজের মতো করে তা উদযাপন। ৪. কমিউনিটি : নিজের মনে করতে পারা বা অধিকার অর্জন, স্বেচ্ছায় সাহায্য গ্রহণ কিংবা সাহায্য দান ও নিরাপত্তার অনুভূতি। ৫. সামাজিক সমর্থন : পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সাথে সন্তোষজনক সম্পর্ক। ভালোবাসার অুনভূতি ও একা একান্ত হওয়ার অধিকার। ৬. শিক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি : সংস্কৃতি ও শিক্ষামূলক ইভেন্টে প্রবেশাধিকার ও বৈচিত্র্যের সুযোগ। ৭. প্রাকৃতিক পরিবেশ : প্রকৃতিতে প্রবেশের সুযোগ, দূষণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ। ৮. সরকার : সরকারের প্রতি আস্থা, দুর্নীতির অনুভূতি, যোগ্যতা বা সামর্থ্য। ৯. বস্তুগত কল্যাণ : আর্থিক নিরাপত্তা ও মৌলিক চাহিদা পূরণ। ১০. কার্যক্ষেত্র : ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ, স্বায়ত্তশাসন ও উৎপাদনশীলতা।

গবেষকরা মানুষের সুখকে পরিমাপ করতে এসব চলক নির্ধারণ করেছেন। এগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, প্রকৃত সুখের সাথে এর জোরালো সম্পর্ক নেই। দেশভেদে মানুষের নানামাত্রিক সাড়াদান থেকে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। কোনো বিষয়ে মনোভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সততা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তি যা সত্যিকার অর্থে মনে করেন সেটা প্রকাশ করলে ফলাফল অধিকতর সঠিক হতে পারে। কেউ ইচ্ছে করে নিজের মনোভাবকে আড়াল করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ফলাফল প্রকৃত অবস্থাটা প্রকাশ করবে না। আবার কেউ প্রকৃত ব্যাপার অনুধাবন করার সামর্থ্য রাখেন না। আমাদের সমাজে একজন ধনীকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কেমন আছেন? তিনি বিনয়ের সাথে সাধারণত জানাবেন, ডাল ভাত খেয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছি। আবার একজন ফকিরকে যদি একই প্রশ্ন করা হয় তিনি বলবেন, আল্লাহ ভালো রাখছেন’। হয়তো দেখা যাবে, এই ফকির তখন না খেয়ে রয়েছেন।

জরিপে দেখা গেছে পূর্ণ বয়স্ক মানুষের প্রায় দু-তৃতীয়াংশ (৬৪ শতাংশ) নিজেদের সুখী মনে করে। এদের মধ্যে আবার ১৪ শতাংশ নিজেদের ‘খুব সুখী’ দাবি করে। বাকি ৫০ শতাংশ নিজেদের গড়ে সুখী মনে করে। তবে কিছু দেশের পূর্ণ বয়স্ক মানুষদের বড় একটা অংশ নিজেদের বেশি সুখী মনে করেন। এসব দেশের তালিকাটা আমরা যদি একটু ব্যাখ্যা করি, তা হলে সুখের সংজ্ঞাই আমাদের কাছে এলোমেলো হয়ে যাবে। সুখের সাথে অর্থকড়ি, সমৃদ্ধি ও দরিদ্রতার সম্পর্ক আমরা দাঁড় করাতে পারব না। কানাডার ২৯ শতাংশ পূর্ণ বয়স্ক মানুষ নিজেদের খুব সুখী বলে জানাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব ও ভারতের ২৮ শতাংশ মানুষ একই ধরনের দাবি করছে। যুক্তরাষ্ট্রে এর হার ২৭ শতাংশ।

প্রকাশিত সুখী মানুষের তালিকায় অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান ১১ এর বিপরীতে ভারতের অবস্থান ১৩৬। দুটো দেশের ২৮ শতাংশ মানুষ নিজেদের খুব সুখী বলে দাবি করছে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ভারতের রাজনৈতিক আর্থিক সামাজিক অবস্থান অনেক নিম্নে হলেও ‘খুব সুখী’ মানুষের সংখ্যায় তারা এগিয়ে। দেশ দু’টির মানুষের আর্থিক অবস্থার চিত্র দেখলে বিষয়টি নিয়ে আশ্চর্য হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মাথাপিছু জাতীয় আয় প্রায় ৬৬ হাজার ডলার, ভারতের মানুষের তা এক দশমাংশ। মাত্র ছয় হাজার ডলারের কিছু বেশি। বোঝা যাচ্ছে, ইনডেক্সের কোথাও ঘাপলা রয়েছে। একটা মূল্যবোধগত ব্যাপারও থাকতে পারে। ভারতের মানুষেরা নিজেদের খুব ভালো থাকার স্বীকৃতি দিয়ে হয়তো শান্তি পান। অন্য দিকে ‘অনেক ভালো’ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষেরা নিজেদের অপ্রাপ্তি, বঞ্চনাগুলোকে বড় করে দেখেন। সুখী মানুষের যে ইনডেক্স তৈরি করা হয়েছে সেখানে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১৯ এ রয়েছে।

ফিনল্যান্ডের পর তালিকার প্রথম দিকে থাকা চারটি দেশ হলো যথাক্রমে ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস। এ দেশগুলো নাগরিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠার নজির স্থাপন করেছে। সুখী মানুষের তালিকায় এসব দেশের নাম একেবারে শীর্ষভাগে থাকায় এই ইনডেক্সের গ্রহণযোগ্যতাও বেড়েছে। এসব দেশ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক বৈশ্বিক অন্যান্য তালিকাতেও একেবারে প্রথম দিকে রয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত জনমুখী সরকার রয়েছে তাদের। দেশের প্রতিটি মানুষ সেখানে সম্মানের সাথে বসবাস করে। সবার মৌলিক অধিকার সর্বোচ্চ মাত্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিচার পাওয়ার অধিকারের পূর্ণ বাস্তবায়ন রয়েছে। শাসকরা প্রকৃতপক্ষে জনগণের সেবক। তারা জনগণের ইচ্ছা চেতনা ও আকাক্সক্ষার রক্ষকমাত্র। জনগণের কথা বা কমান্ড শুনতে বাধ্য থাকে তারা। কল্যাণ রাষ্ট্রের যে বিমূর্ত ধারণা রয়েছে এসব দেশে সেগুলো বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে।

এখন অনেকগুলো বৈশ্বিক হিউম্যান ইনডেক্স তৈরি হয়। মানুষের জীবনের মান ও স্বাধীনতা কোন মাত্রায় রয়েছে ইন্ডিকেটরগুলো দিয়ে তা বোঝার চেষ্টা করা হয়। বাংলাদেশকে আমরা এসব তালিকার একেবারে তলানিতে পাই। আমরা সাধারণত প্রতিযোগিতায় আছি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া আর আফগানিস্তানের সাথে। সুখী মানুষের ইনডেক্সেও আমরা একেবারে পিছনে রয়েছি। এবার আমরা একশর ভেতরে জায়গা করে নিজেদের রেকর্ড নিজেরা ভঙ্গ করেছি। তালিকায় আমরা উঠে এসেছি ৯৯ নম্বরে। আমাদের এ অগ্রযাত্রায় তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ অত্যন্ত খুশি। মিন্টো রোডে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি সেটা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, সুখী মানুষের সূচকে এগিয়ে যাওয়াই প্রমাণ করে দেশের মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে।

মন্ত্রী সম্ভবত আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে তা বোঝাতে চাচ্ছেন। দেশের অর্থনীতির লেখচিত্রে কিছু ঊর্ধ্বমুখী রেখা দেখা যায়। এর সাথে অল্প কিছু মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি ঘটতে পারে যা আমাদের জাতীয় আয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তা মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত মানুষের দুর্ভোগ কমাচ্ছে না কিংবা দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমাচ্ছে না। বিগত দশ বছরে দেশে মজুরি বেড়েছে ৮১ শতাংশ। পণ্যমূল্য বেড়েছে ৮৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবিএসের। অর্থাৎ মজুরি বেড়ে কোনো লাভ হয়নি। মূল্যস্ফীতির চাপে ১০ বছর আগের চেয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরো কমেছে। কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি হিসেবে প্রায় একই ধরনের চিত্র দেখা যাচ্ছে। এ দিকে মাথাপিছু আয় গত ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার হিসাব পাওয়া যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত তথ্য হলো, ক্ষমতার সাথে সংশ্লিষ্ট একটা নব্য ধনিক শ্রেণী সৃষ্টি হয়েছে। তারা রীতিমতো আঙুল ফুলে কলাগাছ। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বিপরীতে এদের সংখ্যা কয়েক হাজার মাত্র। বিবিএসের হিসাবে ২০১০ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ৩১ শতাংশ। দীর্ঘ ১০ বছরে ২০২০ সালে করোনার আগে তা কমে ২১ শতাংশে নামে। কিন্তু এক ঝটকায় তা আগের অবস্থানে আবার ফিরে গেছে। বেসরকারি বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার হিসেবে দরিদ্রতার হার ১০ বছর আগের চেয়ে এখন বেশি। সরকার তাদের তথ্য-উপাত্তকে পাত্তা না দিলেও বাজারে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

সামান্য কিছুসংখ্যক মানুষের সম্পদ বেড়ে যাওয়ায় সেটি মাথাপিছু আয় ও জাতীয় আয়ের রেখাগুলোকে ঊর্ধ্বমুখী করেছে; জনগণের বৃহত্তর অংশের আয় কমে যাওয়ার প্রভাবকে অর্থনীতিতে দৃশ্যমান হতে দিচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে এটি একধরনের বৈষম্যের অর্থনীতি। টিসিবির ট্রাকের পেছনে মানুষের লম্বা সারি এর সাক্ষ্য বহন করছে। মন্ত্রীরা বলছেন, দ্রব্যমূল্য মূল বিষয় নয়। বিষয় হচ্ছে, মানুষ কিনতে পারছে কি না। আরো বলছেন, এখন ভালো কাপড়-চোপড় পড়ে মানুষেরা টিসিবির লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।’ ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে খালি হাতে ফিরছেন। সামান্য কিছু ভোগ্যপণ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে হৃদয়বিদারক অনেক ঘটনা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের (সিপিজে) সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, গত ডিসেম্বরে ৪৩ শতাংশ পরিবার খাবার কেনাকাটায় খরচ কমিয়েছে। ৩৩ শতাংশ মানুষ কম মজুরিতে কাজে যোগ দিয়েছে। ২৬ শতাংশ জানিয়েছে, তারা সঞ্চয় ভেঙে খরচ করছে। রাশিয়া ইউক্রেন আগ্রাসন চালিয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি। এখন পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবে আরো খারাপ হয়েছে।

রিকশা চড়ছিলাম। চুপ করে বসেছিলাম। এক সময় চালক বলে উঠলেন, ‘ঘটনা কতটা নিষ্ঠুর! চারটি ডাব খেয়ে নিলো পুলিশ। এরপরে সন্তর্পণে চলে গেল। ডাবওয়ালা তার পাওনা চাইতে পারল না। বেচারার লাভের টাকাটা গেল।’ রিকশাওয়ালার কথার মধ্যে ক্ষোভ। তিনি এমন কাজকে ঘৃণাভরে দেখছেন। এর উত্তরে আমি কিছু বলিনি। বলার কিছু ছিল না। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে আমরা আরো উসকে দিতে পারি না। ঘটনাটি পুলিশ নিশ্চিতভাবে করেছে, বলছি না। কিন্তু এ ঘটনাটি যদি একজন রিকশাওয়ালা বানিয়েও বলেন, সেটি আসলে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তার মনোভাবের পরিচয়। ক্রয়ক্ষমতা কমে গিয়ে মানুষ দুর্গতির মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু যারা ঠিক নিরাপত্তা দিবেন তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের মনোভাব যদি এমন থাকে সে দেশের মানুষ কতটা সুখী, আন্দাজ করতে কারো অসুবিধা হয় না। সেবাদানকারী কোনো একটি প্রতিষ্ঠানও এমন পাওয়া যাবে না যার আচরণ আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। খবর হচ্ছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ঘুষ, দুর্নীতি, চুরিচামারি বেড়েছে। নাগরিকের প্রতি দুর্ব্যবহার বেড়েছে।

আমরা অনেক সুখে রয়েছি এমন ভিত্তিহীন প্রচারণার দরকার নেই। সুখ বিষয়টি অত্যন্ত আপেক্ষিক। রাজপ্রাসাদে বসবাস করে অনেকে যেমন সুখী হতে পারে না; আবার বস্তির ঝুপড়িতে আনন্দে বসবাস অসম্ভব কিছু নয়। শেরাটন সোনারগাঁওয়ে উৎকৃষ্ট খাবার খেয়ে তৃপ্ত না-ও হওয়া যেতে পারে। আবার রাস্তার পাশে কাঁচামরিচ দিয়ে পান্তাভাত খেয়েও পরম তৃপ্ত হওয়া যেতে পারে। সৃষ্টির এ এক অপরূপ বৈচিত্র্য! এ নিয়ে কারো অধিক প্রচারণা ও অতিরিক্ত দাবির কিছুই নেই।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement