২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দুদক দুর্নীতি না শরীফের বিপক্ষে

-

‘উপসহকারী পরিচালক’ পদটি সরকারি চাকরিতে নিচের দিকের একটি পদ। এর নিচে কর্মকর্তা পর্যায়ে আর পদ নেই। তার উপরে রয়েছে সহকারী পরিচালক ও পরিচালক। সরকারি প্রতিষ্ঠানভেদে এর উপরের পদগুলো অনেক বেশি শক্তি ও ক্ষমতা ধারণ করে। দুদকের ক্ষেত্রে সচিব ও কমিশনার রয়েছেন, তার উপরে রয়েছেন চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কতটুকু কার্যকর হবে সেটি তারা নির্ধারণ করেন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটিকে স্বাধীনভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতির মহামারীর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়ার দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেনি। চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনকে ব্যতিক্রম বলা যায়। তার উপরের পদধারী কর্মকর্তারা শরীফকে কিছুটা অনুসরণ করলেও দুর্নীতিবাজরা কিছুটা সংযত হওয়ার প্রয়োজন অনুভব করত।

দুর্নীতিতে এরই মধ্যে আমরা যে রেকর্ড অর্জন করেছি সেটি সম্ভবত বিশ্বে ইউনিক একটি অবস্থান। ফাঁস হওয়া হাজার হাজার ঘটনা প্রমাণ করে, পবিত্র দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে দুর্নীতি নির্মূলে তারা কোনো ভূমিকা রাখেননি। গিনেজ রেকর্ড বুক ‘সুকর্মের’ স্বীকৃতি দেয়। অবশ্য তাদের দেয়া সুকর্মগুলোর মধ্যে বহু অপ্রয়োজনীয় বেহুদা ক্রিয়াকাণ্ডও রয়েছে। তবে তারা যদি দুর্নীতির মতো কুকীর্তির বিষয় নিয়ে নেতিবাচক স্বীকৃতি দেয়ার আয়োজন করত তা হলে চামচ, বিছানা চাদর, পর্দা ও চেয়ার ক্রয় নিয়ে এরই মধ্যে আমরা যে সীমাহীন দুর্নীতি করেছি; সে জন্য রেকর্ড বুকে আমাদের স্থান প্রথম হতো। আবার খিচুড়ি রান্না শেখা, পুকুর খনন, খান খনন, এসির বাতাস পরীক্ষা এ ধরনের বহু বিচিত্র ব্যাপারে জ্ঞান আহরণের জন্য আমাদের সরকারি আমলা, ক্ষমতাসীন রাজনীতিক ও তাদের সমন্বয়ে গঠিত দুষ্টচক্র বিদেশ ভ্রমণের যেসব আয়োজন করেছে সে জন্যও নতুন নতুন রেকর্ডের শাখা খুলে বিশ্বকে চমকে দিত পারত। দুর্নীতিবাজ চক্র এ রেকর্ড দিয়ে যদি নিজেদের সুনাম বাড়াতে পারত গিনেস বুকের কাছ থেকে ‘সিস্টেম করে’ সেটিরও ব্যবস্থা করে নিত।

কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট করে দেয়া এক ব্যাংকখেকোর বিরুদ্ধে ছড়া কেটে, কার্টুন এঁকে প্রাণ হারানোর চিত্র এ দেশে আমরা দেখেছি। বিগত এক যুগে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ছিল একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজের জন্য ‘গণিমতের মাল’। ক্ষমতার শীর্ষে থাকা লোকদের সাথে সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে তারা। জনসাধারণের গচ্ছিত অর্থ এভাবে গণহারে যে লুট করা যায় তার অনন্য উদাহরণ আমরা সৃষ্টি করেছি। ‘উন্নয়ন প্রকল্প’ বলতে কী বোঝায়, আমাদের সরকারের লোকেরা সে বিষয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এক একটি উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট উদ্ভাবনে আমরা এমন মেধার পরিচয় দিয়েছি এর আগে কেউ আর সেটি দেখাতে পারেনি। উন্নয়ন প্রকল্প সম্পাদনের সময়সীমা বাড়িয়ে উন্নয়ন ব্যয় বাড়িয়ে কিভাবে দ্বিগুণ-তিনগুণ করতে হয় আমরাই এর অগ্রপথিক। উড়াল সড়ক, পাতাল রেল ও টানেল নির্মাণের নামে অর্থ ব্যয়ের উদাহরণ সৃষ্টি করে সারা বিশ্বকে আমরা চমকে দিয়েছি। আমাদের সড়ক নির্মাণ ব্যয় ইউরোপ আমেরিকার রাস্তা নির্মাণ ব্যয়কে কয়েকগুণ ব্যবধানে ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের শ্রমিকের মজুরি কিন্তু মান্ধাতার অবস্থানে রয়েছে। তাদের ‘লবণ আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা। রডের বদলে নির্মাণে বাঁশের ব্যবহার আমরাই দেখিয়েছি বিশ্বকে। এ ছাড়া রাস্তা ছাড়া ব্রিজ, জনবসতি ছাড়া রাস্তা - এমন আজগুবি রহস্যজনক সরকারি প্রকল্পের আমরাই জনক।

সরকারি প্রতিষ্ঠানে ফাইল নড়ে না ঘুষ ছাড়া। শুধু সচিবালয় কিংবা জেলা থানার সরকারি অফিস নয়, সরকারের দফতর অধিদফতর এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্নীতির মহামারী গ্রাস করে নিয়েছে। মন্ত্রীরও নিস্তার মেলে না ঘুষ ছাড়া কাজ আদায়ের। অবশ্য মন্ত্রীদের জন্য সমস্যা নেই, তাদের জন্য দারুণ সব ব্যবস্থা রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে আদায় করে দেয়া হচ্ছে। তারা এক টাকা দিলে এক হাজার টাকা পকেটে আসার পথ রয়েছে। অর্থকরী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে আমাদের সমগ্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসনে নিয়োজিত প্রায় সবার এখন একই ধান্ধা। আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে নজর দিলে বুঝতে পারব, পরিস্থিতি কতটা নিচে নেমেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো লাভজনক অর্থনৈতিক প্রকল্পে পরিণত হয়েছে যে কারণে এগুলোতে এখন অভিভাবক হিসেবে ভিসি নিয়োগ হচ্ছে না। সেখানে নিয়োগ পাচ্ছেন ভিসি নামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। নবপ্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা বেশি খারাপ। এগুলো কিছু ব্যক্তির পারিবারিক উদ্যোগে পর্যবসিত হয়েছে। ভিসির নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের আত্মীয়স্বজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়োগদানের ‘ইজারা’ নিয়েছে। ভিসিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণকাজের বাটোয়ারার সাথে জড়িত হয়ে গেছেন।

আমরা কতটা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছি অর্থ পাচারের ফাঁস হওয়া তথ্য থেকে সেটি অনুমান করতে পারব। বিগত বছরগুলোতে গড়ে ৭৩ হাজার কোটি টাকা করে পাচার হয়ে গেছে। এ হিসাবের শেষ বছরে দেখা গিয়েছিল এক লাখ কোটি টাকা পাচার হতে। এরপর অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য গোপন করা হয়েছে। সে জন্য বিগত কয়েকটি বছরে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে তার হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি দলের নেতাদের অনেকের সম্পদ শত শত গুণ বেড়ে গেছে। বিভিন্ন সময় প্রকাশিত সম্পদ বিবরণী থেকে তা জানা যায়। ফরিদপুরের একজন ছাত্রলীগ নেতা স্বীকার করেছেন দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের কথা। আওয়ামী লীগের এ মর্যাদার নেতা রয়েছেন সহস্রাধিক। এ ছাড়া ক্ষমতার সাথে সম্পৃক্ত অন্যারাও এ সময় হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। পি কে হালদার নামে একজন একাই পাচার করেছেন ১০ হাজার কোটি টাকা। কালো টাকার মালিকরা এখন ওপেন সিক্রেট। হালদারদের সংখ্যা এখন অগণিত।

দুর্নীতির অতিমারীর কথা আমরা উল্লেখ করলাম এ জন্য যে, দুদকের একজন উপসহকারী পরিচালককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। শুরুতে তার পদবি কোন পর্যায়ের সেটি বলেছি। তিনি অধস্তন একজন কর্মকর্তা, একটি জেলার দুর্নীতির রাশ টেনে ধরেছিলেন। তার সাড়াজাগানিয়া, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান ছিল কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে। ১৫৫ জনের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগপত্র দায়ের করেন। এ ছাড়া তিনি আরো বড় কয়েকটি দুর্নীতির ঘটনা সেখানে উদঘাটন করেন। প্রতিটি ঘটনায় তিনি দেশের স্বার্থের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দুর্নীতির হোতাদের বিরুদ্ধে মামলাও করেন। একই অবস্থা সারা দেশে যদি দুদকের কর্মকর্তারা করতেন তা হলে দুর্নীতির ভয়াবহ সুনামি চলতে পারত না দেশে।

প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের অবস্থানটি দুর্নীতির পক্ষে না বিপক্ষে, শরীফের চাকরিচ্যুতির ঘটনাটি তার ইন্ডিকেটর। দুদকের চেয়ারম্যানের ইস্যু করা আদেশে শরীফের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এ ব্যাপারে সংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় সচিবও তেমন কোনো অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেননি। চাকরির বার্ষিক গোপনীয় রিপোর্টে শরীফ অতি উত্তম, সাহসী, অভিজ্ঞ, উদ্যমী ও দক্ষ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই। তার ব্যাপারে এমন প্রতিবেদন চাকরির প্রথম বছরগুলোর। এরাই আবার কোনো এক রহস্যজনক কারণে তাকে ‘চলতি মানের’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাকে উদ্ধত ও সুপিরিয়র কর্তৃপক্ষের আদেশ পালনে অনীহ বলে রিপোর্ট দিয়েছেন। এর মানে কী? লক্ষণীয় বিষয় হলো, কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ দুর্নীতিতে জেলার একেবারে সর্বোচ্চ ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ আনেন। এরা হচ্ছেন স্বয়ং জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনসহ প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা। এদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা কি ঔদ্ধত্য - এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

শরীফের তদন্তে যারা ‘দুর্নীতিবাজ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন তারাই তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আনছেন। গত ৮ মাসে তারা ২০টি অভিযোগ আনেন। সেসব অভিযোগ এখন দুদকের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে; অথচ এসব অভিযোগের কোনোটির শক্ত কোনো গ্রাউন্ড নেই। তার পরও তার চাকরি চলে গেল। অন্য দিকে তার আনীত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুনির্দিষ্ট সুপারিশ, তদন্ত কাজ ও মামলা সব থেমে গেছে। কোনো কোনোটি বাতিল হয়েছে। কোনোটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ হয়েছে। রাঘববোয়ালরা যখন দুর্নীতিতে ফাঁসছিলেন তখন এই সাহসী অধস্তন কর্মকর্তা চাকরি হারালেন। এ ধরনের সাহসী ব্যক্তিদের বড় ধরনের বিপদে পড়ার নজির আমরা নিকট অতীতে দেখেছি। শরীফকেও এরই মধ্যে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে চাকরি খেয়ে দেয়ার হুমকি ১৬ দিনের মাথায় বাস্তবায়িত হয়েছে। জেলের ভাত খাওয়ানোর হুমকি পেন্ডিং রয়েছে। এ দেশে গুম অপহরণের যে সংস্কৃতি রয়েছে সেগুলোও তার ক্ষেত্রে নেমে আসে কি না, তা দেখার অপেক্ষা এখন।

আশার ব্যাপার হচ্ছে, তার সহকর্মীদের একটি অংশের মধ্যে চেতনার জাগরণ হয়েছে। তারা তাদের একজন সৎ সাহসী সহকর্মীর পক্ষে আন্দোলন করছেন। বেহাল দশা দেখে জনমনে এ ধারণা প্রতিষ্ঠিত, দুদকের ভেতরে দেশপ্রেমিক কর্মকর্তারা আর নেই। সেটিও ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। একদল লোক অবশিষ্ট রয়েছে যারা অন্যায়ের প্রতিকার সময়মতো করতে পারেনি বটে; তবে তারা সততা ন্যায়পরায়ণতার বিরুদ্ধে নয়। তারা হয়তো অন্যায়কারীদের লম্বা হাতের কাছে অসহায়। কিছু তারা করতে পারে না। সুযোগ পেলে তারা সত্যিকার অর্থে দুর্নীতি দমনে দৃঢ়তার পরিচয় দেবেন। শরীফ ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যারা একসময় তার কাজের প্রশংসা করেছেন। দুদক কর্তৃপক্ষ এতে সাড়া না দিলে সাধারণ মানুষের ধারণা হবে, দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের কাছে বন্দী হয়েছে স্বয়ং দুদক।

সংবাদমাধ্যম শরীফ উদ্দিনের পক্ষে সক্রিয় অবস্থান গ্রহণ করেছে। তার ব্যাপারে বড় বড় সংবাদ রচনা করছে। সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় লিখছে।

টেলিভিশনও খবর ও টকশো প্রচার করে সাথে রয়েছে। তবে মিডিয়া তার টোনটা আরো ‘সরাসরি’ করতে পারে। তারা বলতে চাইছে, শরীফের চাকরিচ্যুতি দুদকের বিশ্বাসযোগ্যতাকে দুর্বল করবে।’ এমন কথা কিভাবে মানানসই হতে পারে? বিগত এক যুগে প্রতিষ্ঠানটির কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল না। দুর্নীতি বলতে দুদক দীর্ঘসময় ধরে বিরোধীদের প্রতি আঙুল তুলেছে। অন্য দিকে প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধ থেকে হাত গুটিয়ে থেকেছে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির কোনো ভাবমর্যাদা থাকার কথা নয়। শরীফের চাকরিচ্যুতি ঘটিয়ে তারা হয়তো নিজ ভাবমর্যাদার কফিনে আরো একটি পেরেক মেরেছে।

সংবাদমাধ্যমের এ চেতনা জেগেছে একজন সৎ কর্মকর্তার পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনে। তার পরাজয় মানে, জাতির বিবেকের পরাজয় এ ব্যাপারটা মিডিয়া বুঝতে পারছে। তবে মিডিয়ার চেতনার জাগরণ সবসময় সমান থাকেনি। বর্তমান সরকারের প্রথম দিকটায় রাষ্ট্রব্যবস্থা যখন বিকৃতাচারের দিকে ঝুঁকছিল, তখন থেকেই মিডিয়া শক্তিশালী ভূমিকা নিলে আজ দুর্নীতির এই প্লাবন হতো না। মিডিয়াকে আমরা সবসময় দেখেছি আওয়ামী লীগ সরকারকে ছাড় দেয়ার নীতি অবলম্বনে। এই নীতি হয়তো একটি অলীক আদর্শ চিন্তা থেকে উদ্ভূত হয়েছে। তারা হয়তো মনে করে, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল দল। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি কিছুটা ছাড় দেয়া যায়। কিছুটা ছাড় দেয়ার ফল যে একসময় ‘ফাল’ হয়ে যাবে, আমাদের মিডিয়ার শীর্ষ ব্যক্তিদের সেই জ্ঞান ছিল না। এখন জবরদস্তিমূলক শাসনের যাঁতাকলের নিচে তারাও রয়েছেন।

সাধারণ মানুষও ব্যাপকহারে দুদকের উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের দুর্নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছে। এরই মধ্যে নাগরিকদের কাছে তিনি জাতীয় নায়ক হয়েছেন। সব মিলিয়ে তার চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য একটা জাতীয় ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে। দুদকের নীতিনির্ধারক বা সরকারের একটা অংশের ভিন্ন অবস্থান থাকতে পারে। এ অবস্থায় দুদক যদি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের চাপকে অগ্রাহ্য করতে পারে, তাদের হারানো ভাবমর্যাদা কিছুটা ফিরে আসতে পারে। এরপর তারা যদি সত্যিকার অর্থে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থান নিতে পারে শরীফের পথ ধরে, তা হলে দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা ভাবমর্যাদা কিছুটা উদ্ধার করতে পারেন।

jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement